জ্যানেট সুজম্যান | |
---|---|
ইংরেজি: Janet Suzman | |
জন্ম | |
শিক্ষা | কিংসমিড কলেজ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ভিটভাটারস্র্যান্ট বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেত্রী, নির্দেশক |
দাম্পত্য সঙ্গী | ট্রেভর নান (বি. ১৯৬৯; বিচ্ছেদ. ১৯৮৬) |
সন্তান | ১ |
আত্মীয় | হেলেন সুজম্যান (ফুফু) |
ডেম জ্যানেট সুজম্যান, ডিবিই (ইংরেজি: Janet Suzman; জন্ম ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৯)[১] একজন দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী ব্রিটিশ অভিনেত্রী। তিনি তার অভিনয় জীবনের শুরুতে রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানিতে সফলতা অর্জন করেন এবং টেলিভিশনে শেকসপিয়ারীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নিকোলাস অ্যান্ড আলেকজান্দ্রা (১৯৭১)-এ সম্রাজ্ঞী আলেকজান্দ্রা ফিওদোরভনা চরিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
সুজম্যান পরবর্তীকালে অসংখ্য ধ্রুপদী ও আধুনিক নাটকে অভিনয় করেন এবং ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় অসংখ্য নাটক নির্দেশনা দেন। সুজম্যান অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল আ ডে ইন দ্য ডেথ অব জো এগ (১৯৭২), আ ড্রাই হোয়াইট সিজন (১৯৮৯)। টেলিভিশনে তিনি অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা (১৯৭৪) টিভি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি টেলিভিশন পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
জ্যানেট সুজম্যান ১৯৩৯ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে এক ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সল সুজম্যান একজন ধনাঢ্য টোবাকো আমদানিকারক এবং মাতা বেটি (জন্মনাম: সনেনবার্গ)।[২][৩] তার মাতামহ ম্যাক্স সনেনবার্গ দক্ষিণ আফ্রিকান সংসদের সদস্য ছিলেন। তার ফুফু হেলেন সুজম্যান নাগরিক অধিকার ও বর্ণ-বৈষম্যমূলক পৃথকীকরণের বিরোধী সক্রিয়কর্মী ছিলেন।[৪]
সুজম্যান জোহানেসবার্গ স্বাধীন কিংসমিড কলেজে এবং পরে ভিটভাটারস্র্যান্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।[৪]
লন্ডন অ্যাকাডেমি অব মিউজিক অ্যান্ড ড্রামাটিক আর্ট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর[৪] ১৯৬২ সালে ইপসউইচের টাওয়ার থিয়েটারে বিলি লায়ার নাটক লিজ চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার মঞ্চে অভিষেক ঘটে। তিনি ১৯৬৩ সালে রয়্যাল শেকসপিয়ার কোম্পানির সদস্য হন এবং ১৯৬২-৬৪ পর্যন্ত দ্য ওয়ার্স অব দ্য রোজেস নাটকে জোন অব আর্ক চরিত্রে অভিনয় করেন। এই কোম্পানি তাকে লাভ’স লেবার’স লস্ট-এ রোজালিন, দ্য মার্চেন্ট অব ভেনিস-এ পোর্শিয়া, হ্যামলেট-এ ওফেলিয়া, দ্য টেমিং অব দ্য শ্রু-এ কেট, মাচ অ্যাডু অ্যাবাউট নাথিং-এ বিয়াট্রিচ, অ্যাজ ইউ লাইক ইট-এ সেলিয়া ও রোজালিন্ড, টাইটাস অ্যান্ড্রোনিকাস-এ লাভিনিয়া এবং অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা-এ ক্লিওপেট্রা চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ দেয়। মঞ্চে তাকে শেকসপিয়ারীয় ও ধ্রুপদী নাটকে অভিনয় করতে দেখা গেলেও তিনি হেনরিক ইবসেনের হেডা গ্যাবলার, আন্তন চেখভের থ্রি সিস্টার্স, ক্রিস্টোফার মার্লো, জ্যঁ রাসিন, মাক্সিম গোর্কি, বের্টল্ট ব্রেখটের নাটকে অভিনয় করেন। এছাড়া তিনি জঁ জ্যনে, হ্যারল্ড পিন্টার, রোনাল্ড হারউড, নিকোলসন, এডওয়ার্ড অলবি ও অন্যান্য নাট্যকারদের নাটকেও অভিনয় করেন।
সুজম্যান পরবর্তীকালে অসংখ্য ধ্রুপদী ও আধুনিক নাটকে অভিনয় করেন এবং ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকায় অসংখ্য নাটক নির্দেশনা দেন।
সুজম্যান ১৯৬০-এর দশক জুড়ে ও ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে ব্রিটিশ টেলিভিশনে সেন্ট জোন (১৯৬৮), দ্য থ্রি সিস্টার্স (১৯৭০), ম্যাকবেথ (১৯৭০), হেডা গ্যাবলার (১৯৭২), টুয়েলফথ নাইট (১৯৭৩) নাটকের টিভি নাট্যরূপে অভিনয় করেন। তিনি অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা (১৯৭৪) টিভি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি টেলিভিশন পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি ক্লেহ্যাঙ্গার (১৯৭৬)-এ হিল্ডা লেসওয়েজ, প্রিস্ট অব লাভ (১৯৮১)-এ ফ্রিডা লরেন্স, লর্ড মাউন্টব্যাটেন: দ্য লাস্ট ভাইসরয় (১৯৮৫)-এ লেডি মাউন্টব্যাটেন এবং দ্য সিংগিং ডিটেকটিভ (১৯৮৬)-এ ডেনিস পটার চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়া তাকে বিবিসির ১৯৮৮ সালের থিয়েটার নাইটের দ্য মাইজার নাটকে নাইজেল হথোর্ন ও জিম ব্রডবেন্টের সাথে দেখা যায়। এতে তিনি ফ্রোজিন চরিত্রে, হথোর্ন হার্প্যাগন চরিত্রে এবং ব্রডবেন্ট মেত্র জাক চরিত্রে অভিনয় করেন।
তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নিকোলাস অ্যান্ড আলেকজান্দ্রা (১৯৭১)-এ সম্রাজ্ঞী আলেকজান্দ্রা ফিওদোরভনা চরিত্রে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন[৫] এবং চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল নবাগত বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এরপর তিনি আ ডে ইন দ্য ডেথ অব জো এগ (১৯৭২) চলচ্চিত্রে অ্যালান বেটসের বিপরীতে অভিনয় করেন। এরপর তিনি ডন সিগেলের দ্য ব্ল্যাক উইন্ডমিল (১৯৭৪), নিজিন্স্কি (১৯৮০), পিটার গ্রিনওয়ের দ্য ড্রাউটসম্যান্স কন্ট্রাক্ট (১৯৮২), ফেদেরিকো ফেল্লিনির এ লা নাভে ভা (১৯৮৩) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি বর্ণ-বৈষম্যমূলক পৃথকীকরণের বিষয়বস্তু সংবলিত আ ড্রাই হোয়াইট সিজন (১৯৮৯) চলচ্চিত্রে মার্লোন ব্রান্ডোর সাথে অভিনয় করেন। ১৯৯০ সালে তাকে জোনাথন লিনের হাস্যরসাত্মক নানস অন দ্য রান চলচ্চিত্রে দেখা যায়, যা তার কর্মজীবনে অল্প সংখ্যক হাস্যরসাত্মক কাজের একটি।
২০২০ সালে সুজম্যান নেটফ্লিক্সের দ্য ক্রাউন টেলিভিশন ধারাবাহিকে রানীর প্রেস সচিব মাইকেল শিয়ার সাহিত্য প্রতিনিধি চরিত্রে অভিনয় করেন।[৬]
সুজম্যান ১৯৬৯ সালে পরিচালক ট্রেভর নানকে বিয়ে করেন। তাদের এক পুত্র রয়েছে। ১৯৮৬ সালে নানের সাথে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।[৪]
তিনি লন্ডন আন্তর্জাতিক মঞ্চ উৎসবের পৃষ্ঠপোষক।[৭]
নাট্যকলায় তার অবদানের জন্য ২০১১ সালের রানীর জন্মদিনের সম্মাননায় তাকে দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারের ডেম কমান্ডার হিসেবে ভূষিত করা হয়।[৮][৯]
সুজম্যান ওয়ারউইক, লেস্টার, লন্ডন কুইন ম্যারি, সাউদাম্পটন, মিডলসেক্স, কিংস্টন, কেপটাউন, বাকিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া শেকসপিয়ারীয় নাটকে অবদানের জন্য ২০১২ সালে তাকে প্র্যাগনেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।
টেমপ্লেট:ইভনিং স্টান্ডার্ড থিয়েটার পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী