টমাস হেনরি হাক্সলি

টমাস হেনরি হাক্সলি
জন্ম(১৮২৫-০৫-০৪)৪ মে ১৮২৫
মৃত্যু২৯ জুন ১৮৯৫(1895-06-29) (বয়স ৭০)
জাতীয়তাইংরেজ
নাগরিকত্বযুক্তরাজ্য
মাতৃশিক্ষায়তনসিডেনহাম কলেজ লন্ডন
চেরিং ক্রস হাসপাতাল
পরিচিতির কারণবিবর্তন, বিজ্ঞানশিক্ষা, অজ্ঞেয়বাদ, ম্যানস প্লেইস ইন নেচার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপ্রাণিবিদ্যা; তুলনামূলক শারীরস্থান
প্রতিষ্ঠানসমূহরয়েল নেভি, রয়েল কলেজ অব সার্জন্স অব ইংল্যান্ড, রয়েল স্কুল অব মাইন্স, রয়েল ইন্সটিটিউশন, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়
উচ্চশিক্ষায়তনিক উপদেষ্টাটমাস হোয়ার্টন জোনস
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীমাইকেল ফস্টার
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেনঅ্যাডওয়ার্ড ফোর্বস
চার্লস ডারউইন
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেনপ্যাট্রিক জিডস
হেনরি অসবোর্ন
এইচ. জি. ওয়েলস
ই. রে ল্যাঙ্কাস্টার
উইলিয়াম হেনরি ফ্লাওয়ার
অ্যালডস হাক্সলি
জুলিয়ান হাক্সলি

টমাস হেনরি হাক্সলি এফআরসি (৪ মে, ১৮২৫ – ২৯ জুন, ১৮৯৫) একজন প্রখ্যাত ইংরেজ জীববিজ্ঞানী, শিক্ষক এবং অজ্ঞেয়বাদ দর্শনের অন্যতম প্রবক্তা।[] তিনি ছিলেন চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদের অন্যতম সমর্থক। তিনি বিজ্ঞানী ও সাধারণ জনগণের কাছে এ তত্ত্বটি গ্রহণযোগ্য করার জন্য যে কারোর চেয়ে বেশি চেষ্টা করে গেছেন।[] সে কারণে অনেকসময় তাকে ডাকা হয় ডারউইনের বুলডগ নামে।[] কেবলমাত্র ডারউইনের সমর্থক হিসেবে হাক্সলি পরিচিতি পান নি, তিনি নিজেও ছিলেন একজন বড় মাপের জীববিজ্ঞানী। প্রাণিবিদ্যাজীবাশ্মবিজ্ঞানের ওপর হাক্সলির মৌলিক গবেষণা ছিল। এছাড়া তিনি ডারউইনের তত্ত্বের অনেকাংশের সমালোচনা করেন এবং এর একাধিক সমস্যা তুলে ধরেন।[]

ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে নিজের ধারণা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হাক্সলি অজ্ঞেয়বাদ দর্শনের প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেন। ১৮৬৯ সালে তিনিই প্রথম ইংরেজি agnosticism (অজ্ঞেয়বাদ) কথাটি প্রয়োগ করেন।[]

সংক্ষিপ্ত জীবনী

[সম্পাদনা]

টমাস হেনরি হাক্সলি ১৮২৫ সালের ৪ মে ইংল্যান্ডের মিডলসেক্সের ইলিঙে জন্মগ্রহণ করেন। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সপ্তম। তার পিতা ছিলেন ইলিং স্কুলের গণিতের অধ্যাপক। হাক্সলি মাত্র দুই বছর বিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের সুযোগ পান। ১৮৩৫ সালে পরিপারের সাথে তাকেও কভেন্ট্রিতে গিয়ে থিতু হতে হয়। এর ফলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সেখানেই ইতি ঘটে। ইতিহাস, বিজ্ঞান ও দর্শন বিষয়ে নিজে নিজে অধ্যয়ন করে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব পুষিয়ে দেন। নিজের চেষ্টায় তিনি জার্মান শেখেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে মেডিকেল শিক্ষানবিশ হিসেবে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন। শিঘ্রীই চেরিং ক্রস হাসপাতালে অধ্যয়নের জন্য তিনি বৃত্তি লাভ করেন। একুশ বছর বয়সে রয়েল নেভির ফ্রিগেট এইচ. এম. এস. র‍্যাটলস্নেকে সহকারী শল্যচিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। এইচ. এম. এস. র‍্যাটলস্নেকের গন্তব্যস্থল ছিল অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউগিনি ও তৎসংলগ্ন এলাকা। অভিযানকালে হাক্সলি প্রচুর অমেরুদণ্ডী প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করেন এবং সেগুলো বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন। তার নমুনাগুলোর বেশিরভাগই ছিল নিডারিয়া পর্বের প্রাণী, ইউনিকর্ডেট ও সেফালোপড মলাস্ক। তিনি তার গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলগুলো চটজলদি ইংল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সেখানে অ্যাডওয়ার্ড ফোর্বস সেগুলো প্রকাশনার ব্যবস্থা করে দেন। হাক্সলির এসব মৌলিক গবেষণা তার জন্য অনন্য সম্মান বয়ে নিয়ে আসে এবং ১৮৫০ সালে তিনি যখন দেশে ফেরত আসেন, তখন রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে হাক্সলি ভূতাত্ত্বিক চার্লস লায়েল, উদ্ভিদবিজ্ঞানী জোসেফ ডাল্টন হুকার, দার্শনিক হারবার্ট স্পেন্সার, প্রকৃতিবিদ চার্লস ডারউইন প্রমুখের সংস্পর্শে আসেন। বিজ্ঞানকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া সে যুগে একটি বিরল ঘটনা ছিল। তখনকার অধিকাংশ প্রকৃতিবিদই ছিলেন শখের বিজ্ঞানী। কিন্তু হাক্সলি বিজ্ঞানকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং নৌবাহিনী থেকে একটি ভাতার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া বিজ্ঞান বিষয়ক নিবন্ধও তার আয়ের অন্যতম উৎস ছিল। তিনি লন্ডনের রয়েল স্কুল অব মাইন্সেও চাকরি জুটিয়ে নেন।[]

১৮৫৫ সালে হাক্সলি হেনরিয়েটা হিথর্নকে বিয়ে করেন। এই দম্পতি পরবর্তীতে একটি বিখ্যাত বংশধারা রেখে যান। তাদের সন্তান লিওনার্ড ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য জীবনীকার। লিওনার্ডের বড় ছেলে জুলিয়ান হাক্সলি বিংশ শতকে বিবর্তনীয় বিশ্লেষণের অন্যতম প্রধান লেখক ছিলেন। জুলিয়ানের ছেলে ফ্রান্সিস ছিলেন একজন বিখ্যাত নৃবিজ্ঞানী। লিওনার্ডের আরেক ছেলে স্যার অ্যান্ড্রু হাক্সলি ১৯৬৩ সালে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। জুলিয়ানের ভাই অ্যালডাস হাক্সলি ছিলেন একজন প্রখ্যাত সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও নাট্যকার। আরেক আত্মীয় লিওনার্ড জর্জ গোল্ডেন হাক্সলি ছিলেন পদার্থবিদ।[]

১৮৯৫ সালের ২৯ জুন টমাস হেনরি হাক্সলি সাসেক্সের ইস্টবোর্নে মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Desmond, Adrian J.। "T.H. Huxley"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০ 
  2. Waggoner, Ben। "Thomas Henry Huxley (1825-1895)"। University of California Museum of Paleontology। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১০ 
  3. Huxley T.H. 1889. Agnosticism: a rejoinder. In Collected Essays vol 5 Science and Christian tradition. Macmillan, London.

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:GLS Presidents টেমপ্লেট:Historical definitions of race