টাপ স্কট

টাপ স্কট
১৮৮৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে টাপ স্কট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
হেনরি জেমস হার্বার্ট স্কট
জন্ম(১৮৫৮-১২-২৬)২৬ ডিসেম্বর ১৮৫৮
টুরাক, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২৩ সেপ্টেম্বর ১৯১০(1910-09-23) (বয়স ৫১)
স্কোন, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামটাপ
উচ্চতা১.৭৫ মিটার (৫ ফুট ৯ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম
ভূমিকামাঝারিসারির ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩১)
১০ জুলাই ১৮৮৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৪ আগস্ট ১৮৮৬ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৭৮-১৮৮৬ভিক্টোরিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৮৫
রানের সংখ্যা ৩৫৯ ২,৮৬৩
ব্যাটিং গড় ২৭.৬১ ২২.৭২
১০০/৫০ ১/১ ৪/১৪
সর্বোচ্চ রান ১০২ ১২৩
বল করেছে ২৮ ১১০৮
উইকেট ১৮
বোলিং গড় - ২৭.৪৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং - ৬/৩৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/০ ৫৭/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ আগস্ট ২০১৭

হেনরি জেমস হার্বার্ট টাপ স্কট (ইংরেজি: Tup Scott; জন্ম: ২৬ ডিসেম্বর, ১৮৫৮ - মৃত্যু: ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১০) ভিক্টোরিয়ার টুরাক এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। পাশাপাশি জাতীয় দলের অধিনায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন টাপ স্কট[] দলে তিনি মূলতঃ মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

জন ও এলিজাবেথ স্কট দম্পতির সন্তান ছিলেন টাপ স্কট। তার বাবা মেলবোর্ন গ্যাস ও কোক কোম্পানিতে সচিব হিসেবে কাজ করেন। ভিক্টোরিয়ার ওয়েসলি কলেজ ও পরবর্তীতে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। সেখানেই তিনি ও তার অপর দুই ভাই চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।[]

তেরো বছর বয়সে ভিক্টোরিয়ার ক্রিকেটের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব স্যাম কস্টিকের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হন। এ প্রসঙ্গে কস্টিক মন্তব্য করেন যে, পুঁচকে ছেলেটির ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল।[] বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থাতেই তিনি সফলতার সাথে সেন্ট কিল্ডা ক্রিকেট ক্লাবে খেলেন।[] পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় স্কটের শারীরিক গড়ন ছিল উচ্চতায় ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি ও ওজনে ১১ স্টোন ৮ পাউন্ড।[]

স্কটের বিষয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক উল্লেখ করে যে, তিনি তার শুরুরদিকের জীবনে ফাস্ট বোলার ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যাটসম্যান হিসেবে সফলতা পান।[] ফেব্রুয়ারি, ১৮৭৮ সালে উনিশ বছর বয়সে ভিক্টোরিয়া ক্রিকেট দলের সদস্যরূপে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন তিনি। খেলায় তিনি মাত্র ২ ও ০ রান তোলেন। কিন্তু প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের উদ্বোধনী খেলায় ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করে তিনি নিজস্ব সেরা বোলিং করেন ৬/৩৩।[]

১৮৮২ সালে প্রথমবারের মতো স্কটের উত্তরণ লক্ষ্য করা যায় ও ১৮৮২-৮৩ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন।[] মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত ১৮৮৩-৮৪ মৌসুমের উদ্বোধনী খেলায় নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে হার না মানা ১১৪* রান তোলেন।[] তার এই মনোমুগ্ধকর ইনিংসের ফলেই ১৮৮৪ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য অস্ট্রেলিয়া দলে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।[] মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে স্কট নিজেকে আন্তর্জাতিকমানের খেলোয়াড়ে রূপান্তরিত হন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি চারটি প্রথম-শ্রেণীর শতরান করেন। তন্মধ্যে ১৮৮৪ সালে ওভালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে একটি শতরান করেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটার অল্প কিছুদিন পর তাকে অস্ট্রেলিয়া দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৮৮৪ সালে ইংল্যান্ড সফরে লন্ডনের দর্শনীয় স্থানগুলো পরিদর্শনে তিনি মাত্র দুই পেন্স বা টাপেন্স খরচ করেন। ফলশ্রুতিতে তিনি টাপ ডাকনামে ভূষিত হন। ১৮৮৪ সালে বিলি মারডকের নেতৃত্বাধীন দলে স্কট অত্যন্ত সফলভাবে নিজ দায়িত্ব পালন করেন।[] এ সফরে তিনি আশাতীত সাফল্য পান।[] ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত প্রধান টেস্টে মাত্র ১২ রান করলেও[] অন্য দুই টেস্টে বেশ রান করেন।

১৮৮৪-৮৫ মৌসুমে ইংল্যান্ডের হতাশাব্যঞ্জক ফলাফলের প্রেক্ষিতে মেলবোর্ন ক্লাব যথেষ্ট সজাগ ছিল। ক্লাবটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে, ইংল্যান্ড হয়তোবা কিছুসংখ্যক অস্ট্রেলীয় খেলোয়াড়দের বাদ দেয়ার কথা বলবে। এরফলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ সাবেক অধিনায়ক মারডক, ব্যানারম্যান ও পার্সি ম্যাকডোনেলকে দল থেকে বাদ দেয়া সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বয়েল, টম হোরানহিউ ম্যাসি নিজেদেরকেও দলে না খেলার ঘোষণা দেন। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষের মতানৈক্যের ফলে তৎকালীন অধিনায়ক বিলি মারডক পদত্যাগ করেন। এ প্রেক্ষিতে ১৮৮৬ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য স্কাটকে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[] এরফলে স্কট অভ্যন্তরীণ অসন্তোষে আক্রান্ত দলের অধিনায়ক মনোনীত হন। কিন্তু দলের নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সফরটিও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।[] এরপর চিকিৎসাশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জনের উদ্দেশ্যে সফর শেষেও ইংল্যান্ডে অবস্থান করেন।[] এ সফরের পর তিনি আর কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেননি।

চিকিৎসাশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করে অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসেন। ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাম্য এলাকা স্কোনে চিকিৎসা কর্মে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন।[১০] এরপর সেখানে তিনি মেয়র ও প্রধান ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১০ তারিখে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হলে ৫১ বছর বয়সে টাপ স্কটের দেহাবসান ঘটে। পরবর্তীকালে স্কোনে নতুন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হলে তার সম্মানার্থে শহরবাসী ঐ হাসপাতালের নামকরণ করে স্কট মেমোরিয়াল হাসপাতাল রাখেন।[১১]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. CricketArchive Player Oracle, Retrieved 12 August, 2017
  2. Robinson, p.49.
  3. "1910 Obituaries – H. J. H. Scott"Wisden Cricketers' Almanack। John Wisden & Co। ১৯১১। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১২ 
  4. "New South Wales v. Victoria in 1877–78"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১২ 
  5. "Victoria v. New South Wales in 1883–84"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১২ 
  6. "The Australians in England, 1884"Wisden Cricketers' Almanack। John Wisden & Co। ১৮৮৫। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১২ 
  7. "England v Australia (First Test), 1884"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১২ 
  8. Harte, p.141.
  9. Harte, p.142.
  10. Harte, p.143.
  11. Robinson, p.51.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
পূর্বসূরী
টম হোরান
অস্ট্রেলীয় টেস্ট অধিনায়ক
১৮৮৬
উত্তরসূরী
পার্সি ম্যাকডোনেল