ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | ৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৩ সিডনি, অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩১ অক্টোবর, ১৯১৭ (৩৩ বছর) বিরশেবা, ফিলিস্তিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১৭৩ সে.মি. | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ৩ আগস্ট ২০১৮ |
আলবার্ট টিবি কটার (ইংরেজি: Tibby Cotter; জন্ম: ৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৩ - মৃত্যু: ৩১ অক্টোবর, ১৯১৭) সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ১৯০৪ থেকে ১৯১২ সময়কালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন ‘টেরর কটার’ ডাকনামে পরিচিত টিবি কটার।
জন হেনরি কটার[১] ও মার্গারেট হে কটার দম্পতির ষষ্ঠ ও কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন টিবি কটার।[২] ৩ ডিসেম্বর, ১৮৮৩ তারিখে সিডনিতে তার জন্ম।
৩১ অক্টোবর, ১৯১৭ তারিখে বিরশেবায় সম্মুখ সমরে নিহত হন তিনি। মৃত্যুর তিন সপ্তাহ পূর্বে ৪ অক্টোবর, ১৯১৭ তারিখে তার এক ভাই জন বেলজিয়ামে সম্মুখ যুদ্ধে প্রাণ হারান। অপর দুই ভাই আর্থার ডেল ও এডউইন রেল দূর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন।[৩][৪][৫][৬][৭]
১৯০১ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পূর্বে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত খেলোয়াড়ী জীবনে ১১৫টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ২৩.৪৫ গড়ে ১২৩টি উইকেট পেয়েছিলেন।
মাত্র ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন টিবি কটার। হ্যারল্ড লারউডের সমান উচ্চতায় থাকা কটারকে ২০শ শতাব্দীর প্রথম দশকে সন্দেহাতীতভাবে সেরা ফাস্ট বোলারের মর্যাদা দেয়া হয়েছিল।[৮][৯] স্ট্যাম্প ভেঙ্গে ফেলার জন্য সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি।
৪ এপ্রিল, ১৯০৪ তারিখে প্রতিপক্ষীয় কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৪/৫ লাভ করেন।[১০] ৫ আগস্ট, ১৯০৫ তারিখে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দল ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে খেলতে নামে। প্রথম ইনিংসে ৭/১৫ পান ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/১৯ পান। তবে, বৃষ্টির কারণে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল।[১১] ২৯ এপ্রিল, ১৯১১ তারিখে গ্লেবের সদস্যরূপে সিডনির বিপক্ষে খেলেন। ইনিংসে তিনি ৭/৩৯ পান। এক পর্যায়ে উপর্যুপরী দুই বলে দুই উইকেট পান। এর নয় বল পর চার বলে চারটি উইকেট পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, অফ স্ট্যাম্প উপরে বল মুঠোবন্দী করেছিলেন তিনি।[১২]
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২১ টেস্টে অংশ নিতে পেরেছেন। তন্মধ্যে, চারবার খেলায় আট বা ততোধিক উইকেট পেয়েছেন। ৫২.০০ স্ট্রাইক রেটের অধিকারী তিনি যা কেবলমাত্র বিখ্যাত ফাস্ট বোলার ডেনিস লিলি’র তুলনায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল।[১৩] ২৮.৬৪ গড়ে ৮৯ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯০৪ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে টিবি কটারের।
৩ জুলাই, ১৯০৯ তারিখে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লিডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন ৫/৩৮ লাভ করেন।[১৪]
‘বিক্স সিক্স’ নামে পরিচিত শীর্ষস্থানীয় ছয় ক্রিকেটারের একজনরূপে মে, ১৯১২ সালে ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা থেকে নিজেকে বিরত থাকেন টিবি কটার। বাদ-বাকী অন্য পাঁচজন ছিলেন - ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং, হ্যানসন কার্টার, ক্লেম হিল, ভার্নন র্যান্সফোর্ড ও ভিক্টর ট্রাম্পার।[১৫][১৬][১৭][১৮] তারা পৃথক পৃথকভাবে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।[১৯] এরপর তাকে আর কখনো অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি।
তিনি তার সময়কালে অস্ট্রেলিয়ায় অন্যতম সেরা দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তার এই দূরন্ত গতির কারণে ইংরেজ দর্শকেরা তাকে ‘টেরর কটার’ ডাকনামে আখ্যায়িত করেছিল। তবে, বলকে সর্বদা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতেন না। ইংল্যান্ডে প্রথম সফরে ডব্লিউ. জি. গ্রেসের শরীর লক্ষ্য করে ফুল টস বল ছুড়েছিলেন তিনি।
৩১ বছর বয়সে এপ্রিল, ১৯১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ান ইম্পেরিয়াল ফোর্সে (এআইএফ) টিবি কটার যোগদান করেন। তার এই অন্তর্ভূক্তির ফলে এআইএফের যোগদানের প্রচারণায় বেশ সাড়া জাগায়।
ঘোড়ায় চড়ার তেমন যোগ্যতা না থাকা স্বত্ত্বেও তিনি ১ম অস্ট্রেলিয়ান লাইট হর্স রেজিম্যান্টে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে পোষণ করেন। গালিপলি সামরিক অভিযানের শেষদিকে তিনি অংশ নেন। এরপর তাকে ১২শ লাইট হর্সে স্থানান্তর করা হয় ও দ্বিতীয় গাজার যুদ্ধের প্রচণ্ড সংঘর্ষের মধ্যেও সেরা কর্মী হিসেবে তার প্রশংসা করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক লিখিত ইতিহাসে মন্তব্য করা হয় যে, যুদ্ধক্ষেত্রে অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। তিনি পদোন্নতি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।
এআইএফে কর্মরত অবস্থায় ১৯১৭ সালে একক অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ‘টেস্ট ম্যাচে’ অংশগ্রহণ করেন। দুই দলই ফিলিস্তিনে অবস্থানকারী অস্ট্রেলীয় ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হয়েছিল।[২০][২১][২২][২৩]
প্রথম এআইএফের নিযুক্ত ছিলেন তিনি। বিরশেবায় ৪র্থ লাইট হর্স ব্রিগেডে অশ্বারোহী সৈনিক হিসেবে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন টিবি কটার। বীরত্ব সহকারে বিরশেবা দখল করেন। অতঃপর তুর্কী অবস্থান থেকে গোলাবর্ষনে ৩১ অক্টোবর, ১৯১৭ তারিখে ফিলিস্তিনের বিরশেবা এলাকায় মাত্র ৩৩ বছর বয়সে নিহত হন টিবি কটার।[২৪]
গ্লেবের ২৬৬ গ্লেব পয়েন্ট রোডে পারিবারিক গৃহ মন্টিথে তার পরিবার ১৮৯১ সাল থেকে বসবাস করতে থাকে।[২৫] পরবর্তীতে বাড়ীটি জাতীয় সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। আলবার্টের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা উইলিয়াম হেনরি’র দেহাবসানের পর ১৯৫২ সালে বিক্রি করে দেয়া হয়। ১৯১১ সালে কটার লেন নামে পরিচিতি পায়।
২৫ জানুয়ারি, ১৯১৯ তারিখে আলবার্ট কটারের স্মরণে স্মারকসূচক ফলক নিউ সাউথ ওয়েলস-ভিক্টোরিয়ার মধ্যকার খেলার বিরতিকালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের মেম্বার্স প্যাভিলিয়নে উৎসর্গ করা হয়।[২৬][২৭]
ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের মুখোমুখি অ্যানজাক প্যারেডে আলবার্ট কটার ব্রিজ খুলে দেয়া হয়। ২০১৭ সালে কটারের শততম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেট এনএসডব্লিউ’র প্রিমিয়িার ক্রিকেটের চতুর্থ রাউন্ডকে দ্য টিবি কটার রাউন্ড নামে ঘোষণা করা হয়।[২৮]