টেড ম্যাকডোনাল্ড

টেড ম্যাকডোনাল্ড
১৯৩৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে টেড ম্যাকডোনাল্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
এডগার আর্থার ম্যাকডোনাল্ড
জন্ম(১৮৯১-০১-০৬)৬ জানুয়ারি ১৮৯১
লনচেস্টন, তাসমানিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২২ জুলাই ১৯৩৭(1937-07-22) (বয়স ৪৬)
ব্ল্যাকরড, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১১৪)
১৪ জানুয়ারি ১৯২১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৯ নভেম্বর ১৯২১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২৪–১৯৩১ল্যাঙ্কাশায়ার
১৯১১/১২–১৯২১/২২ভিক্টোরিয়া বুশরেঞ্জার্স
১৯০৯/১০–১৯১০/১১তাসমানিয়ান টাইগার্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১ ২৮১
রানের সংখ্যা ১১৬ ২৬৬১
ব্যাটিং গড় ১৬.৫৭ ১০.৪৩
১০০/৫০ –/– ১/২
সর্বোচ্চ রান ৩৬ ১০০*
বল করেছে ২৮৮৫ ৫৮৫০৪
উইকেট ৪৩ ১৩৯৫
বোলিং গড় ৩৩.২৭ ২০.৭৬
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১৯
ম্যাচে ১০ উইকেট ৩১
সেরা বোলিং ৫/৩২ ৮/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/– ৯৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

এডগার আর্থার টেড ম্যাকডোনাল্ড (ইংরেজি: Ted McDonald; জন্ম: ৬ জানুয়ারি, ১৮৯১ - মৃত্যু: ২২ জুলাই, ১৯৩৭) তাসমানিয়ার লনচেস্টনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়াতাসমানিয়া এবং প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন টেড ম্যাকডোনাল্ড

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে স্বল্প কয়েকটি খেলায়ই টেড ম্যাকডোনাল্ড ভিক্টোরিয়ার পক্ষে খেলেছেন। কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের পরপরই রাজ্যদলীয় খেলায় ইনিংসে আট উইকেট লাভ করে নিজের সক্ষমতা তুলে ধরেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

খুবই দ্রুতগতিসম্পন্ন ফাস্ট বোলার হিসেবে টেড ম্যাকডোনাল্ডের অতীব সুনাম ছিল। তবে, বোলিং সহায়ক পিচেও অনেক সময় তিনি সহায়তা পেতেন না। কিন্তু, ১৯২১ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড সফরে অপ্রত্যাশিতভাবে সুন্দর বোলিংশৈলী প্রদর্শন করে সকলের নজর কাড়েন। তিনি ও জ্যাক গ্রিগরি ইংরেজ ব্যাটসম্যানদেরকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেন।

১৪ জানুয়ারি, ১৯২১ তারিখে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে টেড ম্যাকডোনাল্ডের। জন ইভান্সের হাঁটু ব্যাটিংকালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ব্যাটিংকালীন অ্যান্ডি ডুকাটের ব্যাটের অংশ ভেঙ্গে যায় ও উইকেটে আঘাত হানে। যখন গ্রিগরি উভয় দিক দিয়ে বলকে অনবরত সুইং করাচ্ছিলেন; তখন অন্যদিকে ম্যাকডোনাল্ড উইকেটে দর্শনীয়ভাবে বোলিং করে যাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে এ জুটি সিরিজে ৪৬ উইকেট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন।

১৯২০-২১ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন টেস্ট খেলার জন্য মনোনীত হন। ঐ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করলেও তিনি খুব কমই সফলতা পেয়েছিলেন। উইকেট পিছু ৬৫ রান দিয়ে ছয় উইকেট লাভ করেন। পরবর্তী গ্রীষ্মকালে তিনি আশাতীত সফলতা পান। ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে আট উইকেট দখল করেন। লর্ডস ও হেডিংলিতে দলের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ঐ সিরিজেও তার দল জয়লাভ করেছিল। টাইমসের প্রতিবেদনে ১৯২৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ইংল্যান্ড গমনে জর্জ ফ্রান্সিস ও জর্জ জনের বোলিংকে অস্ট্রেলীয় বোলার - জ্যাক গ্রিগরি ও টেড ম্যাকডোনাল্ডের ১৯২১ সালের ইংল্যান্ড সফরকালীন বোলিংয়ের সাথে তুলনা করা হয়েছিল।[]

পূর্ববর্তী গ্রীষ্মকালে তার অসামান্য অবদানের কথা বিবেচনায় এনে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।

ইংল্যান্ড সফরের পর ১৯২১-২২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন টেস্টে অংশ নেন। তবে এ সফরটিতেই তিনি তার শেষ টেস্টগুলোতে খেলেছিলেন। ১৯২১ সালের এক বর্ষপঞ্জীতেই তার টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ ছিল।

ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

এরপর পেশাদার ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে অংশ নেন। নেলসনের পক্ষে ইংরেজ লীগটিতে খেলেছিলেন। ১৯২৪ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেন। এখানেও তিনি তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯২৫ সালে পুরো মৌসুম খেলে ২০৫ উইকেট দখল করেন। ১৯২৬ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত পাঁচ মৌসুমে ল্যাঙ্কাশায়ার দল চারবার কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করে যা কাউন্টি দলটির ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বাধিক সফলতম সময় ছিল। ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে সর্বমোট ১০৫৩ উইকেট পান। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ল্যাঙ্কাশায়ার কর্তৃপক্ষ ১৯২৯ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে দ্রুততম সময়ে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের জন্য মনোনীত করে। এ সময়ে তিনি মাত্র পাঁচ মৌসুম কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেছিলেন।

টেড ম্যাকডোনাল্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন আকস্মিকভাবে শেষ হয়ে যায়। ১৯৩০ সাল থেকে তার খেলার ধরন পাল্টে যায় ও ক্রীড়াশৈলী দূর্বলতর হতে থাকে। তবে তিনি তখনো শতাধিক উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু, ১৯৩১ সালে তার ক্রীড়াশৈলী পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়। পুরো মৌসুমে তিনি মাত্র ২৬ উইকেট লাভ করতে পেরেছিলেন। ফলশ্রুতিতে অর্ধেক খেলায় অংশ নেয়ার পর কাউন্টি দল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। মৌসুম শেষে তিনি পুনরায় ল্যাঙ্কাশায়ার লীগে ফিরে যান।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলে লঞ্চেস্টন ফুটবল ক্লাবের সদস্যরূপে অংশ নিয়েছেন।[] এছাড়াও, এসেনডন ফুটবল ক্লাবের পক্ষে ১৯১২ সালে দুই খেলায় ও ফিটজরয় ফুটবল ক্লাবের পক্ষে ১৯১৩ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত ৪৬ খেলায় অংশ নেন।

২২ জুলাই, ১৯৩৭ তারিখে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে ল্যাঙ্কাশায়ারের ব্ল্যাকরড এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। ঐদিন সকালে তিনি তখন বোল্টনের কাছাকাছি ম্যানচেস্টার-চর্লি রোডে নিজ গাড়ী চালনারত অবস্থায় অন্য গাড়ীর মুখোমুখি সংঘর্ষের কবলে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "A Great Finish at Scarborough", The Times, London (43439), পৃষ্ঠা 5, ৬ সেপ্টেম্বর ১৯২৩ 
  2. "CITY v. LAUNCESTON."Examiner (Launceston, Tas. : 1900–1954)। Launceston, Tas.: National Library of Australia। ২৩ আগস্ট ১৯০৯। পৃষ্ঠা 3 Edition: DAILY। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০১১ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • Maplestone, M., Flying Higher: History of the Essendon Football Club 1872–1996, Essendon Football Club, (Melbourne), 1996. আইএসবিএন ০-৯৫৯১৭৪০-২-৮
  • Peter Pierce, "McDonald, Edgar Arthur (Ted) (1891–1937)", pp.pp 249–250 in Australian Dictionary of Biography, Vol.10, Melbourne University Press, (Melbourne), 1986.
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
জর্জ গিয়েরি
পেশাদার
নেলসন ক্রিকেট ক্লাব

১৯২২–১৯২৪
উত্তরসূরী
জিমি ব্লাঙ্কেনবার্গ