ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | এডওয়ার্ড জর্জ উইনিয়ার্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ১ এপ্রিল, ১৮৬১ সাহারানপুর, ব্রিটিশ ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩০ অক্টোবর ১৯৩৬ পেন, বাকিংহামশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭৫)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ |
এডওয়ার্ড জর্জ উইনিয়ার্ড, ডিএসও, ওবিই (ইংরেজি: Teddy Wynyard; জন্ম: ১ এপ্রিল, ১৮৬১ - মৃত্যু: ৩০ অক্টোবর, ১৯৩৬) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের সাহারানপুর এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৬ থেকে ১৯০৬ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন টেডি উইনিয়ার্ড।
১ এপ্রিল, ১৮৬১ তারিখে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের সাহারানপুর এলাকায় টেডি উইনিয়ার্ডের জন্ম। তার পিতা বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে ছিলেন। ১৮৭৪ থেকে ১৮৭৭ সময়কালে উইন্ডেলশামের উডকট হাউজ স্কুল, চার্টারহাউজ স্কুলে সফলতার সাথে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপর ১৮৭৯ সালে অক্সফোর্ডের সেন্ট এডওয়ার্ডস স্কুল থেকে চলে আসেন।
ভারতে থাকাকালে ক্রিকেট খেলতেন। একটি খেলায় ১২৩ ও ১৯৬ করেন। উভয় ক্ষেত্রেই অপরাজিত ছিলেন তিনি। ১৮৮৭ সালে ডাবলিনে ইনকগনিটির সদস্য হিসেবে ফিনিক্স পার্কের বিপক্ষে ২৩৩ রান তুলেছেন।[২]
১৮৮১ সালে ওয়ারউইক মিলিশিয়া ১ম রেজিমেন্টে লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশনপ্রাপ্ত হন। মে, ১৮৮৩ সালে নিয়মিতবাহিনীর সদস্যরূপে কিংস লিভারপুল রেজিমেন্টে স্থানান্তরিত হন। এ পর্যায়ে ব্রিটিশ ভারতে চলে যান ও ১৮৮৫-৮৬ সালে বার্মা অভিযানে নেতৃত্ব দেন। পরের বছর ডিস্টিংগুইসড সার্ভিস অর্ডার (ডিএসও) লাভ করেন। ১৯ মার্চ, ১৮৯০ তারিখে ক্যাপ্টেন পদে উত্তীর্ণ হন। একই বছর ওয়েলস রেজিমেন্টে স্থানান্তরিত হন। ১৮৯৯ সালের শেষদিক পর্যন্ত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ভলান্টিয়ার্সের অ্যাডজুটেন্ট ছিলেন।[৩] ২৬ ডিসেম্বর, ১৮৯৯ তারিখে থেকে আগস্ট, ১৯০২ সাল পর্যন্ত স্যান্ডহার্স্টের রয়্যাল মিলিটারি কলেজের উপদেষ্টা ছিলেন। এরপর নিজ রেজিমেন্টে ফিরে যান।[৪] ১৯০৩সালে এখান থেকে অবসর নেন।[১]
কলেজে ক্রিকেট খেলার দায়িত্বভার তার উপর অর্পণ করা হয়েছিল। তিনি অফিসার ক্যাডেটস বনাম ডব্লিউ. জি. গ্রেস একাদশের খেলা আয়োজন করেছিলেন। দুই দিন পূর্বে লিখিত পত্রে গ্রেস জানান যে, তিনি খেলতে পারবেন না। এ অবস্থায় ক্যাডেটদের খেলা দেখানোর বিষয়ে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আবরণ পাল্টে ফেলেন ও নকল দাঁড়ি লাগিয়ে খেলায় অংশ নেন। সফরকারী দলের সাথে ব্যাটিং করে অনেক রান তুলেন ও রিটায়ার হার্ট হন। মধ্যাহ্নভোজনে দাঁড়িবিহীন ক্যাপ নিয়ে আসলেও এ পার্থক্য কেউ ধরতে পারেননি।[১]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সেপ্টেম্বর, ১৯১৪ সালে তাকে মেজর উপাধিতে কিংস লিভারপুল রেজিমেন্টের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর মে, ১৯১৫ সালে আর্মি অর্ডন্যান্স কোরে সংযুক্ত করা হয়। নভেম্বর, ১৯১৬ সালে অল্ডারশটে মিডলসেক্স রেজিমেন্টের নিয়ন্ত্রণাধীন থর্নহিল লেবার ক্যাম্পে কমান্ড্যান্ট হিসেবে স্থানান্তরিত হন। অবশেষে এপ্রিল, ১৯১৯ সালে সামরিক জীবন থেকে অবসর নেন তিনি। এ সময় তাকে অফিসার অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার উপাধিতে ভূষিত করা হয়।[১]
প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। ১৮৭৮ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে খেলেন। তন্মধ্যে, ১৮৮৬ থেকে ১৮৯৪ সাল পর্যন্ত খেলাগুলো প্রথম-শ্রেণীর ছিল না। ১৮৯৬ থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত কাউন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯১২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে এমসিসি’র সদস্যরূপে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে ৩৩.০০ গড়ে ১৩ সেঞ্চুরি সহযোগে ৮,৩১৩ রান তুলেছেন। ১৮৯৬ সালে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ২৮৬ রান করেছিলেন।
১৮৯৬ সালে ৪৯.৪২ গড়ে ১,০৩৮ রান তুলে জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রাহক হন। অথচ, ১৮৯৯ সালে ৪১.৩২ গড়ে ১,২৮১ রান তুলেও পঞ্চদশ স্থান অধিকার করেছিলেন।[১] ঐ একই বছর সমারসেটের বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে জুটিতে সতীর্থ সেনা কর্মকর্তা রবার্ট পুরের সাথে চারশতাধিক রানের জুটি গড়েন। অদ্যাবধি, কাউন্টি ক্রিকেটে ঐ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের স্বীকৃতি পেয়ে আসছে।[৫]
১৯০০ থেকে ১৯০৫ সময়কালে বোর যুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দলের প্রধান ব্যাটসম্যান ও সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ও মেজর পুর দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে গেলে হ্যাম্পশায়ার দল মারাত্মকভাবে ব্যাটিং খড়ার কবলে পড়ে।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটি টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে টেডি উইনিয়ার্ডের। ১৮৯৬ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ১৯০৫-০৬ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশ নিয়েছেন। ১০ আগস্ট, ১৮৯৬ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে টেডি উইনিয়ার্ডের। ১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সফরের জন্য মনোনীত হলেও সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকায় যাননি। ১৯০৭-০৮ মৌসুমে আবারও অস্ট্রেলিয়া সফরে অধিনায়কের দায়িত্বভার দেয়া হলেও পারিবারিক কারণে যাননি।
১৯০৬-০৭ মৌসুমে টেস্টবিহীন সফরে নিউজিল্যান্ডে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের নেতৃত্ব দেন। এরপর ১৯০৪-০৫ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন ও ৪০.১৪ গড়ে ৫৬২ রান তুলে দলের শীর্ষ রান সংগ্রাহক হন। ১৯০৭ সালে উত্তর আমেরিকা, ১৯০৯ সালে মিশর, ১৯০৯-১০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ১৯২৩ সালে কানাডায় এমসিসি দলের সাথে খেলেন। বাষট্টি বছর বয়সে এসেও আন্ডারআর্ম বোলিংয়ে দলের শীর্ষ উইকেট শিকারী ছিলেন।
১৯২০ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত এমসিসি কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও, ফ্রি ফরেস্টার্সের সদস্য ছিলেন টেডি উইনিয়ার্ড। ১৯০৮ সালে ইংল্যান্ডে সাউথ আফ্রিকান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
ক্রিকেটের পাশাপাশি শৌখিন ফুটবলার হিসেবেও যথেষ্ট সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৮৮১ সালে ওল্ড কার্থুসিয়ান্সের সদস্যরূপে এফএ কাপের চূড়ান্ত খেলায় অংশ নেন। ওল্ড এটোনিয়ান্সের বিপক্ষে ৩—০ গোলে জয় পায় তার দল। খেলায় তিনি প্রথম গোলটি করেছিলেন।
৩০ অক্টোবর, ১৯৩৬ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে বিকন্সফিল্ডের কাছাকাছি নটি গ্রীনে অবস্থিত নিজ গৃহ দ্য রেড হাউজে টেডি উইনিয়ার্ডের দেহাবসান ঘটে। বাকিংহামশায়ারের পেনের সমাধিক্ষেত্রে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।