টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক হলো টেলিযোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু নোডের আন্তঃসংযোগ যার মাধ্যমে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত নোডসমূহের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান করা যায়। যোগাযোগ পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে টেলিযোগাযোগ মাধ্যমসমূহ বিভিন্ন রকম প্রযুক্তি ব্যবহার করে বার্তা অথবা সংকেত আদান-প্রদান করতে পারে। যেমন সার্কিট সুইচিং, ম্যাসেজ সুইচিং ও প্যাকেট সুইচিং।
একাধিক নোড একাধিক নেটওয়ার্কে প্রবেশের মাধ্যমে একটি মূল নোড থেকে গন্তব্য নোডে বার্তা প্রেরণ করতে সহযোগিতা করতে পারে। এই বার্তা নির্দিষ্ট গন্তব্যে প্রেরণের উদ্দেশ্যে কিছু রাউটিং ফাংশন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত সকল নোডকে একটি নেটওয়ার্ক ঠিকানা প্রদান করে থাকে, যাতে কোন নেটওয়ার্কে নির্দিষ্ট নোডের অবস্থান শনাক্ত করা যায়। একটি নেটওয়ার্কের সকল ঠিকানার সংগ্রহকে ইংরেজিতে এড্রেস স্পেস বলা হয়।
টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের উদাহরণ হলো, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট, পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন), বৈশ্বিক টেলেক্স নেটওয়ার্ক, বৈমানিক কাজে ব্যবহৃত এসিএআরএস নেটওয়ার্ক।
সাধারণভাবে দূর যোগাযোগ অন্তর্জাল তিনটি ধারণাগত অংশে বিভক্ত। এদের আবার স্তর হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। (কারণ ধারণা করা হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাস্তবিকভাবেই এই তিনটি অংশ স্তরে স্তরে সাজানো অন্তর্জাল হিসেবে কাজ করে।):
স্কেল অনুযায়ী কম্পিউটার নেটওয়ার্কের প্রকার |
---|
ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ডেটা নেটওয়ার্ক সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ডেটা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের নেটওয়ার্কের বাইরের সম্পদও ব্যবহার করতে পারে। ইন্টারনেট হল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ডেটা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইন্টারনেটওয়ার্কিং করার উপযুক্ত উদাহরণ।
ইন্টারনেটের মত আইপি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত টার্মিনালসমূহ আইপি ঠিকানার মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়। ইন্টারনেট প্রোটোকল স্যুট (টিসিপি/আইপি) বার্তা লেনদেনের জন্য নিয়ন্ত্রণ ও রাউটিং প্রদান করে থাকে। সহজে বার্তা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন রকম নেটওয়ার্ক সংযুতি ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন:
তিনটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ম্যান-কে ল্যান বা ওয়েন থেকে আলাদা করে:
ডেটা সেন্টার নেটওয়ার্কসমূহ বিভিন্ন যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য টিসিপি/আইপির উপর বেশ নির্ভর করে থাকে। ডেটা সেন্টারসমূহ হাজার হাজার উচ্চ শক্তির ও উচ্চগতির সার্ভারকে সংযুক্ত করে রাখে। তাই ডেটা সেন্টার নেটওয়ার্কের গঠন এর কার্যকারিতা, পর্যায়ক্রমিক সম্প্রসারণের স্বাচ্ছন্দ্য, যোগাযোগের গতি নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। [২]
সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মুরের আইনে বর্ণিত, ট্রানজিস্টরের ঘনত্ব প্রতি দুই বছরে দ্বিগুণ হওয়ার কথা, ডিজিটাল কম্পিউটারের গতি এবং ক্ষমতার উন্নতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। যা টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কসমুহের ক্ষমতা এবং গতির উন্নয়নের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। টেলিযোগাযোগে এই সাদৃশ্যতাকে ২০০৪ সালে ফিল এডহলম কর্তৃক প্রস্তাবিত, এডহলম'স ল বা এডহলম'সের আইন হিসেবে অভিহিত করা হয়। [৩] প্রস্তাবিত এই আইনমতে বলা হয়, টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের ব্যান্ডউইডথ প্রতি ১৮ মাসে দ্বিগুণ হয়, যা ১৯৭০ সালে হতে তথ্য পর্যালোচনা করে প্রমাণিত হয়েছে। [৩][৪] এই একই প্রবণতা ইন্টারনেট, মোবাইল, বেতার, লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এবং পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়।[৩][৪] এই উন্নয়নটি ধাতব-অক্সাইড-সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তির বিকাশে দ্রুত অগ্রগতির ফলাফল। [৫]