টোকিও বন্দর | |
---|---|
বিস্তারিত | |
পরিচালনা করে | টোকিও বন্দর ককর্তৃপক্ষ |
মালিক | জাপান সরকার |
পোতাশ্রয়ের ধরন | কৃত্রিম /প্রকৃতিক |
পোতাশ্রয়ের আকার | ৫২ বর্গকিলোমিটার (২০ মা২) |
জমির আয়তন | ১০ বর্গকিলোমিটার (৩.৯ মা২) |
আকার | ৬৩ বর্গকিলোমিটার (২৪ মা২) |
উপলব্ধ নোঙরের স্থান | ২০৫ |
কর্মচারী | ৩০,০০০[১] |
পরিসংখ্যান | |
জলযানের আগমন | ৩১,৬৫৩ টি (২০০৮)[২] |
বার্ষিক কার্গো টন | ৯০,১০,০০০ টন (২০০৮ সাল)[২] |
বার্ষিক কন্টেইনারের আয়তন | ৩৬,৯৬,০০০ টিইইউ (২০০৭)[৩] |
টোকিও বন্দর[৪] হল জাপান এর হোনশু দ্বীপ এর প্রধান ও বৃহত্তম বন্দর।এটি জাপান এর বৃহত্তম বন্দর গুলোর মধ্যে অন্যতম।বন্দরটি টোকিও উপসাগর এর তীরে অবস্থিত।বন্দরটি টোকিও শহর এর পণ্য পরিবহন করে থাকে।এছাড়া এই বন্দর দিয়ে বৃহত্তর হোনশু দ্বীপ এর পণ্য দ্রব্য পরিবহন করা হয়।বন্দরটি বিশ্বের বেশির ভাগ বন্দরের সঙ্গে যুক্ত এবং এই বন্দর থেকে ওই সব বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে।বন্দরটির গভীরতা ১০ মিটার বা ৩১ ফুটের বেশি।বন্দরটি হোনশু দ্বীপের পূর্ব দিকে অবস্থিত।প্রাচীন সময় থেকেই এই বন্দরটি জাপান এর সমুদ্র বাণিজ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছে।বন্দরটি বছরে ৪৫ লক্ষ কন্টেইনার পরিবহন করে এবং ২০০ মিলিয়ন টন কার্গো পণ্য পরিবহন করছে।বন্দরটি মোট ৬৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে।এর মধ্যে ৫২.৫ বর্গ কিলোমিটার এলাককা পোতাশ্রয় ও বাকি ১০.৫ বর্গ কিলোমিটার স্থল ভূমি। টোকিও বন্দরে মোট ৩০ হাজার কর্মী নিযুক্ত রয়েছে। বন্দরটিতে মোট ২০৫ টি জেটি চালু রয়েছে।বন্দরটিতে কন্টেইনার পণ্য ও কার্গো পণ্য পরিবহনের সুষ্ঠ ব্যবস্থা রয়েছে।বন্দরটিতে যাত্রী পরি বহনের পৃথক টার্মিনাস রয়েছে।
টোকিও বন্দরটি হোনশু দ্বীর এর পূর্ব দিকে অবস্থিত।টোকিও উপসাগর এর তীরে বন্দরের অবস্থান।এটি সমুদ্র সমমতল থেকে ০ থেকে ২ মিটার উচু। বন্দরটি ৩৫.৪১ ডিগ্রী উত্তর ও ১৩৯.৬৮ ডিগ্রী পূর্বে অস্থান করছে।টোকিও শহর এর সমুদ্র তীরে এর অবস্থান।এই বন্দরটি প্রশান্ত মহাসাগর এর পশ্চিম দিকে অবস্থান করছে।
টোকিও বন্দরের অগ্রদূত, এডো বন্দর[৫] (এডো মিনাটো) জাপানের সামুদ্রিক পরিবহনের ইতিহাসে এবং এডোর লোকদের জন্য পণ্য সরবরাহের স্থান হিসাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। টোকুওয়াওয়া শোগুন্টের সময় টোকিও বন্দরকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়নি, যদিও প্রতিবেশী ইয়োকোহামা বন্দর এই ধরনের বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
মেইজি যুগে বন্দরের উন্নয়নকে উতসাহিত করা হয়েছিল একটি প্রকল্পের দ্বারা। এই প্রকল্পে সুমিদা নদীর মোহনা উন্নত করার উদ্দেশ্যে চ্যানেলগুলি খনন করা হয় এবং সুসকিশিমা এবং শিবৌড়ায় জমি পুনরূদ্ধার করা হয়।[৫]
১৯৩৩ সালে কান্টো ভূমিকম্পটি একটি পূর্ণ-স্কেল টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের সূচনা বিন্দু হিসাবে কাজ করে, যা ১৯২৫ সালে হিনোডের প্রথম টার্মিনাল খোলার সাথে সাথে শীর্ষস্থানীয় হয়।[৫] শিবৌরা এবং তকেশিবা আরও দুটি টার্মিনাল সমাপ্তির পাশাপাশি, টোকিও বন্দর ২০ মে, ১৯৪১ সালে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।[৫]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বন্দরের উন্নয়ন জাপানের শিল্পের পুনর্গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে ওঠে এবং টয়োসু কয়লা টার্মিনাল, হারুনি টার্মিনাল ও একের পর এক অন্যান্য টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হয়।[৫]
১৯৬০- এর দশকের শেষ দিকে, কনটেইনার পরিবহন ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী জাহাজী পণ্য পরিবহনের একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৬৭ সালে, নিপ্পন কনটেইনার টার্মিনাল, লিমিটেড (এনসিটি), বন্দরটির (এবং জাপানের) প্রথম কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা সংস্থা হয়ে ওঠে। একই বছর, একটি জাপানি বন্দরে কল করার প্রথম কন্টেইনারবাহী জাহাজটি এনসিটি দ্বারা পরিচালিত হয়।[৫] এটি টোকিও বন্দরকে একটি বড় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বন্দর হিসাবে স্থাপনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল।[৬]
টোকিও বন্দর এর পোতাশ্রয়টি প্রাকৃতিক ।এটি প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমে টোকিও উপসাগর এর পশ্চিম কূলে গড়ে উঠেছে।এই উপসাগরটি ও প্রশান্ত মহাসাগর একটি সংর্কীন জল পথ দ্বারা যুক্ত ফলে এই বন্দরের পোতাশ্রয়টি মহাসাগরীয় দূর্যোগ থেকে সুরক্ষিত থাকে। পোতাশ্রয়টি গভীর।এই পোতাশ্রয় এর গড় গভীরতা ১০ মিটার। ফলে বন্দরটিতে বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে।
বন্দরটি ২০৫ টি জেটির সংযোগে গড়ে উঠেছে।জেটি গুলি খুবই আধুনিক ও সংয়ক্রিয়।এখানে কন্টেইনার টার্মিনাস রয়েছে।এই টার্মিনাসটি ৪.৫ হাজার মিটার বা ৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ।এই টার্মিনাসে মোট ১৫ টি জেটি রয়েছে।খনিজ তেলের জন্য নির্ধারিত টার্মিনাসটি ৩.৪ হাজার মিটার দীর্ঘ।এই টার্মিনাসে মোট ৭ টি জেটি রয়েছে।এর মোট আয়তন ৯ লক্ষ বর্গ মিটার।
টোকিও বন্দরের তিনটি কন্টেইনার টার্মিনাল রয়েছে, যার আয়তন ১৫,০৪,৭১৮ বর্গ মিটার। টার্মিনালগুলি মিলিত দৈর্ঘ্য ৪,৪৭৯ মিটার এবং বার্থ রয়েছে ১৫ টি।
এই বন্দর দ্বারা জাপানে প্রধানত খনিজ তেল, কয়লা, চা, প্রভৃতি আমদানি করা হয়।বন্দরটি দ্বারা বিদেশে যন্ত্রপাতি ,ইস্পাাত, প্রভৃতি রপ্তানি করা হয়।
সমগ্র হোনশু দ্বীপ এই বন্দরের পোতাশ্রয় এর অন্তর্গত।
২০০৭ সালে টোকিও বন্দর ৯,০৮,১০,০০০ টন কার্গো এবং ৩৬,৯৬,০০০ টিইইউ কন্টেইনার পরিচালনা করে। এটি জাপানের ব্যস্ততম কার্গো বন্দর এবং দেশের বৃহত্তম কনটেইনার বন্দরগুলির একটি করে তুলেছে।[২]
বছর | ২০০৪ | ২০০৫ | ২০০৬ |
---|---|---|---|
জাহাজ (সংখ্যা) | ৩২,৬৩৩ | ৩২,১৮০ | ৩১,৬৫৩ |
বৈদেশিক বাণিজ্য (ট্রিলিয়ন ¥) | ৯.৯ | ১০.৮ | ১২ |
কন্টেইনার (টিইইউ) | ৩,৩৫৮,০০০ | ৩,৫৯৮,০০০ | ৩,৬৯৬,০০০ |
কন্টেইনার* | ৪২,৯৭২,000 | ৪৩,২৮১,000 | ৪২,৯৮৭,000 |
অন্যান্য কার্গো* | ৪৮,৪৫৫,০০০ | ৪৮,৭৫১,০০০ | ৪৭,৮২৪,০০০ |
মোট*' | ৯১,৪২৭,০০০ | ৯২,০৩২,০০০ | ৯০,৮১১,০০০ |