ঠাকুরগাঁও সদর | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() মানচিত্রে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৬°১′১৫″ উত্তর ৮৮°২৮′৭″ পূর্ব / ২৬.০২০৮৩° উত্তর ৮৮.৪৬৮৬১° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | ঠাকুরগাঁও জেলা |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৮৪ |
আয়তন | |
• মোট | ৬৮৩.৪৫ বর্গকিমি (২৬৩.৮৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ৪,২৭,৯১৩ |
• জনঘনত্ব | ৬৩০/বর্গকিমি (১,৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৫% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫১০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ৯৪ ৯৪ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ![]() |
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা এবং এটি রংপুর বিভাগের সবচেয়ে বড় উপজেলা। ।[২] সুপ্রাচীন ইতিহাসের স্বাক্ষী উত্তরের শান্ত জনপদ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা একটি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ।
এ উপজেলার উত্তরে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলা ও বোদা উপজেলা, দক্ষিণে পীরগঞ্জ উপজেলা ও দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা, দেবীগঞ্জ উপজেলা ও দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ও রাণীশংকৈল উপজেলা।
ঠাকুর-অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের কারণে স্থানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়েছে। ১৮৬০ সালে এটি মহকুমা হিসেবে ঘোষিত হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের আদি নাম ছিল নিশ্চিন্তপুর। নামটি উচ্চারিত হলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নিশ্চিন্তে বসবাসের উপযোগী কোনও জনপদের ছবি।
ঠাকুরগাঁওয়ের নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, বর্তমানে যেখানে জেলার অফিস-আদালত অবস্থিত সেখান থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে আকচা ইউনিয়নের একটি মৌজায় নারায়ণ চক্রবর্তী ও সতীশ চক্রবর্তী নামে দুই ভাই বসবাস করতেন। সম্পদ ও প্রভাব প্রতিপত্তির সুবাদে তাদের খুব নামডাক ছিল। সেখানকার লোকজন চক্রবর্তী বাড়িকে ঠাকুরবাড়ি বলতেন। পরে স্থানীয় লোকজন এই জায়গাকে ঠাকুরবাড়ি থেকে ‘ঠাকুরগাঁও’ বলতে শুরু করে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ঠাকুরগাঁও। [৩]
ইউনিয়ন ২২টি। ১. রুহিয়া, ২. আখানগর, ৩. আকচা, ৪. বড়গাঁও, ৫. বালিয়া, ৬. আউলিয়াপুর, ৭. চিলারং, ৮. রহিমানপুর, ৯. রায়পুর ১০. জামালপুর, ১১. মোহম্মাদপুর, ১২. সালন্দর, ১৩. গড়েয়া, ১৪. রাজাগাঁও, ১৫. দেবীপুর, ১৬. নারগুন, ১৭. জগন্নাথপুর, ১৮. শুখানপুকুরী, ১৯. বেগুনবাড়ী , ২০. রুহিয়া পশ্চিম, ২১. ঢোলারহাট, ২২. সেনুয়া।
চেয়ারম্যানঃ প্রশাসক (পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: খাইরুল ইসলাম)
ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ)ঃ পদ শূন্য
ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা)ঃ পদ শূন্য
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ৯৩৩টি।
জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ অনুসারে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিক্ষার হার ৭৬.৮৫% ।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় সরকারী, বেসরকারী, এনজিওভিত্তিক মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর সংখ্যা ১০২২টি :
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা শিক্ষার দিক দিয়ে বেশ উন্নত। এই উপজেলায় উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ হলো:
১। ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়: ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী একটি বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত। এটি ২০১৬ সালে দেশসেরা বিদ্যালয় হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছে। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নাম জনাব পিযূষ কান্ত রায়।
২। ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়: এই বিদ্যালয়টি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত উপজেলার একমাত্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত।
৩। ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ: ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঠাকুরগাঁও শহর সংলগ্ন টাঙ্গন নদীর দক্ষিণ-পূর্বে নদীর পাশেই সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে ৩৩ একর জমির উপর কলেজটি অবস্থিত। ১ মার্চ ১৯৮০ সালে ঠাকুরগাঁও কলেজকে জাতীয়করণ করে নামকরণ করা হয় ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ। বর্তমান অধ্যক্ষের নাম প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া মন্ডল।
৪। ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজ: ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজ এই উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঠাকুরগাঁও শহরে প্রায় ১ একর জমির উপর কলেজটি অবস্থিত। এই কলেজ বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ১ জুলাই ১৯৮৫ সালে কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়।
৫। মাদরাসাতুল হুদা আল ইসলামিয়্যা আস সালাফিয়্যাহ: সদর উপজেলার ৮নং রহিমানপুর ইউনিয়নে লক্ষ্মীপুরে অবস্হিত একটি বহুমুখী আধুনিক মাদরাসা। ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। যেখানে পৃথক ভাবে বালক ও বালিকা শাখা রয়েছে।
এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ঠাকুরগাঁও সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, আবুল হোসেন সরকার মহাবিদ্যালয়, গড়েয়া ডিগ্রী কলেজ, ভূল্লী ডিগ্রী কলেজ, ভেলাজান উচ্চ বিদ্যালয়, রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীরহাট উচ্চ বিদ্যালয়,মুন্সীরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,মুজাবর্ণী সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল, ইকো পাঠশালা, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও শীঘ্রই এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে।
লোকসাহিত্য, লোকনৃত্য, ধামের গান, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, বাউল, মুর্শিদি, মারফতি, পালা গান, কবিগান, বিচার গান, কোয়ালী গান, বিষহরি গান, সত্যপীরের গান, কীর্তন, বিয়ের গান, যাত্রা, আদিবাসীদের গান, জারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁওয়ের লোকসংস্কৃতির অবদান রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত দুটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা আছে। সেগুলো হচ্ছে ঢোলারহাট শিব মন্দির ও জামালপুর জামে মসজিদ।[৪]
(আদমশুমারী ২০১১) এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় মোট জনসংখ্যা- ৫৮১২২৭ জন (আদমশুমারী ২০১১)মুসলিম - ৪৩০৭১২জনহিন্দু -১৪৪২১৯জনখ্রিষ্টান-৩৬৪২জনউপজাতি-৩৭২১জন। ভোটার সংখ্যা- ৩৬৮৯১২। [৫]
জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোর মতো সদর উপজেলাও বহুলাংশে কৃষি নির্ভর। প্রধান কৃষিজাত দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ধান, গম, পাট, আখ, ভূট্টা, আলু, মরিচ প্রভৃতি।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় রয়েছে কয়েকটি নদী। সেগুলো হচ্ছে টাঙ্গন নদী, কুলিক নদী, শুক নদী, ঢেপা নদী, তালমা নদী, পুনর্ভবা নদী, তীরনই নদী, সেনুয়া নদী ও পাথরি নদী।[৬][৭]