ডানকান শার্প

ডানকান শার্প
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ডানকান আলবার্ট শার্প
জন্ম (1937-08-03) ৩ আগস্ট ১৯৩৭ (বয়স ৮৭)
রাওয়ালপিন্ডি, ব্রিটিশ পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান, উইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩২)
১৩ নভেম্বর ১৯৫৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৯ ডিসেম্বর ১৯৫৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৫৭/৫৮পাঞ্জাব এ
১৯৫৮/৫৯পাকিস্তান রেলওয়েজ
১৯৫৯/৬০ - ১৯৬০/৬১লাহোর
১৯৬১/৬২ - ১৯৬৫/৬৬সাউদার্ন রেডব্যাকস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩৭
রানের সংখ্যা ১৩৪ ১,৫৩১
ব্যাটিং গড় ২২.৩৩ ২৭.৩৩
১০০/৫০ ০/১ ২/৭
সর্বোচ্চ রান ৫৬ ১১৮
বল করেছে ১৫৪
উইকেট
বোলিং গড় ১০০.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৩৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/– ৪১/১৩
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ মে ২০২০

ডানকান আলবার্ট শার্প (ইংরেজি: Duncan Sharpe; জন্ম: ৩ আগস্ট, ১৯৩৭) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের রাওয়ালপিন্ডি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের শেষদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত। পাকিস্তানের পক্ষে চারজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী টেস্ট ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি তৃতীয়।[]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে লাহোর, পাকিস্তান রেলওয়েজ, পাঞ্জাব এবং অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিং করতেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ডানকান শার্পের পরিবার ব্রিটিশ ভারতে বসবাস করতো। পিতা-মাতার বিবাহ-বিচ্ছেদের পর তিন ভাইয়ের প্রত্যেকেই লাহোরের সেন্ট অ্যান্থনি হাই স্কুলে পড়াশুনো করেন।[] ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তান রেলওয়েজে কেরানি হিসেবে কাজ করেন।[]

১৯৫৫-৫৬ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত ডানকান শার্পের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। আক্রমণধর্মী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও চটপটে মনোভাবসম্পন্ন উইকেট-রক্ষক ছিলেন। ডানকান শার্প প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পাকিস্তান রেলওয়েজের পক্ষে প্রথমবারের মতো মাঝারিসারিতে খেলেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে মুলতানে সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে বেলুচিস্তানের সদস্যরূপে খেলেছিলেন।[] ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমের কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে পরের খেলায় পাঞ্জাব এ দলের সদস্যরূপে অংশ নেন। বাহাওয়ালপুরের বিপক্ষে ঐ খেলায় তিনি উইকেট-রক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেট বাদে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনের অধিকাংশ সময় উইকেট-রক্ষক হিসেবে অংশ নিতেন।

১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল পাকিস্তান গমনে আসে। সিরিজের দুই টেস্টে দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে তরুণ, উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া পাকিস্তান ঈগলেটসের সদস্যরূপে ইংল্যান্ড গমন করেন। তিন মাসব্যাপী প্রথম-শ্রেণীবিহীন খেলাগুলোয় অংশ নিয়ে ১,৬০৮ রান তুলেন।[]

নয়টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় সর্বোচ্চ ৬৭ রান সহযোগে ২১.২৫ গড়ে ২৫৫ রান সংগ্রহের পর টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণবার্তা পান। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমের শেষদিকে নিজস্ব প্রথম প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। লাহোরে সফররত ইন্ডিয়ান স্টারলেটসের বিপক্ষে সম্মিলিত একাদশের সদস্যরূপে ১১৮ রান তুলেন।[] মৌসুমে লাহোরে আইয়ুব ট্রফির সেমি-ফাইনালে লাহোরের সদস্যরূপে রাওয়ালপিন্ডি ও পেশোয়ারের বিপক্ষে অংশ নিয়ে ১০৯ রান তুলেন।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ডানকান শার্প। সবগুলো টেস্টই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১৩ নভেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৪ ডিসেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে করাচীতে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তিনি। ৫৬ ও ৩৫ রান তুলে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। কিন্তু নিম্নমূখী রানের ঐ খেলায় তার দল পরাজিত হয়েছিল। পরবর্তী দুই টেস্টে অংশ নিলেও আর সফলতার ছাঁপ ফেলতে পারেননি তিনি।[]

অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন

[সম্পাদনা]

১৯৬০-৬১ মৌসুমে ভারত গমনার্থে তাকে পাকিস্তান দলে রাখা হয়নি। মনঃক্ষুণ্ন অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের সিদ্ধান্ত নেন। ব্যারি জার্মানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৬১ সালে অ্যাডিলেডে বসবাস করতে থাকেন।[] ১৯৬১-৬২ মৌসুম থেকে ১৯৬৫-৬৬ মৌসুম পর্যন্ত গ্যারি সোবার্স ও ব্যারি জার্মানের সাথে একত্রে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে শেফিল্ড শিল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমের প্রথম খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ৫০ রান তুলেন। তবে, এরপর থেকে তার খেলার মান দূর্বলতর হতে থাকে ও অনিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমের প্রথম খেলায় ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৭২ রান তুলেন। পরের খেলাটিই তার সর্বশেষ খেলা ছিল। কেন ব্যারিংটন, জিম পার্কস সমৃদ্ধ সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে উভয় খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।[]

অ্যাডিলেড ওভালে ডন ব্র্যাডম্যান তাকে মাঠ কর্মকর্তার চাকরি লাভে সহায়তা করেন। তিনি তার দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দেন। পরবর্তীতে মেলবোর্নভিত্তিক পার্ক ও বাগানের প্রধান হন।[]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন তিনি। জিলিয়ান নাম্নী এক রমণীকে বিয়ে করে মেলবোর্নে অবস্থান করছেন। এ দম্পতির ছয় সন্তান রয়েছে।[১০] এছাড়াও, পাকিস্তানে থাকাকালীন পূর্বেকার সংসারে এক পুত্র রয়েছে।[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Youhana's leap of faith
  2. Richard Heller and Peter Oborne, White on Green: Celebrating the Drama of Pakistan Cricket, Simon & Schuster, London, 2016, pp. 102–11.
  3. "Railways and Baluchistan v MCC 1955–56"অর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজনCricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৭ 
  4. Gideon Haigh, Silent Revolutions, Black Inc, Melbourne, 2006, p. 286.
  5. "Combined XI v Indian Starlets 1959-60"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  6. "Lahore v Rawalpindi and Peshawar 1960-61"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  7. "Australia in Pakistan and India, 1959-60", Wisden 1961, pp. 832-46.
  8. Gideon Haigh, The Summer Game, Text, Melbourne, 1997, p. 137.
  9. "South Australia v MCC 1965–66"অর্থের বিনিময়ে সদস্যতা প্রয়োজনCricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৭ 
  10. Haigh, Silent Revolutions, p. 284.

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]