ডার্ক ক্লাউডেড ইয়েলো Dark Clouded Yellow | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Lepidoptera |
পরিবার: | Pieridae |
গণ: | Colias |
প্রজাতি: | C. fieldii |
দ্বিপদী নাম | |
Colias fieldii Ménétriés, 1855[১] |
ডার্ক ক্লাউডেড ইয়েলো (বৈজ্ঞানিক নাম: Colias fieldii(Ménétriés)) ‘পিয়েরিডি’ (Pieridae) গোত্র ও কলিয়াডিনি (Coliadinae) উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছোট আকৃতির প্রজাপতি।[২]
ডার্ক ক্লাউডেড ইয়েলো এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৪০-৬৫ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[২]
ভারতে প্রাপ্ত ডার্ক ক্লাউডেড ইয়েলো এর উপপ্রজাতি হল-[৩]
ভারতে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে অরুণাচল প্রদেশ, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, উত্তর মায়ানমার, পাকিস্তান, দক্ষিণ চীন, ইন্দো-চীন ও দক্ষিণ ইরান এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা যায়।[৪]
প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
ডানার উপরিতল: ডানার উপরিতল ক্যাডমিয়াম এর মতো ঘন কমলা-হলুদ।
সামনের ডানা : ডানার একদম গোড়ার (base) অংশ ঘনভাবে সবজে-কালচে আঁশে ছাওয়া। ডিস্কো-সেলুলার অংশে সেল (cell) এর সামান্য বাইরে আতার মতো আকৃতির একটি কালো ছোপ দেখা যায়। পোস্ট-ডিসকাল অংশ থেকে টার্মেন পর্যন্ত খুব চওড়া কালো বা ঘন খয়েরি পটি বর্তমান যা ডানার শীর্ষভাগে (apex) আরো চওড়া হয়ে কোস্টাল প্রান্তরেখার (costa) প্রায় মাঝখান পর্যন্ত এবং নিম্নভাগে টার্নাস (tornus) পর্যন্ত বিস্তৃত। উক্ত পটির ভিতরের প্রান্তরেখাটি বাইরের দিকে সামান্য বাঁকা ও খাঁজকাটা। ৬, ৭, ৯ ও ১০ নং শিরাগুলির শেষভাগ সাব-টার্মিনাল অস্পষ্ট ও ফ্যাকাশে এবং কালো শীর্ষভাগে (apex) সুস্পষ্ট। সিলিয়া স্যামন মাছের ন্যায় গোলাপি রঙের।
পিছনের ডানা: ডানার গোড়ার (Base) অংশ ঘন সবজে-কালচে আঁশ ও চুলের মতো দাগে ছাওয়া যা ডরসাম ও টর্নাসেও বিস্তৃত হয়েছে ঈষদ হালকা ভাবে। ডরসাম চওড়াভাবে ফ্যাকাশে হলুদ। সাব-টার্মিনাল ও টার্মিনাল অংশ জুড়ে কালো বা গাঢ় খয়েরি চওড়া পটিটি সামনের ডানার তুলনায় সরু। উক্ত টার্মিনাল পটিটি টর্নাস পর্যন্ত বিস্তৃত ও ইহার ভিতরের প্রান্তরেখা বাইরের দিকে বাঁকানো ও খাঁজকাটা। ডিস্কো-সেলুলার ছোপটি বড় এবং দুটি ফ্যাকাশে ছাইরঙা রিং দ্বারা গঠিত। রিং দুটির উপরেরটি ছোট ও নিচেরটি বড়। সিলিয়া (cellia) সামনের ডানার অনুরূপ।
ডানার নিম্নতল : ডানার নিম্নতলের রঙ হালকা কমলা-হলুদ ও হালকা ফ্যাকাশে সবুজ আঁশে ছাওয়া।
সামনের ডানা : ডিস্কো-সেলুলার কালো ছোপটি উপরিতলেরই অনুরূপ। ডানার গোড়া (base) থেকে ডিসকাল অংশ কোস্টার খানিক নিচ থেকে ডরসাম অবধি অংশের রঙ ঈষদ কমলা। বাকি অংশ অর্থাৎ কোস্টা, এপেক্স, পোস্ট-ডিসকাল থেকে টার্মেন ও টর্নাস হালকা হলুদ। সমগ্র হালকা হলুদ অংশ ফ্যাকাশে কালচে-সবুজ আঁশে ছাওয়া। ডানার মধ্য ও নিম্নভাগে পোস্ট-ডিসকাল অংশে কালো ছোপের একটি তেরছা সারি বর্তমান। উক্ত ছোপ-সারির সর্বনিম্ন ছোপটি আকারে বৃহত্তর।
পিছনের ডানা : পিছনের ডানা সম্পূর্ণই হালকা হলুদ এবং ডানার ভিতরের অর্দ্ধ ঘনভাবে ও বহিরার্ধ হালকাভাবে ফ্যাকাশে সবুজ আঁশে ছাওয়া। ডিস্কো-সেলুলার ছোপটি দুটি সুস্পষ্ট ও রুপালি ছোপ দ্বারা গঠিত এবং ফ্যাকাশে স্যামন-গোলাপি রিং দ্বারা আবৃত। পোস্ট-ডিসকাল অংশে খুব অস্পষ্ট, ফ্যাকাশে গোলাপি ছোপের এক তীর্যক সারি বিদ্যমান।
শুঙ্গ, মাথা ও বক্ষদেশ (thorax) উপরিতলে অগ্রভাগে স্যামন-গোলাপি; শুঙ্গের মুগুরের মতো অংশটি কালচে-বাদামি; বক্ষদেশ (thorax) পশ্চাদভাগে ও উদর ফ্যাকাশে সবজে-কালো। পালপি (Palpi), থোরাক্স ও উদর নিম্নতলে হলুদ বর্ণের।[২]
স্ত্রী-নমুনা পুরুষ-নমুনা অপেক্ষা নিম্নলিখিতভাবে ভিন্ন:-
ডানার উপরিতলে উভয় ডানার গোড়ার (base) অংশে কালচে আঁশ অধিকতর ঘন ও বিস্তৃতভাবে ছাওয়া (বিশেষত পিছনের ডানায়)। সাব-টার্মিনাল ও টার্মিনাল অংশ জুড়ে অবস্থিত কালো পটিটি অধিকতর চওড়া। সামনের ডানায় কালো অংশে তির্যকভাবে ভেদ করে উজ্জ্বল হলুদ ছোপের একটি সারি বর্তমান যার অগ্রভাগের ৪ টি ছোপ ছোট ও পশ্চাদবর্তী ছোপটি বড়। পিছনের ডানায় ডিস্কো-সেলুলার ছোপটির কেন্দ্রস্থ কালো রিং দুটি অনুপস্থিত এবং পোস্ট-ডিসকাল অংশে অস্পষ্ট হলুদ ছোপের একটি বাঁকানো ও তীর্যক সারি দেখা যায়। স্ত্রী-নমুনায় ডানার নিম্নতল পুরুষেরই হুবহু অনুরূপ।
শুঙ্গ, মাথা, বক্ষদেশ ও উদর উপরিভাগে পুরুষ-নমুনার অনুরূপ, তবে নিম্নতলে পালপি (palpi) ও বক্ষদেশ (thorux) কম-বেশি গোলাপি বর্ণের।[৫]
ডার্ক ক্লাউডেড ইয়েলো প্রজাতির উড়ান দ্রুত ও সরলরৈখিক। পাহাড়ের চূড়ায় ও পাহাড়ের ঢালে খোলামেলা জায়গায় এদের দর্শন মেলে। প্রায়শঃই এদের ডানা বন্ধ অবস্থায় ফুল এবং পাতার উপর অবস্থান করে মধু ও রসপান করতে দেখা যায়। ইহারা সাধারণত নিচু উচ্চতা দিয়ে ওড়ে এবং অন্যান্য ক্লাউডেড ইয়েলো প্রজাতির (সর্বমোট ১৪ প্রজাতির উপস্থিতি ভারতে রয়েছে) সাথে স্বভাবে এদের অনেক মিল। হিমালয়ের ১২০০ থেকে ৩৬৬০ মি. উচ্চতা পর্যন্ত এদের বিচরণ নথিভুক্ত রয়েছে এবং উক্ত উচ্চতা বিশিষ্ট তৃণভূমিতে এদের বিচরণ লক্ষ্য করা যায়। শীতকালে এই প্রজাতির পরিযায়ীতা (migration) দেখা যায় ও এই সময় এরা সমতলভূমিতে নেমে আসে। ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর প্রায় সারা বছরই এদের উড়ান ও কার্যকলাপ পরিলক্ষিত হয়।[৬]