বংশাণুবিজ্ঞান |
---|
ধারাবাহিকের একটি অংশ |
ডিএনএ অনুক্রম নির্ণয় (ইংরেজি: DNA sequencing) বলতে ডিএনএ-র ভেতরে অবস্থিত নিউক্লিওটাইডগুলির ক্রম তথা নিউক্লিয়িক অ্যাসিডের অনুক্রম নির্ণয় করার প্রক্রিয়াটিকে বোঝানো হয়। অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন এবং থাইমিন নামক চারটি ভিত্তির অনুক্রম নির্ণয় করার জন্য ব্যবহৃত যেকোনও পদ্ধতি বা প্রযুক্তি এর অন্তর্ভুক্ত। দ্রুত ডিএনএন অনুক্রম নির্ণয় পদ্ধতিগুলির আবির্ভাবের ফলে জীববৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসা গবেষণা ও আবিষ্কারের গতি বহুগুণে ত্বরান্বিত হয়েছে।[১][২]
ডিএনএ অনুক্রমসমূহের জ্ঞান প্রাথমিক জীববৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য আবশ্যকীয় উপাদানে পরিণত হয়েছে এবং বহুসংখ্যক ফলিত ক্ষেত্র যেমন চিকিৎসাবৈজ্ঞানিক রোগনির্ণয়, জৈবপ্রযুক্তি, আদালতি জীববিজ্ঞান, ভাইরাসবিজ্ঞান এবং জীববৈজ্ঞানিক প্রণালীবিজ্ঞান, ইত্যাদিতে এটি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সুস্থ এবং পরিব্যক্ত ডিএনএ অনুক্রম তুলনা করে বিভিন্ন ধরনের রোগ, বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের কর্কটরোগ (ক্যান্সার) নির্ণয় করা,[৩] বিদ্যমান প্রতিরক্ষিকা (অ্যান্টিবডি) সংগ্রহ নির্ণয় করা,[৪] এবং রোগীর চিকিৎসায় দিকনির্দেশনা প্রদান করা সম্ভব।[৫] ডিএনএ অনুক্রম নির্ণয়ের দ্রুত পন্থা থাকলে অপেক্ষাকৃত দ্রুততর ও ব্যক্তিগত যত্নপ্রদানকারী চিকিৎসাসেবা প্রদান করা সম্ভব এবং আরও অনেক জীবাণু শনাক্ত ও শ্রেণীকরণ করা সম্ভব।[৪]
আধুনিক ডিএনএ অনুক্রম নির্ণয়ে যে দ্রুতি অর্জিত হয়েছে, তা বিভিন্ন প্রকার ও প্রজাতির জীবের প্রায়-সম্পূর্ণ বা সম্পূর্ণ বংশাণুসমগ্র অনুক্রম নির্ণয় প্রক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, যেগুলির মধ্যে মানব বংশাণুসমগ্র এবং অন্যান্য বহুসংখ্যক প্রজাতির প্রাণী, উদ্ভিদ ও অণুজীবের সম্পূর্ণ বংশাণুসমগ্র অন্তর্ভুক্ত।
উচ্চশিক্ষায়তনিক গবেষকেরা ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে দ্বিমাত্রিক বর্ণলেখচিত্রণের উপর নির্ভরশীল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম ডিএনএ অনুক্রমগুলি নির্ণয় করেন। ডিএনএ অনুক্রম নির্ণায়ক যন্ত্রে ব্যবহারযোগ্য প্রতিপ্রভা-ভিত্তিক অনুক্রম নির্ণয় পদ্ধতির উদ্ভাবনের পর থেকে[৬] ডিএনএ অনুক্রম নির্ণয় অনেক সহজ ও দশের কয়েক ঘাত গুণ দ্রুততর হয়েছে।[৭]