ডোন্ড্রা
| |
---|---|
নগর | |
ডাকনাম: দেবী নুওয়ারা (God's Town), Thevanthurai (Lord's Port), তেঁথুরাই (দক্ষিণ বন্দর) | |
লুয়া ত্রুটি মডিউল:অবস্থান_মানচিত্ এর 393 নং লাইনে: স্থানাঙ্কের মান বিকৃত।শ্রীলঙ্কায় অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: | |
দেশ | শ্রীলঙ্কা |
প্রদেশ | দক্ষিণ প্রদেশ |
বিভাগ | দেবিনুওয়ারা |
সরকার | |
• ধরন | পৌর কাউন্সিল |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ৪৮,২৫৩ |
• জাতিগোষ্ঠী | সিংহলী তামিল এবং মুসলমান |
সময় অঞ্চল | শ্রীলঙ্কা মান সময় অঞ্চল (ইউটিসি+৫:৩০) |
ডোন্ড্রা (সিংহলি: දෙවිනුවර / දෙවුන්දර, তামিল: தேவேந்திரமுனை) হলো শ্রীলঙ্কার দক্ষিণতম প্রদেশের মাতারার নিকটবর্তী ভারত মহাসাগরে শ্রীলঙ্কার সর্বদক্ষিণ প্রান্তের একটি বসতি। ডোন্ড্রা শীর্ষ বাতিঘর, তেনাভারমের কয়েকটি হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এবং একটি বিহার (বৌদ্ধ মন্দির) এর চারিধারের অঞ্চলসমূহে অবস্থিত।
রাজা নিশাঙ্কামাল্লা (১১৮৭-১১৯৬)-এর শাসনামলের ডাম্বুলা গুহা মন্দির হতে প্রাপ্ত প্রস্তরলিপি সবচেয়ে প্রাচীন দলিল, যেখানে দেবী নুওয়ারা নামটির, যার দ্বারা "ঈশ্বরের নগর" বুঝায়, এর উল্লেখ রয়েছে।[১][২] শহরের নামটির পালি ভাষার রূপ দেব নগর -এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় মহাবংশ উপাখ্যানে রাজা প্রথম বিজয়বাহু (১০৫৮-১১১৪) -এর বিবরণের সাথে।[১][৩] ডোন্ড্রা নামটি সিংহলি ভাষার 'দেবীনুওয়ারা' বা 'দেবেন্দ্র' নামের ইংরেজিকরণ-কৃত রূপ।
অনেকের মতে, ডোন্ড্রা নামটি মূল তামিল শব্দ থাইভানথুরাই ("ঈশ্বরের বন্দর") এর একটি রূপ।
ঐতিহাসিকভাবে দেবিনুওয়ারা মন্দির বন্দর শহর বা দেবিনুওয়ারা মন্দির শহর নামে পরিচিত ডোন্ড্রা ১৬দশ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত একটি ঐতিহাসিক মন্দির ও বন্দর শহরের মিশ্র রূপ ছিলো। এটি একটি বহু-ধর্মীয় কেন্দ্র যার প্রধান দেবতা ছিলেন বৌদ্ধ দেবতা উপুলভান এবং এর শিখর সময়ে এটি ছিল দ্বীপের অন্যতম বিখ্যাত ধর্মীয় স্থান, যেখানে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এক হাজার মূর্তি ছিলো।[৩] প্রথম দাপুলার সময়কাল থেকে এটিকে মূলত সিংহলী রাজা এবং বণিক সংগঠনগুলো কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ করা হতো একটি জনপ্রিয় তীর্থস্থান এবং বিখ্যাত বাণিজ্যস্থান হিসাবে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং মালাবার উপকূলের সাথে এর ব্যাপক যোগাযোগের জন্য। মন্দিরটি ভারত মহাসাগরের সমুদ্রোপরি অভিক্ষিপ্ত সৈকতাংশে পরস্পরযুক্ত খিলানের ওপর নির্মিত হয়েছিল।[৪][৫] বিভিন্ন সিংহলী এবং তামিল রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং তীর্থযাত্রীদের কারণে "তেনাভারম মন্দির" অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাসনালয় হয়ে ওঠে। ধ্রুপদী দ্রাবিড় স্থাপত্যের চেরা শৈলীতে নির্মিত এই মন্দিরটি ভগবান শিব এবং ভগবান বিষ্ণু সহ অসংখ্য হিন্দু দেবাতার উপাসনালয়ও। এর পুনঃআবিষ্কৃত মূর্তি এবং ধ্বংসাবশেষ খ্রিস্টীয় ৫ম হতে ৭ম শতকের পল্লব শিল্পের উচ্চ মান প্রতিফলিত করে। ডোন্ড্রা একসময় শ্রীলঙ্কার রাজধানী ছিলো।[৬]
ডোন্ড্রা শ্রীলঙ্কার সর্ব-দক্ষিণের চরম বিন্দু। সমুদ্রের সান্নিধ্যের কারণে ১৮৯০ সালে এখানে একটি বাতিঘর নির্মাণ করা হয়;[৭][৮] শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ এবং একই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম উচ্চতম বাতিঘর হওয়ায় এটি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে।[৯] এছাড়াও প্রাচীন হিন্দু মন্দিরগুলো, যেগুলো পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক আমলে ধ্বংস করা হয়েছিলো সেগুলোর অবশিষ্টাংশও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।[৩][১০] এর সৈকত এবং বৌদ্ধ বিহারগুলোতেও অবকাশ যাপনে আগত দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্মণীয়। পুনর্নির্মিত বিষ্ণু মন্দির এবং বৌদ্ধ বিহার এখনকার সময়ের তীর্থযাত্রীদের জন্যও খুব আকর্ষণীয় পরিদর্শণ কেন্দ্র এবং এখানে এসালা (জুলাই–আগস্ট) মাসে আটদিন ব্যাপী "ডোন্ড্রা মেলা" এবং পেরাহেরা অনুষ্ঠিত হয়।