ঢেঁকি শাক Diplazium esculentum | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
বিভাগ: | Tracheophytes |
শ্রেণী: | Polypodiopsida |
বর্গ: | Polypodiales |
পরিবার: | Athyriaceae |
গণ: | Diplazium |
প্রজাতি: | D. esculentum |
দ্বিপদী নাম | |
Diplazium esculentum (Retz.) Sw. | |
প্রতিশব্দ | |
Athyrium esculentum |
ঢেঁকি শাক বা পালই শাগ বা ঢেঁকিয়া শাক বা বউ শাক (বৈজ্ঞানিক নাম: Diplazium esculentum) Athyriaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি সবজি জাতীয় ফার্ণ এশিয়া ও ওশেনিয়া জুড়ে খাদ্য হিসেবে পাওয়া যায়। এই ফার্ণটি সাধারণত সম্ভবত সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয়। [১]
ঢেঁকি শাক উত্তর বঙ্গের মানুষের একটি প্রিয় খাদ্য। একটি খুব সাধারণ ফার্ন যা ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকায় এবং বিভিন্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে পাওয়া যায়। স্যাঁতসেঁতে ছায়াময় এলাকাসমূহ এবং জঙ্গলে এর দেখা মেলে। থাইল্যান্ডে ভীষণ জনপ্রিয় এই শাক। সেখানে একে পাকু বলে। সারা বছর চুপসে থাকলেও বর্ষার মৌসুমে বেশ তরতাজা হয়ে উঠে ঢেঁকিশাক।
ঢেঁকি শাক আমাদের ক্যান্সার, বিভিন্ন প্রদাহ(inflammation), লিভার ইনফেকশন এবং ছোঁয়াচে ঠাণ্ডা কাঁশি থেকে রক্ষা করে। ঢেঁকি শাকের স্ত্রীপ্রজাতির উদ্ভিদের মূল থেকে একধরনের ওষুধ তৈরি করা হয় যা সন্তানজন্মদানের সময় মহিলাদের স্তনের ব্যাথা সারাতে কার্যকরী। এটি আমাদের শ্বাসতন্ত্রকে সতেজ রাখে ও পুরনো কাশি সারিয়ে তোলে। এই গাছের শুষ্ক মূল থেকে তৈরি পাউডার ঘা-ক্ষত নিরাময় করে। এটিকে জন্ডিসের জন্য সবচেয়ে ভাল ঔষধ বলে মনে করা হয়। ব্যথা এবং জ্বরে খুব ফলপ্রসূ। এতে উচ্চমাত্রায় ফসফরাস থাকায় এটি ‘রিকেট’ সারাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এতে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন ক্ষুধামন্দা দূর করে। ডায়বেটিক রোগীর জন্য এটি একটি ভালো খাবার। ঢেঁকি শাক পটাশিয়াম বেশি থাকার কারণে এটি উচ্চ রক্তচাপ কমায়। এছাড়াও এই শাকে বেশি ভিটামিন এ ও সি থাকার ফলে এই শাক খেলে দাঁতের ক্ষত(oral cavity) এবং ফুসফুসের ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার ও গর্ভ ক্যান্সার(womb cancer) প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১০০ গ্রাম ঢেঁকি শাকে রয়েছে-
ক্যালরি: ৩৪ কিলোক্যালরি; শর্করা: ৫.৫৪ গ্রাম; ফ্যাট: ০.৪ গ্রাম; প্রোটিন: ৪.৫৫ গ্রাম; পানি: ৯২.২১ গ্রাম. খাদ্য পুষ্টি. কার্বোহাইড্রেট. আঁশ: ২.৮ গ্রাম; ভিটামিন- বি-১ (থায়ামিন): ০.০২ মি.গ্রা.; ভিটামিন- বি-২ (রিবোফ্ল্যাভিন): ০.২১ মি.গ্রা.; ভিটামিন- বি-৩ (নায়াসিন): ৪.৯৮ মি.গ্রা.; ভিটামিন- বি-৬: ০.১৪৯ মি.গ্রা.; ভিটামিন- সি: ২৬.৬ মি.গ্রা.; ভিটামিন- এ: ৩৬১৭ I.U. (আন্তর্জাতিক একক); সোডিয়াম: ১ মি.গ্রা.; পটাশিয়াম (K): ৩৭০ মি.গ্রা.; ক্যালসিয়াম (Ca): ৩২ মি.গ্রা.; ফসফরাস (P): ৪৮ মি.গ্রা; ম্যাগনেসিয়াম (Mg): ৩৪ মি.গ্রা.; লৌহ: ১.৩১ মি.গ্রা.; জিংক (Zn): ০.৮৩ মি.গ্রা., সেলেনিয়াম (Se): ০.৭ মাইক্রোগ্রাম, তামা (Cu): ০.৩২ মি.গ্রা., ম্যাঙ্গানিজ (Mn): ০.৫১ মি.গ্রা.।
কোন ভাবেই ভালো করে রান্না না করে এই শাক খাওয়া উচিত নয়। এছাড়া না চিনে ঢেঁকি শাকের মত দেখতে যেকোনো ফার্নকেই শাক হিসেবে খাওয়া উচিত না; কারণ এর অনেক প্রজাতি বিষাক্ত। পুরুষপ্রজাতির উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত অংশ বেশি গ্রহণের ফলে পেশী দুর্বলতা, চোখে সমস্যা এমনকি কোমাতে(coma)ও চলে যেতে পারে মানুষ।