লেখক | মুহাম্মদ তাকি উসমানি |
---|---|
মূল শিরোনাম | উর্দু: آسان ترجمہ قرآن, توضیح القران, প্রতিবর্ণী. তাওযীহুল কুরআন, আসান তরজমায়ে কুরআন |
অনুবাদক | আ.ব.ম. সাইফুল ইসলাম |
প্রচ্ছদ শিল্পী | ইবনে মুমতায (বাংলা) |
দেশ | পাকিস্তান |
ভাষা | উর্দু (মূল) |
মুক্তির সংখ্যা | ৩ খণ্ড |
বিষয় | তাফসীর[১] |
প্রকাশিত |
|
প্রকাশক | মাকতুবাতে মাআরিফুল কুরআন (উর্দু), মাকতাবাতুল আশরাফ (বাংলা) |
মিডিয়া ধরন | |
পৃষ্ঠাসংখ্যা |
|
আইএসবিএন | ৯৭৮৯৬৯৯৩০৬০০৬ |
২৯৭.১২২ | |
ওয়েবসাইট | তাওযীহুল কুরআন |
তাওযীহুল কুরআন (উর্দু: آسان ترجمہ قرآن، توضیح القران, প্রতিবর্ণী. তাওযীহুল কুরআন, আসান তরজমায়ে কুরআন নামে উর্দুতে অধিক পরিচিত) দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুফাসসির মুহাম্মদ তাকি উসমানির উর্দু ভাষায় রচিত একটি আধুনিক ও জনপ্রিয় তাফসির গ্রন্থ।[৩] ২০০৮ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। লেখক প্রায় সাড়ে তিন বছর সময় নিয়ে এটা রচনা করেছেন, যার বেশিরভাগ লিখেছেন ভ্রমণকালে। লেখকের পরিচিতি ও পাণ্ডিত্যের খ্যাতির কারণে এটি অল্প সময়ে বিপুল পাঠকপ্রিয়তা লাভ করে। অনেক ভাষায় এর অনুবাদ সম্পন্ন হয়েছে। লেখকের দাবি অনুসারে, গ্রন্থটির রচনাশৈলী আক্ষরিকও নয়, আবার খুুুব স্বাধীনও নয়। বিভিন্ন সংস্করণের পাশাপাশি এটি পিডিএফ, মোবাইল অ্যাপ, অডিও আকারেও উপলব্ধ।
লেখক ২০০৮ সালে এই গ্রন্থটি রচনার কাজ সমাপ্ত করেন। রচনার কাজ শুরুর পর শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন বছর, যার বেশিরভাগ সময় তিনি ভ্রমণরত অবস্থায় কাজ করেছেন।[৪] গ্রন্থটি বঙ্গানুবাদের কাজে তত্ত্বাবধান করেছেন লেখকের শীর্ষস্থানীয় শিষ্যদের অন্যতম মুহাম্মদ আব্দুল মালেক। তার অনুরোধে এটির পূর্ণাঙ্গ বঙ্গানুবাদ করেন আ.ব.ম. সাইফুল ইসলাম। মাকতাবাতুল আশরাফ থেকে ২০১০ সালের এপ্রিলে এর ১ম খণ্ড, অক্টোবরে ২য় খণ্ড এবং ২০১১ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ খণ্ড প্রকাশিত হয়।[৫] ভারতের ফরিদ বুক ডিপো থেকে এর হিন্দি অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
গ্রন্থটি রচনার কারণ উল্লেখ করে লেখক বলেছেন,
“ | আজ থেকে বছর কয়েক আগ পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল, যেহেতু উর্দু ভাষায় নির্ভরযােগ্য আলেমদের হাতে কৃত বহু অনুবাদ-গ্রন্থ রয়েছে তাই এখন আর নতুন কোন অনুবাদের প্রয়ােজন নেই। সুতরাং কুরআন মাজীদের খেদমতকে অতি বড় সৌভাগ্যের বিষয় মনে করা সত্ত্বেও কেউ যখন আমার কাছে আরেকটি অনুবাদের জন্য আবেদন করত, তখন প্রথমত নিজ অযােগ্যতার উপলব্ধিই প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াত, দ্বিতীয়ত নতুন কোন অনুবাদের প্রয়ােজনও অনুভূত হত না। কিন্তু আরও পরে এসে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমার বন্ধুগণ তাদের অভিমত জানাল যে, উর্দু ভাষায় কুরআন মাজীদের যে সকল তরজমা এখন মানুষের হাতে আছে, তা আজকালকার মুসলিম সাধারণের পক্ষে বােঝা কঠিন হয়ে গেছে। কাজেই অতি সাধারণ পর্যায়ের শিক্ষিত লােকও বুঝতে পারবে, এ রকম সহজ সরল অনুবাদ বাস্তবিকই প্রয়ােজন। তাদের এ ফরমায়েশ উত্তরােত্তর এতটাই বৃদ্ধি পেল যে, শেষ পর্যন্ত বিষয়টা নিয়ে আমাকেও নতুন করে ভাবতে হল। সুতরাং আমি বর্তমানে প্রচলিত অনুবাদসমূহ যথারীতি নিরীক্ষণ করতে থাকলাম। শেষে আমারও যেন মনে হল, তাদের আবেদনের গুরুত্ব আছে। তারপর যখন আমার ইংরেজি অনুবাদের কাজ শেষ হল এবং তা যথারীতি প্রকাশও পেল, তখন তাদের দাবী আরও জোরদার হয়ে ওঠল। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালার নামে অনুবাদের কাজ শুরু করলাম। আমি চিন্তা করছিলাম আম-মুসলিমদের পক্ষে কুরআন মাজীদের মর্ম অনুধাবনের জন্য তরজমার সাথে সাথে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যারও দরকার হবে। সে মতে আমি অনুবাদের সাথে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক টীকাও লিখতে যত্নবান থেকেছি। | ” |
— ভূমিকা, তাওযীহুল কুরআন, ১ম খণ্ড |
এ অনুবাদটি সম্পূর্ণ আক্ষরিক নয়, আবার এমন স্বাধীনও নয় যে, কুরআনের শব্দমালা থেকে দূরে সরে গেছে। সহজ ও সুস্পষ্টকরণের প্রতি লক্ষ্য রাখার সাথে সাথে পূর্ণ চেষ্টা করা হয়েছে যাতে অনুবাদ কুরআনের শব্দশৈলীর কাছাকাছি থাকে। শব্দের ভেতর যেখানে একাধিক তাফসীরের অবকাশ আছে, সেখানে সেই অবকাশ যাতে অনুবাদের ভেতরও থাকে সে দিকেও লক্ষ রাখা হয়েছে। আর যেখানে তা সম্ভব হয়নি, সেখানে সালাফ তথা পূর্বসূরীদের ব্যাখ্যার আলােকে যে তাফসীর লেখকের নিকট সর্বাপেক্ষা সঠিক মনে হয়েছে, সেই অনুযায়ী অনুবাদ করা হয়েছে। ব্যাখ্যামূলক টীকায় কেবল এই দিকে লক্ষ রাখা হয়েছে যে, অনুবাদ পড়ার সময় আয়াতের মর্ম অনুধাবনে পাঠক কোথাও সমস্যার সম্মুখীন হলে যাতে টীকার সাহায্যে তার নিরসন করতে পারে। দীর্ঘ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও তাত্ত্বিক আলােচনা-পর্যালােচনার অবতারণা করা হয়নি। সংক্ষিপ্ত টীকাসমূহে ছাঁকা কথাও পরিবেশনের চেষ্টা করা হয়েছে।[৬][৭]
মূল গ্রন্থের শুরুতে লেখক গ্রন্থ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত ভূমিকা লিখেছেন। তারপর ‘ওহী কী ও কেন?’ শিরোনামে একটি আলোচনার অবতারণা করা হয়েছে। যার আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে রয়েছে: ওহীর প্রয়োজনীয়তা, ওহী নাযিলের পদ্ধতি, কুরআন নাযিলের তারিখ, সর্বপ্রথম আয়াত, মক্কি ও মাদানি আয়াত, পর্যায়ক্রমিক অবতরণ, শানে নুযূল, কুরআন সংরক্ষণের ইতিহাস, পারা, রুকু, ওয়াকফ, তাফসীর শাস্ত্র ইত্যাদি। প্রত্যেক সূরার শুরুতে “পরিচিতি” শিরোনামে সূরাটি নিয়ে কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা রয়েছে। তারপর পর্যায়ক্রমে লেখক প্রথমে কুরআনের আয়াতের অনুবাদ করেছেন। তারপর অনূদিত আয়াতের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা সংযুক্ত করা হয়েছে। এই রীতি শেষ পর্যন্ত অনুসরণ করা হয়েছে। বাংলা অনুবাদের প্রথম খণ্ডে মুহাম্মদ তাকি উসমানির শীর্ষস্থানীয় শিষ্যদের অন্যতম মুহাম্মদ আব্দুল মালেকের কুরআন নিয়ে একটি ভূমিকা আছে, তৃতীয় খণ্ডেও তার একটি ভূমিকা আছে যার শিরোনাম “কুরআন বুঝার চেষ্টা: কিছু নিয়ম-কানুন”। খণ্ড অনুযায়ী আলোচিত সূরা সমূহ: