তাতার মসজিদ হল ছাদে মিনার-সংবলিত এক ধরনের মসজিদ। এই ধরনের মসজিদ তাতারস্তান ও অন্যান্য ভোলগা তাতার জনবহুল অঞ্চলে মুসলিম তাতার ও বাশকিরদের মধ্যে বিদ্যমান। রাশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলেও এই মসজিদ মাঝে মাঝে দেখতে পাওয়া যায়। আধুনিক তাতার ধর্মীয় স্থাপত্য ১৮শ শতাব্দীর শেষভাগে বিকশিত হয় এবং ১৯শ শতাব্দীতে ইদেল-উরালে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
ইসলামী তাতার স্থাপত্যের শুরুর সময়ের চিহ্ন বোলঘারে অবস্থিত, তবে এর কোনটিই বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে না। মধ্য এশীয় ইসলামী স্থাপত্যের সাথে সেসবের সাদৃশ্য রয়েছে। ধারণা করা হয় গ্রাম্য মসজিদের নকশা চরমভাবাপন্ন স্থানীয় জলবায়ুর বিরুদ্ধে ঠিকে থাকার সামর্থ্য থেকে বিকশিত হয়েছে। এই ধরনের প্রস্তর ও কাঠের অনেক মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। এখনও সক্রিয় আধুনিক তাতার মসজিদের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো হল তাতারের রাজধানী কাজানে অবস্থিত মারজানি মসজিদ। ক্যাথরিন দ্য গ্রেটের সময়ে নির্মিত এই মসজিদটির মিনার একটি চাঁদওয়ারিযুক্ত ছাদের মধ্যভাগে অবস্থিত। ধারণা করা হয় ঐতিহ্যবাহী গ্রাম্য তাতার মসজিদ থেকে এই নকশা করা হয়েছিল। মারজানি মসজিদ তাতার ধর্মীয় স্থাপত্যের পুনরুজ্জীবিতকরণের একটি উদাহরণ, কারণ অধিকাংশ মসজিদ ১৭৪২ সালে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিতকরণ অধ্যাদেশের বলে ধ্বংস করা হয়েছিল।
একসময় বেলারুশের রাজধানী মিন্স্কের ভিলনিউস গ্রাম থেকে শুরু করে পোল্যান্ডের বিয়ালিস্তক শহর পর্যন্ত শতাধিক তাতার মসজিদ ছিল। এখনও লিথুয়ানিয়া, বেলারুশ ও পোল্যান্ডে সাতটি তাতার মসজিদ বিদ্যমান আছে।[১]
১৮১৭ সালে গির্জা ভবনসমূহ একত্রীকরণের অধ্যাদেশটি ১৮৩১ সালে মসজিদগুলোতে সম্প্রসারিত হয়, যখন এই দৃষ্টান্তমূলক প্রকল্প কাজান, নিঝনি নভগরদ, পের্ম, ও সিমবির্স্ক গভরনরেটের স্থাপত্য কার্যালয়ে স্থাপিত হতে শুরু করে। মারজানি ও আপানে এর মত তাতার মসজিদসমূহ বারোক স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত হয়। ইস্কে তাস ও পিঙ্ক মসজিদ ধ্রুপদী রীতিতে নির্মিত।
১৯শ শতাব্দীতে যেসকল স্থপতি এই মসজিদ নির্মাণে অবদান রেখেছিলেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পিয়াৎনিৎস্কি, করিনফস্কি, স্মিট, পেস্ক, রোমানভ, ইয়ের্মলায়েভ, পাভলভ, পারেনসভ, পেতন্দি, তেখমিরভ, এবং অপেশাদার স্থপতি মানসুরভ, ফশদেরেব্রুগেন, ইয়াকবসন।
১৮৪৪ সালে আরেকটি দৃষ্টান্তমূলক মসজিদ প্রকল্প চালু হয়, যেগুলো মূলত গ্রামাঞ্চলে বেশি ব্যবহৃত হত। মিনারটি ভবনের উত্তর পাশে স্থাপিত হত। যাই হোক, ছাদে মিনার সংবলিত মসজিদ এখনও নির্মিত হয়।