তাপগতিবিদ্যা এবং প্রকৌশলবিদ্যায় তাপ ইঞ্জিন হল তাপশক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তর করার একটি পদ্ধতি যা পরবর্তীতে যান্ত্রিক কাজে ব্যবহার করা যায়। [১][২] এর কার্যনির্বাহী বস্তু কে উচ্চ তাপমাত্রা থেকে নিম্ন তাপমাত্রায় স্থানান্তরের মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়।তাপ উৎস দ্বারা উৎপন্ন তাপশক্তির মাধ্যমে কার্যনির্বাহী বস্তু উচ্চ তাপমাত্রাপ্রাপ্ত হয় এবং নিম্ন তাপমাত্রার অবস্থায় না আসা পর্যন্ত সিঙ্কে (শীতল তাপাধারে) তাপ স্থানান্তরিত করতে থাকে এবং এ সময় ইঞ্জিনের কার্যকর ক্ষেত্রে কিছু কাজ সম্পাদিত হয়।অশূণ্য তাপধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন যেকোন বস্তুই কার্যনির্বাহী বস্তু হিসেবে কাজ করতে পারে , সাধারণত কোন গ্যাস বা তরল পদার্থ এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। তাপ ইঞ্জিনে এসব কার্যনির্বাহী বস্তুর কিছু অভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে তাপশক্তি থেকে কাজ পাওয়া যায়।এই প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিকভাবেই কিছু তাপ পরিবেশে নষ্ট হয়ে যায় যা আর কাজে পরিণত করা যায় না। আবার কিছু শক্তি ঘর্ষণ ও প্রতিবন্ধক বল( ড্র্যাগ) এর কারণে নষ্ট হয়।
সাধারণত ইঞ্জিন এর মাধ্যমে শক্তি থেকে যান্ত্রিক কাজ পাওয়া যায়। তাপ ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা কার্নোর নীতি অনুসারে সীমাবদ্ধ বলে এটি অন্যান্য ইঞ্জিন থেকে আলাদা।[৩] তবে কর্মদক্ষতার এই সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তাপ ইঞ্জিনগুলির একটি সুবিধা হ'ল বিভিন্ন প্রক্রিয়া যেমন তাপউৎপাদী বিক্রিয়া (যেমন দহন), নিউক্লিয়ার ফিশন, আলো কিংবা কোন শক্তিশালী কণার শক্তি শোষণ , ঘর্ষণ, রোধ , এবং অন্যান্য উপায়ে শক্তির অপচয় থেকে খুব সহজেই তাপশক্তি উৎপন্ন করা যায়। তাই যেকোন উৎস থেকেই তাপ উৎস তাপশক্তি সরবরাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পেতে পারে। এজন্য তাপ ইঞ্জিন অনেক বিস্তৃত ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।
সাধারণত কোন যন্ত্রের মডেলের জন্য আমরা 'চক্র' কথাটি ব্যবহার করি। আর সত্যিকারের যন্ত্রের জন্য 'ইঞ্জিন' কথাটিই ব্যবহার হয়। তাপ ইঞ্জিনকে তাই প্রায়সময়ই তাদের সম্পাদিত চক্রের সাথে মিলিয়ে ফেলা হয়।
তাপগতিবিদ্যায় তাপ ইঞ্জিনকে সাধারণত অটো চক্রের মতো কিছু আদর্শ প্রকৌশল মডেল হিসেবে ধরে নেয়া হয়। ইঞ্জিনের প্রকৃত ডেটা নিয়ে সেগুলো সংযোজন করে ও নির্দেশক চিত্রের মতো কিছু ধারণা ব্যবহার করে এই তাত্ত্বিক মডেলটিকে আরও পরিমার্জিত করা যায়। যেহেতু খুব কম তাপ ইঞ্জিনই সম্পূর্ণভাবে তাপগতীয় চক্র মেনে চলে তাই তাপগতীয় চক্র আসলে একটি আদর্শ যান্ত্রিক ইঞ্জিন। তবে একটি ইঞ্জিন ও তার কর্মদক্ষতা সম্পর্কে ভাল ধারণা পেতে হলে তার তাত্ত্বিক মডেলটি(হোক সেটি সরলীকৃত বা আদর্শ মডেল) ভাল করে বুঝতে হবে।
সাধারণত উষ্ণ তাপ উৎস ও শীতল তাপ গ্রাহক এর তাপমাত্রার পার্থক্য যত বেশি হবে, উক্ত চক্রের তাপীয় দক্ষতাও তত বেশি হবে। তাপ ইঞ্জিনের শীতল তাপাধারের তাপমাত্রার সাধারণত পরিবেশের তাপমাত্রার খুব কাছাকাছি থাকে, বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা ৩০০ কেলভিনের চেয়ে খুব বেশি কমতে পারে না। তাই তাপ ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ইঞ্জিনের উপাদানের সহ্যক্ষমতা অনুসারে তাপ উৎসের তাপমাত্রা যতটা সম্ভব বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করা হয় । তাত্ত্বিকভাবে কোন তাপ ইঞ্জিনের সর্বাধিক কর্মদক্ষতা (যা কোনও ইঞ্জিন কখনই অর্জন করতে পারে না) উক্ত ইঞ্জিনের উষ্ণ তাপ উৎস ও শীতল তাপ গ্রাহক এর তাপমাত্রার পার্থক্যকে উষ্ণ তাপ উৎসের তাপমাত্রা দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় , যেখানে তাপমাত্রাগুলির একক পরম তাপমাত্রায়(কেলভিন) প্রকাশিত।
এখনকার ব্যবহৃত কিছু তাপ ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতার বিশাল পরিসর রয়েছে যেমন:
এই প্রক্রিয়াগুলোর দক্ষতা সাধারণত প্রকিয়াগুলোর দু প্রান্তের তাপমাত্রার পার্থক্যের ওপর নির্ভর করে। বিভিন্ন সাহায্যকারী যন্ত্র যেমন পাম্প দ্বারা বেশিরভাগ শক্তি শোষিত হয়ে যায় যা ইঞ্জিনের দক্ষতাকে অনেক কমিয়ে দেয়।
কিছু চক্রের দহন প্রকোষ্ঠ প্রচলিত স্থানেই থাকলেও (অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক) সেগুলি প্রায়ই অন্যগুলোর সাথে প্রয়োগ করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, জন এরিকসন [৭] আগের ডিজেল চক্রের মতো একটি বাহ্যিকভাবে দহনকৃত তাপ ইঞ্জিন তৈরী করেছিলেন।।বাহ্যিকভাবে দহনকৃত ইঞ্জিনগুলি খোলা বা বদ্ধ চক্রেও মাঝেমাঝে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
প্রতিদিন ব্যবহৃত তাপ ইঞ্জিনের উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, অন্তর্দহন ইঞ্জিন এবং আগ্নেয়াস্ত্র । তাপের মাধ্যমে তাপ ইঞ্জিনের গ্যাসের সম্প্রসারণের মাধ্যমে এই ইঞ্জিনগুলো চালি থবার শক্তি পায়।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও জলমন্ডল এবং পৃথিবীর তাপ ইঞ্জিন একত্রে একটি প্রক্রিয়ার মত কাজ করে যা ভূপৃষ্ঠের পানির বাষ্পীভবন, পরিচলন, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ ও সামুদ্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সৌর তাপের ভারসাম্য করে ও পৃথিবীর সর্বত্র তাপ সরবরাহ করে । [৮]
তাপ ইঞ্জিনের একটি উদাহরণ হল হ্যাডলি কোষ । [৯] এটি মরু অঞ্চলে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু বৃদ্ধি করে থাকে এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে শীতল বায়ু হ্রাস করে সরাসরি তাপীয় সঞ্চালন সৃষ্টি করে যার ফলে বায়ুর গতিশক্তি উৎপন্ন হয়।
এই চক্র এবং ইঞ্জিনে, কার্যকারী পদার্থ হল গ্যাস এবং তরল। এই কার্যকরি পদার্থকে ইঞ্জিন গ্যাস থেকে তরলে পরিণত করতে পারে বা তরল থেকে গ্যাসে পরিণত করতে পারে বা উভয়ই করতে পারে। ফলে প্রবাহীটর সংকোচন বা প্রসারণ হয় যা থেকে কাজ উৎপন্ন হয়।
এই চক্র ও ইঞ্জিনগুলিতে কার্যকরী পদার্থ হিসেবে সর্বদা গ্যাস ব্যবহৃত হয়(অর্থাৎ এখানে কোন দশা পরিবর্তন হয় না):
এএই চক্র ও ইঞ্জিনগুলিতে কার্যকরী পদার্থ হিসেবে সর্বদা তরল পদার্থ ব্যবহৃত হয়।:
বাসাবাড়ির রেফ্রিজারেটর তাপীয় পাম্পের একটি উদাহরণ যা আসলে একটি তাপ ইঞ্জিনের ঠিক বিপরীত।এখানে তাপের পার্থক্য তৈরির জন্য বাহ্যিক কাজ করতে হয়।অনেক চক্রই আছে যেগুলো বিপরীতমুখী প্রক্রিয়ায় কাজ করে শীতল অংশ থেকে তাপ সরিয়ে উষ্ণ অংশে প্রদান করে। ফলে শীতল অংশ শীতলতর হয় এবং উষ্ণ অংশ উষ্ণতর হয়। অন্তর্দহন ইঞ্জিনগুলো তাদের প্রকৃতি অনুসারে প্রত্যাগামী নয়।
রেফ্রিজারেশন চক্রের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:
বারটন বাষ্পীভবন ইঞ্জিন এমন একটি চক্রের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় যা পানির বাষ্পীভবনের মাধ্যমে শক্তি ও শীতল আর্দ্র বায়ু উৎপন্ন করে ও উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ুতে তা বর্জন করে।
মেসোস্কপিক তাপ ইঞ্জিন হল ন্যানোস্কেলে পরিচালিত একটি ইঞ্জিন যা খুব ক্ষুদ্র পরিসরে তাপীয় ফ্লাক্স ও কাজ উৎপন্ন করে। বৈদ্যুতিক শীতায়ক যন্ত্রের মত কিছু যন্ত্রে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এ ধরনের মেসোস্কোপিক তাপ ইঞ্জিনে তাপীয় বিশৃঙ্খলার জন্য চক্রপ্রতি কাজের মান ওঠানামা করে। কোন তাপ ইঞ্জিন দ্বারা কৃতকাজের এক্সপোনেন্ট এর গড়মানের সাথে উষ্ণ তাপ উৎস থেকে সঞ্চালিত তাপশক্তির সম্পর্কিত একটি সরাসরি সমীকরণ রয়েছে।[১২] এই সমীকরণটি দ্বারা কার্নোর অসমতটি সমতায় রূপান্তরিত হয়। এই সমীকরণটি একইসাথে কার্নোর চক্রের সমতাসূচক সমীকরণ।
কোন তাপ ইঞ্জিন, প্রদত্ত শক্তির যত অংশ কাজে রূপান্তরিত করতে পারে তাকে ঐ তাপ ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা বলে।
তাপগতিবিদ্যার সূত্র অনুসারে একটি সম্পূর্ণ চক্রের জন্য:
অন্য কথায়, তাপ ইঞ্জিন উচ্চ তাপমাত্রার তাপ উৎস থেকে তাপ গ্রহণ করে, এর কিছু অংশ কাজে পরিণত করে ও বাকি অংশ কম তাপমাত্রার তাপ গ্রাহকে বর্জন করে।
সাধারণভাবে, কোন একটি তাপ সঞ্চালন প্রক্রিয়ার(রেফ্রিজারেটর, একটি তাপীয় পাম্প কিংবা একটি ইঞ্জিন যেকোনকিছুই হতে পারে) দক্ষতা বলতে উক্ত প্রক্রিয়ায় প্রাপ্ত শক্তি ও প্রদত্ত শক্তির অনুপাতকে বুঝায়।
ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে, তাপশক্তি থেকে কাজ পাওয়াই থাকে মূল উদ্দেশ্য।
যে কোনও তাপ ইঞ্জিনের তাত্ত্বিক সর্বাধিক দক্ষতা কেবলমাত্র ইঞ্জিনটি যে তাপমাত্রাদ্বয়ের মধ্যে কাজ করে তার উপর নির্ভর করে। কার্নোর তাপ ইঞ্জিনের মতো আদর্শ কাল্পনিক তাপ ইঞ্জিন ব্যবহার করে এই দক্ষতার মান বের করা যায়, যদিও বিভিন্ন চক্র ব্যবহার করে অন্যান্য ইঞ্জিনগুলিও সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জন করতে পারে। গাণিতিকভাবে, যেহেতু প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে, শীতল তাপাধারের এনট্রপির পরিবর্তন হ'ল উষ্ণ তাপাধারের এন্ট্রপির পরিবর্তনের ঋণাত্মক (অর্থাৎ ), তাই এন্ট্রপির সামগ্রিক পরিবর্তন শূন্য হয়। অর্থাৎ:
যেখানে হল উষ্ণ তাপ উৎসের পরম তাপমাত্রা এবং হলকেলভিন শীতল তাপগ্রাহকের তাপমাত্রা, সাধারণত এই তাপমাত্রাগুলো কেলভিন এ পরিমাপ করা হয়। এখানে লক্ষ্যণীয় যে যখন এর মান ঋণাত্মক, এর মান তখন ধণাত্মক হয়; যে কোনও প্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়াতে, এনট্রপির মান সামগ্রিকভাবে বৃদ্ধি হয় না, বরং একটি উষ্ণ (উচ্চ-এনট্রপি) সিস্টেম থেকে শীতল (নিম্ন-এনট্রপি) সিস্টেমে স্থানান্তরিত হয়, যার ফলে তাপ উৎসের এন্ট্রপি হ্রাস পায় ও তাপ গ্রাহকের এন্ট্রপই বৃদ্ধি পায়।
সর্বাধিক দক্ষতার অর্জনের জন্য যে কারণ রয়েছে তা নিচে উল্লেখ করা হলো। প্রথমে ধরে নেয়া হয় যে কোন ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা কার্নোর ইঞ্জিনের চেয়ে বেশি হলে তাকে তাপীয় পাম্প হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।। গাণিতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেখা যায় যে এর ফলে এনট্রপির মান হ্রাস পায়।কিন্তু যেহেতু তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র অনুসারে এটি পরিসংখ্যানগতভাবে অসম্ভব, তাই বলা যায় যে কার্নোর দক্ষতাই হল তাত্ত্বিকভাবে কোন তাপগতীয় চক্রের সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতার মান।
অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায় যে এখন পর্যন্ত এমন কোন তাপ ইঞ্জিন পাওয়া যায় নি যা কার্নোর তাপ ইঞ্জিনের চেয়ে বেশি কর্মদক্ষতা প্রদর্শন করেছে।
চিত্র ২ এবং চিত্র ৩ এ কার্নোর চক্রের কর্মদক্ষতার ক্রমাগত পরিবর্তন দেখা যায়। স্থির কম্প্রেসর তাপমাত্রার জন্য তাপ প্রদানের ফলে তাপমাত্রার বৃদ্ধির সাথে কর্মদক্ষতা কীভাবে পরিবর্তিত হয় তা চিত্র ২ দ্বারা নির্দেশিত হয় । চিত্র 3 নির্দেশ করে যে স্থির টারবাইন তাপমাত্রার জন্য তাপ গ্রাহকে বর্জিত তাপের জন্য তাপ গ্রাহকের তাপমাত্রায় বৃদ্ধির সাথে দক্ষতা কীভাবে পরিবর্তিত হয়।
যেকোন সর্বোচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কার্নোর চক্রকে অবশ্যই অতিক্ষুদ্র তাপমাত্রা ব্যবধানে পরিচালিত হতে হবে; এর কারণ হ'ল যেকোন দুটি ভিন্ন তাপমাত্রার বস্তুর মধ্যে তাপ সঞ্চালন হল অপ্রত্যাবর্তী, তাই কার্নোর ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতার সমীকরণটি কেবল অতিক্ষুদ্র ব্যবধানের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু বাস্তবে তাপ ইঞ্জিনগুলোর উদ্দেশ্য কেবল শক্তি উৎপাদন করা ,অতিক্ষুদ্র আউটপুট শক্তি খুব কমই চাওয়া হয়।
এন্ডোরিভারসিবল তাপগতিবিদ্যা অনুসারে আদর্শ তাপ-ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতার পরিমাপের জন্য আরেকটি সমীকরণ পাওয়া যায়, যেখানে ইঞ্জিনের তাপীয় চক্রটি কার্নোর চক্রের সমতুল্য, পার্থক্য কেবল এই চক্রের প্রক্রিয়াসমূহ অপ্রত্যাবর্তী(কলেন 1985):
বাস্তবে তাপ ইঞ্জিনগুলো কত ভাল কাজ করবে তা এই মডেলটির সাহায্যে বেশ ভাল অনুমান করা যায়। (কলেন 1985, এন্ডোরিভারসিবল তাপগতিবিদ্যা দেখুন ):
শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র | (ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) | (ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড) | (কার্নো) | (এন্ডোরিভারসিবল) | (পরীক্ষালব্ধ) |
---|---|---|---|---|---|
পশ্চিম থারক (যুক্তরাজ্য) কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | 25 | 565 | 0.64 | 0.40 | 0.36 |
ক্যান্ডু (কানাডা) পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | 25 | 300 | 0.48 | 0.28 | 0.30 |
লার্ডেরেলো (ইতালি) ভূতাত্ত্বিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র | 80 | 250 | 0.33 | 0.178 | 0.16 |
উক্ত সারণি অনুসারে দেখা যায় যে এন্ডোরিভার্সিবল কর্মদক্ষতার মান পরীক্ষালব্ধ মানের সবচেয়ে কাছাকাছি।
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের তাপ ইঞ্জিন সম্পর্কে ধারণা ছিল, তবে অষ্টাদশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের সময়ই এটি একটি প্রয়োজনীয় যন্ত্র হিসেবে তৈরি হয়েছিল। আজ পর্যন্ত এর বিকাশ অব্যাহত রয়েছে।
কোন তাপ ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রকৌশলীগণ বিভিন্ন ধরনের তাপ ইঞ্জিন পর্যালোচলা করেছেন। কোন গ্যাস ভিত্তিক তাপ ইঞ্জিনই কার্নোর ইঞ্জিনের দক্ষতার সীমা অতিক্রম করতে পারবে না, কিন্তু প্রকৌশলীগণ অন্তত দুটি উপায় খুঁজে পেয়েছেন যাতে করে তাপ ইঞ্জিনগুলো এই সীমা অতিক্রম করতে পারে এবং সকল নিয়ম রক্ষা করেই আরও বেশি কর্মদক্ষ হতে পারে। এগুলো হল:
টেমপ্লেট:Table of thermodynamic cycles টেমপ্লেট:Table of thermodynamic cyclesটেমপ্লেট:Table of thermodynamic cyclesটেমপ্লেট:Table of thermodynamic cyclesটেমপ্লেট:Table of thermodynamic cycles
প্রতিটি প্রক্রিয়া নিম্নলিখিতগুলির মধ্যে একটি:
তাপ ইঞ্জিনসমূহের কর্মদক্ষতা সর্বাধিক করাই বর্তমান আধুনিক বিশ্বের লক্ষ্য। কার্নোর চক্র অনুসারে সর্বাধিক কর্মদক্ষতা পাওয়া গেলেও সেটি আদতে একটি তাত্ত্বিক ধারণা। যদি কোনভাবে আউটপুট তাপ কে সংরক্ষণ করা যেত তাহলে শতভাগ কর্মদক্ষতা অর্জিত হতে পারত। কিন্তু যেহেতু চক্রটিকে আবার তার পূর্বাবস্থায় ফিরে আসতে হবে তাই এমন একটি তাপগ্রাহকে তাপ বর্জন করতে হবে যার তাপমাত্রা তাপ উৎস থেকে কম। তাই কোনভাবেই আউটপুট তাপকে সংরক্ষণ করা যায় না।
১. Thermodynamics An Engineering Approach, by Yunus A. Cengel and Michael Boles.