তারা দেবী তুলাধর | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৭ নভেম্বর ২০১২ কাঠমান্ডু, নেপাল | (বয়স ৮১)
পরিচিতির কারণ | প্রথম মহিলা রক্তদাতা, সমাজকর্মী |
মেডিকেল কর্মজীবন | |
পেশা | নার্স এবং শিক্ষক |
প্রতিষ্ঠান | প্রসূতি গৃহ মাতৃ হাসপাতাল, নার্সিং স্কুল, ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হাসপাতাল |
বিশেষজ্ঞতা | প্রসূতিবিদ্যা |
তারা দেবী তুলাধর (দেবনাগরী: तारा देवी तुलाधर) (২১ আগস্ট ১৯৩১ – ২৭ নভেম্বর ২০১২) হলেন নেপালের প্রথম মহিলা রক্তদাতা এবং সমাজকর্মী, যিনি সমাজ সেবার নিমিত্তে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।[১][২]
তারা দেবী কাঠমান্ডুর তনলাছি (तंलाछि) এলাকার একটি প্রাচীন ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ত্রিরত্ন মান তুলাধর লাসা নেওয়ারদের গোত্রভুক্ত ব্যবসায়ী ছিলেন। তার দাদা ধর্ম মান তুলাধর একজন জনহিতৈষী ছিলেন, যিনি ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের স্বয়ম্ভূনাথ স্তূপের সংস্কার কার্যের জন্য বিখ্যাত।[৩]
রাণা শাসনামলে, ১৯৩০ এর দশকে, সাধারণ মানুষদের শিক্ষিত করায় শাসকদের অনিচ্ছার কারণে নেপালে তেমন কোনো বিদ্যালয় গড়ে ওঠে নি। শিশু কন্যাদের জন্য বিদ্যালয়ে যাতায়াত তখন আরও কঠিন ছিল। এ কারণে তারা দেবী গৃহ শিক্ষকের নিকট অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেন।[৪]
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তারা দেবীর পরিবার তাকে ভারতের কালিম্পংয়ে সেন্ট জোসেফস কনভেন্টে প্রেরণ করেন। কাঠমান্ডুতে ফিরে তারা দেবী কন্যা হাই স্কুলে ভর্তি হন এবং দশম শ্রেণী পাস করেন। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার আজন্ম লালিত নার্স হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য ভারতের এলাহাবাদে গমন করেন এবং কমলা নেহরু স্মৃতি হাসপাতালে ভর্তি হন। দুই বছর পর তিনি প্রসূতিবিদ্যায় ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের মহা ভূমিকম্পের কাঠমান্ডুতে আহতদের সেবায় বিদ্যাবতী কংসকারের অবদানের কাহিনী ছোটবেলা থেকে শোনার পর তারা দেবী নার্সিংয়ে আগ্রহী হয়েছিলেন।[৫]
১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তারা দেবী কাঠমান্ডুর প্রসূতি গৃহ মাতৃ হাসপাতালে যোগ দেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে নয়া দিল্লির নার্সিং কলেজ থেকে নার্সিংয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর কাঠমান্ডুর নার্সিং স্কুলে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে অস্ত্রোপচারে গুরুতর অসুস্থ রোগীর তাৎক্ষণিক রক্তের প্রয়োজন হলে তারা দেবী রক্ত দেন। এর মাধ্যমে তিনি নেপালের প্রথম নারী রক্তদাতা হিসেবে গণ্য হন।[৬] ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে অবসরের পূর্বে তিনি ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসপাতালের অধিক্ষক (সুপারভাইসর) হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।[৭]
অবসর গ্রহণের পর তারা দেবী কাঠমান্ডুর থেরোবাদী বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী নিবাস ধর্মকীর্তি বিহারে স্বেচ্ছাসেবা প্রদান করতেন। সেখানে বসবাসরত সন্ন্যাসিনী ও সাহায্যপ্রার্থীদের সেবায় তিনি তার নার্সিং প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতার প্রয়োগ করেন। বিহারের স্বাস্থ্য সেবার সমন্বয়ের পাশাপাশি তিনি প্রতি সপ্তাহে বিনামূল্যের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান এবং রোগী ও বয়স্কদের সেবার জন্য প্রশিক্ষণ দিতেন। তিনি ধর্মকীর্তি বিহার কনভেনশন ট্রাস্টের জীবন সদস্যও ছিলেন।[৮]
তারা দেবী জন চিকিৎসালয় নামে কাঠমান্ডুর একটি কমিউনিটি ক্লিনিকেও সেবাদান করেন। তিনি ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আধুনিক নেপালের প্রথম দাতব্য সংগঠন পরোপকার সংগঠনের নির্বাহী বোর্ডের একজন সদস্য ছিলেন।[৯] এছাড়াও তিনি উরায় সম্প্রদায়ের সামাজিক সংগঠন উদয় সমাজের একজন পরামর্শক ছিলেন। তারা দেবী মুক্তভাবে নিজের কর্ম সম্পাদনের জন্য কোনোদিন বিয়ে করেন নি।
তারা দেবী তার জীবদ্দশায় দুইটি বই লিখা সম্পন্ন করেন। এর মধ্যে একটি নেপাল ভাষায় এবং অন্যটি নেপালি ভাষায়। বই দুইটি হলো-