তার্খুন (ট্যারাগন) | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ/রাজ্য: | প্লান্টি (Plante) |
গোষ্ঠী: | ট্র্যাকিওফাইট (Tracheophytes) |
ক্লেড: | সপুষ্পক উদ্ভিদ (অ্যাঞ্জিওস্পার্মস) |
ক্লেড: | ইউডিকটস |
গোষ্ঠী: | অ্যাস্টেরিডস (Asterids) |
বর্গ: | Asterales |
পরিবার: | Asteraceae |
গণ: | Artemisia L.[১] not Hook.f. 1881 |
প্রজাতি: | A. dracunculus |
দ্বিপদী নাম | |
Artemisia dracunculus L.[১] not Hook.f. 1881 | |
প্রতিশব্দ[২] | |
Synonymy
|
তার্খুন (বৈজ্ঞানিক নাম Artemisia dracunculus) অ্যাস্টারসি (সূর্যমুখী) পরিবারের সুগন্ধী ঝাঁঝালো (তিক্ত) বহুবর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। সোমরাজ (wormwood) ও সোমলতা (absinthe) নামক উদ্ভিদগুলির সাথে এর সম্পর্ক আছে। এটি ইংরেজি ভাষাতে "ট্যারাগন" (Tarragon) এবং ফরাসি ভাষাতে "এস্ত্রাগোঁ" (Estragon) নামে পরিচিত। তার্খুনের শুকানো পাতা ও ফুল রান্নায় (বিশেষত মাছ, মুরগী, ঝোল, সস, অমলেট, পনির, সবজি, টমেট, সালাদ ও আচারে) ঝাঁঝ বা তিক্ততা বাড়াতে ব্যবহার করা হয়।[৩][৪][৫][৬] ফরাসি শৈলীর রন্ধনপ্রণালীতে এটিকে স্বাদগন্ধবর্ধক সূক্ষ্ম ভেষজ মিশ্রণের (Les fines herbes লে ফিন জের্ব) একটি উপাদান হিসেবে প্রায়শই ব্যবহার করা হয়।[৭] তার্খুনের টাটকা পাতা সালাদে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ভিনেগার এবং সরিষা ভর্তায় টাটকা তার্খুন যোগ করে একটি স্বাদবর্ধক আচার বা সস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ১৮৭৩ সালে আলেক্সঁদ্র দ্যুমা তার রান্নার অভিধানে (Petit Dictionnaire de la cuisine প্যতি দিকসিওনের দ্য লা কুইজিন) লেখেন যে "তার্খুন ছাড়া ভাল ভিনেগারই হয় না।" ("il n’y a pas de bon vinaigre sans estragon" ইল নিয়া পা দ্য বোঁ ভিনেগ্র্ সঁ জেস্ত্রাগোঁ)[৮]
তার্খুন উদ্ভিদটি সাইবেরিয়া এবং মধ্য এশিয়ার কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলের দেশজ উদ্ভিদ। ফরাসি তার্খুন (Artemisia dracunculus sativus) নামের উদ্ভিদটির একটি উপপ্রজাতি পশ্চিম ইউরোপে (বিশেষত ফ্রান্স ও স্পেনে) এবং উত্তর আমেরিকাতেও চাষ করা হয়। রুশ তার্খুন (Artemisia dracunculus dracunculoides) নামের আরেকটি উপপ্রজাতিও আছে। তার্খুন উদ্ভিদের পাতাগুলি উজ্জ্বল সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে, এর গন্ধ উষ্ণ। এর স্বাদ অনেকটা মৌরির মত। উদ্ভিদটি প্রায় ২ ফুট উঁচু হয়ে থাকে। এর ফুলগুলি ছোট হলদে সবুজ রঙের হয়ে থাকে ও যবের ফুলের মত বহু শাখাতে গুচ্ছে গুচ্ছে থাকে। তার্খুনে ০.৩ থেকে ১ শতাংশ মৌলিক তেল থাকে, যার মূল উপাদান মিথাইল চাভিকল।
উদ্ভিদটির লাতিন বৈজ্ঞানিক নামটির অর্থ "ছোট ড্রাগন", সম্ভবত এর ড্রাগনসদৃশ শেকড়গুলির কারণে। প্রাচীন গ্রিক উদ্ভিদবিদ দিওস্কোরিদুস এটিকে "ড্রাগন ভেষজ" হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। অতীতে অনেকে বিশ্বাস করতেন যে তার্খুনের পাতার রস দিয়ে সাপের কামড়ের বিষ থেকে সুস্থ হওয়া যায়। এমনকি ইবনে সিনাও বিষধর ভাইপার সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে তার্খুন ব্যবহারের পরামর্শ দেন। মধ্যযুগের শেষভাগ থেকেই তার্খুনের টাটকা পাতা ইউরোপের রান্নায় ব্যবহৃত হওয়া শুরু হয়। অ্যালকোহল বা মদ্যপানীয়তে তার্খুন পাতা ডুবিয়ে ভিজিয়ে রাখলে পানীয়টি সুগন্ধী ও ঝাঁঝালো হয়। শুকিয়ে ফেললে তার্খুনের সুগন্ধ প্রায় পুরোটাই চলে যায়, তবে তেলে বা অ্যালকোহলে ডুবিয়ে রেখে এটিকে সংরক্ষণ করা যায়। মুখরোচক বা হজমী হিসেবেও এর ব্যবহার আছে।