তাশিরোজিমা (田代島) জাপানের মিয়াগির আইসিনোমাকিতে অবস্থিত একটি ছোট দ্বীপ। এটি আজিশিমার পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের ওশিকা উপদ্বীপে অবস্থিত। দ্বীপটি প্রায় জনশূন্য কারণ এর জনসংখ্যা ১০০ জন এর মত। ১৯৫০-এর দশকের এক হিসেবমতে দ্বীপের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১০০০ জন। তাশিরোজিমা দ্বীপে বিড়ালের আধিক্যের কারণে এটি বিড়ালের দ্বীপ হিসেবেই বেশি পরিচিত। বিড়ালকে খায়ানো হলে তাদের ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, স্থানীয়রা এধরনের এক বিশ্বাস থেকেই বিড়াল পোষে থাকে। বর্তমানে এই দ্বীপে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। জাপানের সানকি সংবাদ মাধ্যমের ২০০৯-এর এক নিবন্ধ অনুসারে দ্বীপের বাসিন্দাদের কোন পোষা কুকুর নেই এবং দ্বীপে কুকুরের প্রবেশ নিষিদ্ধ।[১]
তাশিরোজিমা দ্বীপটি দুটি গ্রামে বিভক্ত: ওডুমারি ও নিটুডা। এ দ্বীপের পাশের দ্বীপ ছিল আজিসিমা, যখন আজিসিমা ওশিকা দ্বীপের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালের ১লা এপ্রিল ওশিকাকে আইশিনোমাকি দ্বীপের সাথে একত্রিত করা হয়[২], সুতরাং বর্তমানে দুটি দ্বীপই আইশিনোমাকির অধীন। দ্বীপের ৮৩% লোক বয়স্ক। গ্রাগুলোকে টার্মিনাল ভিলেজ (限界集落 গেনকাই সুরাকো) বলে আখ্যায়িত করা হয় যার অর্থ হল, দ্বীপের ৫০% লোকের বয়স ৬৫ বা তার বেশি। দ্বীপের অধিকাংশ লোকজন মৎস শিকার বা গাইড হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে। তাশিরোজিমা মঙ্গা দ্বীপ নামেও পরিচিত।
তাশিরোজিমা দ্বীপের তাশিরো এলিমেন্টারি বিদ্যালয় ১৯৮৯ সালে বন্ধ হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে এটি এডুকেশনাল সেন্টার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠে। ২০০৮ সালে এডুকেসন সেন্টারটিও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০০ সালে পর্যটকদের সুবিধার্থে দ্বীপে একটি ভবন তৈরি করা হয়। ২০০৭ সালে দ্বীপে একটি ৬কি.মি. ও ১০ কি.মি. ম্যারাথন এর আয়োজন করা হয়েছিল। ২০১১ সালে তাশিরোজিমাতে তুহোকো সুনামি আঘাত হনে এবং সুনামির আঘাতে বাসিন্দাদের মারাত্মক ক্ষতি হয়।
২০০৪ সালে সেন্দাই থেকে একটি জুটি দ্বীপে স্থানান্তরিত হয়ে পর্যটকদের জন্য একটি মোটেল তৈরি করেন যার নাম হামায়া। ২০০৬ সালে তারা দ্বীপ ও এর বাসিন্দাদের তথ্য নিয়ে ব্লগ লেখা শুরু করেন।[৩] ২০০৬ সালের ২০শে মে দ্বীপের বিশাল বিড়াল জনসংখ্যার রক্ষণাবেক্ষন নিয়ে তেরেবি আশাই নামে এক পরিচালক জিনসি নো রাকুইন নামে একটি প্রামান্যচিত্র নির্মাণ করেন। ফজি তেরেবি তোশিরোজিমার বিড়াল নিয়ে নায়ানকো দ্য মুভি (にゃんこ THE MOVIE) নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এই চলচ্চিত্রটিতে দ্বীপের ড্রুপি ইয়ার্ড জ্যাক নামের একটি বিড়ালের চরিত্র চিত্রণ করা হয় ও চলচ্চিত্রটির কয়েকটি সিকুয়্যালও বের হয়। প্রত্যেক সিকুয়্যালে জ্যাকের সাম্প্রতিক অবস্থা দেখানো হয়। সর্বশেষে এই সিরিজের চলচ্চিত্র নায়ানকো দ্য মুভি ৪ মুক্তি পায় ২০১০ সালে। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর অনেক বিড়ালপ্রেমী দ্বীপটিতে ভ্রমণ করেন এবং বর্তমানে কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের জ্যাকের সাথে প্যাকেজ ট্যুারেরও ব্যবস্থা করেছেন।