তিউনিসিয়া রাজ্য Royaume de Tunisie المملكة التونسية | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৫৬–১৯৫৭ | |||||||||
জাতীয় সঙ্গীত: সালাম আল-বে (রাজকীয় সঙ্গীত) | |||||||||
রাজধানী | তিউনিস | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | তিউনিসিয়ান আরবী, ফ্রেন্স | ||||||||
ধর্ম | ইসলাম | ||||||||
সরকার | সাংবিধানিক রাজতন্ত্র | ||||||||
রাজা | |||||||||
• ১৯৫৬–১৯৫৭ | অষ্টম মুহাম্মাদ | ||||||||
Crown Prince | |||||||||
• ১৯৫৬–১৯৫৭ | প্রিন্স হুসাইন | ||||||||
প্রধানমন্ত্রী | |||||||||
• ১৯৫৭ (first) | তাহের বিন আম্মার | ||||||||
• ১৯৫৬–১৯৫৭ (last) | Habib Bourguiba | ||||||||
আইন-সভা | Constituent Assembly | ||||||||
ইতিহাস | |||||||||
২০ মার্চ ১৯৫৬ | |||||||||
২৫ জুলাই ১৯৫৭ | |||||||||
মুদ্রা | Tunisian franc | ||||||||
|
তিউনিসিয়ার রাজ্য (ফরাসি: Royaume de Tunisie আরবি: المملكة التونسية, প্রতিবর্ণীকৃত: el-Mamlka et-Tūnsīya) তিউনিসিয়ার স্বাধীনতা এবং তিউনিসিয়ার ফরাসি আশ্রিত অঞ্চল থেকে মুক্ত হওয়ার পর ২০ মার্চ ১৯৫৬ সালে রাজতন্ত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত স্বল্পস্থায়ী দেশ ছিল। স্বাধীনতার দিবস ২০ মার্চ ১৯৫৬ থেকে প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার দিবস ২৫ জুলাই ১৯৫৭ পর্যন্ত এক বছর পাঁচ মাস স্থায়ী ছিল। তিউনিসের বে নামে একমাত্র সম্রাট মুহাম্মদ অষ্টম আল-আমিন (লামিন বে নামেও পরিচিত) যিনি তাহার বেন আম্মার কে প্রধানমন্ত্রী এবং হাবিব বোরগুইবাকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেছিলেন।
২৫ জুলাই ১৯৫৭ সালে তিউনিসিয়া একটি প্রজাতন্ত্র হিসাবে পুনর্গঠিত হওয়ার মাধ্যমে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়। ন্যাশনাল কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি দেশের আইনসভা ১৯৫৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে বুরগুইবা জয়ী হলে বুরগুইবাকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত করে।
১৮৮১ সাল থেকে বহু দশক ধরে চলা একটি স্বাধীনতা আন্দোলনে বিজয়ের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ফরাসি শাসনের অবসান ঘটে । ১৯৫৪ সালে তিউনিসিয়ার সংগ্রাম এবং নাগরিক অস্থিরতার কারণে ফ্রান্স এবং নিও ডেস্টোর রাজনৈতিক দলের মধ্যে তিউনিসিয়ার শ্রমিক ইউনিয়ন এবং আরব লীগ দ্বারা সমর্থিত (মূলত হাবিব বুরগুইবার অধীনে) স্বায়ত্তশাসনের জন্য আলোচনা শুরু হয় যা । এপ্রিল, ১৯৫৫-এর সম্মত কনভেনশনে বলা হয় পরের বছর থেকে ফ্রান্স স্বায়ত্তশাসন সেনাবাহিনী এবং বৈদেশিক বিষয়গুলির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে। ফরাসিরা কারাগার থেকে বোরগুইবাকে মুক্তি দেয়। এই সমঝোতা অবশ্য নিও ডেস্টোরকে বিভক্ত করেছিল এবং উগ্র বামপন্থীদের দমনের দিকে পরিচালিত করে, প্যান-আরব নেতা সালাহ বেন ইউসেফকে বহিষ্কার করলে তিনি মিশরে পালিয়ে যান। আন্তঃ-দলীয় দ্বন্দ্বের এই পদক্ষেপ নিও ডেস্টোর মধ্যপন্থী পথ অনুসরণ করার ইঙ্গিত দেয়। ফরাসিরা তখন আলজেরিয়াতে তাদের বাহিনীকে কেন্দ্রীভূত করার জন্য মরক্কো কে তাদের আশ্রিত অঞ্চল থেকে মুক্ত করে দেয়। প্রতিক্রিয়া হিসাবে এবং তিউনিসিয়ান শক্তিশালী জনমত নিয়ে বোরগুইবা স্বাধীনতার জন্য চাপ দেন । ফরাসিরা অবশেষে সম্মতি দেয় এবং স্বাধীনতা দানে খসড়া তৈরি করা হয়। ১৯৫৬ সালের ২০ মার্চ, তিউনিসিয়া তার পূর্ণ সার্বভৌমত্ব অর্জন করে। জুলাই মাসে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।
ফরাসিরা স্বাধীন তিউনিসিয়াকে তিউনিসের বে, মুহাম্মদ অষ্টম আল-আমিন দ্বারা শাসিত একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র হিসাবে দেখত।
পূর্ববর্তী বে মুহাম্মদ সপ্তম আল-মুন্সিফ জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন, কিন্তু আমিন বে উভয়কেই ইউসেফিস্ট বা বেন ইউসেফের অনুসারী বলে মনে করেছিলেন এবং কেউ কেউ ফরাসিদের সাথে আপোসকারী বলে মনে করেছিলেন। ২৫ মার্চ ১৯৫৬ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বোরগুইবা বে-এর সাথে আলাপ-আলোচনার গোপন ব্যবস্থার কারণে ভোটাররা প্রার্থীর বিচার না করে শুধুমাত্র দলীয় তালিকা বেছে নেয়। এই ব্যবস্থাটি নিও ডিস্টোর পার্টির পক্ষে যেকোন ইউসুফবাদীদের কে বা অন্য ভিন্নমতাবলম্বীদের থেকে দূরে রাখা এবং দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা সহজ করে তুলেছিল। [১] নির্বাচন নিও ডেস্টোর পার্টির দ্বারা বেগবান করা হয়েছিল এবং নেতা হাবিব বোরগুইবা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
তিউনিসিয়া রাজ্য ছিল একটি সাংবিধানিক এবং বংশগত রাজতন্ত্র যার আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সংসদ দ্বারা নির্ধারিত ছিল। ১৭০৫ সাল থেকে তিউনিসিয়ার উপর রাজত্ব করে আসা হোসেনি রাজবংশের নেতাকে রাজা হিসাবে বিবেচনা করা হয় যিনি ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান, ঐক্যের প্রতীক এবং স্বাধীনতার রক্ষক। পূর্বেকার সময়ে শাসক পরিবারকে দেয়া রাজার সমস্ত সুযোগ-সুবিধা সংসদ কতৃক বাতিল করায় রাজার ভূমিকা অনেকটা সাধারণ নাগরিক এর মতো হয়ে যায়। [২] রাজ পরিবার এবং জাতীয় প্রতীক পরিবর্তন করার মাধ্যমে হুসেইনিদ রাজবংশের অস্তিত্ব মুছে ফেলা হয়েছিল [৩] সরকারী আইন পাস করার জন্য রাজার বিশেষাধিকার সরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। [৪] অন্যান্য রায় অনুসরণ করে রাজাকে বিভিন্ন সম্পত্তি রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হয়। এই পদক্ষেপগুলো রাজার অবশিষ্ট প্রতিপত্তিকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করতে সাহায্য করেছিল। [৫] তারপরও রাজা অষ্টম মুহম্মদ প্রথম ব্যক্তি রুপে ১৯ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে স্বাধীনতার নতুন আদেশের অলঙ্করণে সম্মানিত হন। সবই সরকারের হাতে চলে যাওয়ায় রাজার তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল না এবং কোন নির্বাহী ক্ষমতা ছিল না। প্রজাতন্ত্র ঘোষণার কয়েকদিন আগে তিউনিসিয়ার সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা সরকার প্রতিস্থাপিত হওয়ার পরে রাজার জন্য আর রাজরক্ষীও ছিলনা।
স্বাধীনতার ঘোষণার পর তিউনিসিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী রাজার স্থলাভিষিক্ত হয়ে দেশের শাসক হয়েছিলেন এবং তিউনিসিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যেকার স্বাধীনতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন।
১৯৫৬ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচন দ্বারা তিউনিসিয়া একটি সাংবিধানিক সংসদীয় রাজতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল।
সংসদীয় রাজতন্ত্রের যুগে প্রধানমন্ত্রী তিউনিসিয়ার সমাজকে আধুনিকীকরণ এবং তাদের মানসিকতা পরিবর্তনের লক্ষ্যে অসংখ্য সংস্কার শুরু করেন। ১৯৫৬ সালের ৩১ মে তিনি রাজকীয় বিশেষাধিকার বাতিল করেন। রাজকুমার এবং রাজকন্যাদের আইনের আওতাভুক্ত করে অন্যান্য নাগরিকদের সমান এবং আইন দ্বারা শাস্তিযোগ্য করে তোলেন। একই দিনে তিনি ইসলামিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত ওয়াকফ সম্পত্তি আইনকে দমন করেন। তিনি জিতুনা মসজিদ কে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ইসলামিক জ্ঞান শিক্ষাকেন্দ্র জিতুনা বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করেন। একইভাবে কোরানিক স্কুলগুলোকে সরকারী তত্ত্বাবধানে, মন্ত্রণালয় এর পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিচালনা করেন। বিনামূল্যে শিক্ষা দানের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিনি লিঙ্গ সমতা সম্পর্কিত প্রচারও শুরু করেছিলেন, যার মধ্যে নারীর অধিকারের পক্ষে কথা বলা: ছেলে-মেয়েদের জন্য সর্বজনীন শিক্ষা, পুরুষদের মতো একই শর্তে নারীদের চাকরিতে নিয়োগ, বিবাহের জন্য বিনামূল্যে সম্মতি এবং পর্দা অপসারণ। সংস্কারগুলো নিয়ে রক্ষণশীলদের তীব্র বিরোধিতা থাকা সত্বেও একটি বিশাল সাফল্যে পেয়েছিল। কোড অফ পার্সোনাল স্ট্যাটাস দ্বারা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সফলভাবে নিশ্চিত করা হয়, আইন প্রনয়নের মাধ্যমে পরিবারকে পুনর্গঠিত করা হয়। নারীদেরকে তাদের বিবাহ, প্রত্যাখ্যান, বিবাহবিচ্ছেদ পৈতৃক চুক্তিতে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয় এবং পিতা ও মাতার মধ্যে বৈষম্য দূরকরা, শিশুদেরকে আইনের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ধর্মীয় আদালতকে দমন করে সরকারী বিচার শুরু করার মাধ্যমে সরকার বিচার ব্যবস্থায়ও সংস্কার করে।
রাজতন্ত্রের সময় তিউনিসিয়ার আইনসভা ছিল জাতীয় গণপরিষদ ( আরবি: المجلس القومي التأسيسي </link> ) । এটি তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণার পাঁচ দিন পর ২৫ মার্চ ১৯৫৬ সালে নির্বাচিত ৯৮ জন সদস্যের সমন্বয়ে একটি এককক্ষ বিশিষ্ট সংসদ হিসেবে কাজ করে।
৮৩.৬% অংশগ্রহণকারীর নির্বাচনে হাবিব বুরগুইবার নেতৃত্বে নিও ডেস্টোরের জোট ন্যাশনাল ইউনিয়ন, তিউনিসিয়ান জেনারেল লেবার ইউনিয়ন, তিউনিসিয়ান ইউনিয়ন অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফিশারিজ এবং তিউনিসিয়ান কনফেডারেশন অফ ইন্ডাস্ট্রি, ট্রেড অ্যান্ড হ্যান্ডিক্রাফ্টস ৯৮% ভোট লাভের মাধ্যমে সমস্ত আসন জিতে নেয়।
গণপরিষদের স্পিকারকে কার্যবিধির নিয়ম, পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলাকালীন গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং অফিসের সিদ্ধান্তগুলো প্রয়োগ করে অ্যাসেম্বলি অফিসের সভাগুলোর পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনগুলোর সভাপতিত্ব করেন।
৯ এপ্রিল ১৯৫৬-এ গণপরিষদ দ্বারা নির্বাচিত ও প্রথম দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন হাবিব বুরগুইবা। ১৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগের জন্য বিধানসভার সিদ্ধান্ত গ্রহনের পর এবং ১ জুন ১৯৫৯-এ সংবিধান গৃহীত হওয়া পর্যন্ত তিনি জাল্লৌলি ফারেস দ্বারা স্থলাভিষিক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের মাধ্যমে গণপরিষদ এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রমাণিত হয়।
দেশের জন্য সংবিধান প্রণয়ন করার দায়িত্ব ছাড়াও, গনপরিষদ দেশের ইতিহাসে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির জন্য সর্বসম্মতিক্রমে ভোট দেওয়া এবং ২৫ জুলাই ১৯৫৭-এ প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা এবং তিউনিসিয়ান প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বুরগুইবাকে নিয়োগ করার ভূমিকা পালন করে।
তিউনিসিয়া রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হাবিব বোরগুইবা ২১ জুন, ১৯৫৬ সালের আদেশ দ্বারা গভর্নরেট ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গভর্নর, সাধারণ সম্পাদক এবং প্রতিনিধিদের দ্বারা আঞ্চলিক প্রশাসনকে সংগঠিতভাবে পরিচালিত করা হয়েছিল। ফ্রেমওয়ার্ক আইন গ্রহনের মাধ্যমে তিউনিসের শেখ এল মদিনা , কাহিয়া সহ সক্রিয় খলিফাদের চার্জগুলি সরিয়ে দেয়।
নিও-ডেস্টোর নির্বাহীদের মধ্য থেকে কাইডাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গভর্নরদের বডি বেছে নেওয়া হয়। আঞ্চলিক প্রশাসন নিয়ন্ত্রণকারী মাখজেনকে ভেঙে ফেলা হয়। নিও-ডেস্টোর জাতীয় অধিবেশনের পূর্বে ২৩জুন, ১৯৫৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হাবিব বুরগুইবা সিদ্ধান্তের ন্যায্যতা প্রমাণ বিষয়ক ঘোষণা করেন:
"We felt it necessary to purify these frameworks to ensure cooperation based on reciprocal respect between the State personified in its representatives and the people who must respect in them, no longer the agents of colonization, but the servants of the public interest. For the vast majority of executives affected by the cleansing, the blow was hard. Some suffer terribly from it. But we were in an inescapable necessity."
স্বাধীনতার সাথে চৌদ্দটি গভর্নরেটের আবির্ভাব হয় যা হল:
স্বাধীনতার প্রথম মাস থেকে প্রধানমন্ত্রী বোরগুইবা তিউনিসিয়ার সমাজে আমূল সংস্কার করেছেন। ১৩ আগস্ট ১৯৫৬ সালে তিউনিসিয়ায় ব্যক্তিগত স্ট্যাটাসের কোড জারি করে বহুবিবাহকে নিষিদ্ধ করেছিলেন এবং বিচার বিভাগ একীভূত করে আদালতগুলোকে বিবাহবিচ্ছেদ ও সম্পত্তি অর্পন বিষয়ক আবেদনগুলোকে বিবেচনা করার জন্য আদেশ প্রদান করেছিলেন। ১৯৫৬ সালের জুন মাসে প্রশাসনিক স্তরে "আল-কিয়াদাত" (কাইডস) বিলুপ্ত করা হয় এবং প্রতিনিধিদলের সমন্বয়ে ১৪টি গভর্নরেট দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। ১৯৫৬ সালের এপ্রিল মাসে তিউনিসিয়ার নেতৃত্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গঠন করে একই মাসে জাতীয় সেনাবাহিনী প্রেরণ করা হয়। ৩১ মে ১৯৫৬ সালে এক আদেশ জারি করে রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য ব্যয় করা আর্থিক সুবিধাগুলি স্থগিত করার শর্ত দেয়ার মাধ্যমে সরকার রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে অর্থনৈতিক চাপ মুক্ত করতে চেষ্টা করেছেন।
একই বছরের ২১ জুন, তিউনিসিয়ার রাজ্যের প্রতীক পরিবর্তন করার জন্য আদেশ জারি করার মাধ্যমে হুসেইনিদ রাজবংশের সমস্ত অস্তিত্ব মুছে ফেলা হয়েছিল। ১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট, রাজার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্বাহী ক্ষমতা হস্তান্তরের আরেকটি আদেশ জারি করা হয়। নবগঠিত তিউনিশিয়ান সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট দ্বারা রাজরক্ষী প্রতিস্থাপিত হয়।
বোরগুইবা রাজার প্রভাবকে ধীরে ধীরে হ্রাস করার জন্য কাজ করে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক কার্যাবলী এবং আইন প্রণয়ন কর্তৃপক্ষের একটি ছোট অংশে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন যেমন তার স্ট্যাম্প লাগানো এবং আদেশ, সিদ্ধান্ত এবং প্রতি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী প্রেরিত আদেশে স্বাক্ষর করা। এভাবে সংসদীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের মতো এক ধরনের শাসনের দিকে পরিচালিত করেছিলেন।
ফ্রান্স থেকে তার প্রত্যাবর্তন এবং ১৯৫৫ সালে অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা চুক্তির সমাপ্তির পর, বুরগুইবা একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র গৃহীত হবে মর্মে রাজপরিবারের সদস্যদের এবং তিউনিসিয়াতে স্বীকৃত মহান ক্ষমতার রাষ্ট্রদূতদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছিলেন। অন্যদিকে, তিনি ৮ এপ্রিল ১৯৫৬-এ গণপরিষদে তাঁর উদ্বোধনী বক্তৃতায় যা বলেছিলেন তার অনুরূপ কিছু বিপরীত তথ্য দিয়ে ইঙ্গিত পূর্বক তিনি সপ্তম মুহাম্মদ -কে একজন শক্তিশালী রিপাবলিকান স্বীকার করে প্রশংসা করেছিলেন।
১৫ জুলাই ১৯৫৭ সালে নিরাপত্তা বাহিনী রাজপ্রাসাদে প্রবেশ ও প্রস্থানে বাধা দান করে একটি পাহারা বসায়। রাজপ্রাসাদের দিকে যাওয়ার সমস্ত রাস্তায় পুলিশ নজরদারিও আরোপ করে। ১৮ জুলাই, আইনের প্রতি রাজপরিবারের ঘৃণার দৃষ্টির প্রেক্ষিতে বুরগুইবা রাজপরিবারের উপর আক্রমণ শুরু করে। পরের দিন পুলিশ রাজার কনিষ্ঠ পুত্র প্রিন্স স্লাহ এডদিন (32 বছর বয়সী) কে গ্রেফতার করে এবং তাকে তিউনিসের বেসামরিক কারাগারে বন্দী করে। তারপর প্রধানমন্ত্রী বোরগুইবা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী ২৩ জুলাই প্যারিস, ওয়াশিংটন, কায়রো, রোম, লন্ডন, মাদ্রিদ এবং রাবাতে রাষ্ট্রদূতদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। রাজাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলে তাদের থেকে প্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে কূটনীতিকরা বোরগুইবাকে সংযমী হওয়ার পরামর্শ দেন। তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রদূতকে রাবাতে জানিয়েছিলেন যে এই ধরনের একটি কাজকে মরক্কোতে সন্দেহের সাথে দেখা হবে এবং তিউনিসিয়ান ও মরক্কোর রাজপরিবারের মধ্যে বন্ধুত্বের কারণে অস্বীকৃতির মুখোমুখির মধ্যে পড়তে হতে পারে।
২৩ জুলাই সন্ধ্যায়, নিও ডিস্টোর পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি জানার জন্য ২৫ জুলাই অধিবেশন আহ্বান করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রজাতন্ত্র ঘোষণার দায়িত্ব অর্পণ করে। অধিবেশনের দিন, কূটনৈতিক কর্পসের আমন্ত্রণ ছাড়াও রেডিও এবং লিখিত প্রেস সহ তিউনিসিয়ান এবং বিদেশী মিডিয়াকে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় অধিবেশন শুরু হয়। শুরু থেকেই, স্পিকার অধিবেশনের বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করে বলেছিলেন যে এর আলোচ্যসূচি ছিল রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বিবেচনা করা। ডেপুটিদের ডাকার পরে, রাজতন্ত্রের ত্রুটিগুলো তুলে ধরার পর সরকারব্যবস্থা সংজ্ঞায়িত করার প্রয়োজনীয়তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে এবং একটি প্রজাতন্ত্রী ব্যবস্থা গঠনের আহ্বান জানায়।
সন্ধ্যা ছয়টার সময় জাতীয় গণপরিষদ রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি এবং তিউনিসিয়া প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বসম্মতভাবে ভোট দেয়। এরপর গনপরিষদ বুরগুইবাকে প্রথম প্রেসিডেন্ট করে। [৬][৭][৮][৯][১০]
In the name of God the Merciful
We, the representatives of the Tunisian nation, members of the National Constituent Assembly, by virtue of the full influence we have derived from the people, in support of the pillars of the independence of the state and the sovereignty of the people, and on the path of the democratic system, which is the assembly's point of drawing the constitution, we take the following decision in force immediately:
First: We completely abolish the monarchy.
Second: We declare that Tunisia is a republic
Third: We assign the Prime Minister, Mr. Habib Bourguiba, with the duties of the presidency of the republic in its present state, pending the entry into force of the constitution, and we call it the title of President of the Republic of Tunisia.
Fourth: We instruct the government to implement this decision and to take the necessary measures to maintain the republican system. We also instruct the Speaker of the Assembly, the Secretary General of the Assembly's office and the government to report this decision to the private and public.
We issued it in the Palace of Bardo on Thursday at six in the evening on the 26th of Dhu al-Hijjah 1376 and on the 25th of July 1957
Signature: Jallouli Fares
বোরগুইবা তিউনিসিয়ায় প্রজাতন্ত্র ঘোষণার বিষয়ে লিবিয়া, মরক্কো এবং সৌদি আরবের পাশাপাশি কিছু পশ্চিমা পরিচিতদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা বেনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় চুক্তির ভিত্তিতে প্রজাতন্ত্র ঘোষণার প্রতিবাদে লিবিয়া রাজ্যের রাষ্ট্রদূত গণপরিষদের সদর দফতর ত্যাগ করেন। ১৯৫৭ সালের ৬ জানুয়ারি বুরগুইবা এবং মুস্তফা বিন হালিমের মাঝে তিউনিসিয়া ও লিবিয়ার মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, সহযোগিতা এবং সম্প্রীতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বাদশাহ সৌদ বিন আবদুল আজিজ তিউনিসিয়া সফর করেন এবং রাজার সঙ্গে দেখা করেন। ফলে বোরগুইবা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দুই দেশের রাষ্ট্রদূতদের সাথে যোগাযোগ করে পারস্পরিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ বিষয়ে আশ্বস্ত করার জন্য প্ররোচিত করে।
প্রজাতন্ত্রের ঘোষণার একই দিনে, গণপরিষদের সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ক্ষমতাচ্যুত রাজাকে অবহিত করার জন্য এবং তা মেনে চলার জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য বেশ কয়েকজন ব্যক্তির একটি প্রতিনিধি দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন আলি বেলহোয়ান (জাতীয় গণপরিষদের সাধারণ সম্পাদক), তাইয়েব মাহিরি (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), আহমেদ মেস্তিরি (বিচারমন্ত্রী), দ্রিস গুইগা (জাতীয় নিরাপত্তা পরিচালক), আবদেলমাজিদ চাকের (রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য)। দল), আহমেদ জাউচে ( তিউনিসের মেয়র), তিজানি কাতারি (ন্যাশনাল গার্ডের কমান্ডার)।
'We went into the throne room right away, and without being announced, as we were already expected. Lamine Bey, wearing a jebba and with his hair undressed, stood there, dignified, without saying a word. Belhouane called out in his theatrical voice As-Salamou Alaikum and then read out the resolution of the Constituent Assembly. A photographer had come with us, and wanted to start working, but straight away the King broke his silence. Ah no, not that! he said, making a gesture of refusal, the last reflex of his authority. We did not want to deny the wishes of the old man, or humiliate him further. Then Ali Belhaouane made a gesture of salute with his hand, repeated As-Salamou Alaikum in his stentorian voice, and turned on his heels. As we withdrew, police commissioner Driss Guiga presented himself and advised the fallen ruler of an order from the Minister of the Interior placing him in isolation. In the course of this, hearing the name of his father spoken, the King reacted again, saying Allah Yarhamou (May God save his soul) clearly out loud as he left the room. It was over. The whole thing had not even lasted three minutes.'[১১]
রাজাকে তার স্ত্রী লাল্লা জেনেইনার সাথে মনুবার হাশেমাইট প্রাসাদে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। ১৯৫৮ সালের অক্টোবরে বে এবং তার স্ত্রীকে সাউক্রার শহরতলির একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত করা হয় এবং শুধুমাত্র তাকে ১৯৬০ সালে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তার ছেলে যুবরাজ সালাহ এডদিনের সাথে লাফায়েটের একটি অ্যাপার্টমেন্টে তার মৃত্যুর (১৯৬২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর) পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনভাবে বসবাস করার জন্য।
Tunisia ইতিহাস | ||||
---|---|---|---|---|
ধারাবাহিকের একটি অংশ | ||||
Prehistory | ||||
Ancient | ||||
Middle Ages | ||||
Early modern | ||||
|
||||
Modern | ||||
|
||||