ত্রিভুজ বা ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থল (হিব্রু ভাষায়: המשולש, Ha-Meshulash, অনুবাদ: "ত্রিভুজ") হচ্ছে পশ্চিম জেরুসালেমের একটি কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এবং বিনোদন জেলা। এর আয়তন ২৯,০০০ বর্গমিটার (৩,১০,০০০ ফু২),[১] এলাকাটি উত্তর দিকে জাফা সড়ক, পশ্চিমে কিং জর্জ সড়ক, এবং দক্ষিণ-পূর্বে বেন ইয়েহুদা সড়ক দ্বারা আবদ্ধ। এর শীর্ষগুলি জাফা সড়ক ও কিং জর্জ সড়ক, কিং জর্জ ও বেন ইয়েহুদা সড়ক, এবং বেন ইয়েহুদা সড়ক ও জাফা সড়কের (পরে পরিচিত সিয়োন স্কয়ার হিসেবে) ছেদচিহ্ন।
১৯৪০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত, এই ত্রিভূজটি জেরুসালেমের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু ছিল, জার্মান-ইহুদি অভিবাসী ব্যবসায়ীদের দ্বারা পরিচালিত এখানকার অভিজাত অনেক দোকান এবং রেস্তোরাঁসমূহ গ্রাহকদের কাছে একটি সমৃদ্ধ আবেদন তৈরি করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭-এ জেরুসালেমের পুনরেকত্রীকরণ এবং শহরটি এর মূল কেন্দ্রস্থল থেকে দূরে সম্প্রসারিত হলে, এই ত্রিভুজ আকৃতির জায়গাটির বাণিজ্যিক কার্যকারিতা কমে যায়। বেন ইয়েহুদা সড়কের রূপান্তর এবং ১৯৮২ সালে ত্রিভূজের অভ্যন্তরের রাস্তায় একটি উন্মুক্ত ফুট পাথ মার্কেটের কারণে এলাকাটি পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠে। পরের দুই দশক ধরে, বহিরঙ্গনে ক্যাফে এবং উপহারের দোকানগুলি আসলে, এতে ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থলের খ্যাতি বেড়েছে এবং পর্যটক ও তরুণ ইজরায়েলিদের জন্য একটি জনপ্রিয় কেনাকাটা এবং বিনোদনের স্থান হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছে।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ বাধ্যতামূলক সরকার গ্রহণ করে নেওয়ার আগে, জেরুসালেমের প্রধান বাণিজ্যিক জেলা ছিল পুরনো শহর। ওল্ড সিটি ওয়ালস এর বাইরে আশেপাশে উন্নয়নের জন্য নজর দেয়া হলে, ব্রিটিশরা একটি মূল শহর পরিকল্পনা করে, যেটি নতুন শহরে দুটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র তৈরি করে। নির্মিত প্রথম বাণিজ্যিক জেলাটি ছিল এই ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থল, যদিও এটি ম্যামিলা এলাকার অন্যান্য পরিকল্পিত বাণিজ্যিক জেলার একটি মধ্যমপ্রকার ভূমিকা পালন করে, যা পুরনো শহরের কাছাকাছি ছিল। যাইহোক, ম্যামিলা উন্নয়ন ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গেলের (ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থল) মতো এতটা আকর্ষণ অর্জন করেনি।[২]
ত্রিভুজের জন্য ব্যবহৃত জমিটি গ্রিক অর্থডক্স চার্চ অব জেরুসালেম থেকে ইহুদি উপনিবেশ স্থাপন সমিতি ক্রয় করে নেয়,[৩] যেটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে জেরুসালেমে তাদের কিছু হোল্ডিংস বিক্রি শুরু করে।[৪] ব্রিটিশরা জাফা সড়ক, বেন ইয়েহুদা সড়ক (১৯২২ সালে ব্রিটিশ কর্তৃক নির্মিত) এবং কিং জর্জ সড়ক (১৯২4 সালে ব্রিটিশ কর্তৃক নির্মিত) দ্বারা এই ক্ষেত্রটিকে ত্রিকোণ জেলায় উন্নিত করে (অত:পর এটির নাম হয়, "ত্রিভুজ")। বড় কোম্পানি ও সমবায় সেইসাথে ব্যক্তিগত ব্যবসায়ও প্রচুর বিক্রয় করা হয়।[২] ত্রিভুজ সংলগ্ন অন্যান্য সড়ক – শালোমিজিয়ন হামলকো, ম্যামিলা, আগরন, এবং কিং ডেভিড সড়ক – বাণিজ্যিক এবং আবাসিক ব্যবহারের জন্য কেন্দ্র করা হয়েছিল।[২]
জেরুসালেমের স্থাপত্য ঐতিহাসিক ডেভিড ক্রোয়ানকার অনুযায়ী, এই ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থলের পূর্ণ-বিকাশ টিকে ছিল ১৯৩০-এর দশকের শুরু থেকে ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত।[৫] অনেক দোকান এবং রেস্তোরাঁ জার্মান ইহুদি অভিবাসীদের দ্বারা খোলা হয়েছিল যারা শহরের কেন্দ্রে একটি ইউরোপীয় পরিবেশ পুনঃস্থাপন করতে চেয়েছিল।[৫] তাদের অভিজাত ফ্যাশনের জিনিসপত্র, কফিহাউস, সুস্বাদু খাবার, এবং একচেটিয়া রেস্তোরাঁ গুলোতে সিনিয়র ম্যান্ডেট কর্মকর্তা ও ধনী, ইংরেজি-ভাষী পর্যটকদের দ্বারা ঘনঘন যাওয়া হতো।[৫][৬][৭] ইসরায়েলি দোকানগুলো যেগুলো আগে একই ছাদের নিচে বিভিন্ন রকমের পণ্য বিক্রি করতো, কিন্তু ইউরোপীয়রা তার বদলে একটি পন্যই বিক্রয় করতো, যেমন হাতমোজা বা টাই। কিছু দোকান অন্যান্য অতিরিক্ত কিছুও দিত, যেমন একটি কফি হাউসে অর্কেস্ট্রা ও নাচের স্থান থাকে, এবং একটি লাইব্রেরি হতো দ্বিতল বিশিষ্ট।[৮]
ইউরোপীয় অভিবাসী বইয়ের দোকানের মালিকেরা গোয়েন্দা কাহিনী, ঐতিহাসিক পাঠ, এবং জার্মান ও ইংল্যান্ডের সাময়িকী এসবের চাহিদার প্রসার করতো। [৮] স্টিম্যাৎস্কি, যেটি ১৯২৫-এ ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গলের জাফা সড়ক়ে এটির প্রথম বইয়ের দোকানটি খুলে, আমদানিকৃত সংবাদপত্র ও সাময়িকী গুলোর জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা চিহ্নিত করে এবং সেগুলোর অনেকগুলোর জন্য ফ্রাঞ্চাইজ কিনে। এই ইউরোপীয় অভিবাসীরা আরো সৃষ্টি করে ঠান্ডা কাটা মাংশ ও পনিরের বাজার, সাথে কিং জর্জ ও বেন ইয়েহুদা সড়কে তিনটি সুস্বাদু খাবারের দোকান। অনেক বছর ধরে, ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গলই ছিল শুধুমাত্র জায়গা যেখানে জেরুসালেমের বাসিন্দারা পোশাক, জুতা, আসবাবপত্র, এবং পরিবারের পণ্য ক্রয় করতে পারতো।[৮]
শুরুতে এই জেলাটিতে ১৪টি সিনেমা হল ছিল যেখানে হলিউডের নতুন নতুন চলচ্চিত্র গুলো প্রদর্শিত হতো।[৫][৬] এগুলো একটি আরেকটির নিকটে ছিল, সিনেমা হল গুলো উভয় প্রাপ্তবয়স্ক এবং যুবকদের আকর্ষণ করতো, সিনেমার পরে তারা কফিহাউস ও রেস্তোরাঁ গুলোতে যেত।[৮] ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গল শহরটির সাংস্কৃতিক হৃদয় ছিল এবং যা "দেখা যেত এবং দেখাও যাবে"। [৫]
ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গলের (ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থল) সর্বজনীন রুচি এর ভবনগুলোতেও দেখা যায়। উদাহরণ হিসেবে, সানসুর বিল্ডিং, এটিতে একটি "সারগ্রাহী" নকশা রয়েছে যেটিতে সম্মিলন ঘটেছে "নব্য রেনেসাঁ এবং ক্লাসিসিস্ট উপাদানের"।[৯] ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থলের প্রায় ১৫ টি ভবন ডিজাইনার রুইভেন আভ্রাহাম রবিনোভিয়েজ কর্তৃক ডিজাইন করা হয়েছে, যিনি প্রায়ই অট্টালিকার সদরের বহির্ভাগে সীমানা যোগ করেছেন মোটামুটি পরিহিত পাথরের সারি দিয়ে।[৬]
১৯৬৭ সালে জেরুসালেমের পুনর্গঠন অনুসারে, উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণে শহরটি চালু হয়েছে। এখান থেকে দূরে আশেপাশে টালপিওট, গিভাট সৌল, এবং মালকা-এ বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র খোলা হয়, যা শহরের এই কেন্দ্র থেকে গ্রাহকদের দূরে নিয়ে যায়। ১৯৭০ এর দশকের শেষভাগে ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গলের অর্থনৈতিক পতনের প্রেক্ষিতে সরকারি অফিসগুলিও এখান থেকে চলে যেতে শুরু করেছিল।[১০] উচ্চমানের ইউরোপীয় জিনিসপত্রের গ্রাহকরাও বৃদ্ধ ছিল, আশেপাশে সন্নিহিত দরিদ্র ও হেরাদি ইহুদিরা ডাউনটাউন দখলে নেয়, যারা কিনা ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গলেকে পৃষ্ঠপোষকতা করেনি। এখানকার দোকানগুলি হয়ে যায় হুমুস রেস্তোরাঁ, বৈচিত্র্য পণ্যের দোকান, এবং অর্থ পরিবর্তনের দোকানে। টেলিভিশনের আবির্ভাবের ফলে ট্রায়াঙ্গলের বেশির ভাগ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায়।[৮]
ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গলের রাস্তাগুলো ইহুদিদের—
কোলাহল, চুপচাপ জাঁকজমক, গাড়ি চালক, ব্যবসায়ী, এবং বাচ্চা,
জার্মানি হতে ফার্মাসিস্ট, শিক্ষিত ব্যক্তি,
রাস্তায় কিব্ববুৎটসনিকদের মাতলামি, পবিত্র ব্যক্তি,
পুরুষদের কিপ্পা পড়ে নড়াছড়া,
বৃত্তাকার এবং অন্ধ, আমাদের জনগনের
পেশি উচ্ছাস, ভিক্ষুকদের ফোয়ারা,
এবং খোলা শার্টে পুরুষদের দ্বারা গিজগিজ করছে।
১৯৮২ সালে, শহরটি ট্রাফিকের জন্য বেন ইয়েহুদা সড়ক এবং ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থলের অভ্যন্তর সড়ক (লুনস, ডরোট রিশিনিম, ইয়াভেট, বেন হিলাল এবং হাহিস্তাদ্রুত সড়ক) বন্ধ করে শহরটিকে পুনর্বিন্যস্ত করার চেষ্টা করে এবং সমগ্র এলাকাটিকে একটি উন্মুক্ত পথচারী ফুটপাত মার্কেট রূপে রূপান্তর করার চেষ্টা করে।[১] যদিও ট্যাক্সি কোম্পানিগুলি সংস্কারের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছিল এবং ব্যবসায়ীরা দাবি করেছিল যে এটা ব্যর্থ হবে, তবে এই ধারণাটি সফল বলে প্রমাণিত হয়েছে। বহিরাঙ্গন ক্যাফে, পিজ্জারিয়াস, এবং ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁগুলোর সঙ্গে স্যুভেনির দোকান, জুডাইকা, এবং জুয়েলারির দোকানগুলি ট্রায়াঙ্গেলে চলে আসে।[১][১২][১৩][১৪] রাস্তার সঙ্গীতশিল্পী, রাস্তার শিল্পী, রাজনৈতিক প্রচারক ইত্যাদি মলের প্রাণবন্ত প্রকৃতি যোগ করে।[১৫][১৬] পথচারী ফুটপাতটি শহরেন "হৃদয়" হিসাবে ত্রিভুজের খ্যাতি পুনরুদ্ধার করে, যদিও পূর্বের উচু মানের, ইউরোপীয় চিত্রকে আরো জনপ্রিয়তাবাদী চিত্র দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়েছিল। ডিসেম্বর ২০১১-এ জেরুসালেম লাইট রেল এর প্রবর্তনের ফলে স্থানীয় এবং ভ্রমনকারীদের সংখ্যা বেড়ে যায়: আনুমানিক দেখায় যে ২০১২-এর এপ্রিলে প্রতিদিন ৩৬,০০০ জন পথচারী ট্রায়াঙ্গেলটি পরিদর্শন করেছে, যা ২০০৪-এর এপ্রিল থেকে ১৬০০০ বেশি।[১৭] শনিবার রাতে বিশেষ করে মলটি ব্যস্ত হয়ে পড়ে, শাব্বত এর পুনরায় চালুর জন্য খাবারের দোকান জন্য বন্ধ করা হয়েছে। রাস্তাগুলোয় জেরুসালেম এবং তেল আভিভ থেকে আসা তরুণ ইজরায়েলিদের কারণে ভিড় হয়।[১][১৩]
১৯৯০ সালের শেষের দিকে, ফুটপাত শপিং মলটি ঝুঁকি ও গৃহহীন যুবকদের উপস্থিতি বৃদ্ধির কারণে সুপরিচিত হয়ে ওঠে। তিনটি যুব কেন্দ্র - হেমসুলাশ, হেস্রোনি স্কোয়াট, এবং দ্য জোন - সিয়োন চত্বরের সান্নিধ্যের মধ্যে কাজ করে।[১৮]
এটির কেন্দ্রিয়তা ও দর্শক এবং বিনোদনের স্থানসমূহের বৃহৎ ঘনত্বের কারণে, ত্রিভুজটি অনেক বোমা হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে বা প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। ১৯৪৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারিতে, আরব অনিয়মিত ও ব্রিটিশ দলত্যাগীর নেতৃত্বে ব্রিটিশ সেনা বাহিনীর তিনটি সাঁজোয়া গাড়ী বেন ইয়েহুদা সড়কে বিস্ফোরণ ঘটায়, যার ফলে ৫৮ জন ইহুদি বেসামরিক নিহত এবং ১৪০ জন আহত হয়।[১৯] ৪ জুলাই ১৯৭৫-এ, একটি ফ্রিজে থাকা ৫ কিলোগ্রাম (১১ পা) বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে সিয়োন চত্বরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, এতে ১৫ জন নিহত এবং ৭৭ জন জখম হয়।[২০][২১] ২৪ মার্চ ১৯৭৯-এ সিয়োন চত্বরে একটি ময়লা ক্যানের বোতলে বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে বিস্ফোরন ঘটানো হয়, এতে একজন মারা যায় ও ১৩জন আহত হয়।[২০]
১৯৯০ সালের শেষ দিকে আত্মঘাতী বোমার যুগে, বেন ইয়েহুদা সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে তিনজন বোমা হামলাকারী প্রায় একসঙ্গে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়, এ ঘটনায় ৮ জনের মৃত্যু হয় এবং ২৭৭ জন আহত হয়।[১৫] পহেলা ডিসেম্বর ২০০১-এ একই রকম আরেকটি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে: পুলিশ ও জরুরি চিকিৎসা কর্মীরা ত্রিভুজাকৃতির কেন্দ্রস্থলের দুইটি আত্মঘাতী বোমা হামলার দৃশ্যের দিকে দৌড়াচ্ছিল, যখন একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরিত হয়; এতে ২০ জন নিহত ও ১৫০ জন আহত হয়। [১৫] এর আগে আগস্টে, জাফা সড়ক ও কিং জজ সড়কের কোণের একটি ব্যস্ত সাব্রো রেস্তোরাঁতে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে,[২২]; এতে ১৫জন নিহত ও ৯০ জন আহত হয়।[১৫]
ফেব্রুয়ারি ২০১৪-এ, সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিক্রিয়ায়,[২৩] জেরুসালেম পৌরসভা একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং ১৯৪৮ সালে বেন ইয়েহুদা সড়কে বোমা হামলার জায়গায় একটি স্মারক ফলক স্থাপিত হয়।[২৪]
ত্রিভুজের সবচেয়ে উঁচু ভবন হচ্ছে সাত তলা বিশিষ্ট হমাশবীর ল্যাজারচারান ডিপার্টমেন্ট স্টোর, যেটি আয়তনে ৫,০০০ বর্গমিটার (৫৪,০০০ ফু২), যেটি ২০১১ সালে সিয়োন চত্বরের পূর্ব দিকে খোলা হয়েছিল। এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোর[১৪] এবং ৩৮টি চেইন স্টোর বিশিষ্ট ফ্লাগশিপ স্টোর। [২৫] হমাশবীর গলাগলি ভাবে ডাউনটাউনের সঙ্গে সংযুক্ত, ১৯৪৭ থেকে এর বর্তমান অবস্থানে হমাশবীর এর প্রথম দোকানটি এই রাস্তায় স্থাপিত হয়, এবং ১৯৭০ থেকে ২০১০ সাল সময়ের মধ্যে ট্রায়াঙ্গেলের অন্য স্থান কিং জর্জ এবং বেন ইয়েহুদা সড়ক সরে যায়।[২৫]
ফ্রাইমেন অ্যান্ড বেইন (৫০ জাফা সড়ক) ছিল ইসরায়েলের প্রথম বিলাসবহুল জুতার দোকান।[২৬] জার্মান-ইহুদি অভিবাসীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এটি ইউরোপ থেকে মান সম্পূর্ণ চামড়ার জুতো আমদানি করতো এবং ক্রেতা হিসেবে ব্রিটিশ কর্মকর্তা এবং আরব শেখদের আকৃষ্ট করতো।[২৬] এই দোকানটি মূলত ১৯৩৫ সালে জাফা সড়কে পূর্বদিকে অবস্থিত জেনারেলি বিল্ডিংয়ে খোলা হয়েছিল এবং[২৭] ১৯৪৭-এ ৫০ জাফা সড়কে চলে আসে। ২০১৪-এ এটি বন্ধ হয়ে যায়। খলিফা সুজ (৪৪ জাফা সড়ক), ১৯৫৪-এ প্রতিষ্ঠিত হয়, যেটি বিশেষত ইসরায়েলি-তৈরি জুতা এবং স্যান্ডেলের একটি ইহুদি পরিবারভিত্তিক মালিকানাধীন ব্যবসায়।[২৮]
ট্রায়াঙ্গেলে দীর্ঘসময় ধরে টিকে থাকা খাবারের স্থান ছিল আতারা ক্যাফে এবং ফিংক'স বার। আতারা ক্যাফে ৭ বেন ইয়েহুদা সড়কে ১৯৩৮ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত টিকে ছিল। ইউরোপীয় শৈলীর এই কফি হাউস ম্যান্ডেট কর্মকর্তা, প্রাক-রাষ্ট্র আধাসামরিক দল এবং ইসরাইলের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, এবং বোহেমিয়ানদের একটি প্রিয় স্থান ছিল।[২৯][৩০] ফিংক'স বার ছিল কিং জর্জ এবং HaHistadrut সড়কের কোণে, এটি চালু ছিল ১৯৩৬ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত। সুপরিচিত, স্বতন্ত্র এই রেস্টুরেন্ট জেরুসালেমের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এক খাবারের স্থানের ঠিকানা ছিল।[৭] ইউরোপীয় রন্ধনপ্রণালীতে বিশেষ, এই রেস্টরেন্ট/বার এটির রান্নাঘর কোসহার ২০০৩-এ প্রতিষ্ঠা করে এটির পড়ন্ত ব্যবসায় কয়েক বছরে কাটিয়ে ওঠার জন্য এবং "রাজনীতিক, সাংবাদিক ও কূটনীতিক" এর বাইরেও এটির গ্রাহক সংখ্যা বিস্তৃত করার জন্য।[৩১]
ডাউনটাউন ট্রায়াঙ্গেলের মধ্যে দুটি হোটেল রয়েছে। কিকার সিয়োন হোটেল (সিয়োন স্কয়ার হোটেল), যেটি দক্ষিণে সিয়োন স্কয়ারের মুখোমুখি হয়েছে, এটি সিয়োন সিনেমা হলের স্থানটির জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এর নামানুসারে চত্বরের নাম রাখা হয়েছে।[৩২] সিনেমা হলটি ১৯৭২ সালে ভেঙ্গে ফেলা হয় এবং একটি সুউচ্চ ভবনে কিকার সিয়োন হোটেলটি ছিল (উপরের তলায়) এবং ব্যাংক হাপোয়ালিম (নিচের তলায়) এর একটি শাখা ছিল।[৭][৩২] ২০১৬-এর হিসেবে, হোটেল হার্বার্ট স্যামুয়েল হোটেল নামে এটি পুনরায় খোলার জন্য সংস্কার করা হচ্ছে। সিয়োন চত্বরের উত্তর দিকে "জেরুসালেম হোস্টেল" অবস্থিত। এই বাসস্থানটি ১৯২৬ সালে তেল আভিভ হোটেল হিসেবে খোলা হয় এবং পরে রন হোটেল নামে পরিচিত হয়।[৭] ৩ আগস্ট ১৯৪৮-এ মেনাখেম বেগিন ইরগুন এর বিলুপ্ত ঘোষণা করতে এবং ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী এর সাথে তার সৈন্যদের সাইন আপ করাতে হোটেলটির একটি বারান্দায় দাড়িয়েছিলেন।[৭]