থাইমাস | |
---|---|
বিস্তারিত | |
পূর্বভ্রূণ | তৃতীয় ফ্যারিন্জিয়াল পাউচ |
তন্ত্র | লসিকাতন্ত্র,অনাক্রম্যতন্ত্র |
লসিকা | ট্রাকিওব্রঙ্কিয়াল, প্যারাস্টিনাল |
কাজ | টি কোষের কার্যক্রম ও বিকাশে সাহায্য করা |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | Thymus |
মে-এসএইচ | D013950 |
টিএ৯৮ | A13.1.02.001 |
টিএ২ | 5152 |
এফএমএ | FMA:9607 |
শারীরস্থান পরিভাষা |
থাইমাস হলো রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি বিশেষ প্রাথমিক লিম্ফয়েড অঙ্গ। থাইমাসের মধ্যে থাইমাস কোষ, লিম্ফোসাইট বা টি কোষ পরিপক্ক হয়। টি কোষ অভিযোজিত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে শরীর বহিরাগত আক্রমণকারীদের সাথে খাপ খায়। থাইমাস বুকের উপরের অংশে অবস্থিত। এর অবস্থান হলো সামনের উচ্চতর মিডিয়াস্টিনাম, স্টার্নামের পিছনে, এবং হৃৎপিন্ডের সামনে। এটি দুটি লোব নিয়ে গঠিত। প্রতিটি লোব একটি কেন্দ্রীয় মেডুলা এবং একটি বহিঃস্থ কর্টেক্স নিয়ে গঠিত। মেডুলা এবং কর্টেক্স একটি ক্যাপসুল দ্বারা বেষ্টিত থাকে।
থাইমাস থাইমোকাইটস নামের অপরিণত টি কোষ দ্বারা গঠিত। এছাড়াও থাইমাস হলো এপিথেলিয়াল কোষের আস্তরণ কোষ, যা থাইমোসাইটগুলোকে বিকাশে সহায়তা করে। টি কোষগুলো সাফল্যের সাথে বিকাশ করে শরীরের এমএইচসি প্রতিরোধ ক্ষমতা গ্রহণকারীদের সাথে যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখায় (যাকে ইতিবাচক নির্বাচন বলা হয়)। কিন্তু শরীরের প্রোটিনের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না ( একে নেতিবাচক নির্বাচন বলা হয়)। নবজাতক ও প্রাক-কৈশোরকালে থাইমাস বৃহত্তম এবং সক্রিয় থাকে। প্রথম কৈশোরের মধ্যে থাইমাসের আকার এবং ক্রিয়াকলাপ হ্রাস পেতে শুরু করে এবং থাইমাসের টিস্যু ধীরে ধীরে ফ্যাটি টিস্যু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। তবুও, কিছু টি কোষের বিকাশ প্রাপ্তবয়স্ক জীবন জুড়ে অব্যাহত থাকে।
থাইমাসের অস্বাভাবিকতার ফলে টি কোষের সংখ্যা হ্রাস এবং অটোইমিউন রোগ যেমন অটোইমিউন পলিয়েন্ডোক্রাইন সিন্ড্রোম টাইপ ১ এবং মায়াস্থিনিয়া গ্রাভিস হতে পারে। এগুলো প্রায়ই থাইমাসের টিস্যুর ক্যান্সার হওয়ার সাথে যুক্ত থাকে। থাইমাস টিস্যু্র ক্যান্সারকে থাইমোমা বলা হয়। এছাড়াও টি কোষের অপরিণত লিম্ফোসাইট থেকে প্রাপ্ত টিস্যুকে লিম্ফোমা বলা হয়। দেহ থেকে থাইমাস অপসারণকে থাইমেক্টোমি বলে। যদিও প্রাচীন গ্রীকদের সময় থেকেই থাইমাস শরীরের অঙ্গ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল, তবে ১৯৬০ এর দশক থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থাতে থাইমাসের কাজ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
থাইমাস হলো একটি অঙ্গ যা বুকের উপরের সামনের অংশে স্টার্নামের নিচে অবস্থিত এবং ঘাড়ের উপরের দিকে প্রসারিত হয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে থাইমাস গোলাপী-ধূসর, নরম এবং এর তলদেশ লোবিউলযুক্ত হয়। [১] জন্মের সময় এটি প্রায় ৪-৬ সেমি লম্বা, ২.৫-৫ সেমি প্রশস্ত এবং প্রায় ১ সেমি পুরু। [২] বয়ঃসন্ধিকালের আগ পর্যন্ত এটি আকারে বৃদ্ধি পায় যেখানে এর ওজন প্রায় ৪০-৫০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। [৩][৪]
থাইমাস দুটি লোব দিয়ে গঠিত। লোবদুটো উপরের মিডলাইনে মিলিত হয় এবং গলার থাইরয়েড গ্রন্থির নিচ থেকে চতুর্থ কোস্টাল কার্টিলেজের নিচে প্রসারিত হয়।[৫] লোবগুলো একটি ক্যাপসুল দ্বারা আবৃত থাকে।[৩] থাইমাস স্টার্নামের নিচে অবস্থিত। এর কিছু অংশ পেরিকার্ডিয়াম উপরে এবং অ্যাওর্টিক আর্চ ও "বৃহৎ রক্তনালিগুলো" থেকে একটি ফ্যাসিয়া স্তর দ্বারা পৃথক থাকে। বাম ব্রাকিওসেফালিক শিরা থাইমাসের মধ্যে অনুবিদ্ধ থাকতে পারে।[১] গলায়, এটা শ্বাসনালীর সামনে এবং পাশে, স্টার্নোহাইওয়েড এবং স্টারনোথাইরয়েড পেশীর পিছনে অবস্থিত।[১]
থাইমাস সরবরাহকারী ধমনীগুলো হলো অভ্যন্তরীণ থোরাসিকের শাখা, এবং ইনফিরিয়র থাইরয়েড ধমনী। কখনও কখনও উচ্চতর থাইরয়েড ধমনী থেকেও শাখা দেখা যায়। শাখাগুলো থাইমাসে পৌঁছায় এবং ক্যাপসুলের সেপ্টার সঙ্গে কর্টেক্স এবং মেডুলায় ভ্রমণ করে। যেখানে তারা নিজেই থাইমাস প্রবেশ করে; অথবা বিকল্পভাবে সরাসরি ক্যাপসুলে প্রবেশ করে।
থাইমাসের শিরাগুলো বাম ব্রাকিওসেফালিক শিরা, অভ্যন্তরীণ থোরাসিক শিরা, এবং ইনফিরিয়র থাইরয়েড শিরায় সমাপ্ত হয়। কখনও কখনও শিরাগুলো সরাসরি ঊর্ধ্ব মহাশিরার মধ্যেও শেষ হয়।
থাইমাসে সরবরাহকারী স্নায়ুগুলো ভেগাস স্নায়ু এবং সারভাইক্যাল সিমপ্যাথেটিক চেইন থেকে উদ্ভূত হয়। ফ্রেনিক স্নায়ু থেকে সৃষ্ট স্নায়ুর শাখাগুলো থাইমাসের ক্যাপসুলে পৌঁছায়, কিন্তু থাইমাসের মধ্যে প্রবেশ করে না।
থাইমাস টি কোষের পরিপক্কতা সহজ করে। টি কোষ হলো ইমিউন সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা কোষ-মধ্যস্থতাকারী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে।[৬] টি কোষ অস্থিমজ্জা থেকে হেমাটোপয়েটিক প্রিকার্সর হিসাবে শুরু হয়। থাইমাস থেকে মাইগ্রেট করা টি কোষকে থাইমোসাইট হিসাবে উল্লেখ করা হয়। থাইমাসে তারা পরিপক্কতা লাভ করে। এতে করে টি কোষগুলো কোষের অ্যান্টিজেনের ("ইতিবাচক নির্বাচন") বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে। কিন্তু শরীরের টিস্যুতে পাওয়া অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে টি কোষগুলো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না ("নেতিবাচক নির্বাচন")। একবার পরিপক্কতা লাভ করলে, T কোষ থাইমাস থেকে মাইগ্রেট করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ কার্যসম্পাদন করে।[৬]
এই নিবন্ধটি গ্রে'স এনাটমির (১৯১৮) ২০তম সংস্করণের ১২৭৩ পৃষ্ঠা থেকে পাবলিক ডোমেইনে পাঠ্য অন্তর্ভুক্ত করে।
|name-list-style=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
|name-list-style=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)