থান শি

জেনারেল থান শি
သန်းရွှေ
স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের সভাপতি
কাজের মেয়াদ
২৩ এপ্রিল, ১৯৯২ – ৩০ মার্চ, ২০১১
ডেপুটিমং ই
পূর্বসূরীসও মং
উত্তরসূরীথিন সিন (সভাপতি)
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ
কাজের মেয়াদ
২৩ এপ্রিল, ১৯৯২ – ৩০ মার্চ, ২০১১
ডেপুটিমং ই
পূর্বসূরীসও মং
উত্তরসূরীমিন অং হ্লাইং
মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৩ এপ্রিল, ১৯৯২ – ২৫ আগস্ট, ২০০৩
পূর্বসূরীসও মং
উত্তরসূরীখিন ন্যুন্ট
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1933-02-02) ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ (বয়স ৯১)[] or
(1935-05-03) ৩ মে ১৯৩৫ (বয়স ৮৯)[]
কিয়কসি, উচ্চতর বার্মা, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমানে: মায়ানমার)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারত (১৯৩৩-১৯৩৭)
ব্রিটিশ বর্মী (১৯৩৭-১৯৪২, ১৯৪৫-১৯৪৮)
জাপানী বর্মী (১৯৪২-১৯৪৫)
বর্মী (১৯৪৮-বর্তমান)
দাম্পত্য সঙ্গীকিয়ায়িং কিয়ায়িং
সন্তান
সামরিক পরিষেবা
শাখামায়ানমার সেনাবাহিনী
কাজের মেয়াদ১৯৫৩-২০১১
পদসিনিয়র জেনারেল

সিনিয়র জেনারেল থান শি (বর্মী: သန်းရွှေ উচ্চারিত: [θáɴ ʃwè] থাঁ শুয়ে; জন্ম: ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৩) কিয়কসি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বার্মার বিশিষ্ট শক্তিধর রাজনীতিবিদ। ১৯৯২ থেকে ২০১১ মেয়াদে বার্মার রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। এছাড়াও, স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের (এসপিডিসি) সভাপতি ছিলেন থান শি। এ সময়ে বার্মার প্রধানমন্ত্রী, বার্মিজ আর্মড ফোর্স-সহ প্রধান পদগুলোর দায়িত্বে ছিলেন। ২০১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে থিন সিনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

১৯৩৩ কিংবা ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ বার্মার কিয়কসির কাছাকাছি মিনজু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন থান শি।[] ১৯৫১ সালে কিয়কসির সরকারি বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন তিনি। ১৯৫২ সালে মেইখতিলা ডাকঘরের কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। এরপর বার্মিজ আর্মিতে তালিকাভূক্ত হন ও আর্মি অফিসার ট্রেইনিং স্কুলে প্রশিক্ষণ নেন।[] সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে ১নং পদাতিক ব্যাটলিয়নে স্কোয়াড লিডার হিসেবে ১১ জুলাই, ১৯৫৩ তারিখে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। একই ব্যাটলিয়নে অবস্থান করে প্লাটুন কমান্ডার ও পরবর্তীকালে কোম্পানী কমান্ডার হন। দক্ষিণাঞ্চলীয় শন স্টেট ও পূর্বাঞ্চলীয় থনলিন এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনার সাথে নিজেকে জড়িত করেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

১৯৮১ সালে ক্ষমতাসীন বার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির চতুর্থ অধিবেশনে সদস্য নির্বাচিত হন।[] ৪ নভেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে মেজর জেনারেল ও ৪ নভেম্বর, ১৯৮৭ তারিখে লেফট্যানেন্ট জেনারেল পদে নিযুক্ত হন। ২৭ জুলাই, ১৯৮৮ তারিখে উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পান।[]

১৮ মার্চ, ১৯৯০ তারিখে মায়ানমার আর্মির কমান্ডার ইন চীফ পদে মনোনীত হন। কিন্তু, ২৩ এপ্রিল, ১৯৯২ তারিখে স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন।[] এরপর নিজেকে সিনিয়র জেনারেল পদবী ধারণ করেন। স্টেট ল এন্ড অর্ডার রেস্টোরেশন কাউন্সিলের (স্লর্ক) প্রধান ও মায়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ স মংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।

এরপর অর্থনীতির উপর কতিপয় নিয়ন্ত্রণ শিথীল করেন।[] তিনি আসিয়ানে বার্মার অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন। ১৯৯৭ সালে দূর্নীতি উৎপাটনে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও আঞ্চলিক কমান্ডারদেরকে বরখাস্ত করেন।

ডিসিপ্লিন ডেমোক্রেসি নিউ কনস্টিটিউশন শীর্ষক সম্মেলনের মাধ্যমে ৭ জানুয়ারি, ১৯৯৩ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭ তারিখ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্বভার লাভ করেন। কিন্তু, ১৯৯০ সালের বহুদলীয় সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী অং সান সু কি’র ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি ঐ সম্মলনে যোগ দেয়নি।

সমালোচনা

[সম্পাদনা]

বার্মার অর্থনীতিতে কতিপয় শর্তাবলী শিথীল করলেও তার অর্থনৈতিক নীতিকে দূর্বল-পরিকল্পনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।[][]

বার্মার গণতন্ত্রচর্চার বিরোধী হিসেবে অবস্থান করেছেন।[] জাতীয় ছুটি ও উৎসবগুলোয় রাষ্ট্র মালিকানাধীন সংবাদপত্রে বিবৃতি প্রকাশ করলেও খুব কম সময়ই প্রচারমাধ্যমে অংশ নিতেন। প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতায় নজরদারী অব্যাহত রাখেন ও তার আমলে বিরোধী সাংবাদিকদের গ্রেফতারে হস্তক্ষেপ করেন। তার কন্যার জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে হীরে-জহরত ও মদ্যপানের ঘটনা নিয়ে বেশ বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন যেখানে দেশের জনগণ দারিদ্রসীমায় অবস্থান করছে।[]

ক্ষমতার সংঘাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খিন নুয়ান্টকে ২০০৪ সালে গ্রেফতারে ভূমিকা রাখেন।[১০]

মে ও নভেম্বর, ২০০৬ সালে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইব্রাহীম গাম্বারির সাথে নতুন প্রতিষ্ঠিত রাজধানী নেপিয়াডয়ে স্বাক্ষাৎ করেন ও অং সান সু কি’র সাথে স্বাক্ষাতে অনুমতি দেন। কিন্তু, নভেম্বর, ২০০৭ ও ১০ মার্চ, ২০০৮ তারিখে বার্মা সফরে আসা গাম্বারি’র সাথে স্বাক্ষাৎ করতে অস্বীকার করেন।[১১] ২ মে, ২০০৮ তারিখে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের পর অনেক বিদেশী ত্রাণ কর্মীকে বার্মায় প্রবেশে বাঁধা দেন।[১২] এরফলে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হয়।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পা-ও সম্প্রদায়ের সদস্য কিয়ায়িং কিয়ায়িংয়ের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তাদের সংসারে পাঁচ কন্যা ও তিন পুত্র রয়েছে। তিনি ডায়াবেটিক রোগী ও তার ক্যান্সার হয়েছে বলে গুজব রয়েছে। ২০০৬ সালে পারিবারিক ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে প্রকাশ পায়। এতে তার কন্যা থান্ডার শয়ের অতি জাকজমকপূর্ণ বৈবাহিক অনুষ্ঠানের দৃশ্যাদি ছিল।[১৩]

২০০৯ সালে প্যারেড ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা মন্দ স্বৈরশাসকের তালিকায় তাকে ৪র্থস্থানে রাখা হয়।[১৪] এছাড়াও, লিস্টভার্সেসের শীর্ষ দশ জীবিত মন্দ শাসকের তালিকায় তার অবস্থান দ্বিতীয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Than Shwe"। Alternative Asean Network on Burma। ২০০৮-০৭-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০২ 
  2. "၂၀၁၅ အထွေထွေ ရွေးကောက်ပွဲ မဲဆန္ဒရှင်စာရင်း (Voter list)" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। Union Election Commission। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  3. Leaders of Tatmadaw, published by Defence Services Historical Museum and Research Institute (DSHMRI)
  4. Wheeler, Ned (২৮ জুলাই ১৯৯৭)। "Obituary: General Saw Maung"The Independent। London। 
  5. Johnson (2005), p. 67
  6. Independence Online Newsletter ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ আগস্ট ২০১০ তারিখে. Shan Herald Agency for News. Issue 6, January 2007.
  7. Smith, Matthew; Htoo, Naing (2008). "Energy Security: Security for Whom?". Yale Human Rights and Development Law Journal.
  8. "'The General must not be disturbed' | Democratic Voice of Burma"। Dvb.no। ২০১১-০৩-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৩-১৩ 
  9. Beaumont, Peter; Alex Duval Smith (২০০৭-১০-০৭)। "Drugs and astrology: how 'Bulldog' wields power"The Observer। London: The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৮ 
  10. Justin McCurry, Jonathan Watts & Alex Duval Smith (September 30, 2007). How Junta stemmed a saffron tide. The Observer.
  11. How Myanmar leader snubs U.N. envoy. CNN. March 11, 2008
  12. "The Worst of the Worst - By George B.N. Ayittey"। Foreign Policy। ২০১১-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৩-১৩ 
  13. Cropley, Ed (২০০৬-১১-০২)। "Lavish Myanmar junta wedding video sparks outrage"The Star Online। ২০০৮-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৮ 
  14. Parade Magazine. " The Worlds 10 Worst Dictators", 22 March 2009

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
স মং
স্টেট পিস এন্ড ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিলের সভাপতি
১৯৯২-২০১১
উত্তরসূরী
‎থিন সিন
মায়ানমারের রাষ্ট্রপতি হিসেবে
মায়ানমারের প্রধানমন্ত্রী
১৯৯২-২০০৩
উত্তরসূরী
খিন নুয়ান্ট