থানে জেলা | |
---|---|
মহারাষ্ট্রের জেলা | |
মহারাষ্ট্রে থানের অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মহারাষ্ট্র |
প্রশাসনিক বিভাগ | কোঙ্কন ডিভিশন |
তহশিল | ১৫ |
আয়তন | |
• মোট | ৪,২১৪ বর্গকিমি (১,৬২৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,১০,৬০,১৪৮ |
• জনঘনত্ব | ২,৬০০/বর্গকিমি (৬,৮০০/বর্গমাইল) |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৮৬.১৮% |
• লিঙ্গানুপাত | ৮৮০ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ২৫৭৬ মিমি |
ওয়েবসাইট | [thane |
ভারতীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণ বিভাগের একটি জেলা "থানে" ([ʈʰaːɳeˑ])। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এটি দেশের সবচেয়ে জনবহুল জেলা ছিল যার অধিবাসীর সংখ্যা ছিল ১১,০৬০,১৪৮ জন [১]; তবে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে নতুন পালঘর জেলা নির্মাণের মাধ্যমে জেলাটি বিভক্ত হয়ে যায়। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পুনর্গঠিত থানে জেলার জনসংখ্যা ৮,০৭০,০৩২ জন। জেলার সদর দপ্তর থানে। জেলার অন্যান্য প্রধান শহরগুলি নবি মুম্বাই, কল্যাণ-ডোম্বিভিলি, মিরা-ভৈঁদার, ভিওয়ান্ডি, উল্লাসনগর, অম্বরনাথ, বদলাপুর, মুরবদ এবং শাহাপুর। এটি ভারতের সবচেয়ে শিল্পোন্নত জেলা। জেলাটি ১৮°৪২' এবং ২0°২0' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭২°৪৫ 'এবং ৭৩°৪৮' পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। জেলার সংশোধিত আয়তন ৪২১৪ বর্গকিমি। জেলাটি উত্তরপূর্বে নাশিক ও পুনে এবং পূর্বদিকে আহমদনগর জেলা এবং উত্তর দিকে পালঘর জেলা দ্বারা সীমাবদ্ধ। আরব সাগর রয়েছে জেলার পশ্চিম সীমান্তে, দক্ষিণ পশ্চিমে রয়েছে মুম্বাই সিটি ডিস্ট্রিক্ট এবং মুম্বাই সাবারবান জেলা এবং দক্ষিণে রয়েছে রায়গড় জেলা।
১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে থানে জেলার অন্তর্গত অঞ্চলটি পেশোয়াদের থেকে ব্রিটিশদের হাতে চলে যায় এবং এটি উত্তর কোঙ্কণ জেলার অংশ হয়ে ওঠে; জেলার সদর দফতর ছিল থানে। তারপর থেকে, থানের সীমানার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ১৮৩০ সালে, দক্ষিণ কোঙ্কণ জেলার অংশ যোগ করে উত্তর কোঙ্কণ জেলায় বিস্তৃত হয় এবং ১৮৩৩ সালে জেলার নামকরণ করা হয় 'থানা' । ১৮৫৩ সালে পেন, রোহা এবং মহাদ এর তিনটি উপবিভাগ, কোলাবার উন্দেরি এবং রেভাদন্ড এজেন্সির সাথে মিলে কোলাবা সাব-কালেক্টরেট গঠিত হয় 'থানা'র অধীনে এবং শেষ পর্যন্ত ১৮৬৯ সালে পৃথক হয়ে একটি স্বাধীন কোলাবা জেলা গঠিত হয় ( বর্তমানে যা রায়গড় জেলা নামে পরিচিত )। ১৮৬৬ সালে থানা প্রশাসনের উপ-বিভাগগুলি পুনর্গঠিত হয় এবং পুনরায় নামকরণ করা হয়: সঞ্জান থেকে দহনু, কোলভান থেকে শাহাপুর এবং নাসরপুরকে থেকে কারজত। ১৮৬১ সালে বড়া পেঠা তালুক পর্যায়ে উন্নীত হয় ও উরান মহল কে সালসেট থেকে পৃথক করে পানভেল এর অধীনে আনা হয়।
জেলাটি মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন নিম্নভূমির একেবারে উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত। জেলার ভূপ্রকৃতি প্রকৃতপক্ষেই খুব বৈচিত্র্যময়। এখানে দক্ষিণ দিকে রয়েছে উলহাস অববাহিকা, উত্তরে রয়েছে পার্বত্য বৈতমা উপত্যকা, এবং আরো রয়েছে মাল্ভূমি ও সহ্যাদ্রির তীব্র ঢালু অঞ্চল। পূর্বদিকে সহ্যাদ্রির খাড়া ঢালগুলি থেকে, মধ্য ও উত্তরভাগে মালভূমি পেরিয়ে দক্ষিণে উল্লাস উপত্যকার নিম্নভূমিতে গিয়ে মিশেছে। উপকূল থেকে প্রায় ৬ থেকে ১০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত সমুদ্রের সমান্তরালে সুদৃঢ় সুনির্দিষ্ট সংকীর্ণ পাহাড়ের দ্বারা এই নিম্নভূমিটি উপকূল থেকে পৃথক হয়ে যায়। এছাড়াও জেলাতে ছড়িয়ে রয়েছে বিচ্ছিন্ন পাহাড় ও টিলা [২]।
জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুটি প্রধান নদী হল উলহাস ও বৈতরণ। লোনাভালার নিকটবর্তী তুঙ্গারলির উত্তর থেকে উৎপন্ন উলহাস নদীটি বোরঘাটের কাছে ভাসাই ক্রিকের মাধ্যমে সমুদ্রে অবতরণের পূর্বে একটি ছোট দূরত্বের জন্য প্রবাহিত হয় । উলহস নদী ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। নদীর অনেক উপনদী আছে; তাদের মধ্যে দুটি (এই জেলার সীমানার মধ্যে) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বারভি এবং ভাতসা। অন্যদিকে বৈতরণ নদীটি, যা কোঙ্কন অঞ্চলের নদীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়, উতপন্ন হয়েছে নাশিক জেলার ত্র্যম্বক পাহাড়ে গোদাবরীর উৎসের বিপরীতেদিকে । নদীটি শাহাপুর, ভাডা ও পালঘরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং আরনালায় বিস্তৃত মোহনাতে আরব সাগরে প্রবেশ করে। বৈতরণ নদীটি ১৫৪ কিমি লম্বা এবং এর এমন একটি নিষ্কাশন ক্ষেত্র রয়েছে যা কার্যত জেলার সমগ্র উত্তর অংশ জুড়ে রয়েছে। এটির অনেক উপনদী আছে; তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল পঞ্জাল, সূর্য, দোহারজা এবং তানসা।
জেলায় প্রধানত দুটি আলাদা জলবায়ু দেখা যায়, একটি পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় সমতলভূমিতে এবং অন্যটি সহ্যাদ্রির পূর্বাঞ্চলীয় ঢালে। পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমিতে থানে, ভাসাই,পালঘর ও দহানু তালুকে খুব আর্দ্র এবং উষ্ণ ট্রপিকাল জলবায়ু দেখা যায়। অন্যদিকে,পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশের ঢালু অঞ্চলে যেমন (কল্যাণ, ভিওয়ান্ডি, ভাডা, উল্লাসনগর, অম্বরনাথ ও তালাসরি তালুক) এবং সহ্যাদ্রির পূর্বাঞ্চলের (মুবারাদ, শাহাপুর, জওহর, বিক্রমগড় ও মোখাদা তালুক) তুলনামূলকভাবে কম আর্দ্র। পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় এলাকাযর তুলনায় জেলার পূর্বাঞ্চলে তাপমাত্রার পার্থক্য আরও বেশি। জেলায় চারটি ঋতু অনুভূত হয়। শীতকাল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত গ্রীষ্ম,জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বরষা এবং অক্টোবর ও নভেম্বর মাস বরষা-পরবরতী মরশুম, যা উপকূলীয় অঞ্চলে গরম এবং আর্দ্র। উপকূলীয় এলাকার গ্রীষ্মে গড় দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.৯ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (১৯৫৫ সালের ১৯শে এপ্রিল দাহানুতে সর্বোচ্চ ৪০.৬ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড) এবং শীতকালে গড় তাপমাত্রা ১৬.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (দাহানুতে সর্বনিম্ন রেকর্ড ৮.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড জানুয়ারি ৮, ১৯৪৫ তারিখে)। কিন্তু জেলার অভ্যন্তরের অংশে, শীতকালীন মৌসুমে গড় দৈনিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সামান্য কম এবং গ্রীষ্মে গড় দৈনিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশি হয়। জেলার গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ২২৯৩.৪ মিমি। উপকূলীয় এলাকার তুলনায় অভ্যন্তর এ বৃষ্টিপাত বেড়ে যায়। অভ্যন্তরীণ অংশে শাহাপুরের ২৫৮৮.৭ মিমি বৃষ্টি হয় আর উপকূলবর্তী মাহিমের গড়ে ১৭৩০.৫ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। দক্ষিণ-পশ্চিমে বর্ষাকালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় ৯৪%। জুলাই মাসে বৃষ্টিপাতের মাস, বার্ষিক মোটের প্রায় ৪০% বৃষ্টিপাত হয়। ১৯৫৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর দহানুতে জেলার কোন স্টেশনে ২4 ঘণ্টার মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড রয়েছে; ৪৮১.১ মিলিমিটার[৩] ।
থানে জেলার ৭টি তালুক (প্রশাসন বিভাগ) নিয়ে গঠিত, থানে হল সদর দপ্তর। ২০০১ এবং ২০১১ সালে তাদের জনসংখ্যার সঙ্গে তালুকের বিবরণ দেওয়া হলঃ
তালুক | ২০০১ র জনসংখ্যা | ২০১১ র জনসংখ্যা |
---|---|---|
থানে | ২,৪৮৬,৯৪১ | ৩,৭৮৭,০৩৬ |
কল্যাণ | ১,২৭৬,৬১৪ | ১,৫৬৫,৪১৭ |
মুরবাদ | ১৭০,২৬৭ | ১৯০,৬৫২ |
ভিওয়ান্ডি | ৯৪৫,৫৮২ | ১,১৪১,৩৮৬ |
শাহাপুর | ২৭৩,৩০৪ | ৩১৪,১০৩ |
উল্লাসনগর | ৪৭৩,৭৩১ | ৫০৬,০৯৮ |
অম্বরনাথ | ৩৬৬,৫০১ | ৫৬৫,৩৪০ |
Totals | ৫,৯৯২,৯৪০ | ৮,০৭০,০৩২ |
থানা জেলার ১৮টি বিধানসভা আসনবিন্যাস আছে, ৩টি লোকসভা নির্বাচনী এলাকায়:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে থানে জেলার জনসংখ্যা ১১,০৫৪,১৩১ জন[১] যা প্রায় কিউবা[৫] এর জনস্ংখ্যা অথবা আমেরিকার ওহায়ো [৬] রাজ্যের জনসংখ্যার সমান। জনসংখ্যার হিসেবে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে এটি প্রথম স্থান অধিকার করে [১] জেলার জনঘনত্ব ১,১৫৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৩,০০০ জন/বর্গমাইল)[১]। ২০০১-২০১১ দশকের থানে জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩৫.৯৪% [১]। জনসংখ্যার প্রতি ১০০০ জন পুরুষে নারীর সংখ্যা ৮৮০ জন [১]। এখানে সাক্ষরতার হার ৮৬.১৮% [১]।
থানের মোট জনসংখ্যা মহারাষ্ট্রের মোট জনসঙ্খ্যার প্রায় ১০% (৯.৮৪%) এবং ভারতের মোট জনসংখ্যার ১%। নতুন পালঘর জেলা তৈরির ফলে এখন থানে জেলার জনসংখ্যা ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী প্রায় ৮,০৭০,০২২ জন।
জেলার দক্ষিণদিকের তালুকগুলি বেশিরভাগ শহুরে এলাকায়, মারাঠি ভাষা এখানকার প্রধান কথ্য ভাষা এবং বিভিন্ন রাজ্য থেকে অন্য ভাষাভাষী লোকের আগমনের ফলে উর্দু, সিন্ধি, গুজরাটি এবং হিন্দিও এখানকার অন্যন্য প্রচলিত ভাষা। গ্রামীণ তালুকগুলিতে মারাঠিই সবথেকে প্রচলিত ভাষা। পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় অঞ্চলটিতে কোলি জাতির মানুষেরা প্রধান অধিবাসী এবং উত্তর ও পূর্বাঞ্চলীয় তালুকগুলি ওয়ারলি। ওয়ারলি জাতির মানুষরা সংখ্যাগুরু । ওয়ারলি মানুষজন ঘরের দেয়ালের উপর লালমাটিতে আঁকা ছবির জন্যে পরিচিত।
২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জেলার মোট 'কাজে নিযুক্ত জনসংখ্যা' ছিল ১১,৯৬১,৭০৪ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৪৭.৩৭%। মোট 'কাজে নিযুক্ত জনসংখ্যা'র মধ্যে ৫১.৭৫% কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িত, ৬.১৯% উৎপাদন, পরিষেবা এবং কুটিরশিল্প এবং অবশিষ্ট ৩০.৬৯% অন্যান্য কর্মকাণ্ডে। মোট কার্যকরী বাহিনীতে, মহিলা কর্মী বাহিনী ছিল ২২.৮৯%[৭]।
জেলার গুরুত্বপূর্ণ খরিফ ফসল ধান, ভারি এবং নাচানি (ফিঙ্গার মিলেট)। বর্তমানে বিউলি, মুগ এবং কলিথের মত ডালের উৎপাদনও বেড়েছে। ধান এই জেলার প্রধান ফসল যা জেলার প্রায় সমস্ত তালুকের মধ্যেই উৎপন্ন হয়, তবে প্রধানত পালঘর, ভিওয়ান্ডি, মুরবাদ, শাহাপুর, ভাদ, বিক্রমগড় এবং দাহানুতে বেশিমাত্রায় উতপাদন হয়। জেলার পূর্বাংশের পাহাড়ী অঞ্চলে ভারি ও নাচানি উৎপাদিত হয়, অর্থাৎ জওহার, মুরবাদ, বিক্রমগড়, শাহাপুর ও মোখাদা তালুকে। দহানু তালুক ফলের জন্য বিখ্যাত। গোলওয়াড় এ সবেদা (চিকু) ব্যাপকভাবে চাষ হয়।এছাড়া পালঘর ও তালসারি তালুকগুলিতেও সবেদাবাগান আছে। এই অঞ্চলে উতপাদিত সবেদা সমগ্র ভারত জুড়ে রপ্তানি করা হয়। জেলার অন্যান্য ফসল হল পিয়ারা, আম, পেঁপে, কাঁঠাল এবং নারকেল। রাসাই, তম্বেলি, মুথেলি ও ভেলচির মতো বিভিন্ন কলাগুলির জন্য বিখ্যাত ভাসাই ও পালগর তালুক। এখানে উৎপাদিত মৌসুমী ফল যেমন বোর, জাম ও লিচুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে মুম্বাইয়ের বাজারে । জেলাগুলিতে শাকসব্জিও উৎপাদিত হয়। সব্জির মধ্যে এখানকার বেগুন বিখ্যাত।এছাড়া দহানুতে গোলাপ বাগানও আছে[৮]।
রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্পপ্রধান জেলা হল থানে। জেলায় ১৫৪৮টি বড় এবং মাঝারি ও ১৮,৪৮০টি ক্ষুদ্র শিল্প রয়েছে। এই শিল্পের প্রধান পণ্য হলো ওষুধ, টেক্সটাইল, আডেসিভ, প্লাস্টিক, রাবার, স্টিল, ফার্মাসিউটিক্যালস, ইঞ্জিনিয়ারিং, সার, ইলেকট্রনিক্স, কেমিক্যালস এবং লোহা ও ইস্পাত। থানা-বেলাপুর-কল্যাণ শিল্প বেল্ট অত্যন্ত আধুনিক শিল্প কেন্দ্র। উল্লাসনগর, অম্বরনাথ,ভিওয়ান্ডি,বদলাপুর, তারাপুর, পালগর, ভাসাই ও মুরবাদ অঞ্চলে প্রায় ৪০০০ টি শিল্প রয়েছে যা জেলার শিল্পোন্নতির সহায়ক । লোহা ও ইস্পাত শিল্প ও ধাতব পণ্যসহ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ছাড়া মেশিন, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী অংশগুলি হল জেলার সবচেয়ে বড় ও বৃহত্তম শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং প্রাইম মুভার্স, বয়লার, রেফ্রিজারেটর, মেশিন টুলস, কম্পিউটিং এবং অ্যাকাউন্টিং যন্ত্রপাতি, খাদ্য ও টেক্সটাইল শিল্পের জন্য শিল্প যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক, কাগজ এবং সিমেন্ট শিল্পের জন্য যন্ত্রপাতি। সার, উদ্ভিজ্জ এবং পশু তেল এবং ফ্যাট, রঙ, বার্নিশ এবং ল্যাক্ক এবং অন্যান্য বিবিধ রাসায়নিক দ্রব্য সহ মৌলিক শিল্প রাসায়নিক উৎপাদন জেলায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। এই শিল্পগুলি প্রধানত ট্রান্স-থানে ক্রিক এবং বেলাপুর রোড শিল্প এলাকা কেন্দ্রিক। মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প কারখানাগুলি রাসায়নিক এবং রাসায়নিক পণ্যগুলি হল ফাইজার, লুব্রিজল ইন্ডিয়া লিমিটেড, পলাইলফিন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এনওসিআইএল, হেরিডিলিয়া কেমিক্যালস লিমিটেড, বিএসএফ (ইন্ডিয়া) লিমিটেড, স্টার কেমিক্যালস, ইন্ডফিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং ফিনিক্স কেমিক্যাল ওয়ার্কস। রাসায়নিক শিল্পগুলি জেলার অন্যান্য অংশে রয়েছে যেমন ওয়াগেল ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট, পোখরান রোড, অম্বরনাথ ও ডোম্বিভিলি। তুলা ও অ-তুলা পাওয়ারলুম গুলি মূলত ভিওয়ান্ডি, থানে ও কল্যাণে অবস্থিত। ঐতিহ্যগতভাবে, ভিওয়ান্ডি তার হ্যান্ডলুম শিল্পের জন্য বিখ্যাত। কিন্তু হ্যান্ডলুমগুলিরচাহিদা হ্রাস পাওয়ায় ব্যাবসায়ীরা হ্যান্ডলুমগুলি প্রতিস্থাপন করে পাওয়ারলুম বানাতে বাধ্য হয়। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প যেমন শস্য কল পণ্য, বেকারি পণ্য, কোকো, চকোলেট এবং চিনির মিষ্টান্ন, লবণ, বরফ, মৎস্যজাতকরণ, মাংসের প্রস্তুতি ও সংরক্ষণ, দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি, ফল ও সবজি, ক্যানন সংরক্ষণ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ জেলার মধ্যে রাপ্তাকোস, ব্রেট অ্যান্ড কোং, ফাইজার লিমিটেড, ক্যাডবেরি ফ্রাই (ইন্ডিয়া) লিমিটেড যা সংশোধিত দুধের খাদ্য এবং উচ্চ প্রোটিন খাবার উৎপন্ন করে, সেগুলি বেশ কয়েকটি বৃহৎ এবং মাঝারি সংস্থা। পলুইউড এবং ব্যহ্যাবরণ, কাঠের বাক্স, ব্যারেল, বাঁশ, বেত বাটক, বববিল, শিল্পকলার, কর্ক ও কর্ক পণ্য ইত্যাদি কাঠের পণ্যগুলি জেলায় তৈরি হয়। তেজপুর এটমিক পাওয়ার স্টেশন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারের একটি যুগের সূচনা করেছে। অর্থব্যবস্থা বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদান করা হচ্ছে। ব্যাংক অফ মহারাষ্ট্র জেলাটির নেতৃস্থানীয় পাবলিক সেক্টর ব্যাংকগুলির মধ্যে একটি, যার ৬০ টি শাখা (২000 সিই) রয়েছে।
মৎস্যচাষ থানে জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে এটি সমুদ্রের পাশাপাশি খাঁড়ি এবং নদীপথগুলিতে মৎস্যচাষ হয়ে থাকে। সামুদ্রিক মৎস্য জেলার অভ্যন্তরীণ মৎস্য অধিদফতরের আওতাভুক্ত এবং ফিশিং শিল্পে জড়িত প্রায় 75% ব্যক্তিকে চাকরি প্রদান করে। প্রায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত উপকূল বরাবর সমুদ্রে মাছ ধরা হয়। জেলার গুরুত্বপূর্ণ মাছ ধরার কেন্দ্রগুলি হলো দাহানু, পোখরান-উচলেই, নওয়াপুর, মুবারাব, সাতপুত, দাতব্য, আর্নল, ভাসাই ও উরান।
এই জেলার একটি উল্লেখযোগ্য স্টেডিয়াম, দাদাজী কোন্ডদেব স্পোর্টস স্টেডিয়াম, থানে শহরে অবস্থিত, যেখানে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, টেনিস এবং টেবিল টেনিস ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রীড়া খেলা হয়।
জেলার মোট রেল লাইনের দৈর্ঘ্যএর৩৪৫.৭৩ কিমি যা জেলার পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অংশে বিস্তৃত। ওয়েস্টার্ন রেলপথটি জেলার ভাসাই, পালঘর ও দহানু তালুকগুলির মধ্য দিয়ে যায় এবং সেন্ট্রাল রেল নেটওয়ার্কটি থানে, কল্যাণ, উল্লাসনগর ও শাহাপুরের তালুকের মধ্য দিয়ে যায়। ওয়েস্টার্ন রেলওয়ের চার্চগেট রেলওয়ে স্টেশন থেকে দহানু রোড স্টেশন পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন আছে।অন্যদিকে সেন্ট্রাল রেলওয়ের ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাল থেকে কল্যাণ, উলহসনগর, অম্বরনাথ, বদলাপুর, করজাত ও কাসারা পর্যন্ত সরাসরি লোকাল ট্রেন আছে। ১৯৯৪ সালে, ডিভা জংশন থেকে ভাসাই অবধি একটি নতুন সংযোগকারী রেল লাইন তৈরি হয়। এই সংযোগটি মধ্য রেলকে ও পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করেছে এবং এর দৈর্ঘ্য ৪১.৯৬ কি.মি.। [৭] কোঙ্কন রেলওয়ে নেটওয়ার্কটিো জেলাটির একটি অংশে যায়। বর্তমানে এই রেলপথে ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনস,মুম্বাই থেকে পানভেল পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলছে।
থানে মিউনিসিপাল কর্পোরেশন ৯ই ফেব্রুয়ারি,১৯৮৯ থেকে 'থানে পৌর পরিবহন' (টিএমটি) নামে পরিচিত তার নিজস্ব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস শুরু করে। টিএমটি ২ টি বাস-ডিপো এবং ৮ টি বাস স্টেশন থেকে প্রায় 45 টি রুটে ২৮৯টি বাস চালায় এবং প্রতিদিন প্রায় ২.৮ লক্ষ যাত্রীকে পরিষেবা প্রদান করে[৯]। ২০০৬ সালে, মিরাভাণ্ডার মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (এম এম সি) তার নিজস্ব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস শুরু করে, এটি মিরাভাণ্ডার মিউনিসিপাল ট্রান্সপোর্ট নামে পরিচিত। কল্যাণ ডোম্বিভিলি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনও নিজস্ব কল্যাণ-ডোম্বিভিলি মিউনিসিপাল ট্রান্সপোর্ট (কেডিএমটি) এবং উল্লাসনগর মিউনিসিপ্যালিটি উলহসনগর পৌর পরিবহন (ইউএমটি) সার্ভিস চালায়। মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক পরিবহন করপোরেশন (এমএসআরটিসি)-এর বাসগুলি থানে শহরকে জেলা ও অন্যান্য জেলার বিভিন্ন অংশে সংযুক্ত করেছে। বি ই এস টি মুম্বাই সাবারবান, থানে শহর এবং মিরাভাণ্ডার সেবা প্রদান করে।
দাহনু, সাতপতি, মাহিম, কল্যাণ, ভাসাই এবং উত্তন আরব সাগরের উপকূলে বিভিন্ন বন্দর । এই পোর্টগুলির মধ্যে ফেরি পরিষেবা উপলব্ধ।
বর্তমানে, এই জেলার কোন বিমানবন্দর নেই। তবে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে নিকটবর্তী বিমানবন্দরটি হল মুম্বাইএর ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
টেমপ্লেট:মহারাষ্ট টেমপ্লেট:থানে জেলা সংক্রান্ত
Cuba 11,087,330 July 2011 est.
Ohio 11,536,504