দক্ষিণ-পশ্চিম শ্রীলঙ্কার নদী-প্রবাহ

হর্টন প্লেইনস ন্যাশনাল পার্ক এর প্রবাহিত নদী, কয়েকটি সংরক্ষিত বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে একটি

দক্ষিণ-পশ্চিম শ্রীলঙ্কার নদী ও প্রবাহ হল শ্রীলঙ্কার একটি মিঠা পানির বাস্তুতন্ত্র। এই অঞ্চলটি প্রকৃতি সংরক্ষণের অগ্রাধিকারের জন্য "ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর ন্যাচার" দ্বারা সংকলিত "গ্লোবেল ২০০" এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।[] শ্রীলঙ্কার নদী ও প্রবাহের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক মোট ১০৩টি স্বতন্ত্র প্রাকৃতিক নদী অববাহিকা নিষ্কাশন করে।[] উচ্চ ও মধ্য উচ্চতার অঞ্চলগুলির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী ও নদীর প্রবাহের ফলে বেশ কয়েকটি স্থানে জলপ্রপাতের উৎপত্তি ঘটেছে। এই বাস্তুতন্ত্রটি শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের আর্দ্র অঞ্চলে ১৫,৫০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। দক্ষিণ-পশ্চিম শ্রীলঙ্কার নদী ও প্রবাহে আবিষ্কৃত মিঠা জলের মাছের মধ্যে এক চতুর্থাংশেরও বেশি স্থানীয়।[] পশ্চিমঘাট পর্বতমালা এবং শ্রীলঙ্কার হটস্পট মালপুলুট্টার মিঠা জলের মাছের মধ্যে নয়টি স্থানীয় প্রজাতি শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কাতেই পাওয়া যায়।[] গবেষণায় দেখা গেছে যে আবিষ্কার হওয়ার মতো প্রজাতির সংখ্যা এখনও অনেক বেশি।[] সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার জলাভূমিগুলি নিষ্কাশন, নির্মাণ স্থান এবং জমি পূরণের জন্য ব্যবহৃত হত।[]

জীববৈচিত্র্য

[সম্পাদনা]

বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ, মাছ এবং ঝিনুক এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী ও স্রোত দ্বারা সমর্থিত, যা কেন্দ্রীয় পার্বত্য অঞ্চলে উৎপন্ন হয়। শ্রীলঙ্কায় ৯০ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ এবং ২১ প্রজাতির কাঁকড়া রয়েছে। এই বাস্তুতন্ত্রে ২৬ প্রজাতির মাছ সীমাবদ্ধ আছে।[] নতুন প্রজাতির উন্মোচন অব্যাহত থাকায় স্থানীয় প্রজাতির সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মাছগুলির বেশিরভাগই ছোট এবং তাদের নদী ও স্রোতধারার জন্য বিশেষায়িত। এই ইকোরিজনে বসবাসকারী কিছু মাছের প্রজাতির মধ্যে রয়েছে টু স্পট বার্ব, ব্ল্যাক রুবি বার্ব, চেরি বার্ব এবং ব্ল্যাক-লাইনযুক্ত বার্ব। এই বাস্তুতন্ত্রে আরও বিরল প্রজাতির মধ্যে রয়েছে স্পটেড লোচ, অর্নেট প্যারাডাইসফিশ, রাসবোর উইলপিটা, পুন্টিয়াস মার্টেনস্টিনি এবং পার্লি রাসবোর। এই বাস্তুতন্ত্রের অনেক মাছের বাণিজ্যিক মূল্য রয়েছে এবং এগুলি মৎস্যচাষের জন্য সংগ্রহ করা হয় এবং অ্যাকোয়ারিয়ামের জন্য ব্যবসা করা হয়। মাছ ছাড়াও এই বাস্তুতন্ত্র কুমির, কচ্ছপ এবং উভচর প্রাণীতেও সমৃদ্ধ।।[]

মানব প্রভাব

[সম্পাদনা]

এই বাস্তুতন্ত্রের বনগুলি চা এবং রাবার চাষের জন্য পরিষ্কার করা হয়। শিকার এমনকি সুরক্ষিত এলাকাতেও অবৈধ শিকার এবং কাঠ উত্তোলন সমস্যা দেখা দেখা দেয়, যার ফলে আবাসস্থলের বিভাজন এবং প্রান্তের প্রভাব দেখা দেয়।[] কৃষকরা কিছু ধীর গতির জলপথকে ধানক্ষেতে রূপান্তরিত করেছে।[] কালো রুবি বার্ব এবং চেরি বার্ব শোভাময় মাছের ব্যবসার কারণে কালো রুবি বার্ব এবং চেরি বার্বের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।[] প্রবর্তিত বিদেশী মাছ এবং উদ্ভিদের সাথে প্রতিযোগিতা, স্থানীয় প্রজাতির জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। কৃষি রাসায়নিকের অবাধ ব্যবহার বাস্তুতন্ত্র এবং উভচরদের মতো প্রজাতি গোষ্ঠীর জন্য একটি ভিন্ন হুমকি সৃষ্টি করে।[][] রেইনবো ট্রাউট, ক্লাউন নাইফিশ, ওয়াকিং ক্যাটফিশ এবং রেড-ইয়ার্ড স্লাইডার হল এমন কিছু আক্রমণাত্মক প্রজাতি যা সরাসরি শোষণ বা ধ্বংসের কারণ হয়ে থাকে। পিক ওয়াইল্ডারনেস অভয়ারণ্য এবং হর্টন প্লেইনস ন্যাশনাল পার্কে কেন্দ্রীয় উচ্চভূমির জলপথের জন্য কিছু সুরক্ষা রয়েছে।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "List of Ecoregions"panda.orgWorld Wide Fund for Nature। ২০০৯-০৪-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 
  2. Kotagama, S W; C N B Bambaradeniya (২০০৬)। "An Overview of the Wetlands of Sri Lanka and their Conservation Significance"iwmi.org। Sri Lanka Wetlands Database। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 
  3. "Southwestern Sri Lanka Rivers and Streams (172)"worldwildlife.orgWorld Wide Fund for Nature। ২০০৬-১০-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 
  4. "Western Ghats and Sri Lanka"biodiversityhotspots.orgConservation International। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 
  5. Dassanayake, Aravinda (২৪ আগস্ট ২০০৮)। "Wetlands of Sri Lanka"sundayobserver.lk। Sunday Observer। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 
  6. "Ecoregion Description"feow.orgবিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিল & দ্য নেচার কনজারভেন্সি। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 
  7. "Human Impacts"biodiversityhotspots.orgকনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-২৬ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]