দমাই ( নেপালি: दमाइँ ) হল খস জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি পেশাগত জাতি। তারা ৪৫টি উপগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত। এই জনজাতির লোকেরা যে উপগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত তার উপর ভিত্তি করে তারা তাদের পদবী নির্ধারিত করে।[১] এই বর্ণের লোকেরা ঐতিহ্যগতভাবে দর্জি এবং সঙ্গীতশিল্পী হয়। তারা নওমতি বাজা ব্যবহারে পারদর্শী হয়। নওমতি বাজা হল নয়টি ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রের একটি সমাহার। দমাই কথাটি এসেছে বাদ্যযন্ত্র দামাহা থেকে।[১] ১৮৫৪ সালে নেপালী মুলুকি আইন (আইনি কোড) দামাইকে নিম্নবর্গের শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।[২] ঐতিহ্যগত মর্যাদার কারণে শুধুমাত্র কামি, দামাই এবং সারকিকে কয়েকটি প্রসঙ্গে খাস উপজাতির তকমা দেওয়া হয়।
পুরাকালে নেপালে বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্যে চরম আকার ধারণ করেছিল। সেইকারণে, নেপাল সরকার আইনত বর্ণ-প্রথা বিলুপ্ত করে এবং অস্পৃশ্যতা (একটি নির্দিষ্ট বর্ণের বঞ্চনা) সহ যে কোনও বর্ণ-ভিত্তিক বৈষম্যকে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করে। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে এই আইন পাশ হয়।[৩] নেপাল পূর্বে হিন্দু রাজতন্ত্র দ্বারা শাসিত একটি হিন্দু রাষ্ট্র ছিল। স্বাধীনতা ও সাম্যের দিকে নেপালের এই পদক্ষেপের পর নেপাল বর্তমানে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে,[৪] ২৮ মে ২০০৮ সালে হিন্দুরাষ্ট্রের তকমা সম্পুর্নভাবে মুছে দিয়ে এটি একটি প্রজাতান্ত্রিক দেশ হিসাবে ঘোষিত হয়।[৫] এর সাথে জাত-ভিত্তিক বৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতার অবলুপ্তি হয়। [৬]
নেপালের ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে নেপালের জনসংখ্যার ১.৮% (বা ৪৭২,৮৬২ জন) দামাই জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। [৭] নেপাল সরকার কর্তৃক কামি, বাদি, সারকি এবং গাইন সহ ৯টি বিবিধ সামাজিক গোষ্ঠীর সাথে সাথে দামাইকে পার্বত্য দলিত জনগোষ্ঠী বিভাগের অধীনে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। [৭]