مقبرہ دائی انگہ | |
![]() | |
![]() | |
স্থানাঙ্ক | ৩১°৩৪′৪৩″ উত্তর ৭৪°২১′৫০″ পূর্ব / ৩১.৫৭৮৬১° উত্তর ৭৪.৩৬৩৮৯° পূর্ব |
---|---|
অবস্থান | লাহোর, পাঞ্জাব, পাকিস্তান |
ধরন | স্মৃতিসৌধ |
উপাদান | ইট ও মর্মর পাথর (মার্বেল) |
সম্পূর্ণতা তারিখ | খ্রিষ্টীয় ১৬৫৫ (তোরণ); খ্রিষ্টীয় ১৬৭১ (সমাধি) |
নিবেদিত | দাই আঙ্গা |
দাই আঙ্গার সমাধিসৌধ (উর্দু: مقبرہ دائی انگہ), যা গুলাবি বাগ (উর্দু: گلابی باغ) নামেও পরিচিত পাকিস্তানের লাহোরের প্রাচীরঘেরা পুরাতন শহরের বাইরে মোঘল আমলের উপশহর বেগমপুরায় অবস্থিত একটি মোঘল সমাধিসৌধ।
সমাধি সৌধটি দাই আঙ্গার সম্মানে নির্মাণ করা হয়েছিল, যিনি সম্রাট শাহজাহানের ধাত্রী ও বিকানেরের মুরাদ খানের পত্নী ছিলেন। এটি দিল্লি থেকে লাহোর যাতায়াতের পুরনো পথ গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের পাশে অবস্থিত। এটি সপ্তদশ শতকে নির্মিত হজরত ইশানের মাজার ও অষ্টাদশ শতকের সাইপ্রেস সৌধের নিকটে অবস্থিত।
সমাধিসৌধের প্রবেশদ্বারে একটি সুদৃশ্য তোরণ দণ্ডায়মান, যা সৌধের পূর্বেই নির্মিত হয়েছিল। ১৬৫৫ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত তোরণটি পারস্য থেকে আগত ধনী ব্যক্তি মির্জা সুলতান বেগের একটি প্রমোদ বাগানের ফটক ছিল। মূল বাগানটি বর্গাকার ছিল এবং উভয় পাশের বাহুর দৈর্ঘ্য ছিল ২৫০ গজ।[১]
১৬৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাগানটি মোঘল সম্রাট শাহজাহানের ধাত্রী ও সম্রাট জাহাঙ্গীরের অধীন বিকানেরের শাসক মুরাদ খানের পত্নী দাই আঙ্গার সমাধি নির্মাণের জন্য নির্বাচন করা হয়। বাগানের ঠিক মাঝখানে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হয়। যদিও সময়ের সাথে আশেপাশের ভবনরাজি বাগানের অংশ দখল করে নির্মিত হতে থাকে, প্রাসাদ ও ফটকের মাঝখানে বাগানের অংশবিশেষ এখনও বিদ্যমান।[২]
সমাধিসৌধটি আয়তাকার। এতে একটি কেন্দ্রীয় কক্ষের পরিধির চারদিকে আটটি কক্ষ রয়েছে। সম্পূর্ণ সৌধটি একটি বেদির ওপর নির্মিত। কেন্দ্রীয় কক্ষের ঠিক ওপরে দেয়ালচিত্র শোভিত গম্বুজ রয়েছে। কেন্দ্রীয় কক্ষটি সম্পূর্ণ ফাঁকা এবং দাই আঙ্গার মূল কবর একটি ভূ-গর্ভস্থ সমাধিকক্ষে অবস্থিত। তার কন্যা সুলতানা বেগমের পাশে তাকে শায়িত করা হয়েছিল। কবরের স্তম্ভগুলোকে ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে এবং সমাধিকক্ষে সাধারণের প্রবেশ আর সম্ভব নয়।
সমাধির কেন্দ্রীয় অংশে কুরআন থেকে আয়াত উৎকীর্ণ করা আছে। সেই সাথে ক্যালিগ্রাফি শিল্পী মোহাম্মদ সালেহের তৈরি করা জাঁকজমকপূর্ণ ফ্রেস্কো বা দেয়ালচিত্র দ্বারা শোভিত করা আছে।[৩] সমাধি সৌধের বহির্ভাগে এক সময় কাশি কারি বা কাশানি রীতিতে তৈরি সমৃদ্ধ টালিকর্মের নকশা ছিল, যদিও সময়ের সাথে অধিকাংশ টালি হারিয়ে গেছে।[২]
পাঞ্জাবের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সংরক্ষিত ঐতিহ্য স্থানের তালিকায় দাই আঙ্গার সমাধিসৌধ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।[৪]
দাই আঙ্গার সমাধিসৌধটি লাহোর মেট্রোর প্রকল্পিত অরেঞ্জ লাইনের জীবনে অবস্থিত। প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণবাদীরা এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে লাহোর উচ্চ আদালতে পিটিশন করে, কেননা মেট্রোর লাইন নির্মাণের প্রকল্প একই সাথে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের প্রত্নতত্ত্ব আইন এবং ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের পাঞ্জাবের বিশেষ উদ্যান অধ্যাদেশ ভঙ্গ করে দাই আঙ্গার সমাধি, শালিমার উদ্যান ও আরও নয়টি প্রত্নস্থলের পাশ ঘেষে নির্মাণ করা হবে।[৫] ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে আদালত দাই আঙ্গার সমাধিসৌধসহ অন্যান্য সংরক্ষিত প্রত্নস্থলের ২০০ ফুটের মধ্যে মেট্রো লাইন নির্মাণ কাজে স্থগিতাদেশ দেয়। ইউনেস্কো নির্দেশিত "অপরিবর্তনীয় ক্ষতি" পরিহার করে মেট্রোর বর্তমান লাইনের স্থলে নির্মাণের জন্য উচ্চ আদালত এই রায় প্রদান করে।[৬][৭]