কলকাতার ইতিহাস |
---|
ধারাবাহিকের অংশ |
![]() |
১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মীর জাফরের সহায়তায় বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাস্ত করে তদানীন্তন কলিকাতা তথা বর্তমান স্বাধীন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতা শহরের ৫৫টি গ্রামের মালিকানা পায়। প্রাপ্ত ঐ ৫৫টি গ্রামকেই একত্রে দিহি পঞ্চান্নগ্রাম বলা হয়ে থাকে।[১] প্রাথমিকভাবে এই গ্রামগুলি কলকাতার উপনগরী হিসাবে আত্মপ্রকাশ পায় কিন্তু বর্তমানে এই গ্রামগুলি বৃৃহত্তর কলকাতা বা খাস কলকাতার অংশ এবং কলকাতা পৌরসংস্থার অন্তর্ভুক্ত।
খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতকের শুরুর দিকে কলকাতা ছিলো হুগলী নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত কম প্রশস্ত ছোটো একটি জনবসতিপূর্ণ এলাকা। তখন কলিকাতাকে কেন্দ্র করে বাড়তে থাকা গঞ্জে বেশীরভাগ ইংরেজদেরই বাস ছিলো। কলিকাতার উত্তর সীমান্তে ছিলো সুতানুটি হাট, যা ছিলো সুতির বস্ত্রের বাজার। সুতানুটির হাটটি ছিলো সুতানুটি অঞ্চলের দক্ষিণ দিকে। এর দক্ষিণে ছিলো গোবিন্দপুর, যা ছিলো মূলত বনাঞ্চল। হুগলীর পূর্বপাড়ে চিৎপুর থেকে কালীঘাট অবধি ও পশ্চিমপাড়ে বেতড় এবং শালিখায় ইংরেজদের বসতি স্থাপনের পরেও কলকাতার চিত্র কিছুটা এরকমই ছিলো। ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় বহিরাগত বর্গি আক্রমণ বাড়তে থাকলে তা প্রতিহত করার জন্য নবাব আলিবর্দী খাঁ দক্ষ সৈন্য ও কৌশল ব্যবহারে ব্রতী হন। নবাব বঙ্গোপসাগরের সীমা অবধি তাদের আটকাতে কলকাতা ও তার আশেপাশের অঞ্চলে বৃদ্ধি পেতে থাকা প্রভাব প্রতিপত্তিশালী ইংরেজদের সাহায্যপ্রার্থী হন। নিরাপত্তাহীনতার কথা ভেবে তারা নবাবকে দুর্গ তৈরী করার প্রস্তাব দেন। নবাবের অনুমতিতে তাঁরা দুর্গ নির্মাণ শুরু করেন তাদের বসতি কলকাতাকে কেন্দ্র করে এবং বঙ্গোপসাগর অবধি খাত নির্মাণ করান। মারাঠা খাতের একটি বড়ো অংশ নির্মাণ হয়ে যাওয়ার পর নবাব ও ইংরেজরা উপলব্ধি করতে পারেন যে তাদের আদৌ কলকাতা আক্রমণের অভিসন্ধি ছিলোই না। খাত তৈরীর পরিকল্পনা পরিত্যক্ত হয় কিন্তু অর্ধনির্মিত খাতটি পরবর্তীকালে ইংরেজ বসতির সীমানা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।[২]
পঞ্চান্নটি গ্রামকে একত্রে দিহি পঞ্চান্নগ্রাম বলা হতো এবং তার খুঁটিনাটি নিম্নরূপ,[১]:
দিহি সিঁথি (১. সিঁথি ২. কাশীপুর ৩. পাইকপাড়া).
দিহি চিৎপুর (৪. চিৎপুর ৫. টালা ৬. বীরপাড়া ৮. কালীদহ).
দিহি বাগজোলা (৮. দক্ষিণদাড়ি ৯. কাঁকুড়িয়া ১০. নয়াবাদ).
দিহি দক্ষিণ পাইকপাড়া (১১. বেলগাছিয়া).
দিহি উল্টাডাঙ্গা (১২. উল্টোডাঙ্গা ১৩. বাগমারি ১৪. গৌরীবেড়).
দিহি শিমুলিয়া (১৫. বাহির শিমুলিয়া ১৬. নারিকেলডাঙ্গা).
দিহি শুঁড়া (১৭. শুঁড়া ১৮. কাঁকুড়গাছি ১৯. কুচনান ২০. দত্তাবাদ).
দিহি কুলিয়া (২১. মল্লিকাবাদ ২২. কুলিয়া).
দিহি শিয়ালদহ (২৩. শিয়ালদহ ২৪. বেলেঘাটা).
দিহি এন্টালি (২৫. এন্টালি ২৬. পাগলাডাঙ্গা ২৭. নিমকপোতা ২৮. গোবরা ২৯. ট্যাংরা).
দিহি তোপসিয়া (৩০. তোপসিয়া ৩১. তিলজলা ৩২. বেনিয়াপুকুর ৩৩. কড়েয়া).
দিহি শ্রীরামপুর (৩৪. চৌবাগা ৩৫. ধুলণ্ড ৩৬. সোনাগাছি ৩৭. অন্তবাদ ৩৮. নোনাডাঙ্গা ৩৯. ব্যাণ্ডেল-উলুবেড়িয়া ৪০. বেদেডাঙ্গা ৪১. কুষ্টিয়া ৪২. পুরানোগড় ৪৩. ঘুঘুডাঙা ৪৪. শ্রীরামপুর).
দিহি চক্রবেড় (৪৫. বালিগঞ্জ ৪৬. গড়শহা ৪৭. চক্রবেড়).
দিহি ভবানীপুর (৪৮. ভবানীপুর ৪৯. নিজগ্রাম).
দিহি মনোহরপুর (৫০. বেলতলা ৫১. কালীঘাট ৫২. মনোহরপুর ৫৩. মুদিয়ালী ৫৪. সাহানগর ৫৫. কৈখালি).
পি.টি. নাইয়ারের মতে, ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা মুঘল সম্রাট ফারুখশিয়ারের কাছ থেকে তাদের বসতির চারপাশে ৩৮টি গ্রাম ধার নেন। এর মধ্যে পাঁচটি গ্রাম ছিলো হুগলী নদীর অপর পাড়ে হাওড়া জেলাতে। গ্রামগুলি হলো - শালিখা, হাওড়া, কুসুন্দিয়া, রামকৃষ্ণপুর এবং বেতড়। বাকী ৩৩টি গ্রাম বর্তমান কলকাতা জেলাতে অবস্থিত। গ্রামগুলি হলো: দক্ষিণ পাইকপাড়া, বেলগাছিয়া, দক্ষিণদাড়ি, বাহির দক্ষিণদাড়ি, চিৎপুর, হোগলাকুণ্ডি (বা হোগলাকুড়িয়া), উল্টোডাঙ্গা, শিমুলিয়া, মাকণ্ড, কামারপাড়া, কাঁকুড়গাছি, বাগমারি, শুঁড়া, বাহির শুঁড়া, ডোলাণ্ড, শ্রীরামপুর, চৌবাগা, তোপসিয়া, শীলতলা, সঙ্ঘশ্রী, গোবরা, কুলির, ট্যাংরা, হেন্তালি (বা এন্টালি), কলিম্ব, জল কলিম্ব, শিয়ালদহ, মির্জাপুর, আড়কুলি, ব্রিজী, চৌরঙ্গী, শাহপাড়া এবং গড়এদেলপাড়া। এই গ্রামগুলি পঞ্চান্নটি মৌজায় বিভক্ত ছিলো, যা পরে পঞ্চান্নগ্রাম নামে পরিচিত হয়। এই পঞ্চান্নটি মৌজা ১৫টি দিহিতে বিভক্ত ছিলো।[৩]
এইচ.ই.এ. কটনের মতে, তুলনামূলকভাবে আয়তনে ক্ষুদ্র ব্রিটিশ বসতির সাথে তারা ১০ই সেপ্টেম্বর ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে আবেদন অনুযায়ী আশেপাশের পঞ্চান্নটি গ্রাম ধূর্ততার সাথে লাভ করে। এর ফলে ব্রিটিশদের গড় মারাঠা খাত ছাড়াও স্থানীয় গ্রামগুলির দ্বারা সুরক্ষিত হয়ে যায়। তখন ঐ পঞ্চান্নটি গ্রাম খাতের চারিদিকে কলকাতার উপনগরী হয়ে ওঠে। গ্রামগুলি তেইশ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃৃত ছিলো, শুধু তাই নয় খ্রিস্টীয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ অবধি এই বিভাগটিই ছিলো চব্বিশ পরগণা জেলার শাসন সংক্রান্ত ও রাজস্ব অধিক্ষেত্র।[৪]
উপরে উল্লিখিত দিহি এবং মৌজাগুলো ছাড়াও উপনিবেশিক বন্দোবস্তের উন্নতি সাধনে আরেক প্রকার প্রশাসনিক বিভাগ তৈরী করা হয়েছিলো, তা হলো থানা বা পুলিশ ফাঁড়ি। তখনকার দিনে পুলিশ স্টেশনগুলি জনসাধারণের নাগরিক চাহিদাগুলির ওপরেও নজরপাত করতো। এই থানাগুলি সর্বপ্রথম ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে খাতায় কলমে নথিভুক্ত করা হয়: আর্মেনিয়ান চার্চ, ওল্ড ফোর্ট, চাঁদপাল ঘাট, লালবাজার, ধর্মতলা, ওল্ড কোর্ট হাউজ, ডোমতলা, আমড়াগলি, পঞ্চাননতলা, চিনা বাজার, চাঁদনী চক, ত্রুলবাজার, ঝামাপুকুর, চড়কডাঙ্গা, শিমলাবাজার, লালঞ্চবাজার, মালঞ্চ, পটলডাঙ্গা, কবরডাঙ্গা, বৈঠকখানা, শ্যামপুকুর, শ্যামবাজার, পদ্মপুকুর, কুমারটুলি, জোড়াসাঁকো, মেছুয়াবাজার, জানবাজার, ডিঙাভাঙ্গা, সুতানুটি হাটখোলা, দেছাতা, হাঁসপুকুর, কলিম্ব ও জোড়াবাগান।[৫]
১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে বিচ্ছিন্ন এই থানাগুলিকে একত্রিত করা হয় এবং পঁচিশটি পুলিশ বিভাগীয় দপ্তর স্থাপন করা হয়। কলকাতা পৌরসংস্থা আইন অনুসারে ২৫টি ওয়ার্ড সাজানো হয় হয় ও থানা প্রতি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পঁচিশটি পুলিশ বিভাগীয় দপ্তর নিম্নরূপ:[৫]:
১. শ্যামপুকুর, বাঙালি আভিজাত্যের দুর্গ। বহুদিন পর্যন্ত শ্যামপুকুর থানার অন্তর্গত ছিলো পার্শ্ববর্তী শ্যামবাজার ও বাগবাজার অঞ্চল দুটিও।
২. কুমারটুলি, তৎকাল থেকে বর্তমানেও মৃৎশিল্প ও মূর্তি নির্মাণের জন্য বিখ্যাত।
৩. বড়তলা, এই অঞ্চলেই রয়েছে কলকাতার গোড়া হিন্দুদের অন্যতম শোভাবাজার রাজবাড়িটি।
৪. সুকিয়া স্ট্রীট, এটি আর্মেনীয় ব্যবসায়ী পিটার সুকিয়ার নামে নামাঙ্কিত।
৫. জোড়াবাগান এটি আগে জোড়া বাড়ীর বাগান নামে পরিচিত ছিলো।
৬. জোড়াসাঁকো, এখানেই রয়েছে বিখ্যাত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির ঠাকুর পরিবার।
৭. বড় বাজার, এখানকার হাটটি সুতানুটির হাটের মতোই পুরানো। ইতিহাস প্রায় ১৭৩৪ খ্রিস্টাব্দের। কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে আজ অবধি বড় বাজারের সিংহভাগ মারোয়াড়ি ব্যবসায়ীদের হাতে।
৮. কলুটোলা, হলো কলকাতার তৈলবীজ থেকে তেল প্রস্তুতির আতুড়ঘর। এর ইতিহাস অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে পাওয়া যায়।
৯. মুচিপাড়া, হলো মুচি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দের আগে এই অঞ্চল এত প্রসাদ্ধ ছিলো না, পরে অনিয়মিতভাবে এখানে লোকবসতি গড়ে ওঠে।
১০. বউবাজার, বউয়েদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাজার এটি যার ইতিহাস ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে পাওয়া যায়।
১১. পদ্মপুকুর, এটি বউবাজারের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল। এখানকার ডিঙাভাঙ্গার ব্যাপারীটোলা জলাধারটিই পরবর্তীকালে ওয়েলিংটন স্কোয়ার নাম পায়। পরে পরিবর্তন করে তা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার নামকরণ করা হয়।
১২. ওয়াটার লু পুলিশ বিভাগটি ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনটি আলাদা পুলিশ থানায় ভাঙা হয়, সেগুলি হলো, ওল্ড ফোর্ট, লালবাজার (সাউথ অব দ্য গ্রেট ট্যাঙ্ক) এবং ওল্ড কোর্ট হাউজ।
১৩. ফেনউইক বাজার, এডওয়ার্ড ফেনউইকের নামে নামাঙ্কিত এই বাজারটিই বর্তমানে নিউ মার্কেট।
১৪. তালতলা, এটি ছিলো মুসলমান সম্প্রদায় প্রধান অঞ্চল।
১৫. কলিঙ্গ, এই নামটি ফুটি বা কাঁকড় ফলের স্থানীয় নাম কলিম্বের অপভ্রংশ।
১৬. পার্ক স্ট্রীট, প্রথমদিকে এটি বাদামতলা নামে পরিচিত ছিলো তারপর এটি ব্যুরিয়াল গ্রাউন্ড রোড বা গোরস্থান সরণি নাম পায়। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ এলিজা ইমপের হরিণ উদ্যানকে ভিত্তি করে এটির নাম রাখা হয় পার্ক স্ট্রীট।
১৭. বামুন বস্তি, ছিলো পার্কস্ট্রীটে সাহেবদের তাবেদারদের জন্য তৈরী বস্তি অঞ্চল। পরে এটি ইউরোপীয় পাড়ায় পরিণত হয়।
১৮. হেস্টিংস, প্রাথমিকভাবে এটি ছিলো মুসলিমদের কবরস্থান। পরে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে নির্মাণকার্যে কর্মরতদের বাসস্থান হিসাবে এটি কুলিবাজার নাম পায়। এরপর তা সৈন্যদের কামান তৈরী ও খাদ্য সরবরাহের স্থানে পরিণত হয়।
১৯. এন্টালি, মারাঠা খাত তৈরীর সময়ে এটি লবনহ্রদের অংশ ছিলো পরবর্তীকালে জলাভূমি বুজিয়ে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি সাধন করা হয়।
২০. বেনিয়াপুকুর, এটি ছিলো ব্যবসায়ী তথা বেনেদের থাকার স্থান। এই জায়গাটির উল্লেখ অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পাওয়া গেলেও থানাটি ঊনবিংশ শতাব্দীতে তৈরী করা হয়।
২১. বালিগঞ্জ এবং টালিগঞ্জ দুটি একত্রে একটি থানা তৈরী করা হয়। বালিগঞ্জ একটি বাজারকে কেন্দ্র করে বাড়তে থাকে এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের একাধিক বাগানবাড়ী গড়ে ওঠে এখানে। উপনগরী চক্ররেলপথ চালু হওয়ার পর বালিগঞ্জ শিক্ষিত বাঙালি মধ্যবিত্তদের অন্যতম পছন্দের স্থান হয়ে ওঠে। টালিগঞ্জের পূর্ব নাম ছিলো রসাপাগলা। অষ্টাদশ শতাব্দীতে এই বন জঙ্গলপূর্ণ অঞ্চলটিতে ইউরোপীয় বহু বাগানবাড়ী তৈরী হয়। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ভেলোর বিদ্রোহের পর টিপু সুলতানের বংশধররা এই অঞ্চলে চলে আসেন।
২২. ভবানীপুর, এটি ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে একটি দিহি ছিলো। পরে এটি দিহি চক্রবেড় বা চক্রবেড়িয়ার সাথে যুক্ত হয়। জনশ্রুতি রয়েছে যে মা কালীর মূল মূর্তিটি এখানেই আদিগঙ্গার তীরে পাওয়া গিয়েছিলো। পরবর্তীকালে বিশেষ কারণে ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে সেটিকে কালীঘাটে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে তৈরী হওয়া হরিশ মুখার্জি রোড, শরৎ বোস রোড এবং কালীঘাট অবধি হাজরা রোডের সম্প্রসারণ ভবানীপুরের পরিবহন ব্যবস্থাকে নতুন রূপ দিয়েছে।
২৩. আলিপুর, এটি প্রাথমিকভাবে একটি মুসলিম প্রধান অঞ্চল ছিলো। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ইংরেজরা এখানে আধিপত্য বিস্তার করে। আলিপুর চব্বিশ পরগণার সদরে পরিণত হয় ও সৈন্যশিবির তৈরী করা হয়। এখানে আবহাওয়া দপ্তরটি অবস্থিত। একদা লেফটেন্যান্টের স্থান বেলভেডিয়ার এস্টেট বর্তমানে ভাতীয় জাতীয় গ্রন্থাগার এখানেই অবস্থিত। এখানে রয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানা।
২৪. একবালপুর এটি একটি মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল। আলিপুর চিড়িয়াখিনা তৈরীতে যারা বাস্তুচ্যুত হন, তারা এখানে থাকেন। এছাড়াও বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা বহু মুসলিম মুমিন পরিবারের বাস এখানে।
২৫. ওয়াটগঞ্জ, নামটি কলোনেল হেনরি ওয়াটসনের নামে নামাঙ্কিত। তিনি বাংলায় প্রথম আধুনিক পোত নির্মাণ করেন।
এই পঁচিশটি পুলিশ বিভাগ ছাড়াও গার্ডেনরিচের নাম উল্লেখযোগ্য, যা ছিলো মূলত একটি বন অঞ্চল। পরে মেটিয়াবুরুজ ও আশেপাশের অঞ্চলে অযোধ্যা থেকে ওয়াজেদ আলি শাহ এবং তার বৃহৎ পারিষদ্বর্গ এসে বসবাস করা শুরু করলে সেটি একটি মুসলিম প্রধান অঞ্চলে পরিণত হয়।[৫]