দিহিঙ নদী বুঢ়ী দিহিঙ নদী | |
---|---|
অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য | |
উৎস | পাটকাই পর্বত |
• উচ্চতা | ২,৩৭৫ মি (৭,৭৯২ ফু)[১] |
মোহনা | ব্রহ্মপুত্র নদী |
• স্থানাঙ্ক | ২৭°১৪′০″ উত্তর ৯৪°৪২′০″ পূর্ব / ২৭.২৩৩৩৩° উত্তর ৯৪.৭০০০০° পূর্ব[২] |
দৈর্ঘ্য | ৩৮০ কিমি (২৪০ মা)[১] |
অববাহিকার আকার | ৬,০০০ কিমি২ (২,৩০০ মা২)[১] |
দিহিঙ বা বুঢ়ী দিহিঙ নদী (দিহঙ = প্রশস্ত নদী ) একটি বড় শাখা নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার (২৪০ মা) লম্বা,[১] উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামের উপরিভাগে। নদীটির উৎপত্তি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২,৩৭৫ মিটার (৭,৭৯২ ফু) উপরে অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব হিমালয় ( পটকাই পাহাড়) অঞ্চলে [১] এবং আসামের তিনসুকিয়া (তিনিকুকিয়া) এবং ডিব্রু গড় জেলাগুলির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্রের সাথে দিহিঙ মুখে মিলিত হয়। এর প্রবাহিকা প্রায় ৬,০০০ বর্গকিলোমিটার (২,৩০০ মা২)[১] জুড়ে। দিহিঙ নদীটি এই অঞ্চলে বেশ কিছু অক্সবউ লেক সৃষ্টি করেছে।
দিশাং হচ্ছে দিহিঙ এর দক্ষিণ তীরের একটি শাখা নদী। জয়-দিহিঙ এর চিরহরিৎ বন, অসংখ্য পেট্রোলিয়াম ভূমি, ধানের জলা ভূমি, বাঁশর ঝাড় এবং চায়ের বাগান এই পাশটিতে একটি অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে। লিডু, মার্ঘেরিটা, ডিগবয়, দুলিয়াজান এবং নাহরকাটিয়া (নাহরকোটিয়া) এর উপত্যাকার ছোট শহর গুলির মধ্যে অন্যতম। ব্রহ্মপুত্র নদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে দিহিঙ নদীটি। দিহিঙ নদীর উপত্যকার সমভূমি গুলিতে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিদ এবং বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু রয়েছে। দিহিঙ এর সমতল ভূমিতে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় সুপারি ।
ঐতিহাসিক এবং ভৌগোলিক তথ্যানুসারে, দিহিঙ একদা আসামের একদম উপরিভাগ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল এবং বোকাখাত মহুরমুখে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়। সেই সময় দিশাঙ, দিখৌ, দিশাই, ধানসিঁড়ি নদী ছিলো দিহিঙ এর শাখা নদী। পরবর্তীতে সপ্তদশ শতাব্দীতে নদীটি শুকিয়ে যায় (বুর্ঞ্জিসে উল্লিখিত) এবং দিহিঙ মুখের ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলন পথটির পরিবর্তন ঘটে।
এমনকি এর আগেও নদীটি ব্রাহ্মপুত্রের সাথে সুবানসিরি নদীর সঙ্গম স্থানে মিলিত হয়েছিল। সেই সময় দিখৌ নদী একটি স্বতন্ত্র পথে বহমান ছিল এবং কোলং হিসাবে প্রবাহিত ছিল যেটি নগাঁও জেলার কাজলিমুখে ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়।[৩]
দিহিঙ নদীর অববাহিকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নদীর তীরে তাঁবু টাঙিয়ে রিভার ক্যাম্পিং করতে অনেক পর্যটকের অনাগোনা হয়। পটকাই পর্বত অঞ্চলও পর্যটকদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য কাছে টানে। দিহিঙ এর চা বাগানগুলো বেশ সৌন্দর্যমন্ডিত। চা বাগানেরর আশে পাশের শহর ঘুলো চা শহর নামে বেশ বিখ্যাত। এছাড়াও এর চিরহরিৎ বনাঞ্চল, পেট্রোলিয়াম ভূমি এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনাচরন পর্যটকদের বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করে। [৪]
দিহিঙ পাটকাই উৎসব নামে আসাম রাজ্যের তিনসুকিয়া জেলায় প্রতি বছর একটি বাৎসরিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ২০০২ সাল থেকে। পাটকাই পর্বত্যাঞ্চল এবং দিহিঙ নদীর নাম অনুসারে এই উৎসবের নামকরণ করা হয় দিহিঙ পাটকাই উৎসব। এই উৎসবে মূলত স্থানীয় জনগোষ্ঠিরদের ব্যবহৃত তাদের তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে মেলার আয়োজন করা হয়। নিজেদের বিনোদনের পাশাপাশি বহিরাগত দর্শক এবং পর্যটকদের আনন্দ প্রদান করাই এই উৎসবের মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন ধরনের খাদ্য মেলা, বাণিজ্য মেলা এবং বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে এই উৎসবে। এছাড়াও আগত দর্শক পর্যটকদের হাতির পিঠে অথবা গাড়িতে করে বনাঞ্চল পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। [৫]
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)