দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | ২০ এপ্রিল ১৯৫১
পেশা | আণবিক জীববিজ্ঞানী |
কর্মজীবন | ১৯৭৩ সাল থেকে |
পরিচিতির কারণ | জীবাণু প্রতিলিপিকরণক্ষত্রে গবেষণা এবং জীবাণুর পীড়ন প্রতিক্রিয়া |
পুরস্কার | পদ্মশ্রী শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার মিলেনিয়াম গোল্ড মেডেল র্যানব্যাক্সি গবেষণা পুরস্কার আইআইএসসি অ্যালামনাস পুরস্কার |
ওয়েবসাইট | http://mbu.iisc.ac.in/~dclab/ |
দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় (জন্ম ২০ এপ্রিল ১৯৫১) একজন ভারতীয় আণবিক জীববিজ্ঞানী এবং ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থার (আইআইএসসি) আণবিক প্রাণপদার্থবিদ্যা বিভাগের সাম্মানিক অধ্যাপক।[১] জীবাণু প্রতিলিপিকরণের উপর তার অগ্রণী গবেষণার জন্য তিনি বিশেষ ভাবে পরিচিত।[২] তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারের প্রাপক এবং ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমির একজন নির্বাচিত ফেলো। বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে ২০১৬ সালে চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।[৩]
দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৫১ সালের ২০ এপ্রিল[৪] ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। তিনি কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[৫] ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স থেকে সুনীল কুমার পোদ্দারের তত্ত্বাবধানে ১৯৭৩ সালে আণবিক জীববিজ্ঞানে তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রি (পিএইচডি) অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৯৭৮ সালে হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমন করেন। সেখানকার আলবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিন এবং স্টনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণার কাজ করেন। দীপঙ্কর ১৯৯৯ সালে হায়দ্রাবাদের দ্য সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (সিসিএমবি) প্রতিষ্ঠনে গবেষক সহকারী হিসেবে যোগ দিতে ভারতে ফিরে আসেন। এরপর তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থার (আইআইএসসি) আণবিক প্রাণপদার্থবিদ্যা বিভাগে যোগদান করেন। এখানে তিনি জীববিজ্ঞান এবং জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তিনি ২০০৫ সাল পর্যন্ত এই পদের দায়িত্বভার সামলেছেন।[৫]
তিনি এশেরিকিয়া কোলাই এবং মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিসের মতো ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য বিশেষ পরিচিত। পাশাপাশি জীবাণু প্রতিলিপিকরণ পদ্ধতি ও বংশাণু অভিব্যক্তি সংক্রান্ত ওমেগা ফ্যাক্টর নিয়েও তার মূল্যবান গবেষণা রয়েছে।[২] তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থান কলকাতার (আইআইএসইআর) সহযোগী অধ্যাপক এবং হায়দ্রাবাদের ইনস্টিটিউট অব লাইফ সায়েন্সেস-এর বিশিষ্ট গবেষণা অধ্যাপকের পদে ছিলেন।[৫] তাঁর ১৫০ টিরও বেশি গবেষণামূলক নিবন্ধ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।[৬] তিনি ৩১ জন গবেষককে তার অধীনে গবেষণার কাজে পরামর্শ দিয়েছেন।[৭]
দীপঙ্কর আইআইএসসি অ্যালামনাস পুরস্কারের প্রাপক এবং ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা (আইআইএসসি) সভাপতি।[৭] তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জেনেটিক্স,[৫] এবং জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিজিটিং ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর কাউন্সিল সদস্য ছিলেন।[৮] ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করেন। ২০১০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উক্ত কাউন্সিলের সচিব পদের দায়িত্ব পালন করেন।[৪] তিনি মাদুরাই কামরাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস দ্বারা আয়োজিত 'ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন জিনোম বায়োলজি ২০১৯ (আইসিজিবি-২০১৯) এর উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হিসাবেও কাজ করেছেন।[৯]
দীপঙ্কর একজন জগদীশচন্দ্র বসু জাতীয় ফেলো এবং একজন হোমি ভাবা ফেলো,[১০] এছাড়াও ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমী (১৯৯৪), দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্সেস (১৯৯৭), এবং ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্স, ইন্ডিয়া (১৯৮৯) এর একজন নির্বাচিত ফেলো।[১১] তিনি ১৯৯২ সালে বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শান্তি স্বরূপ ভটনাগর পুরস্কার লাভ করেন।[১২] দীপঙ্কর মিলেনিয়াম গোল্ড মেডেল (২০০০) এবং র্যানব্যাক্সি গবেষণা পুরস্কার (২০০১) এরও প্রাপক। বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে অবদানের জন্য তাকে ২০১৬ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী দিয়ে সম্মান জানানো হয়।[৩]