দেবকী বসু (ইংরেজি: Debaki Bose) (১৮৯৮ - ১৯৭১ ), যিনি দেবকী কুমার বসু নামেও পরিচিত, বাংলা চলচ্চিত্রের শীর্ষ পরিচালক, লেখক, অভিনেতা ছিলেন। তিনি ২৫ নভেম্বর, ১৮৯৮ সালে আকালপৌষ, বর্ধমান, বাংলা, ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে ১৭ নভেম্বর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতে মারা যান। তিনি ভারতীয় সিনেমায় শব্দ এবং সঙ্গীতের উদ্ভাবনী ব্যবহারের জন্য সুপরিচিত। তিনি প্রথমে ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীরব্রিটিশ ডমিনিয়ন ফিল্মসের অধীনে কাজ শুরু করেন এবং পরে প্রমথেশ বরুয়ার বরুয়া ফিল্মস এবং সবশেষে ১৯৩২ সালে তিনি নিউ থিয়েটার্স -এ যোগ দেন। তিনি ১৯৪৫ সালে নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলেন, যার নাম দেবকী প্রোডাকশন্স।
দেবকী বসু বর্ধমানের এক নামকরা উকিলের সন্তান। মহাত্মা গান্ধীরঅসহযোগ আন্দোলনে উৎসাহিত হয়ে তিনি পরীক্ষায় ফেল করেন এবং নিজের মোটও করে জীবন শুরু করেন। তিনি স্থানীয় বাজারে তোয়ালের দোকান দেন। এবং স্থানীয় সাপাহিক পত্রিকা শক্তির সম্পাদকও ছিলেন। কলকাতার খ্যাতিমান পরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলী বর্ধমান এসে দেবকীর লেখনী শক্তির কথা জেনে তার সাথে দেখা করেন এবং তাকে কলকাতা এসে সিনেমার স্ক্রিপ্ট লেখার আহবান জানান। কামনার আগুণর নামে তার লেখা কাহিনী ব্রিটিশ ডমিনিয়ন ফিল্মসের এই চলচ্চিত্রটি চরম সাফল্য লাভ করে।[১]
দেবকী বসু তার সময়ে সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক ছিলেন। তার সময়ে, অনেক বাংলা সিনেমা হিন্দি এমনকি মারাঠি এবং তামিল ভাষায় মুক্তি পেয়েছিল।
চণ্ডিদাস(১৯৩২), তার পরিচালি চলচ্চিত্রে প্রথম নেপথ্য সঙ্গীত যুক্ত হয়, সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন রাইচাঁদ বড়াল, যিনি আর.সি. বড়াল নামেও পরিচিত।
সীতা (১৯৩৪), ইস্ট ইন্ডিয়া ফিল্ম কোম্পানির ব্যানারে নির্মিত চলচ্চিত্র, এটি প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র, যেটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। এটি ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং সন্মনমা ডিপ্লোমা লাভ করে। [২] তিনি প্রথম ভারতীয় পরিচালক যিনি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন।[৩]
অর্ঘ (১৯৬১) বিশেষ তথ্যচিত্র, পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রযোজিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম বার্ষিকীতে।[৬] এটি ববিন্দ্রনাথের ৪টি কবিতাঃ পূজারিণী, পুরাতন ভৃত্য, অভিসার এবং দুই বিঘা জমি-র অবলম্বনে তৈরি।
তিনি ১৯৫৭ সালে সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।