পণ্ডিত দেবব্রত (দেবু) চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | দেবব্রত (দেবু) চৌধুরী ১৯৩৫ ময়মনসিংহ (বাংলাদেশ) |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
শিক্ষা | সেনিয়া ঘরানা |
পরিচিতির কারণ | সংগীত (সেতার) |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | ৬টি বই প্রকাশ করেছেন, ৮টি রাগ সৃষ্টি করেছেন |
দাম্পত্য সঙ্গী | মঞ্জুশ্রী চৌধুরী |
পুরস্কার | পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী |
পৃষ্ঠপোষক | ওস্তাদ মুস্তাক আলী খান |
ওয়েবসাইট | www |
পণ্ডিত দেবব্রত (দেবু) চৌধুরী (৩০ মে ১৯৩৫[১] - ১ মে ২০২১) বিশিষ্ট সেতার বাদক ও শিক্ষক। তিনি পদ্মভূষণ এবং পদ্মশ্রী পুরস্কার বিজয়ী। তিনি ছয়টি বই লিখেছেন, আটটি নতুন রাগের রচয়িতা এবং অসংখ্য সংগীত রচনা করেছেন। ১৯৬৩ সাল থেকে তিনি অসংখ্য বেতার সম্প্রচারে উপস্থিত হয়েছেন এবং তিনি ওস্তাদ মুস্তাক আলী খানের শিষ্য।[২] তাঁকে যুদ্ধোত্তর যুগের একজন শীর্ষস্থানীয় সেতার বাদক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[৩] তিনি সেনিয়া শৈলী (ঘরানা)র অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রবক্তা হিসাবে বিবেচিত।[৪] দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত অনুষদের প্রাক্তন ডিন এবং প্রধান।[৫] তাঁর সংগীতটি মধুর ধ্বনির জন্য বিখ্যাত[৬] তিনি বর্তমানে নতুন দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে পুত্রবধূ এবং ভাগ্নীর সাথে রয়েছেন।
পণ্ডিত চৌধুরী ১৯৩৫ সালে ময়মনসিংহে (বর্তমানে বাংলাদেশ) জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[৭] তিনি চার বছর বয়স থেকে সেতার বাজানো শুরু করেছিলেন। ১৯৫৩ সালে আঠারো বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে তাঁর প্রথম সেতার বাদন সম্প্রচারিত হয়েছিল।
তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ১৯৭১ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেছিলেন এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ডীন ও সংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত আইওয়ার মহাঋষি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (বর্তমানে মহাঋষি ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট নামে পরিচিত) বহিরাগত অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৮] তিনি প্রয়াত পাঁচু গোপাল দত্ত এবং ওস্তাদ মুস্তাক আলী খানের অধীনে সেতারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন।[৯]
তিনি চার বছর বয়স থেকেই সেতার বাজানো শুরু করেছিলেন। ১৯৫৩ সালে, আঠারো বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে তাঁর প্রথম সম্প্রচারটি হয়েছিল।[১০] তিনি ৮টি নতুন রাগ সৃষ্টি করেছেন, সেগুলি হল, বিশ্বেশ্বরী, পলাশ-সারং, অনুরঞ্জনী, আশিকী ললিত, স্বানন্দেশ্বরী, কল্যাণী বিলাওয়াল, শিবমঞ্জরী এবং প্রভাতী মঞ্জরী (তাঁর স্ত্রী মঞ্জুর স্মৃতিতে)। তিনি ভারতীয় সংগীতের ওপর তিনটি বই লিখেছেন, যার নাম ‘সেতার এন্ড ইটস টেকনিকস’, ‘মিউজিক অব ইন্ডিয়া’ এবং ‘অন ইন্ডিয়ান মিউজিক’। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দিনের ২৪ ঘণ্টায় ২৪টি সিডি রেকর্ড করেছেন।[১১]
ফ্রেট জুড়ে স্ট্রিংটি টান দিয়ে, বিকল্প মূল স্ট্রোকিং চালিয়ে যাওয়ার আগে সেই আওয়াজটি শেষ হবার সময় দিয়ে, দ্বিতীয় স্ট্রিংয়ের টোনিক পিচ (এটি জোড়ি নামেও পরিচিত) এর সাথে পেডাল টোনটি (এটি জোড় নামেও পরিচিত) স্পষ্টভাবে বারবার বাজানোর ক্ষেত্রে তিনি শীর্ষস্থানীয় প্রবক্তা হিসাবে বিবেচিত হন। ওস্তাদ বিলায়েত খাঁ, রবিশঙ্কর এবং নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তাঁকে যুগের অন্যতম সেরা সেতার বাদক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[৩] তিনি ১৭টি ফ্রেটের সেতার ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও অনন্য; কারণ অন্যান্য বেশিরভাগ সংগীতজ্ঞ ১৯টি ফ্রেটের সেতার ব্যবহার করেন।[১২]
পন্ডিত দেবু চৌধুরী ২০২১ সালের ১ মে ভারতের দিল্লিতে কোভিড-১৯-এর বৈশ্বিক মহামারীর ফলে জীবনাবসান হয়। তিনি ডিমেনশিয়া জটিলতার সাথে কোভিড-১৯ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মধ্যরাতে হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়।[১৩][১৪][১৫] তার মৃত্যুর কয়েকদিন পর তার ছেলে বিখ্যাত সেতার বাদক প্রতীক চৌধুরীও কোভিড-সম্পর্কিত জটিলতার কারণে মারা যান।[১৬]