দেশি গাব গাছ | |
---|---|
দেশি গাবের ফুল | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | Angiosperms |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Asterids |
বর্গ: | Ericales |
পরিবার: | Ebenaceae |
গণ: | Diospyros |
প্রজাতি: | D. malabarica |
দ্বিপদী নাম | |
Diospyros malabarica (Desr.) Kostel. | |
প্রতিশব্দ | |
|
দেশি গাব এক প্রকার সপুষ্পক উদ্ভিদের ফল। দেশি গাব গাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম ডায়োস্পাইরস মালাবারিকা, যা ইবেনেসী পরিবারভুক্ত। একে ইংরেজিতে Gaub, Indian persimmon, Malabar ebony, Black-and-white Ebony বা Pale Moon Ebony নামে ডাকা হয়। সর্বোচ্চ ৩৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর কাণ্ড কালচে, যার ব্যাস ৭০ সে.মি. পর্যন্ত হতে পারে।[১]
গ্রামাঞ্চলের ঝোপ-ঝাড়ে যে গাছটিকে ভয় ভূত-পিচাশের চেয়ে কম নয়- এর নাম দেশি গাব। বহু বর্ষজীবী দেশি গাব বাংলা ও হিন্দিতে গাব, সংস্কৃত ভাষায় এর নাম 'তিন্দুকা'[২], এবং তামিল ভাষায় 'তুম্বিকা' নামে পরিচিত। দেশি গাবের আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। বিলাতি গাব নামে অন্য একটি ফল রয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিন্ন এক প্রজাতি।
দেশি গাব গাছ বহুববর্ষজীবি। এটি খুবই ধীরে ধীরে বাড়ে। ঘন পল্লবের পরিপক্ক একটি গাব গাছ ৩০-৩৫ মিটার লম্বা আর ৬৫-৭০ সেন্টিমিটার ব্যাসের হয়ে থাকে। দেশি গাবের ফল গোলাকার। খেতে হালকা মিষ্টি ও কষযুক্ত। সবুজ ফল পাকলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। পাকা ফলের ভেতরটা আঠালো ও চটচটে। এই গাছে পোকা ধরে না। থাইল্যান্ডের আং থং প্রদেশে একে প্রাদেশিক বৃক্ষের মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
গাবের ফল থেকে ট্যানি জাতীয় আঠা তৈরি করা হয়। টেকসই করতে এর আঠা জালে, পশুর চামড়ায় এবং নৌকায় মাখানো হয়। ফলে সেগুলো টেকসই হয়, পানিতে সহজে নষ্ট হয়না। দেশি গাবের প্রধান ব্যবহার এটাই। এছাড়া কাপড়ে কালো রঙ করতেও এটি ব্যবহৃত হয়।
আয়ুর্বেদাচার্য শিবকালী ভট্টাচার্য চিরঞ্জীব বনৌষধিতে গাবের বিভিন্ন ভেষজ প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেছেন। বহুমূত্র, ক্যান্সার, একজিমা, চর্মরোগ, আমাশয়, মূত্ররোগে গাব একটি কার্যকর ভেষজ।
লোকালয়ের ঝোপ-ঝাড় ধ্বংস করে আবাদি জমি তৈরির ফলে অন্যান্য মূল্যবান গাছের মতো দেশি গাবও হারিয়ে যেতে বসেছে।