দোলখা জেলা दोलखा | |
---|---|
দেশ | নেপাল |
প্রশাসনিক সদরদপ্তর | চারিকোট (ভীমেশ্বর |
সরকার | |
• ধরন | সমন্বয়কারী সমিতি |
• শাসক | ডিসিসি, দোলখা |
আয়তন | |
• মোট | ২১৯১ বর্গকিমি (৮৪৬ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৮৬,৫৫৭ |
• জনঘনত্ব | ৮৫/বর্গকিমি (২২০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | এনপিটি (ইউটিসি+০৫:৪৫) |
প্রধান ভাষা | নেপালি |
ওয়েবসাইট | www |
দোলখা (নেপালি: दोलखा जिल्ला , নেপালের প্রদেশ নং ৩-এর অর্ন্তগত একটি জেলা। চারিকট এই জেলার সদরদপ্তর। এই জেলার আয়তন ২,১৯১ বর্গকিলোমিটার (৮৪৬ মা২)। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এ জেলার লোকসংখ্যা ২,০২,৬৪৬ জন এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে লোকসংখ্যা ১,৮৬,৫৫৭ জন।
এই জেলা বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যকলাপের সাথে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত। অধিকাংশ নেপালিদের কাছে দোলখা ভীমেশ্বর মন্দিরের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। দোলখা নামটি উদ্ভব হয়েছে শেরপা সম্প্রদায় থেকে। শেরপা ভাষায় "দো" অর্থ "পাথর" (ধুনগা), "লা" অর্থ "ভেতরে" (মা), এবং "খা" অর্থ "মুখ" (মুখ). যার পুরো অর্থ "পাথরের ভেতরে মুখ"।
ভীমেশ্বর মন্দির ভীমেশ্বরের দোলখা বাজারে অবস্থিত। এই মন্দিরের প্রধান মূর্তি হলো ভগবান ভীমের। ভীমসেন বা ভীমেশ্বর বা দোলখার ভীমকে সমগ্র নেপাল জুড়ে বিখ্যাতদের একজন হিসাবে গণ্য করা হয়। তিনি ছিলেন পঞ্চ পাণ্ডবদের দ্বিতীয় রাজপুত্র এবং সাধারণ ব্যবসায়ী ও মহাজনেরা প্রধানত তাদের ইচ্ছে পূরনের দেবতা হিসেবে তার পূজা করত। দোলখাতে ছাদবিহীন মন্দির গঠন করা হয়েছিল ভীমেশ্বর প্রতিমার জন্য যেটা ত্রিভুজাকার এবং নির্মিত হয়েছিল অমসৃণ পাথর দিয়ে। বলা হয় মন্দিরের এই প্রতিমার সাদৃশ্য তিনজন দেবতার মত সকালে ভীমেশ্বর, সারাদিন মহাদেব এবং সন্ধ্যায় নারায়ণের মত।
বহু বছর ধরে স্থানীয় কিংবদন্তি চালু আছে যে, ১২ জন কুলি অন্য স্থান থেকে আসবার সময় এই জায়গায় থামে এবং ভাত রাধবার জন্য তারা তিনটি পাথর দিয়ে চুলা বানায়। কিছুক্ষন পরে দেখা যায় যে, একপাশের চাল রান্না হয়েছে কিন্তু অন্যপাশেরটা রান্না হয় নি। যখন একজন কুলি রান্না করা অংশটি উল্টো করে ধরে, দেখা যায় তিন কোণা কালো পাথরের সংস্পর্শে এসে রান্না করা অংশটি আবার চাল হয়ে গেছে। একজন কুলি এতে ভীষণ রেগে যায় এবং পরিবেশন করার জন্য ব্যবহৃত চামচ দিয়ে (পানু) দিয়ে পাথরে আঘাত করে তখন পাথরের কাটা অংশ দিয়ে রক্তের সঙ্গে মেশান দুধ বেরিয়ে আসতে থাকে। পরে তারা বুঝতে পারে পাথরটি আসলে দেবতা ভীম। এরপর থেকে ভক্তরা দেবতা ভীমের পূজা করতে থাকে।
দোলখার ভীমসেনের প্রতি বিশ্বাসকে প্রশ্রবিদ্ধ করে এমন অনেক ঘটনা আছে। ভীমসেনের মূর্তির অপ্রাকৃতিক ব্যাপারগুলোর মধ্যে একটি হল শরীরের ঘামের মত তরল গরম পানি ফোঁটার নিঃসরণ। লোকেরা বিশ্বাস করে যে, দেশে যখন কোন খারাপ ঘটনা ঘটছে বা অদূর ভবিষ্যতে ঘটবে, তখন ভীমসেন সবাইকে রক্ষা করার জন্য নিজের শরীরের ঘাম ঝরিয়ে সাবধান করে দিতে চান।
শ্রী ভীমেশ্বর শিবপুরানের দৃষ্টিকোণ থেকে, ভীমার একটি রাজত্ব ছিল যেটা পাহাড়ের চূড়ার একপাশে দেবতা ব্রহ্মার আর্শীবাদ পেয়েছিল। ভীমার রাজত্বে যারা বসবাস করত তারা ভীমার কারণে ভীষণ কষ্টের জীবন যাপন করত। তারা দেবতা শিবের কাছে তাদের জীবন রক্ষার জন্য প্রার্থনা করেছিল। দেবতা শিব গৌরিশংকর থেকে নেমে এসে রাজা ভীমকে হত্যা করেন। ইতিহাস অনুযায়ী, ভীমের মৃত্যর পর সেখানকার মূর্তির নামকরণ করা হয় ভীমেশ্বর (भिमेश्वर)।
দোলখা অন্যান্য পবিত্র মন্দিরের জন্যও পরিচিত যেমন কালিনচোক ভগবতী মন্দির। এটা নেপালে সবচেয়ে শক্তিশালী দেবীদের মন্দির হিসেবে পরিচিত। এটি উচুঁ পাহাড়ে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এটা প্রায় ৩,৮৪২ মিটার (১২,৬০৫ ফু) উচ্চতায় এবং জানা যায় আগে তীর্থযাত্রীর লম্বা এবং বিপদজনক পাহাড়ী পথ হেঁটে এই মন্দিরে যেতে হত। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে নেপাল সরকার র্তীথযাত্রীদের সুবিধার জন্য ক্যাবল কার সেবা চালু করে। বিশ্বাস করা হয়, তীর্থযাত্রীদের প্রার্থনা পূরনের ক্ষেত্রে এই মন্দিরের দেবীদের শক্তিশালী আধ্যাত্মিক ক্ষমতা রয়েছে।
জলবায়ু মন্ডল[১] | উচ্চতার ব্যাপ্তি | অঞ্চলের % অংশ |
---|---|---|
উচ্চতর উষ্ণপ্রধান | ৩০০ থেকে ১,০০০ মিটার ১,০০০ থেকে ৩,৩০০ ফুট |
১.৯% |
উপক্রান্তিয় অঞ্চল | ১,০০০ থেকে ২,০০০ মিটার ৩,৩০০ থেকে ৬,০০০ ফুট |
২৬.২% |
নাতিশীতোষ্ণ | ২,০০০ থেকে ৩,০০০ মিটার ৬,৪০০ থেকে ৯,৮০০ ফুট |
২৮.৫% |
অব আল্পীয় | ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ মিটার ৯,৮০০ থেকে ১৩,১০০ ফুট |
১৬.৬% |
আল্পীয় | ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ মিটার ১৩,১০০ থেকে ১৬,৪০০ ফুট |
৯.৪% |
তুষারের নিচে বর্ধমান | ৫,০০০ মিটারের বেশি | ১৭.৪% |
২০১১ সালের নেপালের আদমশুমারি অনুযায়ী দোলখা জেলার লোক সংখ্যা ছিল ১,৮৬,৫৫৭ জন।[২] এই জনসংখ্যার মধ্যে মাতৃভাষা হিসেবে ৬৫.২% নেপালি, ১৫.৮% তামাং, ৮.০% থামি, ৪.৬% শেরপা, ২.৩% জিরেল, ২.০% নেওয়ারি এবং ১.০% সুনুওয়ার ভাষী। এই জেলার জনসংখ্যার মধ্যে ৩২.৫% নেপালি ভাষায় এবং ০.৬% ইংরেজি ভাষাকে তাদের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ব্যবহার করত।[৩]
এই জেলা ৯টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত, তার মধ্যে ২টি নগর পৌরসভা ও ৭টি গ্রামীণ পৌরসভা। এগুলো হলো:[৪]
এই জেলাটি পুনর্গঠন হবার আগে নিচের পৌরসভা ও গ্রাম উন্নয়ন সমিতিগুলো নিয়ে দোলখা গঠিত ছিল: