দৌলত সিং কোঠারি | |
---|---|
জন্ম | ৬ জুলাই ১৯০৬ |
মৃত্যু | ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩ (বয়স ৮৬) দিল্লি,ভারত |
দৌলত সিং কোঠারি (৬ জুলাই, ১৯০৬ – ৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৩) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং শিক্ষাবিদ। [১] ভারত সরকারের পদ্মভূষণ এবং পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত ভারতের জ্যোতির্গবেষণার অন্যতম উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক ছিলেন তিনি।
দৌলত সিং কোঠারি বৃটিশ ভারতের অধুনা রাজস্থানের উদয়পুরে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ৬ ই জুলাই জন্ম গ্রহণ করেন। [১] তার পিতা ফতেলাল কোঠারি ছিলেন স্কুল শিক্ষক। ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে দৌলতের বার বৎসর বয়সে তার পিতার মৃত্যু হয়। তবে সাধারণ পরিবারে জন্ম হলেও দৌলত ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন অসাধারণ। স্কুলের পাঠ রপ্ত করতে একবারের বেশি দ্বিতীয়বার পড়তে হত না। স্কুলের সমস্ত পরীক্ষায় তিনিই প্রথম হতেন। পদার্থবিদ্যার প্রতিই তার ঝোঁক ছিল বেশি।প্রাথমিক পড়াশোনা উদয়পুরে শুরু হলেও বিএসসি পাশের পর দৌলত ভরতি হন এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এসসি ক্লাশে। এখানে জ্যোতির্বিদ্যা গবেষণার প্রবাদপুরুষ মেঘনাদ সাহার প্রিয় ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি এম.এসসি পাশ করেন। দৌলতের মধ্যে জ্যোতিপদার্থবিদ্যার ভাবীকালের সম্ভাবনা লক্ষ্য করে মেঘনাদ সাহা তাঁকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্নেস্ট রাদারফোর্ডের অধীনে ক্যাভেনডিশ ল্যাবরেটরিতে পদার্থবিজ্ঞানে গবেষণার পরামর্শ দেন।
ভারতে ফিরে আসার পরে, তিনি পাঠক, অধ্যাপক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হিসাবে বিভিন্ন সামর্থ্যে ১১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে দেশে এসে দৌলত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে যোগ দেন। দীর্ঘ চোদ্দ বৎসর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে বিভাগীয় প্রধান সহ বিভিন্ন পদে থাকার পর, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা পদে যোগদান করেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন এবং ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ওই পদে আসীন থাকেন। [১] ভারত সরকার ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ই জুলাই দৌলত সিং কোঠারির নেতৃত্বে দেশে জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে, শিক্ষার সংস্কার সাধন করতে ভারতীয় শিক্ষা কমিশন বা কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) গঠন করে। [২][৩]
ড. দৌলত সিং কোঠারি ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা, অনন্য সাধারণ জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ যেমন ছিলেন তেমনই তাঁকে ভারতের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানের স্থপতি হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার তথা ডি.আর.ডি.ও'র বহু গবেষণাগারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সেগুলি হল -
এছাড়া, ডঃ দৌলত সিং কোঠারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তথা ইউ জি সি এবং রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক অনুসন্ধান এবং প্রশিক্ষণ পরিষদ তথা এন.সি.ই.আর.টি স্থাপনার সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাভেনডিশ ল্যাবরেটরিতে পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক আর্নেস্ট রাদারফোর্ডের তত্ত্বাবধানে ড. দৌলত সিং কোঠারি ও ড.প্যাট্রিক ব্ল্যাকেটের যৌথ গবেষণা প্রতিরক্ষার বিষয়ে প্রভূত সাহায্য করেছে। [৪][৫][৬] ।
দৌলত সিং কোঠারি ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সুবর্ণ জয়ন্তী অধিবেশনে সভাপতি হন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরিসংখ্যানীয় তাপগতিবিদ্যায় ডোয়ার্ফ স্টার বা বামনরূপী নক্ষত্র বিষয়ক গবেষণার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন [১]
ভারত সরকার ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে পদ্মভূষণ এবং ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে পদ্মবিভূষণ রাষ্ট্রীয় খেতাব প্রদান করে [৭] "এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন অ্যাসোসিয়েশন" তাকে "গর্বিত অতীত প্রাক্তন ছাত্র" হিসাবেও তালিকাভুক্ত করে। [৮][৯][১০] ২০১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় ডাক বিভাগ তার সম্মানে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে। ভারতীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কেন্দ্রীয় হিন্দি অধিদপ্তর ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে আত্মারাম পুরস্কার প্রদান করে। [১১] দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের (উত্তর ক্যাম্পাস) স্নাতকোত্তর শ্রেণীর ছাত্রদের একটি ছাত্রাবাসের নামকরণ করা হয়।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)