দ্বিতীয় ইন্তিফাদা

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা
ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের অংশ
উপরে বাম থেকে ডানে দেখুন:
তারিখ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০০০ – ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫
(৪ বছর, ৪ মাস, ১ সপ্তাহ ও ৪ দিন)
অবস্থান
ফলাফল বিদ্রোহ দমন[][][][][][]
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
গাজা ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলী প্রত্যাহার
বিবাদমান পক্ষ

 ইসরাইল

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (সমর্থন ও সহায়তা)

ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ

সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
জড়িত ইউনিট
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী
ইসরাইল পুলিশ শিন বেট
মিসমেরেত ইউশা

ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী

হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০০– ১ জানুয়ারি, ২০০৫:

~ মোট ১,০১০ [][যাচাইকরণ ব্যর্থ হয়েছে][] ইসরাইলি:
• ৬৪৪–৭৭৩ বেসামরিক ইসরাইলী ফিলিস্তিনি হামলায় মারা যায় ;
• ২১৫–৩০১ ইসরাইলী সেনা ফিলিস্তিনি হামলায় মারা যায়
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০০০– ১ জানুয়ারি, ২০০৫: মোট ৩,১৭৯ [][][১০]–৩,৩৫৪[] ফিলিস্তিনি:
• ২,৭৩৯–৩,১৬৮ ফিলিস্তিনি ইসরাইলী বাহিনীর হামলায় নিহত হন;
• ১৫২–৪০৫ ফিলিস্তিনি ভুলবশত ফিলিস্তিনি হামলায় নিহত হন;
• ৩৪ ফিলিস্তিনি ইসরাইলি বেসামরিক হামলায় নিহত হন
৫৫ বিদেশী নাগরিক/মোট নাগরিক:
• ৪৫ বিদেশী ফিলিস্তিনিদের হামলায় মৃত্যুবরণ করে ;
• ১০ বিদেশী ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় মৃত্যুবরণ করে[]
* ফিলিস্তিনি বেসামরিক/যোদ্ধা হতাহতের সংখ্যার বিতর্কিত বিষয়ের জন্য দেখুন হতাহতের সংখ্যা দেখুন হতাহত

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ( আরবি: الانتفاضة الثانية ; হিব্রু ভাষায়: האינתיפאדה השנייה‎ ), যা আল-আকসা ইন্তিফাদা নামেও পরিচিত– [১১] এটি ২০০০ সালে শুরু হওয়া ইস্রায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের একটি বড় বিদ্রোহ ছিল, যা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডইসরায়েলে সংঘটিত হয়েছিল। এর তীব্র সহিংসতার সময়কাল ২০০৫ সালের শার্ম আল-শেখ শীর্ষ সম্মেলন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এরপর থেকে এর তীব্রতা কমে আসে এবং শত্রুতার সাময়িক অবসান ঘটে। [১১] [১২][১৩]

এই অস্থিরতা সাধারণত ২০০০ সালের ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলনের ব্যর্থতাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়, যাতে ২০০০ সালের জুলাই মাসে ইসরায়েল–ফিলিস্তিনি শান্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর আশা করা হয়েছিল। [১৪] ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ এরিয়েল শ্যারনের হারাম আল-শরিফে উস্কানিমূলক সফরের পর হিংসাত্মক ঘটনাবলী বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। [১৫] [১৪] যদিও এরিয়েলের সফরটি শান্তিপূর্ণ ছিল; কিন্তু প্রত্যাশিতভাবেই এটি বিক্ষোভ ও দাঙ্গার জন্ম দেয়। জবাবে ইসরায়েলি পুলিশ রাবার বুলেট, রাসায়নিক গোলাবারুদ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে। [১৬] বিদ্রোহের প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রায় এক মিলিয়নেরও অধিক রাউন্ড গোলাবারুদ নিক্ষেপ করেছিল। [১৭]

বিদ্রোহের প্রথম কয়েক সপ্তাহে নিহত ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের অনুপাত ছিল ২০ঃ১ জন। [১৭] ইস্রায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী বন্দুকযুদ্ধ, লক্ষ্যবস্তু হত্যা, ট্যাংক ও বিমান হামলা চালায়; বিপরীতে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা বন্দুকযুদ্ধ, পাথর নিক্ষেপ ও রকেট হামলা করে তাদের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে। [১৮][১৯] ২০০১ সালের মার্চ মাসের পর বিভিন্ন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত আনুমানিক ১৩৮টি আত্মঘাতী বোমা হামলা দ্বিতীয় ইন্তিফাদার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে এবং এসব হামলায় প্রধানত বিভিন্ন ইসরায়েলি সামরিক-বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়। [২০][২১][২২][২৩][২৪] সহিংসতায় যোদ্ধা ও বেসামরিক লোকের সম্মিলিত হতাহতের পরিসংখ্যানে আনুমানিক ৩,০০০০ জন ফিলিস্তিনি, ১,০০০ ইসরায়েলি এবং ৬৪ জন বিদেশী নাগরিকের মৃত্যু হয় বলে অনুমান করা হয়েছিল। [২৫]

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত শার্ম আল-শেখ সম্মেলনের মাধ্যমে শেষ হয়, [২৬] যখন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং ইস্রায়েলি প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন তাদের মাঝে শত্রুতা কমিয়ে আনতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে সম্মত হন। [২৭] [২৮] এর অংশ হিসেবে ২০০৩ সালে তারা চতুষ্টয় শক্তি ( জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্ররাশিয়া) দ্বারা প্রস্তাবিত " মধ্যপ্রাচ্যেশান্তির রোডম্যাপের" প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছিল। উপরন্তু, শ্যারন ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে সম্মত হন। [২৯] তিনি আরও বলেন যে, ইসরায়েলি সৈন্যদের পশ্চিম তীরের সেসব অংশ থেকে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে, যা তারা বিদ্রোহকালীন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করার সময় জোরপূর্বক দখল করেছিল।

ব্যুৎপত্তি

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বলতে দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি বিদ্রোহকে বোঝায়, যা প্রথম ফিলিস্তিনি বিদ্রোহের পরে সংঘটিত হয়েছিল। প্রথম ইন্তিফাদা ১৯৮৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ইনতিফাদা (انتفاضة ) শব্দটি মূলত আরবি, যার বাংলা অনুবাদ করা হয় 'অভ্যুত্থান' বা 'বিদ্রোহ'। শব্দটির ধাতুগত একটি আলাদা রয়েছে; তা হল "কাঁপানো বা নাড়া দেওয়া"। এটি বিভিন্ন আরব দেশে "বিদ্রোহ" অর্থেই ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৭ সালের মিশরীয় দাঙ্গাকে "খুবয ইন্তিফাদা" বা 'রুটি বিদ্রোহ' বলা হয়। [৩০] শব্দটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইস্রায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকে বোঝায়।

আল-আকসা ইন্তিফাদা বলতে মসজিদুল আকসা বা আল আকসা মসজিদকে ইসরাইলি দখলদারিত্ব থেকে স্বাধীন বা মুক্ত করাকে বোঝায়। আল আকসা হলো অষ্টম শতাব্দীতে জেরুজালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত টেম্পল মাউন্টের উপরে নির্মিত মসজিদটির প্রধান প্রাঙ্গণের নাম। এটি মুসলিমদের কাছে হারাম আল-শরীফ নামে পরিচিত।

ইন্তিফাদাকে কখনও কখনও কিছু ইসরায়েলি "ওসলো যুদ্ধ" ( מלחמת אוסלו) হিসেবেও উল্লেখ করে, যারা মনে করে যে, এটি ওসলো চুক্তির পর ইস্রায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের দেওয়া ছাড়ের ফলাফল। যদিও বলা হয় যে, অসলো চুক্তি ইস্রাইলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য মঞ্চস্থ করা হয়েছিল। [৩১][৩২][৩৩] এটি "আরাফাতের যুদ্ধ" নামেও পরিচিত, যা প্রয়াত বিদ্রোহী ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের নামে নামকরণ করা হয়েছে। কারণ অনেকে তাকে এই সংঘাত শুরু করার জন্য দায়ী করেন। অধিকাংশ মনে করেন, এটি নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের দ্বারা শুরু হওয়া কেবলমাত্র একটি গণজাগরণ ছিল, যার ওপর অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া প্রদর্শনের ফলে এটি ব্যাপক সংঘাত ও যুদ্ধের রূপ নেয়। [৩৪]

পটভূমি

[সম্পাদনা]

অসলো চুক্তি

[সম্পাদনা]

১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সালে সাক্ষরিত অসলো চুক্তির অধীন ইসরায়েল গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরের কিছু অংশ থেকে পর্যায়ক্রমে তার বাহিনী প্রত্যাহারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল এবং একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমে সেই সকল অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের স্বশাসনের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল। নবগঠিত ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (পিএলও) তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইস্রায়েলকে স্বীকৃতি দেয় এবং চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনী যে সকল এলাকা খালি করবে, সেসব অঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। চুক্তি অনুসারে ফিলিস্তিনের স্বায়ত্তশাসন পাঁচ বছর স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল এবং এই সময়ের মধ্যে একটি স্থায়ী চুক্তির জন্য আলোচনা করার কথাও ছিল। তবে বাস্তবে পরিস্থিতি এমনভাবে গড়ে ওঠে যে, উভয় পক্ষই অসলো শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। [১৩]

১৯৯৩ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের চলাচলের স্বাধীনতা আরও সীমিত হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ ওঠে। অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের পরবর্তী পাঁচ বছরে ৪০৫ জন ফিলিস্তিনি এবং ২৫৬ জন ইসরায়েলি নিহত হয়। ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন উভয়েই চুক্তির ব্যর্থতার জন্য একে অপরকে দায়ী করে।

১৯৯৬ সাল থেকে ইস্রায়েল একটি সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে এবং তারা এই পরিকল্পনাকে সম্মিলিতভাবে "মিউজিক্যাল চার্ম" নামে অভিহিত করে। ১৯৯৮ সালে ইসরায়েল এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, অসলো আলোচনায় নির্ধারিত পাঁচ বছরের পরিকল্পনা পূর্ণ হবে না। তাই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গোপনে "অপারেশন ফিল্ড অব থর্নস" নামে একটি সামরিক পরিকল্পনা চালু করে, যার মাধ্যমে তারা পশ্চিম তীরের এরিয়া সি এবং গাজার কিছু অংশ দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। এই লক্ষ্যে ২০০০ সালের দিকে রেজিমেন্ট পর্যায়ে সামরিক মহড়াও পরিচালিত হয়।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা মূলত প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতি নেয়, যা ছোট পরিসরে সীমাবদ্ধ ছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল স্থানীয় জনগণকে আশ্বস্ত করা; ইসরায়েলের সামরিক হামলা মোকাবিলা করা নয়। তবে ইস্রায়েলের এমন সামরিক প্রস্তুতি দেখে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিভি ফোগেল আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, এই পরিকল্পনাগুলোই শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষের কারণ হয়ে উঠতে পারে এবং বাস্তবে তাই ঘটেছিল। [১২]

১৯৯৫ সালে ইস্রায়েলি প্রধানমন্ত্রী আইজাক রবিনকে ইগাল আমির নামে এক উগ্রপন্থী ইহুদি হত্যা করে। ইগাল আমির অসলো চুক্তির কট্টর বিরোধী ছিল এবং চুক্তিতে সম্মত হওয়ার কারণে সে রবিনকে হত্যা করে। রবিনের মৃত্যুর পর শিমন পেরেস প্রধানমন্ত্রী হন। তবে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ইসরায়েলিরা লিকুদ দলের ডানপন্থী নেতা বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন একটি দলীয় জোটকে ক্ষমতায় আনে। এরপর ১৯৯৯ সালে লেবার পার্টির নেতা এহুদ বারাক সেই বছরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন। [৩৫]

ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলন

[সম্পাদনা]

২০০০ সালের ১১ থেকে ২৫শে জুলাই পর্যন্ত ক্যাম্প ডেভিডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাতের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করার ফলে শেষ পর্যন্ত আলোচনাটি ব্যর্থ হয়। এই চুক্তিতে পাঁচটি প্রধান বাধা ছিল: সীমানা ও আঞ্চলিক সংলগ্নতা, জেরুজালেমহারাম আল-শরিফ, ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু ও তাদের প্রত্যাবর্তন করার অধিকার, ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং অবৈধ ইসরায়েলি বসতি। এই চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার ফলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষে একটি উল্লেখযোগ্য ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। কারণ ফাতাহর অনেক উপদল হামাস ও ইসলামি জিহাদে যোগদানের জন্য ফাতাহ পরিত্যাগ করে। [৩৬]

২০০০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ইয়াসির আরাফাত এবং ফিলিস্তিনি আইন পরিষদ পরিকল্পিত একতরফা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোষণা স্থগিত করে। [৩৭]

অবৈধ ইসরায়েলি বসতি

[সম্পাদনা]

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডেলিন অলব্রাইটের অনুরোধে শিমন পেরেস বসতি নির্মাণ সীমিত করেছিলেন। কিন্তু বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় এসেই বিদ্যমান ইসরায়েলি বসতিগুলির ভেতরে অবশিষ্ট নির্মাণকাজ চালিয়ে যান এবং পূর্ব জেরুজালেমে হার হোমা নামে একটি নতুন এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। তবে তিনি ১৯৯১-৯২ সালে পূর্বের আইজাক শামির সরকারের সময়কার নির্মাণের মাত্রার তুলনায় অনেক কম ইউনিট নির্মাণ করেন এবং তিনি নতুন কোনো বসতি স্থাপন করেননি। অসলো চুক্তিতে নতুন বসতি স্থাপনে কোনো নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ ছিল না। [৩৫][৩৮][৩৯]

নির্মিত আবাসন ইউনিটের সংখ্যা ওসলো চুক্তির আগে (১৯৯১-৯২): ১৩,৯৬০ ছিল এবং অসলো চুক্তির পরে তা (১৯৯৪-৯৫): ৩,৮৪০- এ সীমিত থাকে। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর শাসনামলে (১৯৯৬-৯৭): ৩,৫৭০ ইউনিট নির্মিত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক চরমপন্থী বসতি স্থাপনকারীদের দুর্বল করার লক্ষ্যে সেখানে মধ্যপন্থী বসতি স্থাপনকারীদের সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি ১৯৯৮ সালের নভেম্বরে স্বাক্ষরিত ওয়াই রিভার চুক্তির পর নির্মিত ১২টি নতুন বসতি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা করেন। কিন্তু এর বিপরীতে পশ্চিম তীরের বিদ্যমান বসতিগুলোর সম্প্রসারণ এবং সেখানে ৩,০০০ নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করার ফলে ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়েন। যদিও এতে পশ্চিম তীরে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়নি। [৩৫][৪০]

যদিও ওসলো চুক্তি অনুসারে বিদ্যমান বসতিগুলোর ভেতরে নতুন নির্মাণ সম্পূর্ণ অনুমোদিত ছিল; তবে ফিলিস্তিনিরা দাবি করেন যে, এই ধরনের যে কোনো নির্মাণ চুক্তির চেতনার পরিপন্থী। তাদের মতে, এই কাজ চূড়ান্ত শান্তি আলোচনার ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি জনগণের আস্থা দুর্বল করে দিতে পারে। [৪০]

সময়রেখা

[সম্পাদনা]
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শাসিত এলাকার সিআইএ কর্তৃক প্রকাশিত দূর অনুধাবন মানচিত্র; জুলাই, ২০০৮।

২০০০ সালের ১১ থেকে ২৫ জুলাই ক্যাম্প ডেভিডে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার আগে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করলে এটি ব্যর্থ হয়। [৪১] চুক্তির পথে চারটি প্রধান বাধা ছিল: গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ, জেরুজালেমহারাম আল-শরিফ, ফিলিস্তিনি শরণার্থী ও তাদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা উদ্বেগ। এসবের একটিতেও উভয়পক্ষের মাঝে ঐক্যমত্য হওয়া সম্ভব হয়নি বিধায় আলোচনা ব্যর্থ হয়ে যায়। [৪২]

এরিয়েল শ্যারনের হারাম আল শরীফ পরিদর্শন

[সম্পাদনা]

২৮ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি বিরোধীদলীয় নেতা এরিয়েল শ্যারনলিকুদ দলের একটি প্রতিনিধিদল শত শত ইসরায়েলি দাঙ্গা পুলিশের পাহারায় পবিত্র হারাম আল -শরিফ পরিদর্শন করেন, যা ব্যাপকভাবে ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হিসেবে বিবেচিত। [৪৩] ১৯৮০ সাল থেকে ইসরায়েল মাউন্টপূর্ব জেরুজালেমের বাকি অংশের উপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে এবং এই প্রাঙ্গণটি ইহুদি ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।

শ্যারনকে সফরের অনুমতি প্রদানকারী ইসরায়েলি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্লোমো বেন-আমি পরে দাবি করেছেন যে, তিনি সফরের আগে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা প্রধান জিব্রিল রাজুবকে টেলিফোন করেছিলেন এবং তিনি তার কাছ থেকে এই কথার আশ্বাস পেয়েছিলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত শ্যারন মসজিদে প্রবেশ না করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তার সফর কোনো সমস্যা সৃষ্টি করা হবে না। তবে রাজুব পরে জোর গলায় অস্বীকার করেন যে, তিনি এই ধরণের কোনও আশ্বাস কাউকে দিয়েছেন। [৪৪]

এরিয়েল শ্যারন ঘটনাস্থল ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরেই জেরুজালেমের বাইরে ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ বিক্ষোভ দাঙ্গায় পরিণত হয়। তৎকালীন ওয়াকফের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি আবু কুতাইশকে পরবর্তীতে ইসরায়েল কর্তৃক অভিযুক্ত করা হয়েছিল যে, তিনি মসজিদের লাউডস্পিকার ব্যবহার করে আল-আকসা রক্ষার জন্য ফিলিস্তিনি মুসলিমদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল যে, পরবর্তীতে বিলাপকারী দেয়ালের (ওয়েলিং ওয়াল) দিকে পাথর নিক্ষেপের জন্য তার আহ্বানই দায়ী ছিল। [৪৫] জবাবে ইসরায়েলি পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পাল্টা আক্রমণ করে এবং ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীরা পাথর ও গুলি ছুঁড়ে মারে। যার ফলে ২৫ জন পুলিশ আহত হয়, যাদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত হন এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। রাবার বুলেটে কমপক্ষে তিনজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছিলেন। [৪৬]

শ্যারনের এই প্রাঙ্গণ পরিদর্শনের উদ্দেশ্য ছিল সকল ইসরায়েলিদের জন্য হারাম আল-শরিফ পরিদর্শনের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। [৪৭] [৪৮] তবে লিকুদ পার্টির মুখপাত্র ওফির আকুনিসের মতে, শ্যারনের আসল উদ্দেশ্য ছিল এটি দেখানো যে, লিকুদ সরকারের অধীনে হারাম আল-শরিফ ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের অধীনে থাকবে। [৪৯] ক্যাম্প ডেভিড আলোচনায় এহুদ বারাক জোর দিয়েছিলেন যে, হারাম আল-শরীফের অবস্থানস্থল পূর্ব জেরুজালেম সম্পূর্ণ ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের অধীনে থাকবে। [৫০] ফিলিস্তিনিদের কাছে স্থানটি হস্তান্তর করতে ইসরায়েল সরকার প্রস্তুত বলে শ্যারন কর্তৃল উত্থাপিত অভিযোগের জবাবে ইসরায়েলি সরকার তাকে স্থানটি পরিদর্শনের অনুমতি দেয়। শ্যারনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত হলে ইয়াসির আরাফাত, সায়েব এরেকাত ও ফয়সাল হুসেইনির মত সিনিয়র ফিলিস্তিনি ব্যক্তিত্বরা সকলেই তাকে সফর বাতিল করতে অনুরোধ করেছিলেন। তবে শ্যারন শেষ পর্যন্ত সফর করেছিল এবং সফরটি ইন্তিফাদার জন্য একটি বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছিল। [৫১]

এর মাত্র দশদিন পূর্বে ফিলিস্তিনিরা সাবরা ও শাতিলা গণহত্যার বার্ষিক স্মরণ দিবস পালন করে। সাবরা ও শাতিলা গণহত্যায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কর্তৃক সমর্থিত লেবাননী বাহিনী হাজার হাজার লেবাননী ও ফিলিস্তিনি মুসলিমকে হত্যা করেছিল। [৫১] ইসরায়েলি কাহান কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল যে, সাবরা ও শাতিলা গণহত্যার সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন এরিয়েল শ্যারন। তিনি রক্তপাত ও হামলার প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করে গণহত্যা রোধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী ছিলেন। [৫২] বৈরুতের বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে শ্যারনের অবহেলা–যা তখন ইস্রায়েলি নিয়ন্ত্রণে এসেছিল–একজন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপর যে দায়িত্বের পরিপূর্ণতা ছিল তার অপরিপূর্ণতা হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল এবং শ্যারনকে ইসরায়েলী প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছিল। শ্যারন প্রথমে পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান; কিন্তু শান্তি মিছিলে একজন ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তবে তিনি ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় থেকেই যান।

ফিলিস্তিনিরা শ্যারনের হারাম আল-শরিফ সফরকে উস্কানি ও অনুপ্রবেশ বলে নিন্দা জানিয়েছিল। তারা তার সাথে ঘটনাস্থলে আসা সশস্ত্র দেহরক্ষী বাহিনীরও নিন্দা জানিয়েছিল। সমালোচকরা দাবি করেছেন যে, শ্যারন জানতেন যে, এই সফর সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে এবং তার সফরের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক। একজন পর্যবেক্ষকের মতে, শ্যারন হারাম আল-শরিফ হাঁটতে হাঁটতে আরব-ইসরায়েলি সংঘর্ষের সবচেয়ে পাতলা বরফের উপর স্কেটিং করছিলেন। [৫৩]

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, মিশরীয়, ফিলিস্তিনি, লেবাননী ও জর্ডানীয়সহ আরব বিশ্বের অনেক বিশ্লেষক শ্যারনের সফরকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূচনা এবং শান্তি প্রক্রিয়ার পতন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। [৫৪] জুলিয়ানা ওকসের মতে, শ্যারনের এই সফর প্রতীকীভাবে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূত্রপাত করেছিল। [৫৫] মারওয়ান বারগুসি বলেছেন যে, যদিও শ্যারনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি সমাবেশের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, তবে তিনি যদি হারাম আল-শরিফ পরিদর্শন না করতেন, তবুও দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূচনা হয়ে যেত। [৫৬]

পরিদর্শন-পরবর্তী ফিলিস্তিনি দাঙ্গা

[সম্পাদনা]

শ্যারনের টেম্পল মাউন্ট সফরের পরের দিন ২০০০ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর শুক্রবারের নামাজের পরেই জেরুজালেমের পুরনো শহর জুড়ে বিশাল দাঙ্গা শুরু হয়। ইসরায়েলি পুলিশ টেম্পল মাউন্টে ফিলিস্তিনিদের উপর গুলি চালায়; যারা পশ্চিম প্রাচীরের উপর দিয়ে ইহুদি উপাসকদের উপর পাথর ছুঁড়ে বলে অভিযোগ ছিল। জেরুজালেমের পুলিশ বাহিনীর প্রধান পাথরের আঘাতে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর পুলিশ তাজা গুলি ব্যবহার করে চার ফিলিস্তিনি যুবককে হত্যা করে। [৫৩] [৫৭] [৫৮] ২০০ জনের মতো ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলী পুলিশ আহত হয়। [৫৯] পুরনো শহর ও জয়তুন পর্বতে আরও তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। [৬০] দিনের শেষে সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩০০ জন আহত হয়। [৬১] সংঘর্ষে ৭০ জন ইসরায়েলি পুলিশও আহত হয়। [৫১] [৬২]

পরবর্তী দিনগুলিতে পশ্চিম তীরগাজা ভূখণ্ড জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলি পুলিশ তাজা গুলি ও রাবার-লেপা গুলি দিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। প্রথম পাঁচ দিনে কমপক্ষে ৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৮৮৫ জন আহত হন। [৬১] জ্যাক শিরাক যখন প্যারিসে উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রচেষ্টা করছিলেন। তিনি এহুদ বারাকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যে, একদিনে নিহত ও আহত ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের অনুপাতে এতই কমবেশি ছিল যে, তিনি কোনোমতে কাউকে বোঝাতে পারেননি যে ফিলিস্তিনিরা আক্রমণকারী। তিনি বারাককে আরও বলেছিলেন যে, পাথর নিক্ষেপকারী ফিলিস্তিনদের উপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া ও আন্তর্জাতিক তদন্ত প্রত্যাখ্যান করা মূলত ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য আরাফাতের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার সমতুল্য। [৬৩] দাঙ্গার প্রথম কয়েক দিনের মধ্যেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রায় ১.৩ লক্ষ বুলেট গুলি ছোড়ে। [৬৪]

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায় যে, প্রাথমিকভাবে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের ঘটনা মূলত বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বা পথচারী ফিলিস্তিনদের উপর আক্রমণের ফলে সংগঠিত হয়েছিল। অ্যামনেস্টি আরো জানায় যে, প্রথম মাসে নিহত প্রায় ৮০% ফিলিস্তিনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন, যখন ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে ছিল না। তাদের হত্যার পরই মূলত বিক্ষোভ সহিংসতার রূপ নিয়েছিল। [৬৫]

২০০০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর গাজা উপত্যকার একটি গলিতে বাবার পিছনে আশ্রয় নেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ফিলিস্তিনি ছেলে মুহাম্মদ আল-দুরাহর মৃত্যুর ভিডিও ধারণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে ছেলেটির মৃত্যু এবং তার বাবার আহত হওয়ার জন্য ইসরায়েলি সৈন্যদের দায়ী করা হয়েছিল। এই দৃশ্যটি সাথে সাথে প্রতীকী মর্যাদা লাভ করেছিল; কারণ এটি বিশ্বজুড়ে দেখানো হয়েছিল এবং আরব টেলিভিশনে বারবার সম্প্রচারিত হয়েছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রথমে হত্যার দায় স্বীকার করে এবং ক্ষমা চায়। কিন্তু মাত্র ২ মাস পরে যখন একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তে মূল বর্ণনার উপর সন্দেহ দেখা দেয়, তখন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল যে, আইডিএফ কি আসলেই তার উপর গুলি চালিয়েছিল নাকি ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ভুলক্রমে তাকে গুলি করে। [৬৬]

অক্টোবর, ২০০০ এর ঘটনাবলী

[সম্পাদনা]
নাজারেথে ২০০০ সালের অক্টোবরে দাঙ্গায় নিহত ইসরায়েলি আরবদের স্মৃতিস্তম্ভ।

২০০০ সালের অক্টোবরের ঘটনাবলী বলতে সাধারণত ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকদিনের অস্থিরতা ও সংঘর্ষের কথা বোঝানো হয়, যার অধিকাংশই আরব নাগরিক ও ইসরায়েলি পুলিশের মাঝে সংগঠিত হয়। এর পাশাপাশি এটি আরবইহুদি উভয়পক্ষের দ্বারা সংগঠিত একটি বৃহৎ আকারের জাতিগত দাঙ্গা ছিল। ইসরায়েলি পুলিশের গুলিতে ইসরায়েলের বারোজন আরব নাগরিক ও গাজার একজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়; অন্যদিকে তেলআবিব-হাইফা মুক্তরাস্তায় পাথরের ধাক্কায় আহত হয়ে একজন ইসরায়েলি ইহুদি মৃত্যুবরণ করে। ইন্তিফাদার প্রথম মাসে ১৪১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫,৯৮৪ জন আহত হন, যেখানে ১২ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ৬৫ জন আহত হন। [৬৭]

পয়লা অক্টোবর থেকে উত্তর ইসরায়েল জুড়ে একটি সাধারণ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ শুরু হয় এবং এটি বেশ কয়েক দিন ধরে চলে। কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে পাথর নিক্ষেপ, আগুন বোমা হামলা ও সরাসরি গুলি চালানোও হয়। পুলিশ সদস্যরা কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে এবং শুরুতে রাবার লেপা বুলেট এবং পরবর্তীতে তাজা গুলি ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে দাঙ্গা ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ নিরাপত্তা রীতিনীতিও লঙ্ঘন করে। অর কমিশনের মতে, পুলিশের জীবন্ত গোলাবারুদের ব্যবহার অনেক মৃত্যুর সাথে সরাসরি জড়িত ছিল।

এরপর ৮ অক্টোবর হাজার হাজার ইহুদি ইসরায়েলি তেল আবিব ও অন্যান্য স্থানে সহিংস কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করে। তাদের কেউ কেউ আরবদের উপর পাথর নিক্ষেপ করে; আরবদের সম্পত্তি ধ্বংস করে এবং সম্মিলিতভাবে আরবদের মৃত্যু হোক স্লোগান দেয়। [৬৮]

দাঙ্গার পরে ইহুদি ও আরব নাগরিকদের মধ্যে উচ্চ মাত্রার উত্তেজনা এবং আরব নাগরিক ও পুলিশের মধ্যে অবিশ্বাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলী উচ্চ আদালতের বিচারপতি থিওডোর ওরের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি সহিংস দাঙ্গা পর্যালোচনা করে দেখেছে যে, পুলিশের এই ধরনের দাঙ্গা মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে প্রস্তুতি খুবই দুর্বল ছিল এবং পুলিশের প্রধান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগও বনা হয়েছিল। ওরের কমিশন প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাককে তিরস্কার করে এবং তৎকালীন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রী শ্লোমো বেন-আমিকে জননিরাপত্তা মন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব চালিয়ে না যাওয়ার সুপারিশ করে। এছাড়াও কমিটি আরব নেতা ও নেসেট সদস্যদের পরিবেশ উত্তপ্ত করা এবং সহিংসতা আরও তীব্র করার জন্য দায়ী করেছে।

রামাল্লাহ গণপিটুনি ও ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া

[সম্পাদনা]

১২ অক্টোবর ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের পুলিশ দুজন ইসরায়েলি রিজার্ভ সৈন্যকে গ্রেপ্তার করে, যারা ভুলবশত রামাল্লায় প্রবেশ করেছিল। সেখানে আগের সপ্তাহগুলিতে একশ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল, যার মধ্যে প্রায় দুই ডজন নাবালক ছিল। [৬৯] গ্রেফতারের পর দ্রুত গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ইসরায়েলি গোপন এজেন্টরা ভবনটিতে রয়েছে। ফলে ১,০০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি স্টেশনের সামনে জড়ো হয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানায়। উভয় সৈন্যকে মারধর করা হয়; ছুরিকাঘাত করা হয় এবং পেট ছিঁড়ে ফেলা হয়। এরপর একজনের দেহে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। একটি ইতালীয় টেলিভিশন দল হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করে এবং তারপর তারা এটি আন্তর্জাতিকভাবে সম্প্রচার করে। [৭০] [৭১] একজন ব্রিটিশ সাংবাদিক ছবি তোলার চেষ্টা করার সময় দাঙ্গাবাজরা ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। এই হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা ইসরায়েলি জনসাধারণকে হতবাক করেছিল এবং তারা এটিকে ইসরায়েল এবং ইহুদিদের প্রতি ফিলিস্তিনিদের গভীর ঘৃণার প্রমাণ হিসেবে দেখেছিল। [৭২] হামলার জবাবে ইসরায়েল পশ্চিম তীরগাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা চালায়। এই অভিযানে যে থানায় গণপিটুনির ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই থানাটি খালি করে ধ্বংস করা হয়েছিল। [৭৩] [৭৪] পরে ইসরায়েলী সেই সৈন্যদের হত্যার জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০০০

[সম্পাদনা]

১ নভেম্বর ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করে। তখন সংঘর্ষের ফলে তিনজন ইসরায়েলি সৈন্য ও ছয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। সেই সাথে চারজন ইসরায়েলি সেনা ও ১৪০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়। পরবর্তী দিনগুলিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করার সাথে সাথে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং নভেম্বর মাসে প্রায় প্রতিদিন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এতে মোট ১২২ জন ফিলিস্তিনি ও ২২ জন ইসরায়েলি নিহত হন। ২৭ নভেম্বর রমজান মাসের প্রথম দিনে ইসরায়েল কার্নি সীমান্তপথ দিয়ে পণ্য ও জ্বালানি পরিবহনের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। একই দিনে জেরুজালেমের গিলো বসতিতে বেইত জালা থেকে ফিলিস্তিনিদের ভারী মেশিনগানের গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এক সপ্তাহ পরে ইসরায়েল বিধিনিষেধ আরও কঠোর করে এবং ফিলিস্তিনিরা আইডিএফ এবং ইসরায়েলি অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সাথে সংঘর্ষ অব্যাহত রাখে। ডিসেম্বরে মোট ৫১ জন ফিলিস্তিনি এবং ৮ জন ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছিল। [৭৫] ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলীদের মধ্যে শান্তি চুক্তি করার জন্য ক্লিনটন প্রশাসনের শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে ডিসেম্বরে শার্ম আল-শেখে একটি সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে ফিলিস্তিনিরা ক্লিনটন প্যারামিটার গ্রহণে বিলম্ব করার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বারাক যোগদান না করার সিদ্ধান্ত নেন। [৭৬]

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে তাবা শীর্ষক সম্মেলন ২০০১ সালের ২১ থেকে ২৭ জানুয়ারী সিনাই উপদ্বীপের তাবাতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সম্মেলন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক ও ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি ইয়াসির আরাফাত পূর্ববর্তী বা পরবর্তী যে কোনো শান্তি আলোচনার চেয়ে চূড়ান্ত মীমাংসার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা নিজেদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হন।

২০০১ সালের ১৭ই জানুয়ারী ফাতাহের তানজিমের সদস্য ২৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি মোনা জাউদ আল-আওয়ানা ইসরায়েলি কিশোরী ওফির রাহুমকে রামাল্লায় নিয়ে যাওয়ার পর হত্যা করে। সে ইন্টারনেটে ওফিরের সাথে যোগাযোগ করেছিল এবং বেশ কয়েক মাস ধরে মোনা তার সাথে অনলাইনে প্রেম করেছিল। অবশেষে তিনি তাকে রামাল্লায় গাড়ি চালিয়ে তার সাথে দেখা করতে রাজি করান। সেখানে তার পরিবর্তে অপর তিনজন ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী তাকে অতর্কিত হামলা করে এবং পনেরো বারেরও বেশি গুলি করে। [৭৭] পরে এক বিশাল সামরিক ও পুলিশ অভিযানের মাধ্যমে আওয়ানাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জানুয়ারিতে আঠারোজন ফিলিস্তিনির সাথে আরও পাঁচজন ইসরায়েলি নিহত হন।

সেই সময় লিকুদ পার্টির এরিয়েল শ্যারন ইসরায়েলি শ্রমিক দলের এহুদ বারাকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ২০০১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য বিশেষ নির্বাচনে শ্যারন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। শ্যারন ইয়াসির আরাফাতের সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানান।

মার্চ মাসে সহিংসতার ফলে ৮ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং ২৬ জন ফিলিস্তিনিও নিহত হয়েছিলেন। হেবরনে একজন ফিলিস্তিনি স্নাইপার দশ মাস বয়সী ইসরায়েলি শিশু শালহেভেট পাসকে হত্যা করে। [৭৮] [৭৯] এই হত্যাকাণ্ড সকল ইসরায়েলি জনগণকে হতবাক করে দিয়েছিল। পরে ইসরায়েলি পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী জানা যায় যে, স্নাইপারটি অন্য কাউকে না পেয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুটিকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিল। [৮০]

২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল একটি বিস্ফোরণে সাতজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা নিহত হয়, যাদের মধ্যে একজন ওফির রাহুমের হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিল বলে ধারণা করা হয়। আইডিএফ ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ নিশ্চিত বা অস্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল যে, এর জন্য তারা দায়ী।

২০০১ সালের ৭ মে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নৌ কমান্ডোরা সান্তোরিনি নামের একটি জাহাজ আটক করে, যা আন্তর্জাতিক জলসীমায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ-নিয়ন্ত্রিত গাজার দিকে যাচ্ছিল। আইডিএফ জানায় যে, জাহাজটি অস্ত্রশস্ত্রে ভরা ছিল। এরপর ইসরায়েলি তদন্তে বলা হয় যে, এই চালানটি আহমেদ জিব্রিলের পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইনের জেনারেল কমান্ড (পিএফএলপি-জিসি) কিনেছিল। জাহাজ ও এটির পণ্যসম্ভারের মূল্য আনুমানিক $১০ মিলিয়ন ডলার ছিল। জানা গিয়েছিল, জাহাজের ক্রুরা অস্ত্র ভর্তি নলের মালামাল–যা সাবধানে সিল করা হয় এবং জলরোধী পদার্থ দ্বারা বেষ্টিত ছিল– ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত গাজা উপকূলের কাছে একটি পূর্ব-পরিকল্পিত স্থানে নামানোর পরিকল্পনা করেছিল এবং এরপর সেখান থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নলগুলি পুনরুদ্ধার করবে।

২০০১ সালের ৮ই মে দুই ইসরায়েলি কিশোর ইয়াকভ কোবি ম্যান্ডেল (১৩) ও ইউসুফ ইশরান (১৪) তাদের গ্রামের কাছে হাইকিং করার সময় অপহৃত হয়। পরের দিন সকালে তাদের মৃতদেহ তাদের বসবাসের স্থানের কাছাকাছি একটি গুহায় আবিষ্কৃত হয়। [৮১] ইউএসএ টুডে জানিয়েছিল যে, পুলিশের মতে, উভয় ছেলেকেই বেঁধে রেখে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে এবং পাথর দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছিল যে, জুডীয়া মরুভূমির সেই গুহার দেয়াল ছেলেদের রক্তে লাল হয়ে ছিল এবং খুনিরা সেখানে তাদের রক্তে মাখামাখি করেছিল বলে ধারণা করা হয়। [৮২]

২০০১ সালের ১৮ই মে নেতানিয়ায় একটি আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ১৯৬৭ সালের পর প্রথম বারের মতো ইসরায়েল পশ্চিম তীর এবং গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্য তাদের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে, যার ফলে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। অতীতে হেলিকপ্টার গানশিপ দিয়ে বিমান হামলা চালানো হতো। [৮৩]

তেল আবিবের ডলফিনেরিয়াম নামী স্থানে ডলফিনেরিয়াম গণহত্যার একটি স্মারক, যেখানে রুশ ভাষায় নিহতদের নাম লেখা রয়েছে।

২০০১ সালের ১ জুন তেল আবিবের উপকূলীয় শহর ডলফিনেরিয়ামের একটি নৈশ নৃত্য ক্লাবে ইসলামিক জিহাদের একজন আত্মঘাতী হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়। এতে একুশ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের অধিকাংশ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল এবং মোট ১৩২ জন আহত হন। [৮৪] [৮৫] [৮৬] [৮৭] এই আক্রমণটি যুদ্ধবিরতি আলোচনার মার্কিন প্রচেষ্টাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধাগ্রস্ত করে।

১২ জুন একজন ফিলিস্তিনি স্নাইপারের গুলিতে গ্রিক অর্থোডক্স যাজক জর্জিয়োস চিবুক জাকিসের নিহত হওয়ার ঘটনায় পরবর্তীতে মারওয়ান আল বারগুসির সম্পৃক্ত থাকার কথা জানা যায়। [৮৮]

২০০১ সালে মোট ৪৬৯ জন ফিলিস্তিনি ও ১৯৯ জন ইসরায়েলি নিহত হন। ইন্তিফাদার প্রথম বছরের উপর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে:

ইসরায়েল ও অধিকৃত অঞ্চলে বেআইনি হত্যাকাণ্ড এবং আহত হওয়ার বেশিরভাগ ঘটনাই আইডিএফ কর্তৃক অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। বিশেষ করে আইডিএফ মার্কিন সরবরাহকৃত হেলিকপ্টার ব্যবহার করে শাস্তিমূলক রকেট হামলাও চালিয়েছে, যেখানে তাদের প্রাণনাশের কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। ইসরায়েল বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে এবং শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার লক্ষ্যবস্তুতে গুলি চালানোর জন্য হেলিকপ্টার গানশিপ ব্যবহার করেছে। ... হামাসইসলামি জিহাদ প্রায়শ ইসরায়েলের অভ্যন্তরে জনসাধারণের স্থানে বোমা হামলা করে, যাতে এলোমেলোভাবে বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিককে হত্যা অথবা পঙ্গু করা যায়। উভয় সংগঠনই শহীদদের জন্য একটি বিশেষ ধর্মমত পোষণ করে এবং প্রায়শ তারা আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ব্যবহার করে। [৬৫]

২০০১ সালের শেষের দিকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হামলা চালায়, যার মধ্যে সব্যারো রেস্তোরাঁর গণহত্যাও, যেখানে ১৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয় (৭ জন শিশুসহ); [৮৯] [৯০] নাহারিয়া ট্রেন স্টেশনে আত্মঘাতী বোমা হামলা ও পারদেস হান্না বাসে বোমা হামলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। শেষের দুইটিতে ৩ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। [৯১] [৯২] [৯৩] এছাড়া বেন ইয়েহুদা রোড বোমা হামলায় ১১ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়, যার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ছিল। [৯৪] বছরের শেষে হাইফা বাসে ১৬টি আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছিল, যেখানে মোট ১৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছিল। [৯৫]

কারিন এ জাহাজ থেকে জব্দ করা সামরিক সরঞ্জাম।

২০০২ সালের জানুয়ারি আইডিএফ শায়েতেত ১৩ নৌ কমান্ডো ইরান থেকে গাজায় অস্ত্র বহনকারী মালবাহী জাহাজ কারিন এ-কে আটক করে, যার মধ্যে সরবরাহ কৃত সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। জানা যায় যে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা চোরাচালাটির সাথে জড়িত ছিলেন এবং ইসরায়েলিরা এর জন্যে ইয়াসির আরাফাতের দিকেও আঙুল তুলেছিল।

ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আত্মঘাতী বোমা হামলা ও ধারাবাহিক হামলার ঘটনা শুরু করে, যার অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ করে ছিল বলে ইসরায়েল অভিযোগ করেছিল। ৩ মার্চ একজন ফিলিস্তিনি স্নাইপার অফরার কাছে অবস্থিত একটি চেকপয়েন্টে [৯৬] এম১ কার্বাইন ব্যবহার করে ১০ জন ইসরায়েলি সৈন্য এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারীকে হত্যা করে এবং ৪ জনকে আহত করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর থেকে আক্রমণের হার বৃদ্ধি পায় এবং ২০০২ সালের মার্চ মাসে তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। [৯৭]

অসংখ্য গুলি ও গ্রেনেড হামলার পাশাপাশি এই মাসে ইসরায়েলে ১৫টি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়েছে; গড়ে প্রতি দুই দিনে একটি করে বোমা হামলা। হামলার উচ্চ হার ইসরায়েল জুড়ে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি করে এবং দেশজুড়ে দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটায়। ২০০২ সালের মার্চ মাস ইসরায়েলে "কালো মার্চ" নামে পরিচিতি লাভ করে। [৯৭] ১২ মার্চ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৩৯৭ নম্বর প্রস্তাব পাস হয়, যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে পুনর্ব্যক্ত করে এবং শান্তির জন্য একটি রোডম্যাপের ভিত্তি স্থাপন করে।

২৭ মার্চ নেতানিয়ার পার্ক হোটেলে পাসওবার উৎসব উদযাপনের সময় একটি আত্মঘাতী বোমা হামলার মাধ্যমে সহিংসতার ঢেউ ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে ৩০ জন নিহত হয় এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়। এই আক্রমণটি পাসওবার গণহত্যা নামে পরিচিতি লাভ করে। [৯৮] ২০০২ সালের মার্চে ফিলিস্তিনিদের হামলায় ১৩০ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। [৯৯] ২৮শে মার্চ আরব নেতারা–যাদের নির্বাচনী এলাকায় চলমান সংঘাতের সহিংসতা বিস্তারিতভাবে টেলিভিশনের কভারেজের আওতায় আসে–একটি বিস্তৃত আরব শান্তি উদ্যোগের সূচনা করেন, যা ইয়াসির আরাফাত কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েল কার্যত সেই উদ্যোগ উপেক্ষা করেছিল। [১০০] [১০১] [১০২]

২৯ মার্চ ইসরায়েল অপারেশন ডিফেন্সিভ শিল্ড শুরু করে, যা ৩ মে পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। এই অভিযানের মাধ্যমে আইডিএফ পশ্চিম তীরসহ অসংখ্য ফিলিস্তিনি শহরে ব্যাপক আক্রমণ চালায়। ইয়াসির আরাফাতকে তার রামাল্লাহ প্রাঙ্গণে অবরুদ্ধ করা রাখা হয়েছিল। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ১ মার্চ থেকে ৭ মে পর্যন্ত ইসরায়েলি আক্রমণে ৪৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,৪৪৭ জন আহত হয়েছেন। [১০৩] জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে ইসরায়েলকে গণহত্যার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে বেসামরিক জনগণের উপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের জন্য তাদের সমালোচনা করা হয়েছে। এই অভিযানের সময় ইসরায়েলি বাহিনী প্রায় ৪,২৫৮ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। [১০৪] অভিযানের সময় ইসরায়েলি হতাহতের সংখ্যা ছিল ৩০ জন এবং আহত হয়েছেন ১২৭ জন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এলাকা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এই অভিযানের সমাপ্তি ঘটে। [১০৩]

জেনিনের যুদ্ধ

[সম্পাদনা]
আইডিএফ ক্যাটারপিলার ডি৯

২ থেকে ১১ এপ্রিলের মধ্যে জেনিন শহরের ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরগুলি অবরোধ করা হয় এবং সেখানে ভয়াবহ লড়াই সংঘটিত হয়। অপারেশন ডিফেন্সিভ শিল্ডের সময় ইসরায়েল এই ক্যাম্পটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। কারণ ইসরায়েল বুঝতে পারে যে, এটি ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক ও পার্শ্ববর্তী ইস্রায়েলি শহর ও গ্রাম উভয়ের বিরুদ্ধে অসংখ্য সশস্ত্র হামলার জন্য একটি আঁতুড়ঘর হিসেবে কাজ করছে। [১০৫] জেনিন যুদ্ধ উভয় পক্ষের জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের নির্মূল করার জন্য বর্ম ও আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টার দ্বারা সমর্থিত ইসরায়েলি পদাতিক বাহিনী যুদ্ধে অংশ নিলে ভয়াবহ শহুরে যুদ্ধ দেখা দেয়। ফিলিস্তিনিদের গোপনে পেঁতে রাখা ফাঁদ পরিষ্কার করা, বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটানো এবং ভবন ও বন্দুকের আস্তানা ধ্বংস করতে ইসরায়েলী সেনাবাহিনী এক ডজন ক্যাটারপিলার ডি৯ সাঁজোয়া বুলডোজার ব্যবহার করে। অবশেষে যুদ্ধে আইডিএফ জয়লাভ করে। আউডিএফ ক্যাটারপিলার ডি৯ বুলডোজারগুলি ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের আক্রমণ ঠেকিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অপ্রতিরোধ্য প্রমাণিত হয়। [১০৬]

শরণার্থী শিবিরসমূহে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সময় ফিলিস্তিনি সূত্রগুলি অভিযোগ করেছিল যে, এই হামলায় শত শত মানুষের গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে বলেছিলেন যে, হামলায় প্রায় ৫০০ জন নিহত হয়েছেন। [১০৭] জেনিনের যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে শত শত ফিলিস্তিনি নিহতের অনুমান করেছিলেন; কিন্তু পরে বলেছিলেন যে, তারা ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন [১০৮] পরবর্তীতে ইসরায়েল জাতিসংঘকে নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক সর্বসম্মতভাবে চাওয়া প্রথম হামলার তদন্ত পরিচালনা করতে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তবুও জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদনে গণহত্যার দাবিটি খারিজ করতে সক্ষম বলে মনে করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, এতে প্রায় ৫২ জন মারা গেছে এবং উভয় পক্ষকেই ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকিতে ফেলার জন্য সমালোচনা করা হয়। [১০৮] [১০৯] নিজস্ব তদন্তের ভিত্তিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল [১১০] এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ [১১১] অভিযোগ করেছিল যে, জেনিনে কিছু আইডিএফ সৈন্য যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করেছে। কিন্তু উভয় নিশ্চিত করেছে যে, আইডিএফ কর্তৃক সেখানে কোনো গণহত্যা সংঘটিত হয়নি। উভয় মানবাধিকার সংস্থাই আনুষ্ঠানিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিল। আইডিএফ তাদের উপর আরোপিত অভিযোগের বিরোধিতা করেছে।

যুদ্ধের পর আইডিএফ এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষসহ বেশিরভাগ সূত্র ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৫২-৫৬ বলে উল্লেখ করেছে। [১১২] হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৫২ জন ফিলিস্তিনি নিহতের তথ্য নথিভুক্ত করেছে এবং দাবি করেছে যে, এতে কমপক্ষে ২৭ জন যোদ্ধা এবং ২২ জন বেসামরিক নাগরিক ছিল। এতে আরও তিন জন ফিলিস্তিনিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যাদের যোদ্ধা বা বেসামরিক নাগরিক হিসেবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি, [১১৩] যেখানে আইডিএফ জানিয়েছে যে, এতে ৪৮ জন যোদ্ধা এবং ৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। [১১৪] হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, এতে ১৪০টি ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। [১১৫] আইডিএফ জানিয়েছে যে, যুদ্ধের সময় ২৩ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত এবং ৭৫ জন আহত হয়েছে। [১১১] [১১৬]

বেথলেহেমে অবরোধ

[সম্পাদনা]

২ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত বেথলেহেমের গির্জা অফ দ্য নেটিভিটিতে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক, যোদ্ধা ও এর পুরোহিতরা যখন গির্জাটির ভেতরে অবস্থান নেন, তখন আইডিএফের সৈন্যরা গির্জাটি ঘিরে ফেলে এবং অবরোধের সময়ে আইডিএফ স্নাইপাররা গির্জার ভিতরে ৮ ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করে এবং ৪০ জনেরও বেশি লোককে আহত করে। আইডিএফ যাদের যোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল, তাদের ইউরোপে নির্বাসন করার শর্তে এই অচলাবস্থার সমাধান করা হয়। অবশেষে আইডিএফ সৈন্যরা ভেতরে অবস্থানরত যোদ্ধাদের সাথে চলা দীর্ঘ ৩৮ দিনের অবরোধের অবসান ঘটায়। [১১৭] [১১৮]

২০০৩ সালে হাইফায় একটি বাসে বোমা হামলার পরের দৃশ্য।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ইয়াসির আরাফাত আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডকে ২০,০০০ ডলার দিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুতই আরাফাতের বাইরে একজন নতুন স্বাধীন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের দাবি জানায়। ২০০৩ সালের ১৩ মার্চ মার্কিন চাপের মুখে আরাফাত মাহমুদ আব্বাসকে ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন।

আব্বাসের নিয়োগের পরে মার্কিন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পরিকল্পিত "রোডম্যাপ ফর পিস" পরিকল্পনাকে সামনে নিয়ে আসে। এটি আন্তর্জাতিক চতুষ্টয়ের (যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়াজাতিসংঘ) একটি সম্মিলিত উদ্যোগ ছিল, যার লক্ষ্য ছিল শান্তি আলোচনার মাধ্যমে ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের অবসান ঘটানো। এই পরিকল্পনা অনুসারে, ফিলিস্তিনের সমস্ত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও দল বিলুপ্তকরণ, ইসরায়েলের নতুন বসতি স্থাপন বন্ধ করা এবং একটি গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার কথা প্রস্তাবিত হয়।

পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গেরিলা ও আত্মঘাতী বোমা হামলা বন্ধ করা, অবৈধ অস্ত্র জব্দ করা এবং এর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বলা হয়। তবে আব্বাস সরাসরি এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক বা অক্ষম ছিলেন। কারণ এর ফলে গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারত। তাই তিনি সকল সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির চেষ্টা করেছিলেন এবং তাদের ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

২০ শে মে ইসরায়েলি নৌ কমান্ডোরা লেবানন থেকে গাজা উপত্যকায় যাওয়ার পথে আবু হাসান নামে আরেকটি জাহাজকে আটক করে। এটি রকেট, অস্ত্র ও গোলাবারুদে ভর্তি ছিল। জাহাজের আটজন ক্রু সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যার মধ্যে একজন হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ সদস্যও ছিলেন।

২০০৩ সালের ২৯ জুন ফাতাহ, হামাসইসলামিক জিহাদ একতরফাভাবে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, যাতে তিন মাসের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমস্ত আক্রমণ বন্ধ এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। [১১৯] তাই পরের মাসে সহিংসতা কিছুটা কমে আসে; কিন্তু যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি অভিযানের পাশাপাশি ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের উপর আত্মঘাতী বোমা হামলা অব্যাহত থাকে।

নাবলুসের কাছে আসকারে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া কর্মী বাহক (এপিসি) নিয়ে আইডিএফের অভিযানের সময় বন্দুকযুদ্ধে চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়, যাদের মধ্যে ৩ জন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ছিলেন। যোদ্ধাদের একজনের হাতে একজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়। কাছাকাছি ফিলিস্তিনিরা দাবি করেছে যে, ফিলিস্তিনি শ্রমিকদের ছদ্মবেশে ইসরায়েলি পুলিশের একটি দল হেবরনের একটি মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় আব্দুল্লাহ কাওয়াসামাহের উপর গুলি চালায়। [১২০] অভিযান পরিচালনাকারী ইসরায়েলের সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ ইউনিট ইয়ামাম জানিয়েছিলে যে, কাওয়াসামাহকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করার সময় তাদের উপর গুলি চালানো হয়েছিল।

১৯ আগস্ট হামাস জেরুজালেমে একটি জনাকীর্ণ ও পুরনো বাসে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায়, যাতে ৭ জন শিশুসহ ২৩ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। হামাস দাবি করেছিল যে, এটি সপ্তাহের শুরুতে পাঁচজন ফিলিস্তিনিকে (হামাস নেতা আব্দুল্লাহ কাওয়াসামাসহ) হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়েছে। মার্কিনইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলি বাস বোমা হামলাকে নীরবতা ভেঙে ফেলা ও যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটানো হিসাবে উল্লেখ করে।

হামাস কর্তৃক বাসে হামলার পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীকে হেবরন এবং গাজা উপত্যকার সমস্ত হামাস নেতাদের হত্যা বা বন্দী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বাসটিতে আত্মঘাতী বোমা হামলা পরিকল্পনাকারীদের সকলকে ধরা অথবা হত্যা করা হয়েছিল এবং হেবরনে কেন্দ্রীয় হামাস নেতৃত্ব আইডিএফ দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নাবলুস, জেনিন এবং তুলকারেমে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়েছিল এবং নাবলুসের লকডাউন ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল। নাজলেত ইসায় ইসরায়েলি বেসামরিক প্রশাসনের বুলডোজার ৬০টিরও বেশি দোকান ধ্বংস করে দেয়। ইসরায়েলি বেসামরিক প্রশাসন ব্যাখ্যা করেছিল যে, দোকানগুলি ভেঙে ফেলার কারণ সেগুলি অনুমতি ছাড়াই নির্মিত হয়েছিল। ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের সামরিক কারফিউ এবং সম্পত্তি ধ্বংস করাকে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত শাস্তি হিসেবে বিবেচনা করে। [১২১]

পশ্চিম তীরের ইসরায়েলী কাঁটাতার বেড়ার প্রাথমিক নির্মাণ; ২০০৩।

আরাফাতের অধীনে কার্যকরভাবে শাসন করতে না পেরে মাহমুদ আব্বাস ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পদত্যাগ করেন। তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে আহমেদ কুরাই (আবু আলা) নিযুক্ত হন। ইসরায়েলি সরকার সংঘাতের আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশা ছেড়ে দেয় এবং পশ্চিম তীরের ইসরায়েলী বেড়া নির্মাণ শুরু করে, যা ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় থেকে ইসরায়েলীদের শারীরিকভাবে পৃথক করার একতরফা নীতি অনুসরণ করে নির্মিত হয়। ইসরায়েল দাবি করে যে, ফিলিস্তিনি আক্রমণকারীদের ইসরায়েলি শহরগুলিতে প্রবেশ ঠেকাতে এই বাধাটি প্রয়োজনীয়। ফিলিস্তিনিরা দাবি করে যে, এই বাধা ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়গুলিকে একে অপরের থেকে পৃথক করে এবং নির্মাণ পরিকল্পনাটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের একটি বাস্তব অধিগ্রহণ হিসেবে গণ্য হবে।

৪ অক্টোবর হাইফার ম্যাক্সিম রেস্তোরাঁয় সংঘটিত একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২১ জন ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল দাবি করে যে, সিরিয়া ও ইরান ইসলামি জিহাদহিজবুল্লাহকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে এবং তারা সন্ত্রাসী হামলার জন্য দায়ী। ম্যাক্সিম হত্যাকাণ্ডের পরের দিন আইএএফের যুদ্ধবিমানগুলি সিরিয়ার আইন সাহেবে অবস্থিত একটি কথিত প্রাক্তন ফিলিস্তিনি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে বোমা হামলা চালায়, যা ১৯৮০ সাল থেকেই অধিকালশ সময়ই পরিত্যক্ত ছিল। ঘটনাস্থলে মজুত থাকা গোলাবারুদ ধ্বংস করা হয় এবং একজন বেসামরিক প্রহরী আহত হন।

গাজা থেকে কাসসাম রকেট এবং মর্টার শেল দিয়ে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের উপর বারবার গোলাবর্ষণের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী মূলত রাফায় অভিযান চালায়। ইসরায়েল জানায় যে, এ অভিযানটি মিশর থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ, সিগারেট, বাড়ি-গাড়ির যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক পণ্য, বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা, মাদকও কাপড় সংগ্রহের জন্য ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ব্যবহৃত ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গগুলি অনুসন্ধান এবং ধ্বংস করার জন্য পরিচালিত হয়েছিল। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৪ সালের মে মাসের মধ্যে মিশর ও গাজা ভূখণ্ডের মধ্যে সংযোগকারী নব্বইটি টানেল খুঁজে পাওয়া যায় এবং ধ্বংস করা হয়। রাফায় অভিযানের ফলে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। তবে ইসরায়েলের সরকারী দপ্তর থেকে জানানো হয় যে, তাদের বাড়িগুলি হামাস ও অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের যোদ্ধারা দখল করেছিল এবং আইডিএফ বাহিনীর সাথে যুদ্ধের সময় সেগুলি ধ্বংস করা হয়েছিল। ইসরায়েলি হামলার ফলে এসব বাড়িঘরের অধিকাংশই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে এবং পরে সেগুলি ধ্বংস হয়ে যায়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, শহরে একটি বৃহৎ বাফার জোন তৈরির জন্য ১,৫০০ টিরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছিল, যার অনেকগুলি সামরিক প্রয়োজনের কারণে তৈরি করা হয়েছিল। এই ধ্বংসযজ্ঞের ফলে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। [১২২]

২০০৪ সালের ২রা ফেব্রুয়ারী ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন গাজা উপত্যকা থেকে সমস্ত ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। তবে ইসরায়েলি বিরোধী দল তার ঘোষণাকে "মিডিয়ারোচক কথা" বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলি শ্রমিক দল জানিয়েছিল যে, তারা এই ধরনের পদক্ষেপকে সমর্থন করবে। শ্যারনের ডানপন্থী জোটের অংশীদার ন্যাশনাল রিলিজিয়াস পার্টি এবং ন্যাশনাল ইউনিয়ন এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে এবং এটি বাস্তবায়িত হলে উভয় দল সরকার ছেড়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। শান্তির অগ্রদূত এবং অসলো চুক্তি ও জেনেভা চুক্তির স্থপতি ইয়োসি বেইলিনও প্রস্তাবিত প্রত্যাহার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তিনি দাবি করেন যে, শান্তি চুক্তি ছাড়া গাজা উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করলে সন্ত্রাসবাদের প্রতিদান মিলবে।

এরিয়েল শ্যারনের প্রত্যাহার পরিকল্পনা ঘোষণার পর এবং ইরেজ সীমান্তপারাপার ও আশদোদ সমুদ্রবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলার (১০ জন নিহত) প্রতিক্রিয়া হিসেবে আইডিএফ গাজা উপত্যকায় (প্রধানত রাফা এবং গাজার আশেপাশের শরণার্থী শিবিরগুলিতে) ধারাবাহিক সাঁজোয়া অভিযান শুরু করে, যার ফলে প্রায় ৭০ জন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়। ২০০৪ সালের ২২ মার্চ একটি ইসরায়েলি হেলিকপ্টার গানশিপের হামলায় হামাস নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন, তার দুই দেহরক্ষী এবং নয়জন পথচারী নিহত হন । ১৭ এপ্রিল হামাসের আত্মঘাতী বোমা হামলার বেশ কয়েকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা এবং একজন ইসরায়েলি পুলিশ সদস্যকে হত্যা করার একটি সফল প্রচেষ্টার পর ইয়াসিনের উত্তরসূরি আব্দুল আজিজ আল-রান্তিসি তার একজন দেহরক্ষী ও ছেলে মোহাম্মদসহ প্রায় একইভাবে নিহত হন।

২০০৪ সালের মে মাসে ইরেজ ও কারনি সীমান্তপথের মতো কয়েকটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার বেশ কয়েকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর গাজা উপত্যকায় লড়াই তীব্র আকার ধারণ করে। ২রা মে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা একজন গর্ভবতী মহিলা ও তার চার কন্যাকে আক্রমণ করে গুলি করে হত্যা করেছিল মর্মে সংবাদ প্রচারিত হয়। [১২৩] [১২৪] [১২৫] হামলার পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একে জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করে এবং বলে যে, ইসরায়েল এবং অধিকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সমস্ত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র দল-গোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হচ্ছে। [১২৬] এছাড়াও ১১ এবং ১২ মে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুটি আইডিএফ এম-১১৩ এপিসি ধ্বংস করে; ১৩ জন সৈন্যকে হত্যা করে এবং তাদের দেহ বিকৃত করে। আইডিএফ মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য দুটি অভিযানন চালায়, যার ফলে ২০-৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয় এবং গাজার জাইতুন পাড়া ও দক্ষিণ-পশ্চিম রাফায় স্থাপনাগুলির ব্যাপক ক্ষতি হয়।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় একটি চোরাচালান সুড়ঙ্গ আবিষ্কার করেছে; মে, ২০০৪।

কিছুদিন পর ১৮ মে আইডিএফ অপারেশন রেইনবো নামে একটি নতুন অভিযান শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল রাফাহর সশস্ত্র যোদ্ধাদের অবকাঠামোগুলিতে আঘাত হানা, চোরাচালানকারী টানেলগুলি ধ্বংস করা এবং এসএ-৭ ক্ষেপণাস্ত্র ও উন্নত ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী অস্ত্রের চালান বন্ধ করা। অভিযানে মোট ৪১ জন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা এবং ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এতে প্রায় ৪৫-৫৬টি ফিলিস্তিনি স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলি হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের তাদের অবস্থানের দিকে এগিয়ে আসার সময় লক্ষ্য করে গুলি চালায়, যার ফলে ১০ জন নিহত হয়। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলিদের পিছু হটার সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছিল। এই ঘটনার ফলে বিশ্বব্যাপী এই অভিযানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়।

২৯শে সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি শহর সেদেরোতে একটি কাসসাম রকেট আঘাত হানার পর এবং হামলায় দুই ইসরায়েলি শিশু নিহত হওয়ার পর ইস্রায়েলী প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তরে অপারেশন ডেজ অফ পেনিটেন্স শুরু করে। এই অভিযানের ঘোষিত লক্ষ্য ছিল সেদেরোত থেকে কাসসাম রকেটের হুমকি দূর করা এবং হামাস যোদ্ধাদের হত্যা করা। ১৬ অক্টোবর অভিযানটি শেষ হয়, যা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু ঘটায়, যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জনের বয়স ছিল ষোল বছরের কম। [১২৭] তেরো বছর বয়সী ইমান দারবিশ আল হামসকে আইডিএফ হত্যা করে, যখন সে একটি বন্ধ সামরিক এলাকায় প্রবেশ করে। কমান্ডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে, সে মৃত্যু যাচাই করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তার মৃতদেহের দিকে তার স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি করেছিল। যদিও আইডিএফ এই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত কমান্ডারকে সমস্ত অন্যায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। [১২৮] [১২৯] সম্প্রতি পূর্ব জেরুজালেমের একটি জেলা আদালত দাবিটিকে মানহানিকর বলে প্রমাণিত করে এবং এটি প্রতিবেদন করার কাজে নিযুক্ত সাংবাদিক ও টিভি কোম্পানিকে ৩০০,০০০ শিলিং প্রদানের রায় দেয়। তারা আইনি ফি হিসেবে অতিরিক্ত ৮০,০০০ শিলিং প্রদান করে এবং সাংবাদিক ও সেই টেলিভিশন কোম্পানিকে একটি সংশোধনী বার্তা প্রচার করতে বাধ্য করা হয়। [১৩০] ফিলিস্তিনি চিকিৎসকদের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ৬২ জন যোদ্ধা এবং ৪২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। [১৩১] হারেৎজ কর্তৃক সম্পাদিত একটি গণনা অনুসারে, এতে ৮৭ জন যোদ্ধা ও ৪২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছিল। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরগুলিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আইডিএফ ঘোষণা করেছে যে, অভিযানের সময় কমপক্ষে ১২টি কাসসাম রকেট হামলা ব্যর্থ করা হয়েছে এবং অনেক যোদ্ধা আহত হয়েছে।

২১শে অক্টোবর ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামাসের একজন সিনিয়র বোমা নির্মাতা ও কাসসাম রকেটের উদ্ভাবক আদনান আল-গৌলকে হত্যা করে।

১১ নভেম্বর ইয়াসির আরাফাত প্যারিসে মারা যান।

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র দলগুলির মধ্যে হুদনা অর্জন এবং ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করতে হামাস নেতৃত্বকে রাজি করানোর জন্য মাহমুদ আব্বাসের সিরিয়া সফরের মধ্য দিয়ে গাজায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। হামাস সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং এটির সূচনা হিসেবে নাহাল ওজের কাছে অবস্থিত একটি খোলা মাঠে অসংখ্য কাসসাম রকেট নিক্ষেপ করে এবং কাফার দারোমে একটি কিন্ডার-গার্টেনে ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।

৯ ডিসেম্বর রাফাহ ও মিশর সীমান্তে ৫ জন ফিলিস্তিনি অস্ত্র পাচারকারী নিহত এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিনই পরে জামাল আবু সামহাদানা এবং তার দুইজন দেহরক্ষী ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত হন। এর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রথম ইসরায়েলি বিমান হামলা চলাকালীন দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ এবং খান ইউনুসের মধ্যে ভ্রমণের সময় একটি মনুষ্যবিহীন ইসরায়েলি ড্রোন বিমান আবু সামাহাদনার গাড়ি লক্ষ্য করে একটি ভারী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এটি ছিল ইসরায়েল কর্তৃক সাম্হাদানার প্রাণনাশের চতুর্থ প্রচেষ্টা। সামহাদানা হলেন জনপ্রিয় প্রতিরোধ কমিটির দুই নেতার একজন ও চোরাচালান সুড়ঙ্গ পরিচালনাকারী প্রধান শক্তিগুলির মধ্যে একটি। গাজায় মার্কিন কূটনৈতিক বহরের বিরুদ্ধে একটি বিস্ফোরণের জন্য সামহাদানাকে দায়ী বলে মনে করা হয়েছিল, যাতে তিনজন মার্কিন নাগরিক নিহত হয়।

১০ ডিসেম্বর গাজা ভূখণ্ডের নেভে ডেকালিম বসতিতে হামাসের মর্টার গুলি নিক্ষেপ এবং চার ইসরায়েলিকে (একটি ৮ বছর বয়সী ছেলেসহ) মর্মান্তিকভাবে আহত করার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি সৈন্যরা খান ইউনুসের শরণার্থী শিবিরে (মর্টারের উৎপত্তিস্থলে) গুলি চালায় এবং সাত বছর বয়সী একটি মেয়েকে হত্যা করে। আইডিএফের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, সেনারা খান ইউনুসে গুলি চালিয়েছে। কিন্তু গুলি চালানোর কারণ হিসেবে বলেছিল যে, সেনাবাহিনী হামাসের মর্টার চালকদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। [ তথ্যসূত্র প্রয়োজন ]

১২ ডিসেম্বর ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর সংঘটিত সবচেয়ে বড় হামলায় পাঁচজন ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং দশজন আহত হয়। রাফাহর কাছে গাজার সাথে মিশরীয় সীমান্তে অবস্থিত ইস্রায়েলি সামরিক-নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত পারাপারের নীচে একটি সুড়ঙ্গে প্রায় ১.৫ টন বিস্ফোরক বিস্ফোরিত হয়, যার ফলে বেশ কয়েকটি কাঠামো ধসে পড়ে এবং অন্যান্য অনেক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণে ফাঁড়ির কিছু অংশ ধ্বংস হয়ে যায় এবং তিন সৈন্য নিহত হয়। এরপর দুইজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ফাঁড়িতে প্রবেশ করে এবং গুলি চালিয়ে আরও দুই ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করে। ধারণা করা হয় যে, হামাস ও ফাতাহের একটি নতুন উপদল "ফাতাহ হকস" অত্যন্ত সুসংগঠিত ও সমন্বিত হয়ে এই হামলাটি চালিয়েছিল। আবু মাজাদ নামের একজন মুখপাত্র ফাতাহ হকসের নামে হামলার দায় স্বীকার করে দাবি করে যে, এটি ইয়াসির আরাফাতের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে করা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছিল যে, তাকে ইসরায়েল বিষপ্রয়োগ করেছিল। [১৩২]

৯ জানুয়ারী ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে মাহমুদ আব্বাস (আবু মাজেন) ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তার দলীয় কর্মপন্থা ছিল ইসরায়েলের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা চালানো এবং ফিলিস্তিনি লক্ষ্য অর্জনের জন্য অহিংসার পথ গ্রহণ করা। কর্মপন্থা হিসেবে যদিও আব্বাস ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং তিনি তাদের ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ থেকে সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন; তবে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে সার্বিক নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে তিনি ছিলেন না।

তবে গাজা উপত্যকায় সহিংসতা অব্যাহত ছিল এবং এরিয়েল শ্যারন ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমস্ত কূটনৈতিক ও নিরাপত্তামূলক যোগাযোগ স্থগিত করেছিলেন। তার মুখপাত্র আসাফ শরিফ ঘোষণা করেছিলেন যে, ইসরায়েল আজ সমস্ত আন্তর্জাতিক নেতাকে জানিয়েছে যে, সন্ত্রাস বন্ধে প্রকৃত প্রচেষ্টা না করা পর্যন্ত আব্বাসের সাথে তাদের কোনে বৈঠক হবে না। মাহমুদ আব্বাস নির্বাচিত হওয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এবং তার শপথ গ্রহণের আগের দিন তার সাথে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফিলিস্তিনি আলোচক সায়েব এরাকাত এই খবর নিশ্চিত করে ঘোষণা করেন যে, যখন মাহমুদ আব্বাস এখনও শপথ নেননি, তাই তাকে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে না। [১৩৩] [১৩৪]

গাজা উপত্যকা, গাজা সীমান্ত ও সীমিত ইসরায়েলী মৎস্য শিকার অঞ্চলের মানচিত্র।

আন্তর্জাতিক চাপ ও গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি ব্যাপক সামরিক অভিযানের হুমকির পর আব্বাস ইসরায়েলী অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের উপর মর্টার শেলিংকাসসাম রকেটের হামলা প্রতিরোধে উত্তর গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি পুলিশ মোতায়েন করার নির্দেশ দেন। যদিও ইসরায়েলিদের উপর আক্রমণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়নি, তবে তা তীব্রভাবে হ্রাস পায়। ২০০৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী ২০০৫ সালের শার্ম আল-শেখ শীর্ষ সম্মেলনে শ্যারন ও আব্বাস ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি সাময়িক পারস্পরিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। শার্ম আল-শেখে জর্ডানমিশরসহ চার-পক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলনে তারা করমর্দন করেন। তবে, হামাস ও ইসলামি জিহাদ জানিয়েছে যে, তাদের সদস্যদের জন্য এই যুদ্ধবিরতি বাধ্যতামূলক নয়। শান্তিরর জন্য নির্ধারিত রোডম্যাপে এগিয়ে যাওয়ার আগে ইসরায়েল সশস্ত্র অবকাঠামো ধ্বংস করার দাবি প্রত্যাহার করেনি। [১৩৫]

অনেকেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর হতে পারে। অগ্রগতি ধীরে ধীরে করতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যে, উভয়পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি ও নীরবতা বজায় রাখা হচ্ছে। ৯–১০ ফেব্রুয়ারি রাতে ২৫–৫০টি কাসাম রকেট ও মর্টার শেলের একটি আক্রমণ নেভে ডেকালিম বসতিতে আঘাত হানে এবং সেই দিন দুপুরে আরেকটি আক্রমণ ইসরায়েলে আঘাত হানে। হামাস জানিয়েছে যে, এটি ইসরায়েলি বসতি স্থাপকারীদের এক হামলার প্রতিশোধ হিসেবে করা হয়েছে, যেখানে একজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল। [১৩৬] মর্টার হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে আব্বাস ভবিষ্যতে এই ধরনের আক্রমণ বন্ধ করার জন্য ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেন এবং তিনি ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থার জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদেরও বরখাস্ত করেন। ১০ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী নাবলুসের একজন ফিলিস্তিনি বাসিন্দা মাহারান ওমর শুকাত আবু হামিসকে গ্রেপ্তার করে, যিনি জেরুজালেমের ফ্রেঞ্চ হিলে বাসে আত্মঘাতী হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

২০০৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী আব্বাস ইসলামি জিহাদহামাসের নেতাদের সাথে আলোচনায় বসেছিলেন। আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল, তারা যেন আব্বাসের সাথে সহমত হয়ে তার পিছনে দাঁড়ায় এবং যুদ্ধবিরতিকে সম্মান করে। হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা ইসমাইল হানিয়াহ বলেছেন যে, শান্তির বিষয়ে তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে এবং যেকোনো নতুন লঙ্ঘন বা আগ্রাসনের জন্য একমাত্র ইসরাইল দায়ী থাকবে।

জুনের মাঝামাঝি সময়ে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি সদেরোত শহরের উপর উন্নত কাসসাম রকেট দিয়ে তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু করে। ফিলিস্তিনিদের হামলায় একটি কাসসামের হামলায় ২ জন ফিলিস্তিনি ও ১ জন চীনা নাগরিক নিহত হয় এবং ২ জন ইসরায়েলি নিহত হয়। এসব আক্রমণ ইসরায়েলি জনসাধারণের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন হ্রাস করে। জুলাই মাসে ইসরায়েলের উপর ইসলামি জিহাদ এবং আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। ১২ জুলাই উপকূলীয় শহর নেতানিয়ায় একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়। ১৪ জুলাই হামাস গাজা উপত্যকার ভেতরে এবং বাইরে অবৈধ ইস্রায়েলি বসতিগুলিতে কয়েক ডজন কাসসাম রকেট ছোঁড়ে, যার ফলে একজন ইসরায়েলি মহিলা নিহত হয়। ১৫ জুলাই ইসরায়েল তার পরিকল্পিত হত্যা নীতি পুনরায় শুরু করে এবং ৭ জন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করে। তারা চারটি হামাস স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। ইসরায়েলি বসতিগুলির উপর রকেট হামলা অব্যাহত রাখা এবং হামাস যোদ্ধা ও ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন লড়াই ২০০৫ সালের শার্ম আল-শেখ শীর্ষ সম্মেলনে সম্মত যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফেলার হুমকি সৃষ্টি করেছিল। গোলাবর্ষণের জবাবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীও গাজা উপত্যকার চারপাশে সাঁজোয়া বাহিনী গড়ে তুলতে শুরু করে।

দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সমাপ্তি

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সমাপ্তির তারিখের বিষয়টি এখনো বিতর্কিত। কারণ এর সমাপ্তির জন্যে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা ঘটেনি। [১৩৭] তবে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি হল, এটি ২০০৫ সালে শেষ হয়েছিল। যদিও কিছু সূত্রে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত ঘটনা ও পরিসংখ্যান এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

  • সেভার প্লকারের মতো কিছু ভাষ্যকার [১৩৮] মনে করেন যে, ইন্তিফাদা ২০০৪ সালের শেষের দিকে শেষ হয়েছিল। ২০০৪ সালের নভেম্বরে ইয়াসির আরাফাতের অসুস্থতা ও মৃত্যুর পরে ফিলিস্তিনিরা তাদের পূর্ববর্তী তিন দশকের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নেতাকে হারায়। এর পরে ইন্তিফাদা তার গতি হারিয়ে ফেলে এবং বিভিন্ন ফিলিস্তিনি উপদল (বিশেষ করে ফাতাহ-হামাস সংঘাত) অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। এদের পাশাপাশি ফাতাহর অভ্যন্তরেও দ্বন্দ্ব ও সংঘাত সৃষ্টি হয়।
  • রামজি বারুদের মত অনেক মনে করেন যে, ২০০৪ সালের জুনে এর সমাপ্তি ঘোষিত হয় এবং ২০০৫ সালের আগস্টে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের একতরফা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ইন্তিফাদার সমাপ্তি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। যদিও এরপর কিছু বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ ও লড়াই অব্যাহত ছিল। । [১৩৯]
  • কেউ কেউ ২০০৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারীকে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি বলে মনে করেন। যদিও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ বা ক্ষমতার বাইরে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা তখনও অব্যাহত ছিল। [১৪০] [১৪১] সেদিন আব্বাস ও শ্যারন শার্ম আল-শেখ শীর্ষক সম্মেলনে মিলিত হন, যেখানে তারা একে অপরের উপর আক্রমণ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। [১৪২] [১৪৩] এছাড়াও শ্যারন ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিতে এবং পশ্চিম তীরের শহরগুলি থেকে সরে যেতে সম্মত হন। হামাসফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ এই চুক্তির পক্ষ হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল এবং উভয়ই যুক্তি দিয়েছিল যে, যুদ্ধবিরতি কেবল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অবস্থান। ইসরায়েল কখনো তা মেনে চলবে না। [১৪২] [১৪৪] পাঁচদিন পর আব্বাস দুটি ভিন্নমতাবলম্বী সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সাথে এই চুক্তিতে পৌঁছান যে, ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে প্রতিশোধ নেওয়া হবে। [১৪৫]

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ঠিক কখন শেষ হয় তা নির্ধারণে যে সমস্যাগুলি ছিল, শ্যাচটার তার সমাধান করেছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, আত্মঘাতী বোমা হামলাই ছিল এর সর্বোত্তম মানদণ্ড। কারণ এটি সহিংসতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল এবং এই মানদণ্ড অনুসারে ২০০৫ সালে ইন্তিফাদার সমাপ্তি ঘটে। কারণ এরপর থেকে আর কোনো আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেনি। [১৩৭]

বিদ্রোহের সূত্রপাত

[সম্পাদনা]

২০০০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হয়, যখন তৎকালীন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী পদের নির্বাচন উপলক্ষে লিকুদ দলের প্রার্থী এরিয়েল শ্যারন ১,০০০ জনেরও বেশি নিরাপত্তারক্ষীর সাথে টেম্পল মাউন্ট বা আল-হারাম আল-শরীফ পরিদর্শন করেন। কারণ এই এলাকাটি ইহুদি ও মুসলিম উভয় ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কাছেই পবিত্র স্থান হিসেবে গণ্য হয়। এরিয়েল শ্যারন সেদিন তার ভাষণে বলেছিলেন, টেম্পল মাউন্ট এখন আমাদের হাতে এবং ভবিষ্যতে তা আমাদের হাতেই থাকবে। এটি ইহুদি ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্থান এবং টেম্পল মাউন্ট পরিদর্শন করা প্রতিটি ইহুদির ধর্মীয় অধিকার। [১৪৬]

তার এই সফরকে ফিলিস্তিনিরা অত্যন্ত উস্কানিমূলক হিসেবে দেখেছিল। প্রতিবাদস্বরূপ তারা পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুঁড়ে মারতে থাকে এবং সম্মিলিত বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ফিলিস্তিনিদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। [১৪৭] [১৪৮] [১৪৯] [১৫০] ঘটনাস্থলে একপর্যায়ে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মাঝে তীব্র দাঙ্গা শুরু হয়, যার ফলে ইসরায়েলি বাহিনী এবং বিক্ষোভকারী জনতার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে, ইন্তিফাদা শুরু হয়েছিল এর পরের দিন ২৯শে সেপ্টেম্বর শুক্রবারে। সেদিন মুসলিমদের সাপ্তাহিক প্রার্থনার দিন ছিল এবং তাকে ঘিরে ব্যাপক ইসরায়েলি পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি শুরু হয়েছিল। একপর্যায়ে তা বড় ধরনের সংঘর্ষের রূপ নেয় এবং এতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। [১৫১] [১৫২] [১৫৩]

মিচেল রিপোর্ট

[সম্পাদনা]

শার্ম আল-শেখ তথ্য অনুসন্ধান কমিটি (একটি তদন্ত কমিটি, যা শান্তি প্রক্রিয়া ভেঙে পড়ার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য গঠিত হয়েছিল এবং এর নেতৃত্বে ছিলেন জর্জ জে. মিচেল) ২০০১ সালের মে মাসে নিজেদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। মিচেলের প্রতিবেদনে ইসরায়েল সরকার দাবি করেছিল যে: [১৫৪]

সহিংসতার তাৎক্ষণিক অনুঘটক ছিল ২০০০ সালের ২৫ জুলাই ক্যাম্প ডেভিড আলোচনার ভাঙ্গন এবং তার এই অচলাবস্থার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রশংসা। এই দৃষ্টিকোণ থেকে যে, ফিলিস্তিনি সহিংসতা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিকল্পিত ছিল এবং এর একমাত্র লক্ষ্য ছিল কূটনৈতিক উদ্যোগ পুনরুদ্ধারের উপায় হিসেবে ফিলিস্তিনিদের উসকানি দেওয়া এবং হতাহতের ঘটনা ঘটানো।

সেই একই প্রতিবেদন অনুসারে ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা ইন্তিফাদার পরিকল্পিত ঘটনার কথা অস্বীকার করেন এবং এটি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, ক্যাম্প ডেভিড আলোচনা ইসরায়েল তাদের শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের আলোচনার দিকে প্রসারিত করার একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে:

ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থার দৃষ্টিকোণে ইসরায়েলী বাহিনী বিক্ষোভ দমনে অযথা অতিরিক্ত ও বেআইনিভাবে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করেছে, যা পিএলও-এর মতে ফিলিস্তিনিদের জীবন ও নিরাপত্তার প্রতি কেবল ইসরায়েলী অবজ্ঞার প্রতিফলন ছিল। ৩০শে সেপ্টেম্বর গাজায় মুহাম্মদ আল-দুররাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার হৃদয়বিদারক দৃশ্যটি—যেখানে তিনি তার বাবার পেছনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন—ফিলিস্তিনিদের এই বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে যে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেছে।

মিচেল রিপোর্টের উপসংহার হলো:

শ্যারনের সফর আল-আকসা ইন্তিফাদা সৃষ্টি করেনি। কিন্তু এটি খুব একটা সময়োপযোগী ছিল না এবং এর উস্কানিমূলক প্রভাব আগে থেকেই বোঝা উচিত ছিল। যারা এই সফর নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা অবশ্যই এটি আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন।

এবং এছাড়াও:

আমাদের কাছে এমন কোনো ভিত্তি নেই, যার মাধ্যমে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, প্রথম সুযোগেই সহিংসতা শুরু করার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত কোনো পরিকল্পনা করেছিল অথবা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে, ইসরায়েল সরকার মারাত্মক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য পূর্বেই ইচ্ছাকৃত কোনো পরিকল্পনা করেছিল।

বিশেষ কারণসমূহ

[সম্পাদনা]

ফিলিস্তিনিরা দাবি করেছেন যে, শ্যারনের এই সফর ছিল দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সূচনা; [১৫৫] আবার অন্যরা দাবি করেছেন যে ইয়াসির আরাফাত বিদ্রোহের পূর্বপরিকল্পনা করেছিলেন। [১৫৬]

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটনের মতো অনেকে [১৫৭] বলেছেন যে, ২০০০ সালের জুলাই মাসে ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনে ব্যর্থ আলোচনার কারণে উভয় পক্ষে উত্তেজনা চরমে ছিল। তারা উল্লেখ করেছেন যে, ২৭শে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকেই ইসরায়েলি হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল, যার ফলে পরের দিন বিশৃঙ্খলা সৃষ্ট হয় এবং জেরেমি প্রেসম্যানের মতে, এটিই ইসরায়েলি প্রচলিত অভিমত এবং ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একই মতামত ব্যক্ত করেছিল। [১৫৮] [১৫৯] বেশিরভাগ মূলধারার সংবাদমাধ্যম মনে করে যে শ্যারনের সফরই ছিল দ্বিতীয় ইন্তিফাদার শুরুতে সৃষ্ট দাঙ্গার সূত্রপাতের স্ফুলিঙ্গ। [১৬০] [১৬১] [১৬২] [১৬৩] তার সফরের পর দাঙ্গা ও সংঘর্ষের প্রথম পাঁচ দিনে ইসরায়েলি পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী ৪৭ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে এবং ১৮৮৫ জনকে আহত করে। [১৬৪] এর বিপরীতে ফিলিস্তিনিরা ৫ জন ইসরায়েলিকে হত্যা করে। [১৬৫] [১৬৬]

ফিলিস্তিনিরা দ্বিতীয় ইন্তিফাদাকে জাতীয় মুক্তি এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসানের জন্য তাদের চলমান সংগ্রামের অংশ হিসেবে দেখে, [১৬৭] যেখানে অনেক ইসরায়েলি এটিকে তৎকালীন ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত কর্তৃক প্ররোচিত ও পূর্বপরিকল্পিত ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের একটি তরঙ্গ বলে মনে করে। [১৬৮]

আরাফাত যে বিদ্রোহের পূর্ব-পরিকল্পনা করেছিলেন এই ধারণার সমর্থনে হামাসের নেতা মাহমুদ আল-জাহারের পক্ষ থেকে বক্তব্যও এসেছে। তিনি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন যে, যখন আরাফাত বুঝতে পারলেন যে, ২০০০ সালের জুলাই মাসে ক্যাম্প ডেভিড শীর্ষ সম্মেলনে তার সমস্ত দাবি পূরণ হবে না, তখন তিনি হামাসের পাশাপাশি ফাতাহ এবং আকসা শহীদ ব্রিগেডকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দ্রুতই সামরিক অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। [১৬৯] আল-জাহারের কথা সমর্থন করেছেন হামাসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রসিদ্ধ নেতা শেখ হাসান ইউসুফের ছেলে মোসাব হাসান ইউসুফ। তিনি দাবি করেন যে, দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ছিল আরাফাতের পূর্বপরিকল্পিত একটি রাজনৈতিক কৌশল। ইউসুফ আরো দাবি করেছেন যে, আরাফাত আন্তর্জাতিকভাবে ফিলিস্তিনি ভুক্তভোগীদের প্রতীক হিসেবে অসাধারণভাবে ধনী হয়ে উঠেছিলেন। তিনি সেই মর্যাদা ত্যাগ করে একটি কার্যকর সমাজ গঠনের দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। [১৭০]

ডেভিড স্যামুয়েলস ফিলিস্তিনিদের মুক্তিকামী সংগঠন ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন প্যালেস্টাইনের প্রাক্তন সামরিক কমান্ডার মামদুহ নোফালের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, যিনি ২৮শে সেপ্টেম্বরের পূর্ববর্তী সামরিক প্রস্তুতির আরও প্রমাণ সরবরাহ করেছিলেন। নোফাল বর্ণনা করেছেন যে, আরাফাত আমাদের বলেছিলেন যে, এখন আমরা যুদ্ধে যাচ্ছি; তাই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। [১৭১] মে মাসের প্রথম দিকে এহুদ বারাক ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর স্নাইপারদের ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো ইন্তিফাদা থামানোর জন্য আকস্মিক পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন এবং তার এই কৌশলের ফলে দাঙ্গার প্রথম দিনগুলিতেই বিদ্রোহী ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রচুর সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে। [১৭২]

আরাফাতের বিধবা স্ত্রী সুহা আরাফাত ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দুবাই টেলিভিশনে বলেছিলেন যে, তার স্বামী বিদ্রোহের পূর্ব পরিকল্পনা করেছিলেন: ক্যাম্প ডেভিড [আলোচনা] ব্যর্থ হওয়ার পরপরই যখন সে প্যারিসে ফিরে আসে, আমি সাথে সাথেই সেখানে তার সাথে দেখা করেছিলাম... ক্যাম্প ডেভিড ব্যর্থ হয়েছিল এবং সে আমাকে বলেছিল, এখন তোমার প্যারিসেই থাকা উচিত। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম কেন? এর জবাবে সে বলেছিল, কারণ আমি ইন্তিফাদা শুরু করতে যাচ্ছি। তারা চায়, আমি ফিলিস্তিনিদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করি। তারা চায়, আমি আমাদের নীতি ছেড়ে দেই; কিন্তু আমি তা করব না; গবেষণা প্রতিষ্ঠান মামরি সুহার কথাকে এইভাবে অনুবাদ করেছিল। [১৭৩]

ফিলিপ ম্যাটারের মতে, ২০০০ সালের গ্রীষ্মে লেবানন থেকে ইসরায়েলের একতরফা প্রত্যাহারকে আরবরা ইসরায়েলি পরাজয় হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিল এবং আল আকসা ইন্তিফাদায় গৃহীত কৌশলের উপর এর গভীর প্রভাব ছিল। [১০০] পিএলও কর্মকর্তা ফারুক কাদ্দৌমি সাংবাদিকদের বলেন: "আমরা আশাবাদী। হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ অন্যান্য আরবদের জন্য একটি সুন্দর উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, যারা নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে চাইছে। অনেক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রেকর্ডে বলেছেন যে, ইসরায়েলের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য ইন্তিফাদার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই করা হয়েছিল। তবে আরাফাত নিজেই এই পরিকল্পনার জন্য সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যদিও তিনি এটি বন্ধ করার জন্য কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। [৩৬] ইয়াসির আরাফাতের ব্যক্তিগত উপদেষ্টা মান্দুহ নুফাল ২০০১ সালের গোড়ার দিকে দাবি করেছিলেন যে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইন্তিফাদার সূচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। [৬৭] ইসরায়েলি সামরিক প্রতিক্রিয়ায় অসলো চুক্তির পরের বছরগুলিতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রস্তুতির জন্যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্মিত অবকাঠামোর একটি বড় অংশ ধ্বংস করা হয়। এই অবকাঠামোর মধ্যে প্রথম বারের মতো ফিলিস্তিনি বাহিনীকে বৈধ অস্ত্র সরবরাহও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখন সশস্ত্র সংঘাতে ফিলিস্তিনি যুবকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ৯০টি আধাসামরিক শিবির স্থাপন করা হয়েছিল। [৩৬] অধিকৃত অঞ্চলে প্রায় ৪০,০০০ সশস্ত্র ও প্রশিক্ষিত ফিলিস্তিনি ছিল। [৫০]

২০০১ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর আল-হায়াতকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফাতাহ-তানজিমের নেতা মারওয়ান বারগুসি ইন্তিফাদার আগে তার ভূমিকা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, [১৭৪]

আমি জানতাম যে, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সময় ছিল ফিলিস্তিনি বিস্ফোরণের আগের শেষ সময়। কিন্তু যখন শ্যারন আল-আকসা মসজিদে পৌঁছালেন, সেটিই ইন্তিফাদা শুরু হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মুহূর্ত ছিল... শ্যারনের সফরের আগের রাতে আমি একটি স্থানীয় টেলিভিশন স্টেশনের একটি প্যানেলে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং সুযোগটি কাজে লাগিয়ে জনসাধারণকে সকালে আল-আকসা মসজিদে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কারণ শ্যারনের পক্ষে কেবল হারাম আল-শরীফে পৌঁছানো এবং শান্তিপূর্ণভাবে চলে যাওয়া সম্ভব ছিল না। আমি নামাজ শেষ করে সকালে আল-আকসা গেলাম... আমরা সংঘর্ষ সৃষ্টির চেষ্টা করেও সফল হইনি। কারণ সেই সময়ে আল-আকসা প্রাঙ্গণে অন্যদের সাথে এই বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল... শ্যারন চলে যাওয়ার পর আমি অন্যান্য লোকেদের উপস্থিতিতে দুই ঘন্টা ছিলাম। তখন আমরা প্রতিক্রিয়ার ধরণ এবং কেবল জেরুজালেমেই নয়, বরং সমস্ত ফিলিস্তিনি শহরে (বিলাদ) কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই লক্ষ্যে আমরা সকল (ফিলিস্তিনি) উপদলের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম।

বারগুসি আরও বলেন যে, হিজবুল্লাহ এবং লেবানন থেকে ইসরায়েলের প্রত্যাহারের উদাহরণ ইন্তিফাদার পেছনে অবদান রাখার একটি মূল কারণ ছিল। [৬৭]

নাথান থ্রলের মতে, এলিয়ট অ্যাব্রামসের ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে হওয়া আলোচনার ভেতরের বিবরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, সহিংসতা ইসরায়েলের আত্মতুষ্টি ভাঙতে এবং ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য অর্জনে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিল। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণাকে সমর্থন করেছিল। ইসরায়েলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারনও প্রথম বারের মতো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে স্বীকার করেছেন এবং ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব সম্পর্কে কথা বলেছেন। সহিংসতা ও রক্তপাতের মাত্রা এত গুরুতর ছিল যে, শ্যারন শেষ পর্যন্ত গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা ও অবৈধ ইসরায়েলী বসতি স্থাপনকারীদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও এর আগে তিনি আগে ভাবতেন যে, গাজা ভূখণ্ড সর্বদা ইসরায়েলের দখলে থাকবে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন কখনো সফল হতে দেওয়া হবে না। [১৭৫] তবে ফাতাহের আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের প্রাক্তন নেতা জাকারিয়া জুবাইদি ইন্তিফাদাকে সম্পূর্ণ ব্যর্থতা বলে মনে করেছেন, যা ফিলিস্তিনিদের জন্য কিছুই অর্জন করতে পারেনি। [১৭৬]

হতাহতের সংখ্যা

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় মোট ক্ষয়ক্ষতির তথ্য বিভিন্ন উৎসে বিভিন্নভাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং এর কারণে কিছু পরিসংখ্যানে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। যদিও মৃতদের সামগ্রিক সংখ্যা নিয়ে একটি সাধারণ ঐক্যমত রয়েছে; তবে নিহতদের শ্রেণীবিভাগ ( যোদ্ধা বা অযোদ্ধা) ও হিসাবের মাধ্যমে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলি ক্ষতিগ্রস্তদের বিষয়টি তুলনামূলকভাবে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বি'তসেলেম ( একটি ইসরায়েলী মানবাধিকার সংস্থা) ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রিপোর্ট করে যে, ফিলিস্তিনি আক্রমণের ফলে ১,০৫৩ জন ইসরায়েলী নিহত হয়েছে। [১৭৭] [ যাচাইকরণ ব্যর্থ হয়েছে ] একই তথ্য ইসরায়েলি সাংবাদিক যেভ শিফও দিয়েছেন, যিনি শিন বেতের (ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী) এর তথ্যের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান উল্লেখ করেন। তিনি এই তথ্য ২০০৪ সালের আগস্টে হারেৎজ পত্রিকায় একটি নিবন্ধে প্রকাশ করেছিলেন। [১৭৮] তিনি উল্লেখ করেছিলেন:

গত সপ্তাহে ফিলিস্তিনিদের সাথে চলমান সংঘর্ষে ইসরায়েলি নিহতের সংখ্যা ১,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে দেশটির মাত্র দুটি যুদ্ধ –স্বাধীনতা যুদ্ধইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধ- ২০০০ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এই ইন্তিফাদার চেয়ে বেশি ইসরায়েলি প্রাণহানি ঘটিয়েছিল। ছয় দিনের যুদ্ধে ৮০৩ জন ইসরায়েলি প্রাণ হারান এবং ১৯৬৭–১৯৭০ সালে আরব–ইসরায়েল সংঘর্ষে মিশর, সিরিয়ালেবানন সীমান্তে মাত্র ৭৩৮ জন ইসরায়েলি প্রাণ হারান। [১৭৮]

ইসরায়েলিদের হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা নিয়ে খুব একটা বিতর্ক নেই। বি'তসেলেম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, ২০০৮ সালের ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪,৭৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের হাতে ৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। [] বি'তসেলেম আরো জানিয়েছে যে, ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে ৫৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। []

২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০০৫ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত ইসরায়েলি নিহতদের ৬৯ শতাংশ পুরুষ ছিল; তবে ফিলিস্তিনি নিহতদের ৯৫ শতাংশেরও বেশি পুরুষ ছিল।[১৭৯] রিমেম্বার দিস চিলড্রেন রিপোর্ট করেছিল যে, ২০০৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ১৭ বছর বা তার কম বয়সী ১১৯ জন ইসরায়েলি শিশু ফিলিস্তিনিদের হাতে নিহত হয়েছে। একই সময়কালে ১৭ বছর বা তার কম বয়সী ৯৮২ জন ফিলিস্তিনি শিশু ইসরায়েলিদের হাতে নিহত হয়েছে, যা মৃত ইসরায়েলী শিশুদের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। [১৮০]

যোদ্ধা বনাম অযোদ্ধা মৃত্যু

[সম্পাদনা]

ইসরায়েলি বেসামরিক বনাম যোদ্ধাদের মৃত্যুর সংখ্যা সম্পর্কে বি'তসেলেম রিপোর্ট করেছিল যে, ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধে ৭১৯ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৩৩৪ জন ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন।

  মোট ইসরায়েলী
  মোট ফিলিস্তিনি
  ইসরায়েলী হতাহত
  ফিলিস্তিনি হতাহত

তালিকাটি বি'তসেলেমের হতাহতের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে [১৮১] এবং এতে ফিলিস্তিনিদের হাতে নিহত ৫৭৭ জন ফিলিস্তিনিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

বি'তসেলেমের সে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, [১৮২] ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত ৪,৭৪৫ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে ১,৬৭১ জন এমন ফিলিস্তিনি ছিলেন, যারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন অর্থাৎ তারা মোট নিহতের ৩৫.২%। তাদের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতদের মধ্যে ২,২০৪ জন সংঘর্ষ বা শত্রুতায় অংশ নেননি অর্থাৎ তারা মোট নিহতের প্রায় ৪৬.৪%। নিহতদের মধ্যে ৮৭০ জন ( ১৮.৫%) এমন ফিলিস্তিনি ছিলেন, যাদের বি'তসেলেম ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে এবং তারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি।

বি'তসেলেমের হতাহতের তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল এবং তার এই পদ্ধতিটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বেশ কয়েকটি গোষ্ঠী ও গবেষকদের দ্বারা তীব্র সমালোচিত হয়েছিল; বিশেষ করে কিছু ইসরায়েলী প্রতিষ্ঠান এর তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। জেরুজালেম সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র গবেষক ও ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন দাহোয়া-হালেভি দাবি করেছিলেন যে, বি'তসেলেম বারবার ফিলিস্তিনি সশস্ত্র কর্মী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের অসংযুক্ত বেসামরিক হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছিল। তবে তিনি হতাহতের তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ না করার জন্য ইসরায়েলি সরকারেরও সমালোচনা করেছেন। [১৮৩] জেরুজালেম পোস্টের সহকারী ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রাক্তন উপদেষ্টা ক্যারোলিন বি. গ্লিক বেশ কয়েকটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং সেখানে তিনি দাবি করেছেন যে, বি'তসেলেম ফিলিস্তিনি যোদ্ধা বা সাংগঠনিক সদস্যদের নির্দোষ শিকার হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছিল অথবা বি'তসেলেম একজন আরব ব্যক্তির উপর ইসরায়েলী বসতি স্থাপনকারীদের হামলার বিষয়ে নিজের সাক্ষ্য পরিবর্তন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে; কিন্তু তারা এ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে। [১৮৪] [১৮৫] আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য প্রতিবেদনের সঠিকতা কমিটি (ক্যামেরা) বলেছিল যে, বি'তসেলেম বারবার ফিলিস্তিনি আরব যোদ্ধা ও অনেক সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যকে বেসামরিক হতাহত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। [১৮৬] [১৮৭] [১৮৮] [১৮৯]

অন্যদিকে ইন্তিফাদায় হতাহতের পরিসংখ্যান সম্পর্কে ইসরায়েল ইন্টারন্যাশনাল পলিসি ইনস্টিটিউট ফর কাউন্টার-টেররিজম (আইপিআইসিটি) ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারী পর্যন্ত প্রকাশিত পরিসংখ্যান প্রতিবেদনের সারাংশতে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, ইসরায়েলিদের হাতে নিহত ২,৭৭৩ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে ৫৬% (১,৫৪২) যোদ্ধা ছিলেন, যা অন্যান্য পরিসংখ্যানের তুলনায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যোদ্ধাদের হার অধিক দেখিয়েছে। তাদের তথ্য অনুসারে, ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তাদের নিজস্ব পক্ষের হামলায় অতিরিক্ত ৪০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া তাদের তথ্যমতে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধা ও সশস্ত্র সংগঠনগুলির হাতে নিহত মোট ৯৮৮ জন ইসরায়েলির মধ্যে ২২% (২১৫) যোদ্ধা ছিল। তাদের নিজস্ব পক্ষের হামলায় আরও ২২ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। [১৯০]

আইপিআইসিটি তাদের মোট যোদ্ধার সংখ্যায় সম্ভাব্য যোদ্ধাদেরও অন্তর্ভুক্ত করে। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত তাদের সম্পূর্ণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়:

'সম্ভাব্য যোদ্ধা' বলতে এমন একজন নিহত ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে, যিনি এমন এক সময় ও স্থানে মারা গেছেন, যেখানে সশস্ত্র সংঘর্ষ চলছিল এবং তিনি সম্ভবত –কিন্তু নিশ্চিতভাবে নয়– সেই লড়াইয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন।

উদাহরণস্বরূপ, এমন অনেক ক্ষেত্রে যেখানে কোনো ঘটনায় বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি নিহত হন, সেখানে কেবল এটুকু জানা যায় যে, ইসরায়েলি সেনারা একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে গুলি চালনার জবাবে পাল্টা গুলি চালালে একজন ব্যক্তি মারা যান। যদিও এটি সম্ভব যে, নিহত ব্যক্তি যুদ্ধে অংশ নেননি এবং তিনি কেবল লড়াইরত ব্যক্তিদের আশেপাশে ছিলেন। তবে সাধারণভাবে এমন কাকতালীয় মৃত্যুর সংখ্যা খুব বেশি নয় বলে ধরে নেওয়া হয়। কারণ অযোদ্ধা ব্যক্তিরা সাধারণত সংঘর্ষ স্থল এড়িয়ে চলেন।

তবে, যদি কোনো ঘটনার বিবরণ থেকে বোঝা যায় যে, নিহত ব্যক্তি সংঘর্ষে জড়িত ছিলেন না; বরং তিনি শুধুমাত্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তাহলে তাকে সন্দেহের সুবিধা দিয়ে অযোদ্ধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। []

আইপিআইসিটির ২০০২ সালের প্রকাশিত সেই সম্পূর্ণ প্রতিবেদনে একটি বৃত্তাকার চার্ট (গ্রাফ ২.৯) রয়েছে, যাতে ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইপিআইসিটি দ্বারা ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে যোদ্ধাদের বিভাজন তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নিচে সেই বৃত্তাকার চার্টের পরিসংখ্যান দেওয়া হলো, যা ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট যোদ্ধার শতাংশ নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়েছে:

যোদ্ধা সমস্ত ফিলিস্তিনি মৃত্যুর শতাংশ
পূর্ণ যোদ্ধা ৪৪.৮%
সম্ভাব্য যোদ্ধা ৮.৩%
হিংসাত্মক প্রতিবাদকারী ১.৬%
মোট যোদ্ধা ৫৪.৭%

২০০৪ সালের আগস্ট হারেৎজের প্রতিবেদক জি'ভ শিফ শিন বেতের তথ্যের উপর ভিত্তি করে হতাহতের একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন। [১৭৮] হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়: ইসরায়েলী প্রতিরক্ষা বাহিনীর দ্বারা সংগৃহীত পরিসংখ্যানের সাথে দুই বা তিনজন হতাহতের সংখ্যার অমিল রয়েছে।

উক্ত প্রবন্ধে উপস্থাপিত পরিসংখ্যানগুলির একটি সারসংক্ষেপ এখানে দেওয়া হল:

  • আল-আকসা ইন্তিফাদায় ফিলিস্তিনিদের হামলায় ১,০০০ এরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল।
  • ফিলিস্তিনি সূত্র দাবি করেছে যে, ইন্তিফাদায় ২,৭৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
  • শিন বেতে ২,১২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহতের নাম রয়েছে।
  • মোট ২,১২৪ জন ফিলিস্তিনি মৃতের মধ্যে শিন বেত তাদের নিম্নোক্ত সংস্থাগুলির প্রতি সম্পৃক্ত করেছিল:

তবে নিহতরা যোদ্ধা ছিল কিনা, তা নিবন্ধে বলা হয়নি। এখানে হারেৎজে প্রকাশিত একটি উদ্ধৃতি দেওয়া হল:

শিন বেতের পরিসংখ্যান অনুসারে, ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী–যেমন: বাহিনী ১৭, ফিলিস্তিনি পুলিশ, সাধারণ গোয়েন্দা বিভাগ এবং প্রতিরোধ নিরাপত্তা সংস্থা–বর্তমান সংঘাতের সময়ে তাদের ৩৩৪ জন সদস্যকে হারিয়েছে। [১৭৮]

পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি হতাহতের বিষয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বর্ণিত পরিসংখ্যানের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা বি'তসেলেম জানায় যে, ২০০৪ সালে নিহত দুই-তৃতীয়াংশ ফিলিস্তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। [১৯১]

২০০৯ সালে ইতিহাসবিদ বেনি মরিস তার পূর্ববর্তী বই ওয়ান স্টেট, টু স্টেটে (এক রাজ্য, দুই রাজ্য) বলেছেন যে, ২০০৪ সাল পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনিদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। [১৯২]

ফিলিস্তিনিদের হাতে নিহত ফিলিস্তিনি

[সম্পাদনা]

বি'তসেলেম একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছিল যে, ২০০৮ সালের ৩০ এপ্রিল ২০০৮ ফিলিস্তিনিদের হাতে ৫৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২০ জন এমন ব্যক্তি ছিলেন, যাদের ইসরায়েলের সাথে সহযোগিতার সন্দেহে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা হত্যা করে। বি'তসেলেম ফিলিস্তিনিদের হাতে নিহত ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর একটি সম্পূর্ণ তালিকা সংরক্ষণ করে, যেখানে তাদের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। তাদের মৃত্যুর অনেক কারণের মধ্যে কয়েকটি সাধারণ কারণ হল ক্রসফায়ার, গোষ্ঠীগত লড়াই, অপহরণ ও ইসরায়েলকে সহযোগিতা ইত্যাদি। [১৯৩]

যোদ্ধা ফিলিস্তিনিদের হাতে অন্য ফিলিস্তিনিদের হত্যা সম্পর্কে ২০০৩ সালের জানুয়ারী মাসে প্রকাশিত দ্য হিউম্যানিস্ট ম্যাগাজিনের একটি নিবন্ধ জানিয়েছে: [১৯৪]

গত প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ (পিএ) ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার লঙ্ঘন করে আসছে। তারা নিয়মিতভাবে সাধারণ নাগরিকদের হত্যা করেছে—যাদের মধ্যে সন্দেহভাজন সহযোগী, প্রতিবাদকারী, সাংবাদিক ও অন্যান্য ব্যক্তিরা রয়েছেন—কোনো বিচার বা ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়া ছাড়াই। এই সময়ে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মোট সংখ্যার মধ্যে ১৬ শতাংশ ফিলিস্তিনি তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে।

... ফ্রিডম হাউসের বার্ষিক রাজনৈতিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা বিষয়ে কৃত জরিপ (২০০১–২০০২ সালে বিশ্বে স্বাধীনতা) অনুসারে, ইন্তিফাদার ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও ইসরায়েলি পাল্টা আক্রমণের ফলে ইসরায়েল-শাসিত অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের জীবনযাত্রার মানের অবনতি ঘটেছে। জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে:

নাগরিক স্বাধীনতার অবনতি নিম্নলিখিত কারণে ঘটেছে: ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু; ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) কর্তৃক সন্দেহভাজন সহযোগীদের সংক্ষিপ্ত বিচার ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর; মিলিশিয়াদের দ্বারা সন্দেহভাজন সহযোগীদের বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং ফিলিস্তিনি তরুণদের ইসরায়েলি সেনাদের মুখোমুখি হওয়ার জন্য সরকারি পর্যায়ে উৎসাহিত করা, যার ফলে তারা সরাসরি বিপদের মুখে পড়েছে।

এই ইন্তিফাদা ও পূর্ববর্তী ইন্তিফাদার সময় অভ্যন্তরীণ ফিলিস্তিনি সহিংসতাকে 'আন্তঃফাদা' বলা হয়েছে। [১৯৫]

ফলাফল

[সম্পাদনা]

২০০৬ সালের ২৫শে জানুয়ারী ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনি আইন পরিষদের জন্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে। নির্বাচনে ইসলামপন্থী দল হামাস অপ্রত্যাশিতভাবে ৭৪টি আসন জেতে, যেখানে ফাতাহ ৪৫টি এবং অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৩টি আসনে জয়লাভ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক আগেই হামাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই এটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের উপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন (যেমন: সরকার গঠন করে) করলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা নিষিদ্ধ আইনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আন্তর্জাতিক তহবিল বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই কারণে হামাসের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে জাতীয় কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করে। তবে নির্বাচন জয় লাভ করেই হামাস সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ফলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের জন্য অর্থ সহায়তা স্থগিত করে। ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব তীব্র হয়, যা ২০০৭ সালে গাজায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ নেয়। যুদ্ধে হামাস ফাতাহকে পরাজিত করে গাজা থেকে উৎখাত করে এবং সেখানকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়। অন্যদিকে ফাতাহ পশ্চিম তীরের শাসন চালিয়ে যেতে থাকে। এই দ্বন্দ্বের পর থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষে কার্যত দুটি পৃথক প্রশাসন সৃষ্টি হয়; ফাতাহ পশ্চিম তীরে সীমাবদ্ধ থাকে এবং হামাস গাজায় শাসন শুরু করে।

৯ জুন গাজার সমুদ্র সৈকতে গালিয়া পরিবারের সাত সদস্যকে হত্যা করা হয়। বিস্ফোরণের কারণ এখনও অজানা রয়ে গেছে। তবুও প্রতিক্রিয়ায় হামাস ২০০৫ সালে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ত্যাগ ঘোষণা করে এবং ইসরায়েলিদের উপর পুনরায় আক্রমণ শুরু করার ঘোষণা দেয়। ফিলিস্তিনিরা উত্তর গাজা উপত্যকার কাছাকাছি স্থানে ইসরায়েলি কামানের গোলাবর্ষণকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করে; অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক তদন্তে অভিযোগ থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

২৫ জুন ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা একটি ইস্রায়েলি সামরিক ফাঁড়ি আক্রমণ করে এবং এরপর বন্দুকযুদ্ধে ২ জন ইসরায়েলি সৈন্য এবং ৩ জন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা নিহত হয়। কর্পোরাল গিলাদ শালিত নামে একজন ইস্রায়েলি সৈনিককে বন্দী করা হয়েছিল এবং ইসরায়েল সতর্ক করে দিয়েছিল যে, যদি সৈনিককে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে না দেওয়া হয়, তবে শীঘ্রই সামরিক অভিযান চালিয়ে এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে । ২৮শে জুন ভোরে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক, এপিসি ও সৈন্যরা গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলী বিমান বাহিনী দুটি প্রধান সেতু এবং ভূখণ্ডের একমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করে দিয়ে কার্যকরভাবে বিদ্যুৎ ও জল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে অপারেশন সামার রেইনস শুরু হয়, যা গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের প্রথম পর্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি ইন্তিফাদার বাইরে স্বাধীনভাবে চলতে থাকে।

২০০৬ সালের ২৬ নভেম্বর ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারী রয়টার্সের একটি নিবন্ধে বলা হয়েছিল, হামাস মূলত ২৬ নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে, যা গাজায় ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সহিংসতাকে শান্ত করেছে। [১৯৬]

গাজা থেকে ইসরায়েলে নিক্ষিপ্ত রকেট ও মর্টার শেলের পরিসংখ্যান; ফেব্রুয়ারী, ২০০৯।

২০০৮-২০০৯ গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ

[সম্পাদনা]

গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের শেষ পরিণতি অর্থাৎ গাজা যুদ্ধ ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর সংঘটিত হয় (১১:৩০ ইউটিসি; স্থানীয় সময় সকাল ০৯:৩০)।[১৯৭] ইসরায়েল তখন অপারেশন কাস্ট লিড ( হিব্রু ভাষায়: מבצע עופרת יצוקה‎) নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। এটি গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের উপর অসংখ্য রকেট হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাসের সদস্য ও অবকাঠামো লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। [১৯৮] [১৯৯] [২০০] এই অভিযানটি হামাস নেতা ও আরব বিশ্বের বেশিরভাগ মিডিয়া দ্বারা গাজা গণহত্যা ( আরবি: مجزرة غزة) নামে পরিচিত লাভ করে। [২০১] [২০২] [২০৩] [২০৪] [২০৫] [২০৬] [২০৭] [২০৮] [২০৯] [২১০]

২০০৯ সালের ১৭ জানুয়ারি রোজ শনিবার ইসরায়েল একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এই যুদ্ধ বিরতির শর্ত ছিল, গাজা থেকে আর কোনো রকেট ও মর্টার হামলা না হওয়া পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকবে। যুদ্ধ বিরতির ঘোষণার পর ইসরায়েল ধীরে ধীরে গাজা থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করতে শুরু করে। [২১১] পরবর্তীতে হামাসও যুদ্ধ বিরতি ঘোষণা করে এবং এর জন্য তাদের পক্ষ থেকে শর্ত ছিল ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সৈন্য প্রত্যাহার এবং সীমান্ত ক্রসিংগুলো খুলে দেওয়া। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরেও গাজা থেকে স্বল্প মাত্রায় মর্টার হামলা অব্যাহত থাকে। তবে ইসরায়েল তখন এগুলোকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করেনি। তবে ইসরায়েলের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ছিল অস্ত্র চোরাচালানকারী হামাসের সুড়ঙ্গগুলিতে বিমান হামলা করা। [২১২] এই যুদ্ধের সব তথ্য মূলত হারেৎজ পত্রিকার ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনগুলোর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা ২০০৮–২০০৯ ইসরায়েল–গাজা সংঘাতের সময়রেখা নিবন্ধে উল্লখিত হয়েছে। [২১৩] [২১৪] সংঘর্ষে প্রায় ১,৪১৭ থেকে ১,১৬৬ থেকে ফিলিস্তিনি এবং ১৩ জন ইসরায়েলীর মৃত্যু হয়। [২১৫]

২০০৬ সাল জুড়ে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সহিংসতা অব্যাহত ছিল। ২৭ ডিসেম্বর ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা বি'তসেলেম ইন্তিফাদা সম্পর্কে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ২০০৬ সালে ৬৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা ২০০৫ সালের তুলনায় তিন গুণ বেশি। ২০০৬ সালে মাত্র ২৩ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। নিহত ৬৬০ ফিলিস্তিনির মধ্যে ৩২২ জন কোন সংঘর্ষে অংশ নেয়নি; তবুও তারা নিহত হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর হারেৎজের একটি নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে যে: [২১৬] প্রতিবেদন অনুসারে, নিহতদের মধ্যে ২২ জন ছিল পরিকল্পিত হত্যার শিকার এবং তাদের মধ্যে ১৪১ জন ছিল শিশু। ২০০৬ সালের সবচেয়ে বড় সংঘাত ছিল ২৮ জুন থেকে শুরু হয়ে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত চলা ২০০৬ ইসরায়েল-গাজা সংঘাত, যেখানে মোট ৪০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে বারবার সংঘাত ও যুদ্ধ বিরতি দেখা গেছে। ২০০৯ সালের যুদ্ধবিরতির পরও ছোটখাট হামলা ও প্রতিক্রিয়া চলতে থাকে, যা পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা বজায় রাখে।

যুদ্ধ-কৌশল

[সম্পাদনা]

প্রথম ইন্তিফাদার বিপরীতে– যা মূলত গণ-বিক্ষোভ ও সাধারণ ধর্মঘটের উপর ভিত্তি করে উত্থিত একটি ফিলিস্তিনি নাগরিক বিদ্রোহ ছিল– দ্বিতীয় ইন্তিফাদা দ্রুতই সকল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে একটি সশস্ত্র সংঘাতে পরিণত হয়। [২১৭] ফিলিস্তিনিদের সাধারণ যুদ্ধ-কৌশলের মধ্যে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক, সৈন্য, পুলিশ ও অন্য ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তাদের আক্রমণের সাধারণ পদ্ধতিগুলির মধ্যে ছিল আত্মঘাতী বোমা হামলা, [২১৮] [২১৯] ইসরায়েলে রকেট ও মর্টার নিক্ষেপ, [২২০] [২২১] নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অপহরণ [২২২] [২২৩] এবং সকল বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিকদের [২২৪] [২২৫] পাথর নিক্ষেপ, গুলি করা, [২২৬] হত্যা, [২২৭] ছুরিকাঘাত [২২৪] [২২৮] এবং গণপিটুনি। [২২৯]

ইসরায়েলি যুদ্ধ-কৌশলগুলির মধ্যে ছিল, চেকপয়েন্ট স্থাপনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের চলাচল রোধ করা এবং নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কঠোর সান্ধ্য আইন জারি করা, যেন ঘর থেকে বেরিয়ে কেউ বিদ্রোহে অংশ নিতে না পারে। এছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অবকাঠামো; যেমন পুলিশ স্টেশন ও কারাগারের ওপর হামলা করা একটি ইসরায়েলী কৌশল ছিল। এর মাধ্যমে ইস্রায়েল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ইসরায়েলবিরোধী প্রতিবাদ ও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা দমন করতে বাধ্য করে সক্ষম হয়েছিল। [ তথ্যসূত্র প্রয়োজন ]

ফিলিস্তিন

[সম্পাদনা]

সহিংসতায় জড়িত ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ছিল হামাস, ফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদ, আল-আকসা বিগ্রেড এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি)। ফিলিস্তিনিদের সবচেয়ে মারাত্মক ও অপ্রতিরোধ্য যুদ্ধ-কৌশল ছিল আত্মঘাতী বোমা হামলা (তালিকা দেখুন )। একক বা যৌথ বোমা হামলার মাধ্যমে পরিচালিত আত্মঘাতী বোমা হামলাগুলি ছোট-বড় উভয় লক্ষ্যবস্তুর উদ্দেশ্যে পরিচালনা করা হতো। এসব হামলা সাধারণত পুলিশ বা সেনাবাহিনীর চেকপয়েন্টে পরিচালিত হত, যাতে ইসরায়েলিদের যুদ্ধের খরচ বৃদ্ধি করা যায় এবং এর মাধ্যমে ইসরায়েলি সমাজকে হতাশ করা যায়। কারণ আত্মঘাতী হামলা সাধারণত অপ্রতিরোধ্য হয় এবং তা জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে। ইসরায়েলী সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয় যে, বেশিরভাগ আত্মঘাতী বোমা হামলা (যদিও সব নয়) বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে করা হয়েছিল এবং ইসরায়েলি শহরগুলির জনাকীর্ণ স্থান; যেমন গণপরিবহন, রেস্তোরাঁ, শপিং মল এবং বাজারগুলিতে পরিচালিত হয়েছিল।

এক্ষেত্রে একটি বড় ও বিস্ময়কর ঘটনা ছিল শিশুদের দ্বারা বহন করা আত্মঘাতী বোমার ব্যবহার। সামরিক দৃষ্টিকোণে অন্যান্য অধিকাংশ আত্মঘাতী বোমা হামলা তেমন নিন্দিত না হলেও এই ধরণের বোমা হামলার ব্যবহার কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মত মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির কাছ থেকেই নিন্দা অর্জন করেনি; বরং অনেক ফিলিস্তিনি ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেও নিন্দার স্বীকার হয়েছে। সবচেয়ে কম বয়সী ফিলিস্তিনি আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ছিল ১৬ বছর বয়সী ইসা আল-বাদের, যে আল দোহা গ্রামের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। সে রিশন লেজিওনের একটি উদ্যানে আত্মঘাতী বেল্টের মাধ্যমে নিজেকে উড়িয়ে দিয়ে তার বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারকে হতবাক করে দিয়েছিল। এই হামলায় এক কিশোর এবং এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছিল। সবচেয়ে কম বয়সী আত্মঘাতী বোমা হামলার চেষ্টা করেছিল ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর, যাকে হুওয়ারা চেকপয়েন্টে সৈন্যরা ধরে ফেলে এবং সে কোন হতাহত ঘটাতে সক্ষম হয়নি।

এছাড়া ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সামরিক ও বেসামরিক বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে একটি উচ্চ-তীব্র গেরিলা যুদ্ধ অভিযানও পরিচালনা করেছিল। এতে তারা অতর্কিত আক্রমণ, স্নাইপার আক্রমণ এবং আত্মঘাতী বোমা হামলার মতো কৌশল ব্যবহার করে। আধুনিক সামরিক সরঞ্জামের বেশিরভাগই পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলি থেকে আমদানি করা হত; অন্যদিকে কিছু হালকা অস্ত্র, হাত বোমা ও বিস্ফোরক বেল্ট, অ্যাসল্ট রাইফেল ও কাসসাম রকেট দেশীয়ভাবে তৈরি করা হত। তারা ইসরায়েলি বর্মের বিরুদ্ধে দূরবর্তী নিয়ন্ত্রিত স্থল মাইনেরও নিখুঁত ব্যবহার বৃদ্ধি করে। এটি দুর্বল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় অস্ত্র ছিল। ইসরায়েলি সাঁজোয়া যান ও চেকপয়েন্টের মত অধিক শক্ত লক্ষ্যবস্তুতে প্রায়শ গাড়ি বোমা ব্যবহার করা হত। এছাড়াও ইন্তিফাদার প্রথম বছরেই প্রায় ১,৫০০ টিরও বেশি ফিলিস্তিনি গাড়িবহরে গুলিবর্ষণে ৭৫ জন নিহত হয়। [২৩০]

২০০৪ সালের মে মাসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শাউল মোফাজ দাবি করেন যে, জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা কর্তৃক (ইউএনডিএ) মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করার নামে মৃত তার মধ্যে ইসরায়েলি সৈন্যদের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল; যাতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে না পারে। [২৩১] এছাড়া রয়টার্স অসুস্থ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবহনের জন্য বরাদ্দকৃত জাতিসংঘের একটি অ্যাম্বুলেন্সে সুস্থ সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রবেশের ভিডিও প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা প্রথমে অস্বীকার করে যে, তাদের অ্যাম্বুলেন্সে ফিলিস্তিনি যোদ্ধা বহন করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয় যে, এর চালককে সশস্ত্র ব্যক্তিদের হুমকি মেনে চলতে বাধ্য করা হয়েছিল। তবে ইউএনডিএ এখনও অস্বীকার করে যে, তাদের কোনো অ্যাম্বুলেন্সে মৃত ইসরায়েলি সৈন্যদের দেহের অংশ বহন করা হয়েছিল।

২০০৪ সালের আগস্টে ইসরায়েল বলে যে, নাবলুসের কাছে হাওয়ারা চেকপয়েন্টে আইডিএফ দ্বারা ব্যবহৃত একটি উন্নত বিস্ফোরক-শনাক্তকরণ যন্ত্র আবিষ্কার করেছে যে, একটি ফিলিস্তিনি অ্যাম্বুলেন্স বিস্ফোরক পরিবহন করছিল। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এমন অভিযোগ অস্বীকার করে।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরগাজায় চলমান ইস্রায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের কিছু প্রতিক্রিয়া অহিংস প্রতিবাদের মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। [২৩২] [২৩৩] [২৩৪] এটি মূলত বিল'ইন গ্রাম ও তার পার্শ্ববর্তী কিছু এলাকায় সংগঠিত হয়েছিল। বেইত সাহুর থেকে পরিচালিত প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর র‍্যাপ্রোকেমেন্টের মত গোষ্ঠীগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে অহিংস প্রতিরোধকে উৎসাহিত এবং সংগঠিত করে। [২৩৫] এছাড়া অন্যান্য গোষ্ঠী; যেমন আন্তর্জাতিক সংহতি আন্দোলনও সর্বদা প্রকাশ্যে অহিংস প্রতিরোধের পক্ষে প্রচারণা চালায়। এসব কার্যক্রমের মধ্যে কিছু আন্তর্জাতিক এবং কিছু ইসরায়েলিদের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়; যেমন বিলআইন, [২৩৬] বিদ্দু [২৩৭] ও বুদরুসের মতো গ্রামে ইসরায়েল কর্তৃক পশ্চিম তীরে নির্মিত সীমান্ত বেড়ার বিরুদ্ধে সাপ্তাহিক বিক্ষোভ।[২৩৮] তবে প্রতিরোধের এই পদ্ধতিটি বেত সিরা, [২৩৯] হেবরন, সাফা ও নি'লেইনের মতো অন্যান্য গ্রামেও ছড়িয়ে পড়েছে। [২৪০] [২৪১] জেনিন ও নাবলুসে ইসরায়েলি পুনঃআক্রমণের সময় ২০০২ সালের মে মাসে দুইজন ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান ফিলিস্তিনে অহিংস প্রতিরোধ কৌশলের আহ্বান জারি করেছিলেন। [২৪২]

প্রতিবাদের এমন অহিংস কৌশলও কখনো কখনো ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উল্লেখ করে যে, ২০০৪ সালের ১৯ মে ভোরে গাজা উপত্যকার রাফায় আটজন নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীর মধ্যে ১০ বছর বয়সী নাজি আবু কামের, ১১ বছর বয়সী মুবারক সালিম আল-হাসসাশ ও ১৩ বছর বয়সী মাহমুদ আল তারিক মনসুর ছিলেন নিহত সেই আটজন নিরস্ত্র ও অহিংস বিক্ষোভকারীর অন্তর্ভুক্ত, যাদের ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি অহিংস বিক্ষোভের উপর ট্যাঙ্ক শেল এবং একটি হেলিকপ্টার গানশিপ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল। এই হামলায় আরও কয়েক ডজন নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী আহত হয়। হামলার পরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তারা সাফাই দেয় যে, বিক্ষোভকারীদের ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অবস্থানের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দেওয়ার জন্য ট্যাঙ্কগুলি কাছাকাছি একটি খালি ভবনে গুলি চালিয়েছিল এবং একটি সামরিক হেলিকপ্টার কাছাকাছি একটি খোলা জায়গায় বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। [২৪৩]

ইসরায়েল

[সম্পাদনা]
আইডিএফ ক্যাটারপিলার ডি৯ সাঁজোয়া ইসরায়েলী বুলডোজার। সামরিক বিশেষজ্ঞরা যুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর হতাহতের সংখ্যা কম রাখার ক্ষেত্রে ডি৯-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর (আইএএফ) বোয়িং এএইচ-৬৪ অ্যাপাচে ফিলিস্তিনি লক্ষ্যবস্তুতে নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং উল্লেখযোগ্য ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধা ও সাংগঠনিক নেতাদের বিরুদ্ধে হামলায় এটি ব্যবহৃত করা হতো।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকায় বিভিন্ন ফিলিস্তিনি লক্ষ্যবস্তুতে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের হামলা প্রতিরোধ করে একটি অত্যন্ত কার্যকর নগর-যুদ্ধ কৌশল গ্রহণ করে। আইডিএফ তাদের সৈন্যদের নিরাপত্তার উপর জোর দিয়েছিল। তাই তারা মারকাভা ভারী ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া কর্মী বাহকের মতো ভারী সাঁজোয়া সরঞ্জাম ব্যবহার করেছিল এবং ফিলিস্তিনি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য এফ-১৬, ড্রোন বিমান এবং হেলিকপ্টার গানশিপসহ বিভিন্ন সামরিক বিমান দিয়ে বিমান হামলা চালিয়েছিল। স্থল যুদ্ধের বেশিরভাগ অংশই তাদের সুসজ্জিত ও প্রশিক্ষিত পদাতিক বাহিনী দ্বারা ঘরে ঘরে লড়াই করা হয়েছিল এবং উন্নত প্রশিক্ষণ, আধুনিক সরঞ্জাম ও সংখ্যাধিক্যের কারণে স্থলযুদ্ধের সময় আইডিএফের প্রাধান্য ছিল। যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। কিন্তু বেসামরিক হতাহতের কারণে সর্বদা আন্তর্জাতিকভাবে সব অভিযানই সমালোচিত হয়েছিল। ফিলিস্তিনি ধাতব শিল্পের দোকান ও অন্যান্য ব্যবসায়িক স্থাপনা–যেসবকে ইসরায়েল অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয় বলে সন্দেহ করেছিল– সেসব প্রায় নিয়মিতভাবেই ইসরায়েলী বিমান হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। এর সাথে তারা গাজা উপত্যকা জুড়ে বিস্তৃত হামাসের মালামাল ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহে ব্যবহৃত টানেলগুলিকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিল।

আইডিএফ ক্যাটারপিলার ডি৯ সাঁজোয়া বুলডোজার নিয়মিতভাবে বুবি ট্র্যাপ (গোপনে পেতে রাখা বিস্ফোরক ফাঁদ) ও আইইডি ( তাৎক্ষণিক উদ্ভাবিত বোমা) নিষ্ক্রিয় করতে ব্যবহৃত হতো। এছাড়া এগুলি মিশর সীমান্তের কাছে অবস্থিত সেই বাড়িগুলো ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হতো, যেগুলো থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলা চালানো হতো। "বাফার জোন" (নিরাপত্তার জন্য ব্যবধান তৈরি) করতে এবং পশ্চিম তীরে সামরিক অভিযানের সহায়তায়ও এটি ব্যবহৃত হতো। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ইসরায়েল একটি নীতি অনুসরণ করেছিল, যেখানে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের পরিবারের বাড়িঘর ধ্বংস করা হতো। তবে ধ্বংসের আগে তাদের সরে যাওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হতো বলে জানানো হয়। তবে এই নীতি বিতর্কিত হয়ে ওঠে। কারণ ফিলিস্তিনিদের অনেকেই বড় পরিবার নিয়ে একক বাড়িতে থাকতেন। ফলে একটি বাড়ি ধ্বংস করার অর্থ অনেক মানুষের গৃহহীন হয়ে যাওয়া এবং বাস্তবেও অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিল। এই নীতির ফলে প্রচুর সংখ্যক বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছিল, যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। এই নীতির বেশ কিছু ফিলিস্তিনি পরিবার নিজেদের বাড়ি রক্ষা করার জন্যে আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে ইসরায়েলি বাহিনীকে আগেভাগে তথ্য দিতে শুরু করে। কিন্তু যারা ইসরায়েলকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করত, পরবর্তীতে তারা হয়তো ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে মৃত্যুদণ্ড বা কঠোর শাস্তির ঝুঁকিতে পড়ত। এই কৌশল কার্যকর হয় কিনা তা পর্যালোচনা করতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। কমিটি রিপোর্ট দেয় যে, এই নীতি কার্যকর হয়নি বরং আন্তর্জাতিকভাবে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আরও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। ফলে নীতি বাতিল করার সুপারিশ করা হয় এবং ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত তাদের এই কৌশল বন্ধ করে দেয়। [২৪৪]

স্থল ও আকাশপথে সম্পূর্ণ শ্রেষ্ঠত্বের সাথে ইসরায়েলি সামরিক ও পুলিশ বাহিনী নিয়মিতভাবেই যে কোনো সময় গণগ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করত। ফলে ইন্তিফাদার সময় ইসরায়েলি কারাগারে প্রায় ৬,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দী আটক হন, যাদের প্রায় অর্ধেককেই ইসরায়েলি আইন অনুসারে চূড়ান্ত অভিযোগ ছাড়াই অস্থায়ীভাবে আটক করে রাখা হয়েছিল।

সামরিক কারফিউ বা দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন কৌশল ইসরায়েল পুরো ইন্তিফাদার সময় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছিল। সবচেয়ে দীর্ঘ কারফিউ ছিল নাবলুস শহরে, যেখানে এটি টানা প্রায় ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে কার্যকর ছিল। সাধারণত প্রতিদিন দুই ঘণ্টারও কম সময়ের জন্য ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের খাবার সংগ্রহ বা জরুরি কাজের জন্য অনুমতি দেওয়া হতো।

ইসরায়েল ফিলিস্তিনি শহরগুলির ভেতরে ও মাঝখানে নিরাপত্তা চৌকি ও পথরোধ স্থাপন করেছিল। এসব চৌকি পার হতে হলে সকল মানুষ ও যানবাহনকে তল্লাশির মুখোমুখি হতে হতো। ইসরায়েল দাবি করে যে, এসব চৌকি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের চলাচল ও অস্ত্র পরিবহন ঠেকানোর জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল। তবে বেশ কিছু ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও পর্যবেক্ষকরা এই নিরাপত্তা চৌকিগুলিকে অতিরিক্ত, অপমানজনক ও অধিকৃত অঞ্চলের মানবিক সংকটের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে সমালোচনা করেছিলেন। ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে এসব নিরাপত্তা চৌকি পার হতে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যেত। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের আগে ব্যাপকভাবে স্নাইপার টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছিল।

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি; যেমন শিন বেতমোসাদ ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির ভেতরে গোপন চরবৃত্তি করেছিল। তারা সংগঠনগুলির ভেতরে গুপ্তচর (মোল) নিয়োগ করেছিল। ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ফোন এবং অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে আড়ি পেতেছিল। এছাড়া আকাশপথে তাদের ওপর নজরদারি চালিয়েছিল। এসব গোয়েন্দা তথ্য ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী, সীমান্ত পুলিশ ও তাদের বিশেষ বাহিনী; যেমন ইয়ামাম ও মিস্তারাভিমকে শত শত পরিকল্পিত আত্মঘাতী বোমা হামলা প্রতিরোধে সহায়তা করেছিল। এসব গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে ইসরায়েল একটি তালিকা তৈরি করেছিল, যাতে নির্দিষ্ট কিছু ফিলিস্তিনিকে লক্ষ্য করে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড (টার্গেটেড কিলিং) চালানো হয়েছিল। [২৪৫]

ইসরায়েল ব্যাপকভাবে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কৌশল ব্যবহার করেছিল, যার মাধ্যমে তারা নির্দিষ্ট ফিলিস্তিনি ব্যক্তিদের হত্যা করত, যারা ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে হামলা সংগঠিত করার কাজে জড়িত ছিল। তাদের এই কৌশলের মূল উদ্দেশ্য ছিল তাৎক্ষণিক হুমকি দূর করা এবং অন্যান্য সম্ভাব্য হামলাকারীদের প্রতিরোধ করা। ইসরায়েল এই হত্যা অভিযান পরিচালনার জন্য প্রধানত বিমান হামলা ও গোপন অভিযানের ওপর নির্ভর করত। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত এই কৌশলটির প্রস্তাব করেছিল। তাদের যুক্তি মতে, প্রতিটি আত্মঘাতী বোমা হামলা ঠেকানো সম্ভব না হলেও হামলার পরিকল্পনাকারী অবকাঠামো ধ্বংস করে দিলে এই ধরনের হামলা বন্ধ করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে ইস্রায়েল অপারেশনাল কমান্ডার (যারা হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনা করত), নিয়োগকারী (যারা আত্মঘাতী বোমারুদের খুঁজে বের করতো এবং প্রশিক্ষণ দিতো) বার্তাবাহক ও সমন্বয়কারী ( যারা হামলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও নির্দেশনা আদান-প্রদান করত), অস্ত্র সংগ্রহকারী (যারা অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও গুলি সরবরাহ করতো), নিরাপদ আস্তানার ব্যবস্থাপক (যারা হামলাকারীদের লুকিয়ে রাখত) এবং অর্থ পাচারকারীদের (যারা বোমা হামলার জন্য অর্থ সংগ্রহ ও সরবরাহ করত) বেছে বেছে হত্যা করেছিল। [২৪৬] ইসরায়েল শহুরে এলাকায় হেলিকপ্টার গানশিপ ব্যবহার করে এসব হত্যাকাণ্ড চালাত, যার ফলে প্রায়ই বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটত এবং এই কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হয়। অন্যদিকে ইসরায়েল দাবি করেছিল যে, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র দলগুলির নেতারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে লুকিয়ে থাকত, ফলে সেই সকল মানুষ অনিচ্ছাকৃতভাবে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো এবং সবাই হামলায় হতাহতের স্বীকার হতো। পুরো ইন্তিফাদা চলাকালীন ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব ইসরায়েলের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের কারণে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। তাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও পরিকল্পনাকারী নিহত হওয়ায় ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলির হামলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই অবৈধ ইসরায়েলী প্রথাকে বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড হিসেবে গণ্য করে ব্যাপকভাবে নিন্দা করেছিল। [২৪৭] [২৪৮] জবাবে তখন ইসরায়েলি উচ্চ আদালত রায় দিয়েছিল যে, এটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার একটি বৈধ ব্যবস্থা। [২৪৯] এছাড়া অনেক সামরিক বিশ্লেষক বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে ফেলে লক্ষ্যবস্তুকে হত্যা বা আহত করার সমালোচনা করেছিল। যদিও এর সমর্থকরা বিশ্বাস করে যে, এ পদ্ধতিটি উভয় পক্ষের বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে অধিক কার্যকর।

গাজা উপত্যকা থেকে বারবার রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েলি নৌবাহিনী ওই অঞ্চলে সামুদ্রিক অবরোধ আরোপ করে। ইসরায়েল মিশরের সাথে সমন্বয় করে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় এবং গাজার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। স্থলপথ দিয়ে স্থানান্তরের আগে উপত্যকায় প্রবেশকারী সমস্ত মানবিক সরবরাহ তাদের নিরাপত্তা পরিদর্শনের আওতায় আনে। বাঙ্কার তৈরিতে সম্ভাব্য ব্যবহার্য নির্মাণ সামগ্রী বিক্রি করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। [২৫০] গাজার বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে সম্মিলিত শাস্তি হিসেবে এ অবরোধ আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। ইসরায়েল বরাবরের মত এসবে সমালোচনায় কর্ণপাত করেনি। [২৫১]

আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা

[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রায় শুরু থেকেই ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতে জড়িত রয়েছে এবং আল-আকসা ইন্তিফাদার সময় তাদের এই সম্পৃক্ততা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। মার্কিন সামরিক সহায়তার অধীনে ইসরায়েল বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বার্ষিক ৩ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পায়, যা ঋণ নিশ্চয়তার অন্তর্ভুক্ত নয়। [২৫২] ইসরায়েল একটি উন্নত শিল্পোন্নত দেশ হয়েও ১৯৭৬ সাল থেকে এটি মার্কিন বৈদেশিক সহায়তার বৃহত্তম বার্ষিক গ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে [২৫৩] এবং এটি মার্কিন অর্থনৈতিক সহায়তার একমাত্র প্রাপক, যাকে সামরিক সহায়তা কীভাবে বা কোন খাতে ব্যয় করা হয় তার হিসাব দিতে হয় না। [২৫৩] বিপরীতে ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পায়। ফিলিস্তিন বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে আরব লীগ থেকে ৫২৬ মিলিয়ন ডলার; ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রায় ৬৫১ মিলিয়ন ডলার; যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং বিশ্ব ব্যাংক থেকে প্রায় ২৩৮ মিলিয়ন ডলার। জাতিসংঘের মতে ফিলিস্তিনি অঞ্চল বিশ্বের অন্যতম প্রধান মানবিক সহায়তা প্রাপ্ত অঞ্চল। [২৫৪]

উপরন্তু বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বাধাীন গোষ্ঠী ও সংগঠন ক্রমবর্ধমানভাবে এই সংঘাতে জড়িত হয়ে পড়েছিল। যেমন ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সংহতি আন্দোলনইস্রায়েলিদের পক্ষে আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি। [২৫৫] এছাড়া মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্র ও অঞ্চল ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইউরোপআমেরিকার অধিকাংশ দেশ ও অঞ্চল ইসরায়েলের পক্ষে সংহতি জানায়।

২০০১ এবং ২০০২ সালের আরব লীগ শীর্ষ সম্মেলনে আরব রাষ্ট্রগুলি দ্বিতীয় ইন্তিফাদার প্রতি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল; ঠিক যেমনটি তারা ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে পরপর দুটি শীর্ষ সম্মেলনে প্রথম ইন্তিফাদার প্রতি নিজেদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।

অসলো চুক্তির উপর প্রভাব

[সম্পাদনা]

যদিও অনেক ইসরায়েলি অসলো চুক্তির বিষয়ে পূর্ব থেকেই সন্তুষ্ট ছিল না; দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হওয়ার পর এবং ইসরায়েলি গণপরিবহনে (বাস) চলাচলকারী বেসামরিক ইহুদি নাগরিকদের লক্ষ্য করে ফিলিস্তিনি আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের ইচ্ছাকৃত আক্রমণ করার উপর তীব্র জোর দেওয়ার পর থেকে অধিকাংশ ইসরায়েলি জনগণ ক্রমবর্ধমানভাবে অসলো চুক্তিকে অপছন্দের চোখে দেখা শুরু করে। অসলো চুক্তির প্রায় সাত বছর পর এবং দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরুর পাঁচ মাস আগে ২০০০ সালের মে মাসে ইসরায়েলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের তামি স্টেইনমেৎজ পিস রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণা জরিপে [২৫৬] দেখা যায় যে, ইসরায়েলিদের ৩৯% চুক্তিকে সমর্থন করে এবং ৩২% বিশ্বাস করে যে, চুক্তিটি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। এর বিপরীতে ২০০৪ সালের মে মাসে এক জরিপে দেখা গেছে যে, সমস্ত ইসরায়েলি নাগরিকদের মধ্যে কেবল ২৬% চুক্তিকে সমর্থন করে এবং ১৮% বিশ্বাস করে যে, চুক্তিটির ফলে আগামী কয়েক বছরে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে; যার হার যথাক্রমে ১৩% এবং ১৬% হ্রাস পেয়েছে। অধিকন্তু পরবর্তী এক জরিপে দেখা গেছে যে, ৮০% ইসরায়েলি বিশ্বাস করে যে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী দ্বিতীয় ইন্তিফাদা মোকাবেলায় সামরিকভাবে সফল হয়েছে। যদিও এতে ইসরায়েল ব্যাপক হতাহতের স্বীকার হয়েছিল। [২৫৭]

অর্থনৈতিক প্রভাব

[সম্পাদনা]

ইস্রায়েল

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় ইন্তিফাদায় ইসরায়েলি বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব পড়ে; বিশেষ করে এর পর্যটন খাত তীব্রভাবে ধসে পড়ে। ইসরায়েলের চেম্বার অফ কমার্সের (বাণিজ্য মণ্ডল) একজন প্রতিনিধি সংকটের কারণে সৃষ্ট সামগ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ১৫০ থেকে ২০০ বিলিয়ন শেকেল (৩৫–৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) অনুমান করেন– যেখানে ২০০২ সালে দেশটির বার্ষিক জিডিপি ১২২ বিলিয়ন ডলার ছিল। [২৫৮] তবে ২০০৫ সালের পর থেকে আইডিএফ এবং শিন বেটের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে ইসরায়েলে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা তীব্রভাবে হ্রাস পেলে ইসরায়েলের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হয়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ

[সম্পাদনা]

জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার বিশেষ সমন্বয়কের কার্যালয় (ইউএনএসসিও) ইন্তিফাদায় ফিলিস্তিনি অর্থনীতির ক্ষতির পরিমাণ ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বলে অনুমান করে– যেখানে ২০০২ সালে এর বার্ষিক জিডিপি ছিল ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়াও হামাসফিলিস্তিনি ইসলামি জিহাদসহ সকল ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীও ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। [২৫৯] [২৬০]

আরো দেখুন

[সম্পাদনা]
দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ও তৎপরবর্তী ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত

বাহ্যিক লিঙ্ক

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি

[সম্পাদনা]
  1. Amos Harel; Avi Issacharoff (১ অক্টোবর ২০১০)। "Years of Rage"Haaretz। ২ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  2. Laura King (২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Losing faith in the intifada"Los Angeles Times। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  3. Jackson Diehl (২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "From Jenin to Falluja"The Washington Post। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  4. Zeev Chafetz (২২ জুলাই ২০০৪)। "The Intifadeh is over – just listen"World Jewish Review। ৪ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  5. Major-General (res) Yaakov Amidror (২৩ আগস্ট ২০১০)। "Winning the counterinsurgency war: The Israeli experience"Jerusalem Center for Public Affairs। ১ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  6. Hillel Frisch (১২ জানুয়ারি ২০০৯)। "The need for a decisive Israeli victory over Hamas" (পিডিএফ)Begin–Sadat Center for Strategic Studies। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  7. "B'Tselem – Statistics – Fatalities"B'Tselem। ১ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "casualties2" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  8. "Breakdown of Fatalities: 27 September 2000 through 1 January 2005"International Institute for Counter-Terrorism। ৩ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  9. "Intifada toll 2000–2005"BBC News। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৫। ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১২ 
  10. "Field Update on Gaza from the Humanitarian Coordinator" (পিডিএফ)United Nations Office for the Coordination of Humanitarian Affairs। ৯ জানুয়ারি ২০০৯। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  11. BBC 2004
  12. Araj, Bader; Brym, Robert J. (২০১০)। "Opportunity, Culture and Agency: Influences on Fatah and Hamas Strategic Action during the Second Intifada" (ইংরেজি ভাষায়): 842–868। আইএসএসএন 0268-5809ডিওআই:10.1177/0268580909351327। ১৮ মে ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০২৪ 
  13. Smith, Robert B. (২০০৮-০৪-০১)। "A Globalized Conflict: European Anti-Jewish Violence during the Second Intifada" (ইংরেজি ভাষায়): 135–180। আইএসএসএন 1573-7845ডিওআই:10.1007/s11135-006-9045-3 
  14. Pressman 2006, পৃ. 114।
  15. NPR 2014
  16. Byman 2011, পৃ. 114।
  17. Finkelstein, Norman G. (২০০৮)। "4"। Beyond Chutzpah: On the misuse of anti-Semitism and the abuse of history (expanded paperback সংস্করণ)। 
  18. Cohen, Samy (২০১০)। "Botched Engagement in the Intifada"। Israel's Asymmetric Wars। Palgrave Macmillan US। পৃষ্ঠা 73–91। আইএসবিএন 978-1-349-28896-0ডিওআই:10.1057/9780230112971_6 
  19. Kober, Avi (২০০৭)। "Targeted Killing during the Second Intifada:: The Quest for Effectiveness" (ইংরেজি ভাষায়): 94–114। আইএসএসএন 1198-8614। ৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২২ 
  20. Matta, Nada; Rojas, René (২০১৬)। "The Second Intifada: A Dual Strategy Arena" (ইংরেজি ভাষায়): 66। আইএসএসএন 0003-9756ডিওআই:10.1017/S0003975616000035। ৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২২ 
  21. Brym, R. J.; Araj, B. (২০০৬-০৬-০১)। "Suicide Bombing as Strategy and Interaction: The Case of the Second Intifada": 1969। আইএসএসএন 0037-7732ডিওআই:10.1353/sof.2006.0081 
  22. Schweitzer, Y. (২০১০)। "The rise and fall of suicide bombings in the second Intifada" (3): 39–48। 
  23. Schachter, J. (২০১০)। "The End of the Second Intifada?" (পিডিএফ) (3): 63–70। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  24. Sela-Shayovitz, R. (২০০৭)। "Suicide bombers in Israel: Their motivations, characteristics, and prior activity in terrorist organizations" (2): 163। 
  25. "B'Tselem – Statistics – Fatalities 29.9.2000–15.1.2005"B'Tselem। ১৪ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  26. Tucker 2019, পৃ. 958p: he [Abbas] and Israeli prime minister Sharon agreed in an early 2005 summit to suspend hostilities. This agreement effectively ended the Second Intifada
  27. Abbas 2005
  28. Sharon 2005
  29. Reinhart 2006, পৃ. 77।
  30. "1977: Egypt's bread intifada"। ২ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ অক্টোবর ২০১৬ 
  31. Rabinovich, Itamar (২০০৪)। Waging Peace: Israel and the Arabs, 1948–2003Princeton University Press। পৃষ্ঠা 306আইএসবিএন 978-0-691-11982-3 
  32. Devin Sper (২০০৪)। The Future of Israel। Sy Publishing। পৃষ্ঠা 335আইএসবিএন 978-0-9761613-0-1 
  33. Binyamin Elon (২০০৫)। God's Covenant With Israel: Establishing Biblical Boundaries in Today's World। Balfour Books। পৃষ্ঠা 45। আইএসবিএন 978-0-89221-627-7 
  34. Ben-Ami, Shlomo (২০০৬)। Scars of War, Wounds of PeaceOxford University Press। পৃষ্ঠা 267আইএসবিএন 978-0-19-518158-6 
  35. Schmemann, Serge (৫ ডিসেম্বর ১৯৯৭)। "In West Bank, 'Time' for Settlements Is Clearly Not 'Out'"The New York Times। ২৬ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  36. David M., Rosen (২০০৫)। Armies of the Young: Child Soldiers in War and Terrorism। Rutgers University Press। পৃষ্ঠা 119। আইএসবিএন 978-0-8135-3568-5। ২০ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৬ 
  37. "Palestinian Parliament Expected to Not Declare an Independent Palestinian State"। CNN। ১০ সেপ্টেম্বর ২০০০। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  38. "Extraordinary Increase in Settlement Construction as Diplomacy Falters"। Foundation for Middle East Peace। মার্চ–এপ্রিল ১৯৯৮। ২০১৩-০৪-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  39. "Housing Starts in Israel, the West Bank and Gaza Strip Settlements*, 1990–2003"। Foundation for Middle East Peace। ১৮ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  40. Tim Youngs, International Affairs and Defence Section (২৪ জানুয়ারি ২০০১)। "The Middle East Crisis: Camp David, the 'Al-Aqsa Intifada' and the Prospects for the Peace Process" (পিডিএফ)House of Commons Library। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০০৭ 
  41. "The second intifada"। ১২ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  42. "What were the intifadas?"। ২০ নভেম্বর ২০১৮। ১০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  43. "Palestinians And Israelis in a Clash at Holy Site"The New York Times। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০০। 
  44. Bregman 2005, পৃ. 160।
  45. Cohen, Hillel (মার্চ ২০১৩)। The Rise and Fall of Arab Jerusalem: Palestinian Politics and the City Since 1967 (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 978-1-136-85266-4 
  46. "On This Day: 'Provocative' mosque visit sparks riots"BBC News। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০০। ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-০১Palestinians and Israeli police have clashed in the worst violence for several years at Jerusalem's holiest site, the compound around Al-Aqsa mosque. The violence began after a highly controversial tour of the mosque compound early this morning by hardline Israeli opposition leader Ariel Sharon. ... Soon after Mr Sharon left the site, the angry demonstrations outside erupted into violence. Israeli police fired tear gas and rubber-coated metal bullets, while protesters hurled stones and other missiles. Police said 25 of their men were hurt by missiles thrown by Palestinians, but only one was taken to hospital. Israel Radio reported at least three Palestinians were wounded by rubber bullets. ... Following Friday [September 29, 2000] prayers the next day, violence again broke out throughout Jerusalem and the West Bank. 
  47. Greenberg, Joel (৫ অক্টোবর ২০০০)। "Unapologetic, Sharon Rejects Blame for Igniting Violence"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১০ 
  48. Lee Hockstader (২৯ সেপ্টেম্বর ২০০০)। "Israeli's Tour of Holy Site Ignites Riot; Palestinians Angered By Test of Sovereignty in Jerusalem's Old City"The Washington Post। পৃষ্ঠা A22। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  49. "Palestinians say opposition tour of holy site could cause bloodshed"। CNN। Associated Press। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০০। ১০ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  50. Rashmi Singh, Hamas and Suicide Terrorism: Multi-causal and Multi-level Approaches ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ আগস্ট ২০২০ তারিখে Routledge, 2013 p.38
  51. Menachem Klein (২০০৩)। The Jerusalem Problem: The Struggle for Permanent StatusUniversity Press of Florida। পৃষ্ঠা 98আইএসবিএন 978-0-8130-2673-2  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "klein_jerusalemproblem_p98" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  52. Schiff, Ze'ev; Ehud Ya'ari (১৯৮৪)। Israel's Lebanon WarSimon & Schuster। পৃষ্ঠা 284আইএসবিএন 978-0-671-47991-6 
  53. Shindler 2013, পৃ. 283।
  54. MacFarquhar, Neil (৫ জানুয়ারি ২০০৬)। "Few Kind Words for Sharon in the Arab World"The New York Times। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  55. Juliana Ochs (২০১১)। Security and Suspicion: An Ethnography of Everyday Life in Israel। The Ethnography of Political Violence। University of Pennsylvania Press। পৃষ্ঠা 6। আইএসবিএন 978-0-8122-4291-1। ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  56. Goldberg, Jeffrey (২০০৮)। Prisoners: A Story of Friendship and TerrorVintage Books। পৃষ্ঠা 258 
  57. Sontag, Deborah (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০০)। "Battle at Jerusalem Holy Site Leaves 4 Dead and 200 Hurt"The New York Times। ২৯ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৪ 
  58. Dellios, Hugh (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০০)। "4 Dead, Scores Wounded in Jerusalem Clashes"Chicago Tribune। Jerusalem। ২৮ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৪police clashed with stone-throwing Palestinians, killing four and wounding scores 
  59. "CNN's Jerrold Kessel on continuing violence in the Mideast"CNN। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০০। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  60. Menachem Klein (২০০৩)। The Jerusalem Problem: The Struggle for Permanent StatusUniversity Press of Florida। পৃষ্ঠা 97–98। আইএসবিএন 978-0-8130-2673-2 
  61. Menachem Klein (২০০৩)। The Jerusalem Problem: The Struggle for Permanent StatusUniversity Press of Florida। পৃষ্ঠা 97আইএসবিএন 978-0-8130-2673-2  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "autogenerated2" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  62. "Israel and the Occupied Territories: Excessive use of lethal force"Amnesty International। ১৯ অক্টোবর ২০০০। ২২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৮ 
  63. Gilead Sher (২০০৬)। The Israeli–Palestinian Peace Negotiations, 1999–2001: Within ReachRoutledge। পৃষ্ঠা 161–162। আইএসবিএন 978-0-7146-8542-7। ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  64. "Deflater of defeatist discourse"haaretz.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৯ 
  65. "Israel and the Occupied Territories: Broken Lives – A Year of Intifada"Amnesty International। ১৩ নভেম্বর ২০০১। ২৯ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১২  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Amnesty International" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  66. Ben-Shaul, Nitzan S. (২০০৬)। A Violent World: TV News Images of Middle Eastern Terror and War (ইংরেজি ভাষায়)। Rowman & Littlefield। আইএসবিএন 978-0-7425-3799-6 
  67. Catignani, Sergio (২০০৮)। "The Al-Aqsa Intifada"Israeli Counter-Insurgency and the Intifadas: Dilemmas of a Conventional ArmyRoutledge। পৃষ্ঠা 104–106। আইএসবিএন 978-1-134-07997-1। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৬  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Catignani" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  68. "The Or Inquiry – Summary of Events"Haaretz। ১৯ নভেম্বর ২০০১। ১৯ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  69. Eve Spangler, Understanding Israel/Palestine: Race, Nation, and Human Rights in the Conflict ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ আগস্ট ২০২০ তারিখে Springer, 2015 p.183
  70. Asser, Martin (১৩ অক্টোবর ২০০০)। "Lynch mob's brutal attack"BBC News। ২৯ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৬ 
  71. Levy, Gideon (২০ অক্টোবর ২০০০)। "A conversation with Colonel Kamel al-Sheikh, Ramallah's chief of police, amid the ruins of his police station, where two Israeli soldiers were lynched by an angry mob last week"Haaretz। ৪ আগস্ট ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  72. Feldman, Shai (নভেম্বর ২০০০)। "The October Violence: An Interim Assessment"Strategic Assessment। Jaffes Center for Strategic Studies। ২৯ জুন ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  73. Philps, Alan (১৩ অক্টোবর ২০০০)। "A day of rage, revenge and bloodshed"The Daily Telegraph। ১৪ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  74. "Israeli copters retaliate for soldiers' deaths"USA Today। ৮ নভেম্বর ২০০০। ২৩ নভেম্বর ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৩ 
  75. "Time Line of Second (Al-Aqsa) Intifada"। MidEastWeb। ১৭ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  76. CNN, 27 December 2000, "Mideast summit in Egypt called off" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ নভেম্বর ২০২১ তারিখে
  77. Hershman, Tania (১৯ জানুয়ারি ২০০১)। "Israel's 'First Internet Murder'"Wired। ১৯ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  78. Protection of children during armed political conflict: a multidisciplinary perspective। Intersentia। ২০০৬। আইএসবিএন 978-90-5095-341-2। ১৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০২০ 
  79. Gordis, Daniel (২০০৩)। Home to Stay: One American Family's Chronicle of Miracles and Struggles in Contemporary IsraelRandom Houseআইএসবিএন 978-0-307-53090-5। ১৭ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০১২ 
  80. "Target: Israeli Children"Israel Ministry of Education। ২৩ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  81. "Two Israeli boys found bludgeoned to death"The Guardian। ৯ মে ২০০১। ২৫ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১২ 
  82. Matthew Kalman (২০ জুন ২০০১)। "Two Israeli teenagers stoned to death"USA Today। ২০ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১২ 
  83. "Arabs seek to isolate Israel"BBC News। ২০ মে ২০০১। ১২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  84. Karmon, Ely (১১ জুন ২০০১)। "The Palestinian Authority-Hamas Collusion – From Operational Cooperation to Propaganda Hoax"International Institute for Counter-Terrorism। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  85. O'Sullivan, Arieh (২৫ নভেম্বর ২০০১)। "No. 1 Hamas terrorist killed. Followers threaten revenge in Tel Aviv."The Jerusalem Post। ২৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০০৯ 
  86. Fisher, Ian (২৯ জানুয়ারি ২০০৬)। "In Hamas's Overt Hatred, Many Israelis See Hope"The New York Times। ১১ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০০৯ 
  87. 21 צעירות וצעירים נהרגו בפיגוע התופת בטיילת בתל אביב, לא הרחק מהדולפינריום. אלה תמונות ההרוגים בפיגוע הקשה ביותר בישראל מזה חמש שנים. ynet מביא את חלק מסיפוריהם.Ynet (হিব্রু ভাষায়)। ২ জুন ২০০১। ২৪ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  88. Enev, Peter Enev (৭ জুন ২০০৪)। "Barghouti gets five life terms for attacks"। Toronto Starপ্রোকুয়েস্ট 438710369  templatestyles stripmarker in |id= at position 1 (সাহায্য)
  89. Stanage, Niall (৩ ফেব্রুয়ারি ২০০২)। "Death of innocents"The Sunday Business Post। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  90. Ben-Zur, Raanan (২৭ মার্চ ২০০৬)। "Sbarro terrorist 'not sorry'"Ynetnews। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  91. Dudkevitch, Margot; O'Sullivan, Arieh (১০ সেপ্টেম্বর ২০০১)। "Five killed as terror hits nationwide. First Israeli Arab suicide bomber strikes at Nahariya train station"The Jerusalem Post। ২০ ডিসেম্বর ২০০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  92. Amos Harel; Haim Shadmi (২৮ নভেম্বর ২০০১)। "Islamic Jihad, Fatah take responsibility for bus bombing"Haaretz। ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১২ 
  93. "Suicide Bomber kills 3 Israelis ahead of Bush-Sharon meeting"The Blade। Toledo। Knight Ridder, Associated Press। ৩০ নভেম্বর ২০১১। পৃষ্ঠা A2। ১৮ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১২ 
  94. "Suicide bombing at the Ben-Yehuda pedestrian mall in Jerusalem"Israel Ministry of Foreign Affairs। ১ ডিসেম্বর ২০০১। ১৮ জুন ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  95. Statistics | B'Tselem ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুলাই ২০১২ তারিখে
  96. "Sgt.-Maj.(res.) Yochai Porat"Israel Ministry of Foreign Affairs। ৩ মার্চ ২০০২। ৩০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  97. Suicide terror: understanding and confronting the threat। Wiley। ২০০৯। আইএসবিএন 978-0-470-08729-9  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Fal09" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  98. "Operation Defensive Shield: Palestinian Testimonies, Soldiers' Testimonies" (পিডিএফ)B'Tselem। জুলাই ২০০৭। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১২ 
  99. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Rub03 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  100. Mattar 2005, পৃ. 40।
  101. Neil Caplan, The Israel–Palestine Conflict: Contested Histories, ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ আগস্ট ২০২০ তারিখে John Wiley & Sons, 2011 p.167
  102. Galia Golan, Israeli Peacemaking Since 1967: Factors Behind the Breakthroughs and Failures ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ আগস্ট ২০২০ তারিখে Routledge, 2014 p.170.
  103. "Report of Secretary-General on recent events in Jenin, other Palestinian cities" (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। United Nations। ১ আগস্ট ২০০২। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  104. "Operation Defensive Shield (2002)"Ynetnews। ১২ মার্চ ২০০৯। ২৫ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  105. "Jenin's Terrorist Infrastructure"Israel Ministry of Foreign Affairs। ৪ এপ্রিল ২০০২। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৮ 
  106. Matt Rees (১৩ মে ২০০২)। Time https://web.archive.org/web/20141026160651/http://content.time.com/time/magazine/article/0,9171,1002406,00.html। ২৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  107. "UN says no massacre in Jenin"BBC News। ১ আগস্ট ২০০২। ৫ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১২ 
  108. Bennet, James (২ আগস্ট ২০০২)। "Death on the Campus: Jenin; U.N. Report Rejects Claims of a Massacre of Refugees"The New York Times। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১২ 
  109. "U.N. report: No massacre in Jenin"USA TodayAssociated Press। ১ আগস্ট ২০০২। ২৩ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  110. "Shielded from Scrutiny: IDF violations in Jenin and Nablus"Amnesty International। নভেম্বর ২০০২। পৃষ্ঠা 2। ২২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১২Amnesty International's extensive research ... led it to conclude that ... some of the actions amounted to ... war crimes. 
  111. "Jenin: IDF Military Operations" (পিডিএফ)Human Rights Watch। মে ২০০২। পৃষ্ঠা 3। ১১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১২Human Rights Watch's research demonstrates that, during their incursion into the Jenin refugee camp, Israeli forces committed serious violations of international humanitarian law, some amounting prima facie to war crimes.  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "HRW May" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  112. Paul Martin (১ মে ২০০২)। "Jenin 'massacre' reduced to death toll of 56"The Washington Times। ১৫ এপ্রিল ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  113. "Jenin"Human Rights Watch। ২ মে ২০০২। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  114. Harel, Amos; Issacharoff, Avi (২০০৪)। Ha-Milḥamah ha-shevi'it: ekh nitsaḥnu ṿe-lamah hifsadnu ba-milḥamah 'im ha-Palesṭinim המלחמה השביעית : איך ניצחנו ולמה הפסדנו במלחמה עם הפלסטינים (হিব্রু ভাষায়)। Yediot Aharonot। পৃষ্ঠা 257–258। আইএসবিএন 978-965-511-767-7 
  115. Audeh, Ida (২০০২)। "Narratives of Siege: Eye-Witness Testimonies from Jenin, Bethlehem, and Nablus": 13। আইএসএসএন 0377-919Xডিওআই:10.1525/jps.2002.31.4.13। ২৮ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১২ 
  116. "Report of the Secretary-General prepared pursuant to General Assembly resolution ES-10/10"United Nations। ৬ আগস্ট ২০০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০০৬ 
  117. "Ariel Cohen on Mideast & Church of the Nativity on National Review Online"web.archive.org। ২০১১-০৮-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৯ 
  118. https://zenit.org/articles/franciscan-proposal-to-end-siege-of-bethlehem-basilica/ "The Nativity Sin; War crimes in Bethlehem" |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) 
  119. "Texts: Palestinian truces"BBC News। ২৯ জুন ২০০৩। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৪ 
  120. Alan Philps (২৩ জুন ২০০৩)। "Israel defends Hamas death"The Daily Telegraph। ৪ জুন ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  121. "Israelis flatten West Bank shops"BBC News। ২১ জানুয়ারি ২০০৩। ১৯ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১০ 
  122. "Razing Rafah: Mass Home Demolitions in the Gaza Strip"Human Rights Watch। ২৪ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০০৬ 
  123. "Gunmen kill Jewish settler family"BBC News। ৩ মে ২০০৪। ২ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  124. "Pregnant mum and four children gunned down"The Sydney Morning Herald। ৩ মে ২০০৪। ১২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-০১ 
  125. Silverin, Eric (৩ মে ২০০৪)। "Pregnant mum and her four children killed in terror attack"Irish Independent। ১৫ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-০১ 
  126. "Israel/Occupied Territories: AI condemns murder of woman and her four daughters by Palestinian gunmen"Amnesty International। ৪ মে ২০০৪। ২২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  127. McGreal, Chris (১৬ অক্টোবর ২০০৪)। "Army pulls back from Gaza leaving 100 Palestinians dead"The Guardian। ২৬ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১০ 
  128. "Moral Quagmire"The Jewish Week। ৩ ডিসেম্বর ২০০৪। ৪ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  129. Ben Lynfield (২৬ নভেম্বর ২০০৪)। "Israeli army under fire after killing girl"The Christian Science Monitor। ১৩ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  130. Hila Raz (২০ জানুয়ারি ২০১০)। "Does it pay to sue for libel in Israel?"Haaretz। ৯ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  131. "Palestinians sift rubble after Israel's Gaza assault"Reuters। ১৬ অক্টোবর ২০০৪। ২৮ জুন ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  132. "Fatah Hawaks attack" 
  133. "Sharon suspends contacts with Palestinian Authority"। CNN। ১৪ জানুয়ারি ২০০৫। ৫ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  134. "Israel cuts Palestinian contacts"BBC News। ১৪ জানুয়ারি ২০০৫। ১৬ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১০ 
  135. "Mid-East leaders announce truce"BBC News। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৫। ১৪ জুন ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১০ 
  136. "Abbas orders security crackdown"BBC News। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০০৫। ৩ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১০ 
  137. Schachter, Jonathan (২০১০)। "The End of the Second Intifada?" (পিডিএফ): 63–69। ৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৭  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "Schachter" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  138. Sever Plocker (২২ জুন ২০০৮)। "2nd Intifada Forgotten"Ynetnews। ১৯ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  139. Ruth Tenne (Autumn ২০০৭)। "Rising of the oppressed: the second Intifada"। ৮ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০০৯ 
  140. "Timeline (Chronology) of Israel and Zionism 1993–present day"। ZioNation। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  141. Brad A. Greenberg (৩ ডিসেম্বর ২০০৮)। "UC to Reopen Study in Israel"The Jewish Journal of Greater Los Angeles। ২৪ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  142. Wedeman, Ben; Raz, Guy (২০০৫)। "Palestinian, Israeli leaders announce cease-fire"CNN। ১২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৭ 
  143. Gilmore, Inigo (৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৫)। "Palestinian ceasefire ends four-year intifada"The Daily Telegraph। ১২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১০ 
  144. Levitt, Matthew (২০০৫)। "Sustaining an Israeli-Palestinian Ceasefire"The Washington Institute। ১০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৭ 
  145. "Hamas, Jihad Commit to Truce Provided Israel Reciprocates [Mechanism to attack Israel if Israel acts]"। Palestine Media Center – PMC [Official PA website]। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৫। ১০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৭ 
  146. Goldenberg, Suzanne (২৯ সেপ্টেম্বর ২০০০)। "Rioting as Sharon visits Islam holy site"The Guardian। ১১ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  147. Mitchell, George J. (৩০ এপ্রিল ২০০১)। "Report of The Sharm el-Sheikh Fact-Finding Committee"UNISPAL। পৃষ্ঠা 4। ২৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  148. Gelvin, James L. (২০০৭)। The Israel-Palestine conflict: one hundred years of war (2nd সংস্করণ)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 243। আইএসবিএন 978-0-521-71652-9 
  149. "Al-Aqsa Intifada timeline"BBC News। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৪। ২ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  150. Dark Times, Dire Decisions: Jews and Communism। Studies in Contemporary Jewry। Oxford University Press। ২০০৫। পৃষ্ঠা 311। আইএসবিএন 978-0-19-518224-8 
  151. George J. Mitchell (৩০ এপ্রিল ২০০১)। "Report of The Sharm el-Sheikh Fact-Finding Committee"UNISPAL। ২৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪Mr. Sharon made the visit on September 28 accompanied by over 1,000 Israeli police officers. Although Israelis viewed the visit in an internal political context, Palestinians saw it as a provocation to start a fair intifadah. On the following day, in the same place, a large number of unarmed Palestinian demonstrators and a large Israeli police contingent confronted each other. 
  152. Cypel, Sylvain (২০০৬)। Walled: Israeli Society at an Impasse। Other Press। পৃষ্ঠা 6আইএসবিএন 978-1-59051-210-4 
  153. Alan Mittleman; Robert A. Licht (২০০২)। Jewish Polity and American Civil Society: Communal Agencies and Religious Movements in the American Public Sphere। Rowman & Littlefield। পৃষ্ঠা 161। আইএসবিএন 978-0-7425-2122-3 
  154. George J. Mitchell (৩০ এপ্রিল ২০০১)। "Report of The Sharm el-Sheikh Fact-Finding Committee"UNISPAL। ২৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  155. "Al-Aqsa Intifada timeline"BBC News। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৪। ২ জুলাই ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  156. "Suha Arafat admits husband premeditated Intifada"The Jerusalem Post। ২৯ ডিসেম্বর ২০১২। ১৪ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  157. Clinton, Bill (২০০৪)। My LifeRandom Houseআইএসবিএন 978-1-4000-3003-3 
  158. Jeremy Pressman (Fall ২০০৩)। "The Second Intifada: Backgrounds and Causes of the Israeli–Palestinian Conflict" (পিডিএফ)। ১৮ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  159. "Fallen soldier's father: I never thought this would happen"The Jerusalem PostITIM। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০০। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  160. "On This Day: 'Provocative' mosque visit sparks riots"BBC News। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০০। ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-০১Palestinians and Israeli police have clashed in the worst violence for several years at Jerusalem's holiest site, the compound around Al-Aqsa mosque. The violence began after a highly controversial tour of the mosque compound early this morning by hardline Israeli opposition leader Ariel Sharon. ... Soon after Mr Sharon left the site, the angry demonstrations outside erupted into violence. Israeli police fired tear gas and rubber-coated metal bullets, while protesters hurled stones and other missiles. Police said 25 of their men were hurt by missiles thrown by Palestinians, but only one was taken to hospital. Israel Radio reported at least three Palestinians were wounded by rubber bullets. ... Following Friday [September 29, 2000] prayers the next day, violence again broke out throughout Jerusalem and the West Bank. 
  161. Sontag, Deborah (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০০)। "Battle at Jerusalem Holy Site Leaves 4 Dead and 200 Hurt"The New York Times। ২৯ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪This morning, both sides started out tense, after clashes on Thursday [September 28, 2000] provoked by Mr. Sharon's visit. 
  162. "Israeli troops, Palestinians clash after Sharon visits Jerusalem sacred site"। CNN। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০০। ৮ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। A visit by Likud Party leader Ariel Sharon to the site known as the Temple Mount by Jews sparked a clash on Thursday [September 28, 2000] between stone-throwing Palestinians and Israeli troops, who fired tear gas and rubber bullets into the crowd.... Also Thursday [September 28, 2000], an Israeli soldier critically injured in a bomb attack on an army convoy in the Gaza Strip died of his wounds. 
  163. Gozani, Ohad (২৯ সেপ্টেম্বর ২০০০)। "Riot police clash with protesters at holy shrine"The Daily Telegraph। ১২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১০ 
  164. Menachem Klein (২০০৩)। The Jerusalem Problem: The Struggle for Permanent StatusUniversity Press of Florida। পৃষ্ঠা 97আইএসবিএন 978-0-8130-2673-2 
  165. "B'Tselem – Statistics – Fatalities – Israeli security force personnel killed by Palestinians in the Occupied Territories"B'Tselem। ৫ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  166. "B'Tselem – Statistics – Fatalities – Israeli civilians killed by Palestinians in the Occupied Territories"B'Tselem। ৫ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  167. Schulz and Hammer, 2003, pp. 134–136.
  168. Jeremy Pressman (Fall ২০০৩)। "The Second Intifada: Backgrounds and Causes of the Israeli–Palestinian Conflict" (পিডিএফ)। ১৮ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  169. Khaled Abu Toameh (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Arafat ordered Hamas attacks against Israel in 2000"The Jerusalem Post। ২৫ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  170. Mosab Hassan Yousef (২০১১)। Son of HamasTyndale House। পৃষ্ঠা 125–134। আইএসবিএন 978-1-85078-985-7। ১৮ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০২০ 
  171. David Samuels (সেপ্টেম্বর ২০০৫)। "In a Ruined Country: How Yasir Arafat destroyed Palestine"The Atlantic। ৩০ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  172. David Pratt (২০০৭)। Intifada: The Long Day of RageCasemate Publishers। পৃষ্ঠা 113আইএসবিএন 978-1-932-03363-2 
  173. "Suha Arafat admits husband premeditated Intifada"The Jerusalem Post। ২৯ ডিসেম্বর ২০১২। ১৪ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  174. Rubin, Barry M.; Rubin, Judith Colp (২০০৩)। Yasir Arafat: A Political BiographyOxford University Press। পৃষ্ঠা 204আইএসবিএন 978-0-19-516689-7 
  175. Thrall, Nathan (২০১৩-০৮-১৫)। "What Future for Israel?"The New York Review of Books (ইংরেজি ভাষায়)। 60 (13)। আইএসএসএন 0028-7504। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৯ 
  176. Gutman, Matthew (৪ আগস্ট ২০০৪)। "Aqsa Brigades Leader: Intifada in Its Death Throes"। The Jerusalem Post 
  177. "B'Tselem - Statistics - Fatalities"www.btselem.org। ২০১১-০৬-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৮ 
  178. Schiff, Ze'ev (২৪ আগস্ট ২০০৪)। "Israeli death toll in Intifada higher than last two wars"Haaretz। ৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "haaretz468469" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে
  179. "Breakdown of Fatalities: 27 September 2000 through 1 January 2005"International Institute for Counter-Terrorism। ৩ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  180. "Remember these Children"। ৯ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  181. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; casualties নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  182. B'Tselem – Statistics – Fatalities ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে, B'Tselem.
  183. Tamar Sternthal (২ নভেম্বর ২০০৮)। "Updated: In 2007, B'Tselem Casualty Count Doesn't Add Up"CAMERA। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  184. "Column one: What is Israel's problem?"The Jerusalem Post। ১০ মে ২০০৭। 
  185. Caroline B. Glick (৭ জানুয়ারি ২০১১)। "Column One: Agents of influence"The Jerusalem Post। ২৭ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  186. Tamar Sternthal (৭ জুলাই ২০০৩)। "B'Tselem, Los Angeles Times Redefine "Civilian""CAMERA। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  187. Sternthal, Tamar (২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "Bending the truth"Ynetnews। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮ 
  188. Gil Ronen (২৬ অক্টোবর ২০০৮)। "Researcher Slams B'Tselem as Inflating Arab Civilian Casualties"Arutz Sheva। ৩১ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  189. Tamar Sternthal (৩ জানুয়ারি ২০০৭)। "B'Tselem's Annual Casualty Figures Questioned"CAMERA। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  190. "Breakdown of Fatalities: 27 September 2000 through 1 January 2005"International Institute for Counter-Terrorism। ৩ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  191. "Two-thirds of Palestinians Killed in the West Bank This Year Did not Participate in the Fighting"B'Tselem। ৮ ডিসেম্বর ২০০৪। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  192. Benny Morris (২০০৯)। One State, Two States: Resolving the Israel/Palestine ConflictYale University Press। পৃষ্ঠা 151–152। আইএসবিএন 978-0-300-12281-7 
  193. "B'Tselem - Statistics - Fatalities"www.btselem.org। ২০১১-০৬-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০২-১৯ 
  194. Erika Waak (জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারি ২০০৩)। "Violence among the Palestinians"The HumanistAmerican Humanist Association। ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  195. Leonie Schultens (এপ্রিল ২০০৪)। "The 'Intra'fada or 'the chaos of the weapons': An Analysis of Internal Palestinian Violence"The Palestinian Human Rights MonitorPalestinian Human Rights Monitoring Group। ৬ জুন ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  196. Sean Maguire; Khaled Oweis (১০ জানুয়ারি ২০০৭)। "Exclusive-Hamas leader says Israel's existence is a reality"Reuters। ১৮ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  197. Harel, Amos (২৭ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Analysis / IAF strike on Gaza is Israel's version of 'shock and awe'"Haaretz। ১৩ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  198. "Israel braced for Hamas response"BBC News। ২ জানুয়ারি ২০০৯। ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১০ 
  199. "Israel pounds Gaza for fourth day"BBC News। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০০৯ 
  200. "Israel vows war on Hamas in Gaza"BBC News। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮ 
  201. "Israeli Gaza 'massacre' must stop, Syria's Assad tells US senator"Agence France-Presse। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮। ২২ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০০৯ 
  202. "Factions refuse Abbas' call for unity meeting amid Gaza massacre"Journal of Turkish WeeklyMa'an News Agency। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮। ২৪ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০০৯ 
  203. Adas, Basil (২৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Iraqi leaders discuss Gaza massacre"Gulf News। ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  204. "Hamas slammed the silent and still Arab position on Gaza massacre" – "Israel airstrikes on Gaza kill at least 205"Khaleej TimesDeutsche Presse-Agentur (DPA)। ২৭ ডিসেম্বর ২০০৮। ২৩ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  205. "it's impossible to contain the Arab and Islamic world after the Gaza massacre" – "Hamas denies firing rockets from Lebanon"Special Broadcasting ServiceAgence France-Presse। ৮ জানুয়ারি ২০০৯। ১৯ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০০৯ 
  206. "Arab Leaders Call for Palestinian Unity During "Terrible Massacre""Fox NewsAssociated Press। ৩১ ডিসেম্বর ২০০৮। ২২ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০০৯ 
  207. "Gulf leaders tell Israel to stop Gaza 'massacres'"Reuters। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৮। ১৮ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০০৯ 
  208. "OIC, GCC denounce massacre in Gaza"Arab News। ২৮ ডিসেম্বর ২০০৮। ১৮ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০০৯ 
  209. سباق دبلوماسي لوقف مذبحة غزةBBC News (আরবি ভাষায়)। ৫ জানুয়ারি ২০০৯। ৬ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০০৯ 
  210. "United Nations Security Council 6060th meeting (Click on the page S/PV.6060 record for transcript)"United Nations Security Council। ৩১ ডিসেম্বর ২০০৮। ১৭ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০০৯ 
  211. Ravid, Barak (১৮ জানুয়ারি ২০০৯)। "IDF begins Gaza troop withdrawal, hours after ending 3-week offensive"Haaretz। ১৭ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  212. "Remembering Israel's 2008 War on Gaza"। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  213. Yuval Azoulay (২ জানুয়ারি ২০০৯)। "Two IDF soldiers, civilian lightly hurt as Gaza mortars hit Negev"HaaretzAssociated Press। ২ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  214. Yagna, Yanir (২ এপ্রিল ২০০৮)। "Ten rockets hit southern Israel, one damages Ashkelon school"Haaretz। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  215. "Gaza Israel War in 2008-09" 
  216. "B'Tselem: Israeli security forces killed 660 Palestinians during 2006"Haaretz। ২৮ ডিসেম্বর ২০০৬। ১৩ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  217. Cohen, Samy (২০১০)। "Botched Engagement in the Intifada"। Israel's Asymmetric Wars। Palgrave Macmillan US। পৃষ্ঠা 73–91। আইএসবিএন 978-1-349-28896-0ডিওআই:10.1057/9780230112971_6 
  218. Efraim Benmelech; Claude Berrebi (Summer ২০০৭)। "Human Capital and the Productivity of Suicide Bombers" (পিডিএফ) (3): 223–238। ডিওআই:10.1257/jep.21.3.223। ৭ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  219. Matta, Nada; Rojas, René (২০১৬)। "The Second Intifada: A Dual Strategy Arena" (ইংরেজি ভাষায়): 66। আইএসএসএন 0003-9756ডিওআই:10.1017/S0003975616000035। ৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২২ 
  220. "Q&A: Gaza conflict"BBC News। ১৮ জানুয়ারি ২০০৯। ৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  221. "Gaza's rocket threat to Israel"BBC News। ২১ জানুয়ারি ২০০৮। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  222. "Hamas releases audio of captured Israeli"USA Today। ২৫ জুন ২০০৭। ২৯ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  223. "Timeline / 1,940 days from Gilad Shalit's abduction to his release"Haaretz। ১১ অক্টোবর ২০১১। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  224. Matthew Kalman (২০ জুন ২০০১)। "Two Israeli teenagers stoned to death"USA Today। ২০ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১২ 
  225. Marcus Gee (১০ মে ২০০১)। "Mr. Day Speaks the Truth"The Globe and Mail। Toronto। পৃষ্ঠা A.19। ২৪ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১২ 
    • Kalman, Mathew। "Two Israeli teenagers stoned to death 1"usatoday.comUSA TODAY.। ২০ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১২ 
    • Glee, Marcus। "Mr. Day Speaks the Truth 2"The Globe and MailThe Globe and Mail। Archived from the original on ২৪ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১২ 
    • Katz, Yakoov। "IDF nabs Ze'ev Kahane's murderer"The Jerusalem Post | Jpost.comThe Jerusalem Post। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
    • Hershman, Tania। "Israel's 'First Internet Murder"WiredWired। Archived from the original on ১৯ অক্টোবর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০১ 
    • "The Murder of Ofir Rahum"। Israel Government Portal., Inc.। Archived from the original on ২২ অক্টোবর ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০০৭ 
    • Katz, Yaakov (৭ মার্চ ২০০৮)। ""Eight killed at Jerusalem school""। BBC News.। ৯ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
    • ""Terror Attack At Jerusalem Seminary – Merkaz HaRav Yeshiva – 8 Dead""। National Terror Alert Response Center.। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
    • ""Jerusalem seminary attacked""। United Press International। Archived from the original on ৮ মার্চ ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০০৮ 
  226. Assaf Zohar (১৭ অক্টোবর ২০০১)। "Minister of Tourism Rehavam Zeevi assassinated at point-blank range in Jerusalem Hyatt"Globes। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  227. Phil Reeves। "'Get tough' call to Sharon as Jewish boys stoned to death"Irish Independent। ২৬ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১১ 
    • Alan, Philips (১৩ অক্টোবর ২০২০)। "A day of rage, revenge and bloodshed"The Daily Telegraph.। Archived from the original on ১৪ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১২ 
    • "Get tough' call to Sharon as Jewish boys stoned to death"Irish Independent.। ২৬ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১১ 
    • Smith, John (১৩ অক্টোবর ২০০০)। "Lynch mob's brutal attack"BBC News। ২৯ জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০০৪ 
    • Raymond, Whitaker (১৪ অক্টোবর ২০০০)। "A strange voice said: I just killed your husband"The Independent London.। Archived from the original on ১৫ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২১ 
  228. Luft, Gal (জুলাই–আগস্ট ২০০২)। "The Palestinian H-Bomb: Terror's Winning Strategy" (4): 2–7। জেস্টোর 20033234ডিওআই:10.2307/20033234। ২৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  229. "Terrorist organizations exploit UNRWA vehicles: during the Israeli army operation in the Zeitun quarter of Gaza, UNWRA vehicles were used to smuggle armed terrorists out of the area and in all probability remains of Israeli soldiers as well"Intelligence and Terrorism Information Center at the Center for Special Studies (C.S.S)। মে ২০০৪। ৩ জুন ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  230. Snitz, Kobi (১৫ ডিসেম্বর ২০০৪)। "We are all Ahmed Awwad: Lessons in Popular Resistance"Znet। ১৮ এপ্রিল ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  231. "Palestinian Nonviolent Resistance to Occupation Since 1967" (পিডিএফ)Faces of Hope। American Friends Service Committee। Fall ২০০৫। ৭ নভেম্বর ২০০৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  232. "Palestinian non-violent resistance"। Mazin Qumsiyeh। ২৭ আগস্ট ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  233. Kaufman, Maxine। "Peace Magazine v20n4p22: A Glimpse of Palestinian Nonviolence"Peace Magazine। ৭ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  234. Elmer, Jon। "Protest, Grief as Barrier Segregates Palestinian Village from Farms"The NewStandard। ৫ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  235. "News From Within-> Home Numbers"। ১৩ জুন ২০০১। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  236. "Budrus has a hammer"ZNet। ১৭ মার্চ ২০০৫। ১৮ এপ্রিল ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  237. "Palestinian non-violent resistance continues: the experience of Beit Sira"Palestine Monitor। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। ২৭ মে ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  238. Jumá, Jamal (২৬ মার্চ ২০০৫)। "The great divide"The Hindu। Archived from the original on ৬ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  239. Jamal Jumá (৭–১৩ এপ্রিল ২০০৫)। "Palestine is not for sale!"Al-Ahram। ২৫ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  240. "Palestinian Christians Call for Non-Violent Resistance"National Council of Churches। ১০ মে ২০০২। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১১ 
  241. "Israel and the Occupied Territories and the Palestinian Authority: Act Now to Stop the Killing of Children!"। Amnesty International। ২০ নভেম্বর ২০০৪। ২২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৮ 
  242. Gabi Siboni, Defeating Suicide Terrorism in Judea and Samaria, 2002–2005 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ আগস্ট ২০১৬ তারিখে, "Military and Strategic Affairs", Volume 2, No. 2, October 2010.
  243. "School of Politics and International Studies – Site Homepage" (পিডিএফ)। School of Politics and International Studies। 
  244. Bergman, Ronen (৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। "How Israel Won a War but Paid a High Moral Price"Foreign Policy। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  245. Milanovic, Marko (জুন ২০০৭)। "Lessons for human rights and humanitarian law in the war on terror: comparing Hamdan and the Israeli Targeted Killings case" (পিডিএফ): 375। ডিওআই:10.1017/S181638310700104X। ১০ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৫ 
  246. "UN envoy condemns Israel's extra-judicial assassinations"। UN News Centre। ২৫ আগস্ট ২০০৩। ১২ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  247. Wilson, Scott (১৫ ডিসেম্বর ২০০৬)। "Israeli High Court Backs Military On Its Policy of 'Targeted Killings'"The Washington Post। ২০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  248. Tavernise, Sabrina (২৬ জানুয়ারি ২০০৯)। "In Gaza, the Wait to Rebuild Lingers"The New York Times। পৃষ্ঠা A6। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  249. "EU warns against 'collective punishment' in Gaza"Reuters। ২৯ অক্টোবর ২০০৭। ২ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  250. Ruebner, Josh (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "U.S. Can't Afford Military Aid to Israel"The Huffington Post। ১৮ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১০ 
  251. Mearsheimer, John; Walt, Stephen (২০০৮)। The Israel Lobby and U.S. Foreign PolicyFarrar, Straus and Girouxআইএসবিএন 978-0-374-53150-8 
  252. O'Sullivan, Arieh; Friedson, Felice (৩ মার্চ ২০১০)। "Jewish-Agency-style 'Palestine Network; launched in Bethleh"The Jerusalem Post। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  253. "Is ISM pro-terrorisr?" 
  254. מכון ב.י. ולוסיל כהן למחקרי דעת קהלsocial-sciences.tau.ac.il। ২ জুন ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  255. מדד השלום (পিডিএফ) (হিব্রু ভাষায়)। The Tami Steinmetz Center for Peace Research। মে ২০০৪। Archived from the original on ৮ নভেম্বর ২০০৬। 
  256. Tabarani, Gabriel G. (২০০৮)। Israeli-Palestinian Conflict: From Balfour Promise to Bush Declaration: THE COMPLICATIONS AND THE ROAD FOR A LASTING PEACE। AuthorHouse। পৃষ্ঠা 242–243। আইএসবিএন 978-1-4343-7237-6। ১৮ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৬ 
  257. Tabarani, Gabriel G. (২০০৮)। Israeli-Palestinian Conflict: From Balfour Promise to Bush Declaration: THE COMPLICATIONS AND THE ROAD FOR A LASTING PEACE। AuthorHouse। পৃষ্ঠা 242–243। আইএসবিএন 978-1-4343-7237-6। ১৮ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৬ 
  258. "PALESTINIAN ECONOMY, SOCIETY, AND THE SECOND INTIFADA" (পিডিএফ)  line feed character in |শিরোনাম= at position 46 (সাহায্য)

গ্রন্থাবলী

[সম্পাদনা]

পত্রিকা প্রতিবেদন

[সম্পাদনা]

প্রবন্ধ

[সম্পাদনা]