দ্বিতীয় বায়েজীদ بايزيد ثانى | |
---|---|
উসমানীয় সুলতান | |
৮ম উসমানীয় সুলতান | |
রাজত্বকাল | ৩ মে ১৪৮১ – ২৬ মে ১৫১২ |
পূর্বসূরি | দ্বিতীয় মুহাম্মদ |
উত্তরসূরি | প্রথম সেলিম |
জন্ম | ৩ ডিসেম্বর ১৪৪৭ |
মৃত্যু | ২৬ মে ১৫১২ |
সমাধি | |
স্ত্রী | নিগার হাতুন শিরিন হাতুন গুলরুহ হাতুন বুলবুল হাতুন হুসনুশাহ হাতুন গুলবাহার হাতুন ফেরাহশাদ হাতুন |
রাজবংশ | উসমানীয় রাজবংশ |
পিতা | দ্বিতীয় মুহাম্মদ |
মাতা | গুলবাহার খাতুন বা সিত্তিশাহ হাতুন |
ধর্ম | সুন্নি ইসলাম |
তুগরা |
দ্বিতীয় বায়েজীদ (৩ ডিসেম্বর ১৪৪৭ – ২৬ মে ১৫১২) (উসমানীয় তুর্কি: بايزيد ثانى Bāyezīd-i sānī, তুর্কি:II. Bayezid বা II. Beyazıt) ছিলেন উসমানীয় সুলতান। ১৪৮১ থেকে ১৫১২ সাল পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করেছেন। বায়েজীদ সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদের জ্যেষ্ঠ পুত্র। বায়েজীদ তার শাসনামলে উসমানীয় সাম্রাজ্যের শক্তি বৃদ্ধি করেন। মুসলিমদের তৎকালীন (আল আন্দালুস) স্পেন এর শেষ রাজ্য গ্রানাডা পতনের পর মুসলিমদের নির্বাসন, হত্যাযজ্ঞ আলহাম্বরা ডিক্রি ঘোষণার পর উসমানীয় সাম্রাজ্যে স্পেনের মুসলিম ও ইহুদিদের আশ্রয় ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি খ্যাত।
সিংহাসন নিয়ে বায়েজীদের সাথে তার ভাই জেমের প্রতিদ্বন্দ্বীতা তৈরী হয়। জেম সিংহাসন দাবি করে মিশরের মামলুকদের কাছ থেকে সহায়তা চান। জেম বায়েজীদের কাছে পরাজিত হন এবং এরপর রোডসের নাইটদের কাছে আশ্রয় নেন। নাইটরা তাকে পোপ অষ্টম ইনোসেন্টের কাছে সোপর্দ করে। পোপ ইউরোপ থেকে তুর্কিদের তাড়ানোর জন্য জেমকে ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু পোপের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
বায়েজীদ ১৪৮১ সালে উসমানীয় সিংহাসনে বসেন।[১] বায়েজীদ তার পিতার মত প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির স্বাভাবিক গতি নিশ্চিত করেছিলেন বলে তিনি "ন্যায়পরায়ণ" নামে পরিচিত হয়েছিলেন। তিনি মোরিয়ার ভেনিসিয়ানদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছেন। ১৫০১ সালে ভেনিসিয়ানদের সাথে যুদ্ধ সমাপ্ত হয় এবং বায়েজীদ সমগ্র পেলোপোনিসের নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন। পূর্বাঞ্চলের বিদ্রোহ বায়েজীদের শাসনামলে অস্থিরতা তৈরী করেছিল। এতে অনেক সময় ইরানের শাহ প্রথম ইসমাইল মদদ দিয়েছেন।
১৪৯২ সালের জুলাই স্প্যানিশ ইনকুইজিশনের সময় স্পেনের মুসলিম ও ইহুদিদের বহিষ্কার করা হয়। সেই বছর বহিষ্কৃতদের নিরাপদে উসমানীয় সাম্রাজ্যে আনার জন্য এডমিরাল কামাল রেইসের নেতৃত্বে বায়েজীদ উসমানীয় জাহাজ পাঠান। তিনি উদ্বাস্তুদের স্বাগত জানানোর জন্য সাম্রাজ্য জুড়ে ঘোষণা দেন।[২] উদ্বাস্তুরা উসমানীয় সাম্রাজ্যে বসবাসের অনুমতি পায়। দক্ষ প্রজাদের বহিষ্কার করাকে কেন্দ্র করে তিনি রাজা ফার্ডিনেন্ড ও রাণী ইসাবেলাকে নিয়ে উপহাস করে বলেছিলেন "তোমরা ফার্ডিনেন্ডকে জ্ঞানী শাসক বল, যে নিজের দেশকে দরিদ্র করে আমার দেশকে ধনী করেছে!"[৩] সাম্রাজ্যের ইউরোপীয় প্রদেশের গভর্নরদের প্রতি তিনি ফরমান জারি করে ঘোষণা দেন যে স্প্যানিশ উদ্বাস্তুদেরকে শুধু আশ্রয় দিলেই হবে না বরণ তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে হবে।[৩] আন্দালুসের মুসলিম ও ইহুদিরা উসমানীয় সাম্রাজ্যে নতুন ধ্যানধারণা, প্রক্রিয়া ও হস্তশিল্পের প্রচলন করে সাম্রাজ্যকে সমৃদ্ধ করে। ১৪৯৩ সালে সেফারডিক ইহুদিরা কনস্টান্টিনোপলে প্রথম ছাপাখানা চালু করে।
বায়েজীদের শেষজীবনে তার পুত্র শাহজাদা আহমেদ ও শাহজাদা সেলিমের মধ্যে উত্তরাধিকারের লড়াই শুরু হয়। আহমেদ কারামান শহর অধিকার করে কনস্টান্টিনোপলের দিকে অগ্রসর হন। সেলিম থ্রেসে একটি বিদ্রোহ সংঘটিত করেন কিন্তু বায়েজীদ তাকে পরাজিত করতে সক্ষম হন। ফলে সেলিম ক্রিমিয়া উপদ্বীপে পালিয়ে যান।
সেলিম ক্রিমিয়া থেকে ইয়ানিসারিদের সমর্থনে বায়েজীদকে সিংহাসন ত্যাগে বাধ্য করেন। বায়েজীদ দেমোতিকায় অবসর জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌছানোর পূর্বে ১৫১২ সালের ২৬ মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ইস্তানবুলের বায়েজীদ মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।
উইকিমিডিয়া কমন্সে দ্বিতীয় বায়েজীদ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
দ্বিতীয় বায়েজীদ জন্ম: ৩ ডিসেম্বর ১৪৪৭ মৃত্যু: ২৬ মে ১৫১২
| ||
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী দ্বিতীয় মুহাম্মদ |
উসমানীয় সুলতান ৩ মে ১৪৮১ – ২৫ এপ্রিল ১৫১২ |
উত্তরসূরী প্রথম সেলিম |
Titles in pretence | ||
পূর্বসূরী দ্বিতীয় মুহাম্মদ |
বাইজেন্টাইন সম্রাট | সালতানাতের সাথে একীভূত |
ইসলামের খলিফা | উত্তরসূরী প্রথম সেলিম |