দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান | |
---|---|
![]() পোস্টার | |
পরিচালক | ফিলিপ নয়েস |
প্রযোজক | স্ট্যাফান আরেনবার্গ উইলিয়াম হরবার্গ |
রচয়িতা | ক্রিস্টোফার হ্যাম্পটন রবার্ট শেনকান |
শ্রেষ্ঠাংশে | মাইকেল কেইন ব্রেন্ডন ফ্রেজার দো থি হ্যায় ইয়েন |
সুরকার | ক্রেগ আর্মস্ট্রং |
চিত্রগ্রাহক | ক্রিস্টোফার ডয়েল |
সম্পাদক | জন স্কট |
পরিবেশক | মিরাম্যাক্স ফিল্মস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১০১ মিনিট |
দেশ | জার্মানি যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | ৩০ মিলিয়ন ডলার |
আয় | ২,৭৬,৭৪,১২৪ ডলার |
দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া ১৯৫৫ সালের ভিয়েতনাম যুদ্ধের ভিত্তিতে রচিত গ্রাহাম গ্রাহাম গ্রিনের বেস্টসেলিং উপন্যাস দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান-এর চলচ্চিত্র রূপায়ন। এটি পরিচালনা করেছেন ফিলিপ নয়েস এবং এতে অভিনয় করেছেন মাইকেল কেইন, ব্রেন্ডন ফ্রেজার এবং দো থি হ্যায় ইয়েন।
দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান এর ১৯৫৮ সালের পূর্ববর্তী চলচ্চিত্র সংস্করণের বিপরীতে ২০০২ সংস্করণে গ্রিনের মূল উপসংহার এবং প্রধান আমেরিকান চরিত্র পাইলের আচরণ চিত্রিত করা হয়েছে। উপন্যাসের মতো চলচ্চিত্রটিতে ফরাসী ঔপনিবেশিক সরকার এবং ভিয়েত মিনকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে পাইলের নৈতিক অপরাধের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গ্রিনের মূল কাজকে ছাড়িয়ে এই ছবিতে ভিয়েতনাম যুদ্ধের মধ্যবর্তী দশক থেকে আমেরিকান সৈন্যদের সুপার ইম্পোজ চিত্র সহ একটি পূর্ণাঙ্গতা দেওয়া হয়েছে।
মিরাম্যাক্স উত্তর আমেরিকা এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চলে ছবিটি বিতরণের অধিকারের জন্য ৫.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে, তবে ৯-১১ এর ঘটনা এবং চলচ্চিত্রটির "দেশপ্রেমহীন" বার্তার কারণে চলচ্চিত্রটি এক বছরের জন্য প্রদর্শনী স্থগিত করে।[১][২] ছবিটি শেষপর্যন্ত ২০০২ সালের নভেম্বরে অস্কারে যোগ্যতার জন্য মুক্তি পায় এবং যুক্তরাষ্ট্রে কিছু সংখ্যক প্রেক্ষগৃহে প্রদর্শিত হয় এবং ১২.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সমালোচনা পায় এবং মাইকেল কেইন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল।
১৯৫২ সালে ভিয়েতনামের সাইগনে (তৎকালীন ফরাসি ইন্দোচীন) প্রথম ইন্দোচীন যুদ্ধের (১৯৪৬-১৯৫৪) শেষ দিকে ফরাসি বাহিনীর সাথে কমিউনিস্ট-নেতৃত্বাধীন ভিয়েত মিন বিদ্রোহীদের লড়াইকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্রটির কাহিনী গড়ে উঠেছে। এক দিকে দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান একটি ত্রিভুজ প্রেমের গল্প, যেখানে পঞ্চাশের দশকের ব্রিটিশ সাংবাদিক টমাস ফওলার; আমেরিকান আদর্শবাদী সাহায্য কর্মী অ্যালডেন পাইল নামের তরুণ আর ফু নামে এক ভিয়েতনামী মেয়ের মধ্যে গড়ে উঠে। অন্যদিকে এটি ক্রমবর্ধমানভাবে আমেরিকার যুদ্ধে জড়িত হওয়ার কাহিনীও যে যুদ্ধ পুরোপুরি ভিয়েতনামে আমেরিকার যুদ্ধের দিকে মোড় নেয়।
একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বাদ দিলে কাহিনী বর্ণনাকারি টমাস ফওলার (মাইকেল কেইন) কেবলমাত্র একজন প্রতিবেদক, অনিবন্ধিত পর্যবেক্ষক হিসাবে যুদ্ধে জড়িত ছিল। আমেরিকার এবং ভিয়েতনামে আমিরিকার নীতির প্রতিনিধিত্বকারি পাইল (ব্রেন্ডন ফ্রেজার) কে আমেরিকার স্বার্থ অনুসারে যুদ্ধ চালানোর জন্য একজন সিআইএ এজেন্ট হিসাবে পাঠানো হয়েছিল এবং সে আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির তাত্ত্বিক ইয়র্ক হার্ডিংয়ের ধারণার প্রতি মনেপ্রাণে ভক্ত ছিল। হার্ডিং বলেছিল ভিয়েতনামে উপনিবেশবাদী এবং ভিয়েতনামী বিদ্রোহী উভয়ের জায়গা গ্রহণ করা এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি "তৃতীয় শক্তি" দরকার। পাইল দুর্নীতিগ্রস্ত মিলিশিয়া নেতা জেনারেল থের (প্রকৃত নাম ত্রিন মিন থে) নেতৃত্বে ভিয়েতনামি উপদল ব্যবহার করে ফরাসী এবং ভিয়েত মিনের বিরুদ্ধে "তৃতীয় শক্তি" তৈরি করার পরিকল্পনা করে। আমেরিকার অস্ত্রের সাহায্যে থে’র মিলিশিয়া বাহিনী সাইগনে একাধিক সন্ত্রাসী বোমা হামলা চালায়। আমেরিকা চাতুর্যতার সাথে কমিউনিস্টদের উপর এই বোমা হামলার দায় চাপিয়ে অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং নারী ও শিশু সহ অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
এদিকে পাইল বিয়ে ও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফওলারের ভিয়েতনামী প্রণয়িনী ফুং (দো থি হ্যায় ইয়েন) কে করায়ত্ত করে। ফওলার যখন বোমা হামলায় পাইলের জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে পারে, তখন সে তাদের শেষ ব্যবস্থা করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়। সে তার সহকারী হিন (তজি মা) এবং হিন-এর কমিউনিস্ট সহচরদের পাইলের মুখোমুখি করতে পরোক্ষভাবে রাজি হয়; পাইল পালানোর চেষ্টা করলে হিন তাকে মারাত্মকভাবে ছুরিকাঘাত করে। পরবর্তীতে ফুং ফওলারের কাছে ফিরে আসে এবং স্থানীয় ফরাসী পুলিশ কমান্ডার (রাদে সার্বেদজিজা) পাইলের হত্যায় ফওলারের ভূমিকা সম্পর্কে সন্দিহান থাকলেও তার কোনও প্রমাণ পায়নি এবং বিষয়টির পেছনে আর ছোটেনি।
এই ছবিটির চিত্রায়ন ভিয়েতনামের হ্যানয়, সাইগন, নেন বান এবং হোই অ্যান-এ করা হয়।
চলচ্চিত্রটি সমালোচকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সমালোচনা লাভ করে, কারণ বর্তমানে এটি ১৫৬ টি পর্যালোচনার ভিত্তিতে রটেন টম্যাটোসে ৮৭% রেটিং এবং ঐক্যমত্য ভিত্তিতে গড়ে ৭.৬৫/১০ রেটিং পায়:"চিন্তাশীল এবং আশ্চর্যরূপে অভিনয়ের মাধ্যমে দ্য কোয়ায়েট আমেরিকান গ্রিন এর উপন্যাসের মর্ম ধারণ করতে পেরেছে।"[৩] ৩৯ টি সমালোচনার উপর ভিত্তি করে মেটাক্রিটিকে ১০০ এর মধ্যে ৮৪ রেটিং লাভ করে, যা "সার্বজনীন প্রশংসা" নির্দেশ করে ।[৪]
প্রাথমিক সম্পাদনার পর দর্শকদের সামনে প্রথম পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী ২০০১ সালের ১০ ই সেপ্টেম্বর হয় এবং ইতিবাচক রেটিং পায়। যাইহোক ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পরের দিন প্রদর্শনী হয় এবং পরবর্তী প্রতিটি প্রদর্শনীর সাথে দর্শকের রেটিং হ্রাস পায়। ছবিটির "দেশপ্রেমহীন" বার্তার সমালোচনার কারণে মিরাম্যাক্স এক বছরের জন্য এই চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী স্থগিত রাখে। অবশেষে এটি ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রকাশ্যে প্রদর্শিত হলে সমালোচকদের প্রশংসার লাভ করে। চলচ্চিত্রটি ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে অস্কারের যোগ্যতা লাভের কথা প্রকাশ পায় এবং ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে সীমিত আকারে মুক্তি পায়।[১]
আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট পুরস্কার
লন্ডন চলচ্চিত্র সমালোচক সার্কেল পুরস্কার
চলচ্চিত্র সমালোচক জাতীয় সমাজ পুরস্কার