![]() প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ | |
লেখক | জে. ডি. স্যালিঞ্জার |
---|---|
প্রচ্ছদ শিল্পী | ই. মাইকেল মিচেল[১][২] |
প্রকাশনার স্থান | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
ধরন | নিষ্পাপত্ব, পরিচয়, বিচ্ছেদ, সংযোগ, যৌনতা, বিষণ্ণতা |
প্রকাশিত | ১৬ জুলাই ১৯৫১ |
প্রকাশক | লিটল, ব্রাউন অ্যান্ড কোম্পানি |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রিত গ্রন্থ |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ২৩৪ (পরিবর্তন হতে পারে) |
ওসিএলসি | ২৮৭৬২৮ |
মূল পাঠ্য | উইকিসংকলনে দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই |
অনুবাদ | দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই উইকিসংকলনে |
দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই মার্কিন লেখক জে. ডি. স্যালিঞ্জার রচিত একটি উপন্যাস। এটি প্রথমে ১৯৪৫-৪৬ সালে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়, পরে ১৯৫১ সালে পূর্ণাঙ্গ উপন্যাস হিসেবে প্রকাশিত হয়। মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লেখা হলেও এটি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও ব্যাপক জনপ্রিয়, কারণ এতে সমাজের ভণ্ডামির সমালোচনা এবং বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।[৩][৪] উপন্যাসটিতে আরও আলোচিত হয়েছে নিষ্পাপত্ব, পরিচয়, সমাজে মিশে যাওয়া, বিচ্ছেদ, সংযোগ, যৌনতা এবং বিষণ্ণতার মতো বিষয়। এর প্রধান চরিত্র হোল্ডেন কলফিল্ড কিশোর বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে উঠেছে।[৫] প্রায় প্রাপ্তবয়স্ক হোল্ডেন কাহিনির বর্ণনায় বিভিন্ন বিষয়ে তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করে।
দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই বিশ্বের বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে।[৬] প্রতি বছর গড়ে দশ লাখ কপি বিক্রি হয়, আর এ পর্যন্ত বইটির মোট বিক্রি ৬.৫ কোটিরও বেশি।[৭] টাইম ম্যাগাজিন ২০০৫ সালে একে "১৯২৩ সালের পর লেখা সেরা ১০০টি ইংরেজি উপন্যাসের" তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৮] মডার্ন লাইব্রেরি এবং এর পাঠকদের মতে, এটি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা উপন্যাস।[৯][১০][১১] ২০০৩ সালে, বিবিসি-র "দ্য বিগ রিড" জরিপে এটি ১৫তম স্থান অর্জন করে।
হোল্ডেন কলফিল্ড তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সপ্তাহান্তের ঘটনা স্মরণ করছে যা আগের বছরের বড়দিনের ঠিক আগে ঘটেছিল। গল্পের শুরু হয় পেনসিলভানিয়ার একটি বোর্ডিং স্কুল পেন্সি প্রিপারেটরি অ্যাকাডেমিতে, যেখান থেকে সে সব বিষয়ে ফেল করায় (শুধু ইংরেজি বাদে) বহিষ্কৃত হয়েছে।
পরে, হোল্ডেন তার রুমমেট ওয়ার্ড স্ট্র্যাডলেটারের জন্য একটি ইংরেজি রচনা লেখার প্রস্তাবে রাজি হয়, কারণ স্ট্র্যাডলেটার ডেটে যেতে ব্যস্ত। কিন্তু হোল্ডেন হতাশ হয়ে পড়ে যখন জানতে পারে স্ট্র্যাডলেটারের ডেট আসলে জেন গ্যালাগার, যার প্রতি সে অনেকদিন ধরে নিজের আবেগ পোষণ করে আসছে। স্ট্র্যাডলেটার অনেকক্ষণ পর ফিরে আসে, কিন্তু হোল্ডেনের লেখা গভীর ও ব্যক্তিগত রচনাটিকে একদমই গুরুত্ব দেয় না। সে রচনাটি লিখেছিল তার ছোট ভাই অ্যালির বেসবল গ্লাভস নিয়ে যে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বহু বছর আগে মারা গিয়েছিল। স্ট্র্যাডলেটার আরও বিরক্ত করে হোল্ডেনকে, কারণ সে পরিষ্কারভাবে জানায় না যে সে জেনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছে কি না। ক্ষুব্ধ হয়ে হোল্ডেন তাকে ঘুষি মারে ও অপমান করে, কিন্তু স্ট্র্যাডলেটার সহজেই তাকে হারিয়ে দেয়।
এই "ভণ্ডামিতে ভরা" পেন্সি প্রিপ থেকে মুক্তি পেতে হোল্ডেন নিউ ইয়র্কের ট্রেনে চেপে বসে। সে সিদ্ধান্ত নেয়, বুধবার পর্যন্ত বাড়ি ফিরবে না—যতক্ষণে তার বাবা-মা তার বহিষ্কারের চিঠি পেয়ে যাবেন।
নিউ ইয়র্কে এক রাতের মধ্যেই তার কিছু অপ্রত্যাশিত ও তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়। এক যৌনকর্মী সানি ও তার দালাল মরিসের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাঁধে, যার ফলে সে মারধরের শিকার হয়। তার পুরনো পরিচিত স্যালি হেইসের সঙ্গে দেখা করে এবং তাকে একসঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়, কিন্তু স্যালি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সে তার পুরনো বন্ধু কার্ল লুসের সঙ্গেও দেখা করে এবং বারবার তার ব্যক্তিগত জীবন ও যৌনতা নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকে, যা লুসকে বিরক্ত করে। একসময় হোল্ডেন নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে, কিছু অপরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের সঙ্গে অস্বস্তিকরভাবে ফ্লার্ট করে, আবার স্যালিকে ফোন করে এবং শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি অর্থশূন্য হয়ে পড়ে।
নস্টালজিয়ায় ভেসে গিয়ে ছোট বোন ফিবিকে দেখার ইচ্ছে হয় হোল্ডেনের। তাই যখন তারা বাইরে ছিল, চুপিচুপি ঢুকে পড়ে বাবা-মায়ের অ্যাপার্টমেন্টে। সে ফিবিকে ঘুম থেকে তুলে কথা বলে। ফিবি প্রথমে খুশি হলেও দ্রুতই বুঝে ফেলে যে হোল্ডেন আবার বহিষ্কৃত হয়েছে। সে তাকে ধমক দেয় তার উদাসীনতা আর জীবন নিয়ে দিশাহীনতার জন্য।
ফিবি জানতে চায়, হোল্ডেন আদৌ কোনো কিছুর প্রতি যত্নশীল কি না। জবাবে হোল্ডেন এক ধরনের কল্পনার কথা শেয়ার করে (রবার্ট বার্নসের কামিং থ্র দ্য রাজ কবিতার লাইন ভুলভাবে শোনার ওপর ভিত্তি করে) সে নিজেকে কল্পনা করে এক সুবিশাল রাই ক্ষেতের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা এক অভিভাবক হিসেবে, যে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ধরে ফেলে যখন তারা খেলার ছলে গড়িয়ে পড়তে চায় এক পাশের গভীর খাদে। ফিবি তাকে সংশোধন করে জানায়, কবিতার আসল লাইন হলো: "হোয়েন অ্যা বডি মিট অ্যা বডি, কামিন’ থ্রু দ্য রাই", যার মানে হোল্ডেনের ভেবে নেওয়া অর্থ থেকে একেবারে আলাদা। এই কথায় হোল্ডেনের ভেতর যেন কিছু একটা সাড়া দেয়, সে কান্নায় ভেঙে পড়ে, আর তার বোন তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে।
এরপর, বাবা-মা বাসায় ফেরার আগেই সে পালিয়ে যায় এবং তার পুরোনো ইংরেজি শিক্ষক, মিস্টার অ্যান্টোলিনির কাছে আশ্রয় নেয়। মিস্টার অ্যান্টোলিনি তাকে সতর্ক করেন যে সে "একটা ভয়ংকর পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে" এবং তাকে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন। রাতটা সেখানে কাটানোর সুযোগ দিলেও, গভীর রাতে হোল্ডেন ঘুম ভেঙে দেখে মিস্টার অ্যান্টোলিনি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। মুহূর্তেই হোল্ডেনের মনে হয়, এটি হয়তো একটি অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন ইঙ্গিত। সে দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে আসে এবং এক গভীর হতাশার মধ্যে ডুবে যেতে যেতে গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল টার্মিনালের ওয়েটিং রুমে রাতের বাকি অংশ কাটায়।
সকালে শহরে থেকে অর্থপূর্ণ কোনো সংযোগ খুঁজে পাওয়ার আশা হারিয়ে হোল্ডেন সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিমে চলে যাওয়ার। সে কল্পনা করে, একেবারে নিভৃতে, বধির ও মূক হয়ে একটি কাঠের কেবিনে থাকার এবং একটি গ্যাস স্টেশনে কাজ করার, যেখানে কেউ তাকে বিরক্ত করবে না। যাওয়ার আগে সে ফিবির সঙ্গে দেখা করে তার পরিকল্পনা জানাতে চায় এবং বিদায় জানাতে চায়।
মধ্যাহ্নভোজের সময় তারা মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টে দেখা করে, কিন্তু ফিবি তখন এক চমক দেয়—সে একটি স্যুটকেস নিয়ে এসেছে এবং হোল্ডেনের সঙ্গে যাওয়ার বায়না ধরে। কিন্তু হোল্ডেন তাকে সঙ্গে নিতে রাজি হয় না, যা ফিবিকে প্রচণ্ড কষ্ট দেয়।
সে তার মন ভালো করার জন্য প্রস্তাব দেয়, তারা একসঙ্গে সেন্ট্রাল পার্কের চিড়িয়াখানায় ঘুরবে, কিন্তু ফিবি তবুও রাগান্বিত থাকে। শেষে তারা কারুসেলের কাছে পৌঁছায়। হোল্ডেন তাকে একটি টিকিট কিনে দেয়, আর ফিবি যখন ঘুরতে শুরু করে তখন তার রাগ কেটে যায়। হোল্ডেন তখন অনুভব করে এক গভীর সুখ, যেন এই এক মুহূর্তেই সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে।
সে ইঙ্গিত দেয় যে, সেদিন রাতে বাবা-মায়ের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং এরপর সে "অসুস্থ হয়ে পড়ে"। সে এটাও বলে যে, সেপ্টেম্বর থেকে আরেকটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হবে। উপন্যাসের শেষ হয় হোল্ডেনের এক ধরনের দ্বিধার মধ্যে—সে আরও কিছু বলতে চায় না, কারণ স্কুলের প্রসঙ্গ উঠতেই সে তার পুরোনো বন্ধুদের মনে করতে শুরু করে, আর এক অদ্ভুত নস্টালজিয়ায় ডুবে যায়।
সালিঞ্জারের আগের বেশ কিছু গল্পে দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই-এর চরিত্রদের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি হুইট বার্নেটের ক্লাসে "দ্য ইয়োং ফোকস" নামে একটি ছোটগল্প লেখেন; এই গল্পের এক চরিত্রকে স্যালি হেইসের প্রাথমিক রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নভেম্বর ১৯৪১ সালে, সালিঞ্জার দ্য নিউ ইয়র্কার-এ "স্লাইট রিবেলিওন অফ ম্যাডিসন নামে একটি গল্প বিক্রি করেন যেখানে হোল্ডেন কলফিল্ড চরিত্রটি ছিল, তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে এটি ২১ ডিসেম্বর ১৯৪৬ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি।
২২ ডিসেম্বর ১৯৪৫ সালে কলিয়ার্স' পত্রিকায় প্রকাশিত আই'এ ক্রেজি গল্পেও দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই-এর পরবর্তী উপাদানগুলো বিদ্যমান ছিল। ১৯৪৬ সালে দ্য নিউ ইয়র্কার হোল্ডেন কলফিল্ডকে কেন্দ্র করে একটি ৯০-পৃষ্ঠার পান্ডুলিপি গ্রহণ করলেও পরে সালিঞ্জার সেটি প্রত্যাহার করেন।[১২]
হোল্ডেন যে স্কুলে পড়ে তথা সেই পেন্সি প্রিপারেটরি অ্যাকাডেমি পেনসিলভানিয়ার একটি বোর্ডিং স্কুল, যা সম্ভবত সালিঞ্জার ভ্যালি ফোর্জ মিলিটারি একাডেমি এবং কলেজ-এর ভিত্তিতে কল্পনা করেছিলেন।[১৩]
দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই উপন্যাসটি হোল্ডেন কলফিল্ডের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণিত হয়েছে যেখানে তার ভাবনাগুলো সরাসরি প্রকাশ পায়। তার চিন্তাগুলো কখনো অসংলগ্ন মনে হলেও সেগুলোর মধ্যে একটি স্বাভাবিক প্রবাহ বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, হোল্ডেন যখন তার ডরমিটরির চেয়ারে বসে থাকে, তখন কোনো বই তোলা বা টেবিলের দিকে তাকানোর মতো সাধারণ ঘটনাগুলো তার জীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় রূপ নেয়।
সমালোচকদের মতে, উপন্যাসটি সেই সময়ের কিশোরদের কথ্য ভাষাকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করেছে।[১৪] এতে ব্যবহৃত কিছু সাধারণ শব্দ ও বাক্যাংশ হলো:[১৫]
ব্রুস ব্রুকস মনে করেন, উপন্যাসের শেষেও হোল্ডেনের দৃষ্টিভঙ্গি অপরিবর্তিত থাকে যা তাকে অপরিণত প্রমাণ করে এবং এ কারণেই এটি প্রচলিত কিশোর সাহিত্য থেকে আলাদা।[১৭] অন্যদিকে লুইস মেন্যান্ডের মতে, শিক্ষকরা এই উপন্যাসটি শিক্ষার্থীদের পড়াতে পছন্দ করেন, কারণ এর আশাবাদী সমাপ্তি কিশোর পাঠকদের শেখায় যে "বিচ্ছিন্নতা কেবলমাত্র একটি ক্ষণস্থায়ী পর্যায়।"[১৮] ব্রুকসের মতে, হোল্ডেন তার বয়স অনুযায়ীই আচরণ করে, তবে মেন্যান্ডের ধারণা ছিল, হোল্ডেন আসলে একজন পরিণত চিন্তাধারার মানুষ, কারণ সে মানুষের প্রকৃতি এবং উদ্দেশ্যগুলো ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারে। অনেকে হোল্ডেনের অবস্থার (কৈশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কতার মাঝে থাকা) দ্বন্দ্বটিকেই তার মূল সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।[১৯][২০] হোল্ডেন সহজেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে এবং প্রায়ই "আমি তার জন্য ভীষণ দুঃখ পেলাম..." বাক্যটি ব্যবহার করে।
অনেকেই মনে করেন, উপন্যাসের শেষ দিকে বিশেষত যখন সে ফোয়েবিকে ক্যারোসেল ঘোড়ায় চড়তে দেখে এবং "গোল্ডেন রিং" সম্পর্কে কথা বলে তখন হোল্ডেন পরিবর্তিত হয়, বুঝতে পারে যে শিশুদের বড় হওয়ার এবং নতুন কিছু অর্জনের চেষ্টা করা দরকার।[১৯]
পিটার বেইডলার তার গ্রন্থ অ্যা রিডার্স' কম্পেনিয়ন টু জে. ডি. স্যালিঞ্জার'স "দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই”-এ উল্লেখ করেন যে অধ্যায় ১৩-এ যে চলচ্চিত্রের কথা পতিতা "সানি" উল্লেখ করে, সেটি সম্ভবত ১৯৩৭ সালের চলচ্চিত্র ক্যাপেন্স করেইজাস যেখানে শিশু অভিনেতা ফ্রেডি বার্থলোমিউ অভিনয় করেছিলেন। উপন্যাসের বর্ণনাগুলোর সঙ্গে চলচ্চিত্রের মিল খুঁজে পেয়ে তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান।[২১]
ক্যালফিল্ড পরিবারের প্রতিটি সন্তানই সাহিত্যপ্রতিভার অধিকারী। ডি.বি. হলিউডে চিত্রনাট্য লেখেন,[২২] এবং হোল্ডেন তার লেখনীর জন্য তাকে সম্মান করলেও, হলিউডকে সে ঘৃণা করে, কারণ সেখানে একজন লেখকের কল্পনার স্বাধীনতা থাকে না। সে ডি.বি.-এর হলিউডে যাওয়াকে "নিজেকে বিক্রি করা" বলে অভিহিত করে। অন্যদিকে, অ্যালি তার বেসবল গ্লাভসে কবিতা লিখত[২৩] এবং ফোয়েবি তার ডায়েরিতে লেখা চালিয়ে যায়।[২৪]
দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই আসলে হোল্ডেনের এক প্রতীকী উপমা। সে শিশুদের মধ্যে যে গুণগুলো ভালোবাসে (নিষ্পাপতা, উদারতা, সরলতা) সেগুলোই প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সে খুঁজে পায় না। "পর্বত থেকে পড়ে যাওয়া" আসলে প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে প্রবেশ করার প্রতীক যা হোল্ডেন সবসময় ঘৃণা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফোয়েবি এবং হোল্ডেনের ভূমিকা বদলে যায়, হোল্ডেন তার ক্যাচার-প্রতীকী শিকারি টুপি ফোয়েবিকে দেয়, যেন সে "ধরার" ভূমিকায় আসে, আর হোল্ডেন নিজেই "পড়ে যাওয়া" চরিত্রে পরিণত হয়।[২৫]
ডেভিড শিল্ডস ও শেন সালার্নো তাদের স্যালিঞ্জারের জীবনীতে যুক্তি দেন যে, দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই আসলে গোপন এক যুদ্ধ উপন্যাস। স্যালিঞ্জার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন, কিন্তু সরাসরি যুদ্ধ নিয়ে না লিখে তিনি সেই ট্রমাকে এক নতুন প্রজন্মের গল্পের ছদ্মবেশে উপস্থাপন করেছেন।[২৬]
দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই বিশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে ধারাবাহিকভাবে বিবেচিত হয়েছে। প্রকাশের পরপরই দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক নিবন্ধে ন্যাশ কে. বার্জার এটিকে "অসাধারণ উজ্জ্বল উপন্যাস" বলেছেন,[২৭] বলে অভিহিত করেন, আর জেমস স্টার্ন হোল্ডেনের ভাষাভঙ্গি নকল করে বইটির প্রশংসাসূচক পর্যালোচনা লেখেন।[২৮] জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ এটিকে "অসাধারণ বই" বলে উল্লেখ করেন এবং এটি তার প্রেরণাদায়ী বইগুলোর তালিকায় রাখেন।[২৯]
২০০৯ সালে বিবিসির ফিনলো রোরার লিখেছিলেন যে, প্রকাশের ৫৮ বছর পরেও এটি "কিশোর হওয়ার অভিজ্ঞতাকে সংজ্ঞায়িত করা উপন্যাস" হিসেবে গণ্য হয়।[৩০] অ্যাডাম গপনিক এটিকে মার্কিন সাহিত্যের তিনটি "নিখুঁত বই" এর একটি হিসেবে উল্লেখ করেন, অন্য দুটি হল অ্যাডভেঞ্চার্স অব হাক্লবেরি ফিন্ ও দ্য গ্রেট গ্যাটসবি। তার মতে দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই যেভাবে ১৯৫০-এর দশকের নিউ ইয়র্ক শহরকে চিত্রিত করেছে সেভাবে অন্য কোনো বই কখনও শহরকে ধারণ করতে পারেনি।[৩১]
জে. ডি. স্যালিঞ্জারের মৃত্যুর পর জেফ প্রুচনিক এক পর্যালোচনায় লেখেন যে উপন্যাসটি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পাঠকদের আকৃষ্ট করে আসছে। তার মতে, হোল্ডেন "একজন কিশোর নায়ক যে মধ্য-শতাব্দীতে স্থির হয়ে আছেন, কিন্তু প্রতি প্রজন্মের তরুণ পাঠকদের দ্বারা নতুন করে আবিষ্কৃত হবেন।"[৩২] বিল গেটস এবং অ্যারন সরকিন এই বইটিকে তাদের অন্যতম প্রিয় বই হিসেবে উল্লেখ করেছেন।[৩৩][৩৪]
তবে সকল পাঠকের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল না। ওয়াশিংটন পোস্ট-এর দীর্ঘকালীন গ্রন্থ সমালোচক জনাথন ইয়ার্ডলি ২০০৪ সালে মন্তব্য করেছিলেন যে কয়েক দশক পর পুনরায় বইটি পড়া তার জন্য "যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা" ছিল। তার মতে, স্যালিঞ্জারের দুর্বল গদ্য এবং হোল্ডেনের "অপরিণত আত্মকেন্দ্রিকতা" এমন এক বিরক্তিকর সংমিশ্রণ তৈরি করেছে যা ভেন্নার তেল সরাসরি শিরায় প্রবেশ করানোর মতো কষ্টদায়ক। তিনি বইটিকে মার্কিন সাহিত্যের অন্যতম বাজে জনপ্রিয় বই হিসেবে অভিহিত করে প্রশ্ন তোলেন, "ইংরেজি শিক্ষকদের দায়িত্ব ভালো লেখার শিক্ষা দেওয়া সেখানে কেন এমন একটি খারাপভাবে লেখা বই তারা বারবার শিক্ষার্থীদের পড়তে বাধ্য করেন?"[৩৫]
ফিনলো রোরার বইটির জনপ্রিয়তা ও সমালোচনার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন যে, এটি "কিশোরদের অস্তিত্ব সংকটকে ধারণ করে", এতে "একটি জটিল কেন্দ্রীয় চরিত্র" রয়েছে যেখানে "সহজ কথোপকথনের ঢঙে লেখা হয়েছে।"[৩০] তবে কিছু পাঠকের কাছে ১৯৪০-এর দশকের নিউ ইয়র্কের ভাষার ব্যবহার এবং প্রধান চরিত্রের অতিরিক্ত অভিযোগপ্রবণতা বিরক্তিকর বলে মনে হতে পারে।
১৯৬০ সালে ওকলাহোমার তুলসায় এক শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল কারণ তিনি ক্লাসে দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই পড়ানোর জন্য দিয়েছিলেন। যদিও পরে তাকে পুনরায় চাকরিতে বহাল করা হয়।[৩৬] ১৯৬১ থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে বইটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল ও গ্রন্থাগারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিষিদ্ধ হওয়া বইগুলোর একটি ছিল।[৩৭]
১৯৭৮ সালে ওয়াশিংটনের ইসাকোয়া শহরের উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে এটি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়, যেখানে তিনজন স্কুল বোর্ড সদস্য দাবি করেছিলেম যে বইটি "একটি সামগ্রিক কমিউনিস্ট ষড়যন্ত্রের অংশ।"[৩৮] তবে এই নিষেধাজ্ঞা বেশিদিন টেকেনি এবং ওই তিন বোর্ড সদস্যকে একটি বিশেষ নির্বাচনের মাধ্যমে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।[৩৯] ১৯৮১ সালে এটি একদিকে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি নিষিদ্ধ হওয়া বই ছিল, তেমনি এটি ছিল সরকারি স্কুলগুলোতে দ্বিতীয় সর্বাধিক পড়ানো বইও।[৪০]
আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন জানায় যে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই ছিল সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া বইয়ের মধ্যে ১০ নম্বরে।[৯] ২০০৫ সালে এটি আবারও প্রথম দশের মধ্যে আসে,[৪১] এবং তিন বছর তালিকায় না থাকার পর ২০০৯ সালে এটি আবারও আলোচিত নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় ফিরে আসে।[৪২]
যেসব কারণে বইটি নিষিদ্ধ বা বিতর্কিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে হোল্ডেনের অশালীন ভাষা ব্যবহার,[৪৩][৪৪] যৌন প্রসঙ্গ,[৪৫] ধর্ম অবমাননা, পারিবারিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার বিরুদ্ধে অবস্থান,[৪৪][৪৬] বিদ্রোহ উসকে দেওয়া,[৪৭] এবং মদ্যপান, ধূমপান, মিথ্যাচার, অবাধ যৌনাচার ও যৌন হয়রানিকে উৎসাহিত করা।[৪৬] অনেকে যুক্তি দেন যে বইটি মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লেখা হয়েছিল, এবং অনেক সমালোচকই বইটির প্রকৃত কাহিনী সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন না।[৩৭][৪৮]
একজন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শেলি কেলার-গেজ নিজের ক্লাসে বইটি পড়ানোর পর আপত্তির সম্মুখীন হয়েছিলেন, তিনি মন্তব্য করেন: "এই সমালোচকরা ঠিক হোল্ডেনের মতো... তারাও ধরার চেষ্টা করছে, যেন তারা 'ক্যাচার ইন দ্য রাই'।"[৪৪]
বই নিষিদ্ধ করার এই ঘটনাগুলো প্রায়ই স্ট্রেইস্যান্ড ইফেক্ট সৃষ্টি করে। নিষিদ্ধ হওয়ার পরই বইটি আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং অনেক পাঠক বইটি পড়ার জন্য লাইব্রেরির অপেক্ষমাণ তালিকায় নাম লেখান যেখানে আগে এমন কোনো তালিকা ছিল না।[৪৯][৫০]
দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই বহু আলোচিত হওয়ার পাশাপাশি কিছু চাঞ্চল্যকর অপরাধের সাথেও যুক্ত হয়েছে। মার্ক ডেভিড চ্যাপম্যান যখন জন লেননকে গুলি করে হত্যা করে, তখন তার কাছে বইটির একটি কপি পাওয়া যায়, যা সে সেদিনই কিনেছিল। সেই কপির ভেতরে সে লিখেছিল:
"টু হোল্ডেম কোল্ফিল্ড, ফ্রম হোল্ডেন কোল্ফিল্ড, দিজ ইজ মাই স্টেটমেন্ট।"[৫১][৫২] এছাড়াও, রোনাল্ড রেগানের ওপর আততায়ী জন হিঙ্কলি জুনিয়র এবং রেবেকা শেফার হত্যাকারী রবার্ট জন বার্ডোর ক্ষেত্রেও বইটির নাম উঠে এসেছে।
এই ঘটনাগুলো কেন ঘটেছিল এবং কেন অপরাধীরা বিশেষভাবে এই উপন্যাসের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন হার্ভি সলোমন-ব্র্যাডি। তিনি বলেন:
“ | অন্যান্য হত্যাকারীদের দ্বারা প্রশংসিত বইগুলোর তুলনায় যেমন, লি হার্ভি অসওয়াল্ডের জন্য জর্জ অরওয়েলের নাইন্টিন এইটি-ফোর, অ্যান্ড্রু কুনানানের জন্য সি. এস. লুইসের খ্রিস্টধর্ম বিষয়ক রচনা এবং ইউনাবোম্বার টেড কাজিনস্কির জন্য জোসেফ কনরাডের দ্য সিক্রেট এজেন্ট, দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই এর বিশেষত্ব হলো এটি কোনো সরাসরি নির্দেশনা না দিয়েও ধ্বংসাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।"[৫৩] | ” |
জে. ডি. স্যালিঞ্জার তার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে নিজের লেখা সিনেমায় রূপান্তরিত করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন।[৫৪] তবে ১৯৪৯ সালে তার ছোটগল্প আঙ্কেল উইগিলি ইন কানেকটিকাট অবলম্বনে নির্মিত ও সমালোচকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে নিন্দিত "মাই ফুলিশ হার্ট" চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর স্যালিঞ্জার দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেন যে তার পরবর্তী কোনো সাহিত্যকর্মকে সিনেমায় রূপান্তরিত করা হবে না।[১৯][৫৫]
তবে দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই-এর ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে বহু পরিচালক ও প্রযোজক বইটির চলচ্চিত্র স্বত্ব পেতে মরিয়া ছিলেন।[৫৬] "মাই ফুলিশ হার্ট"-এর প্রযোজক স্যামুয়েল গোল্ডউইনও এই উপন্যাসের স্বত্ব কেনার চেষ্টা করেন।[৫৫] ১৯৫০-এর দশকের গোড়ায় স্যালিঞ্জার এক চিঠিতে লেখেন যে, তিনি নিজেই যদি হোল্ডেন কলফিল্ডের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন, তবে মঞ্চ নাটক করতে রাজি, অন্যথায় "ভুলে যেতে বলুন"। লেখক জয়েস মেনার্ড অনেক পরে মন্তব্য করেন, “হোল্ডেন কলফিল্ড চরিত্রটি একমাত্র যে ব্যক্তি ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন তিনি হলেন স্যালিঞ্জার নিজেই।”[৫৭]
অনেক বিখ্যাত অভিনেতা এই উপন্যাসকে পর্দায় আনার চেষ্টা করেছেন। স্যালিঞ্জার একবার বলেছিলেন যে জেরি লুইস বহু বছর ধরে হোল্ডেনের চরিত্র পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন,[৫৭] যদিও তিনি বইটি ত্রিশের কোঠায় পৌঁছানোর আগে পড়েননি।[৪৯] মার্লন ব্র্যান্ডো, জ্যাক নিকলসন, লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, টোবি ম্যাগুয়্যারসহ অনেক চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব চলচ্চিত্রটি নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।[৫৮] প্রিমিয়ারের ম্যাগাজিনের এক সাক্ষাৎকারে জন কিউস্যাক বলেন, "২১ বছর হওয়ার একমাত্র দুঃখ ছিল, আমি আর হোল্ডেন কলফিল্ডের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য যথেষ্ট তরুণ নই।"
লেখক-পরিচালক বিলি ওয়াইল্ডার স্মরণ করেন, তিনি যখন দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই--এর স্বত্ব কেনার চেষ্টা করছিলেন, তখন স্যালিঞ্জার তার এজেন্টের অফিসে এসে শুধু এটুকুই বলেছিলেন: "মিস্টার লিল্যান্ড হেওয়ার্ডকে বলুন যেন তিনি বিরত থাকেন। তিনি খুবই সংবেদনশীল নন।" এরপর তিনি চুপচাপ চলে যান, এবং আর কখনো তার সঙ্গে দেখা হয়নি।[৫৯] এভাবেই স্যালিঞ্জার তার সৃষ্ট চরিত্রকে চলচ্চিত্রের পর্দায় আনার সমস্ত প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে নাকচ করে দিয়েছিলেন।
১৯৬১ সালে এলিয়া কাজান দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই উপন্যাসটিকে ব্রডওয়ের জন্য মঞ্চনাটকে রূপান্তর করার অনুমতি চাইলে স্যালিঞ্জার তা প্রত্যাখ্যান করেন।[৫৯] পরবর্তীতে হার্ভি ওয়াইনস্টিন এবং স্টিভেন স্পিলবার্গের মতো নামী প্রযোজকরা চলচ্চিত্র স্বত্ব কেনার জন্য দর হাঁকলেও, স্যালিঞ্জারের এজেন্টরা সে প্রস্তাব তার কাছে পৌঁছাতেই দেননি।[৬০]
২০০৩ সালে বিবিসির টেলিভিশন অনুষ্ঠান দ্য বিগ রিড উপন্যাসটিকে কেন্দ্র করে একটি পর্ব প্রচার করে যেখানে উপন্যাস নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং হোল্ডেন কলফিল্ডের চরিত্রে এক অভিনেতাকে অভিনয় করানো হয়।[৫৯] এটি অনুমোদিত না হলেও অনুষ্ঠানটিকে "সাহিত্য পর্যালোচনা" বলে দাবি করার ফলে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
২০০৮ সালে স্যালিঞ্জারের সাহিত্য সংক্রান্ত সমস্ত স্বত্ব জে. ডি. স্যালিঞ্জাফ লিটারেরি ট্রাস্ট-এর অধীনে রাখা হয় যেখানে তিনি নিজেই একমাত্র ট্রাস্টি ছিলেন। ২০১০ সালে স্যালিঞ্জারের মৃত্যুর পর তার এজেন্ট ফিলিস ওয়েস্টবার্গ জানান যে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন বা মঞ্চনাটকের স্বত্ব নিয়ে কোনো পরিবর্তন হয়নি।[৬১] তবে ১৯৫৭ সালে লেখা এক চিঠিতে স্যালিঞ্জার ইঙ্গিত দেন যে তার মৃত্যুর পর হয়তো স্বত্ব বিক্রি করা হতে পারে। তিনি লেখেন:
“ | একদিন হয়তো স্বত্ব বিক্রি হবে। যেহেতু আমি ধনী হয়ে মারা যাবো না, তাই এই স্বত্ব আমার স্ত্রী ও কন্যার জন্য এক ধরনের বীমা হিসাবে রেখে যাওয়ার চিন্তা আমার মধ্যে ঘুরপাক খায়। তবে এটা ভেবে খুব শান্তি পাই যে আমি অন্তত সেই চলচ্চিত্রের ফলাফল দেখতে পাবো না। | ” |
তিনি আরও লেখেন যে উপন্যাসটি চলচ্চিত্রের জন্য উপযুক্ত নয় এবং হোল্ডেন কলফিল্ডের প্রথম-পুরুষ বর্ণনাকে চিত্রনাট্যে রূপ দেওয়া অস্বাভাবিক ও কৃত্রিম হয়ে যাবে।[৬২]
২০২০ সালে ডন হান প্রকাশ করেন যে দ্য ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি প্রায় দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই-এর উপর ভিত্তি করে ডুফাস নামে একটি অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বানাতে যাচ্ছিল। ধারণা করা হয় এটি অলিভার অ্যান্ড কোম্পানি-এর মতো একটি গল্প হতে পারত যেখানে চরিত্রগুলো জার্মান শেফার্ড কুকুর হিসেবে উপস্থাপিত হতো। তৎকালীন সিইও মাইকেল আইজনার উপন্যাসটি পছন্দ করতেন এবং এর ওপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্র করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যখন তাকে জানানো হয় যে স্যালিঞ্জার কখনোই স্বত্ব বিক্রি করবেন না তখন তিনি বলেন "ঠিক আছে, তাহলে এই ধরনের গল্পই করি, বড় হওয়া এবং আত্ম-অনুসন্ধানের একটি গল্প।"[৬৩]
মৃত্যুর এক বছর আগে ২০০৯ সালে জে. ডি. স্যালিঞ্জার সফলভাবে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ ইয়ার্স লেটার: কামিং থ্রু দ্য রাই উপন্যাসের প্রকাশনা বন্ধ করেন। এই বইটি হোল্ডেন কলফিল্ডকে একজন বৃদ্ধ মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করেছিল।[৩০][৬৪]
উপন্যাসটির লেখক ফ্রেডরিক কোল্টিং এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, "আমাকে যদি একজন অজ্ঞ সুইডিশ বলেও ডাকেন, তবু আমি কখনো ভাবিনি যে যুক্তরাষ্ট্রে বই নিষিদ্ধ করা সম্ভব।"[৬৫]
তবে বিষয়টি বিতর্কিত হয়ে ওঠে কারণ কোল্টিংয়ের উপন্যাসটিকে অনেকেই ফ্যান ফিকশনের মতো মনে করেন।[৬৬] সাধারণত ফ্যান ফিকশন লেখকদের অনুমতি ছাড়াই লেখা হয়, কিন্তু যেহেতু এগুলো বাণিজ্যিকভাবে প্রকাশিত হয় না তাই আইনি পদক্ষেপ সাধারণত নেওয়া হয় না। কিন্তু কোল্টিংয়ের বইটি বাণিজ্যিকভাবে প্রকাশিত হতে যাওয়ায় স্যালিঞ্জার আইনি ব্যবস্থা নেন এবং সেটির প্রকাশনা বন্ধ করতে সক্ষম হন।[৬৭]
It isn't just a novel, it's a dispatch from an unknown, mysterious universe, which may help explain the phenomenal sales it enjoys to this day: about 250,000 copies a year, with total worldwide sales over – probably way over – 10 million.
Most critics who glared at The Catcher in the Rye at the time of its publication thought that its language was a true and authentic rendering of teenage colloquial speech.
The Catcher in the Rye can best be understood as a disguised war novel. Salinger emerged from the war incapable of believing in the heroic, noble ideals we like to think our cultural institutions uphold. Instead of producing a combat novel, like Norman Mailer, James Jones, and Joseph Heller did, Salinger took the trauma of war and embedded it within what looked to the naked eye like a coming-of-age novel.
In 1960 a teacher in Tulsa, Okla. was fired for assigning "The Catcher in the Rye". After appealing, the teacher was reinstated, but the book was removed from the itinerary in the school.
During 1981, The Catcher in the Rye had the unusual distinction of being the most frequently censored book in the United States, and, at the same time, the second-most frequently taught novel in American public schools.
Another perennial target, J.D. Salinger's "Catcher in the Rye," was challenged in Maine because of the "f" word.
The foremost allegation made against Catcher is... that it teaches loose moral codes; that it glorifies... drinking, smoking, lying, promiscuity, and more.
The Catcher in the Rye, interpreted by some as encouraging rebellion against authority...