লেখক | রুডইয়ার্ড কিপলিং |
---|---|
অঙ্কনশিল্পী | জন লকউড কিপলিং (রুডইয়ার্ডের পিতা) |
দেশ | যুক্তরাজ্য |
ভাষা | ইংরেজি |
ধারাবাহিক | দ্য জাঙ্গল বুকস |
ধরন | শিশুতোষ গ্রন্থ |
প্রকাশক | ম্যাকমিলান |
প্রকাশনার তারিখ | ১৮৯৪ |
পূর্ববর্তী বই | "ইন দ্য রুখ" |
পরবর্তী বই | দ্য সেকেন্ড জাঙ্গল বুক |
পাঠ্য | দ্য জাঙ্গল বুক উইকিসংকলন |
দ্য জাঙ্গল বুক (ইংরেজি: The Jungle Book) বিখ্যাত ইংরেজ লেখক রুডইয়ার্ড কিপলিংয়ের লেখা গল্প সঙ্কলনবিশেষ। ১৮৯৪ সালে এ গল্প সঙ্কলনটি ম্যাকমিলান এন্ড কোং প্রকাশ করেছিল। ভারতীয় জঙ্গলকে ঘিরে জীবন ও কিংবদন্তীগুলো গল্পাকারে লিখিত হয়েছে। টেলিভিশন, সিনেমা, থিয়েটার ও অন্যান্য প্রচারমাধ্যমে দ্য জঙ্গল বুকের অংশবিশেষ রূপান্তর করা হয়েছে।
গল্পের অধিকাংশ কুশীলবই বিভিন্ন প্রাণী। বাঘের পরিচিতি ‘শের খান’ ও ভল্লুকের পরিচিতি ‘বালু’ রাখা হয়েছে। তবে, প্রধান চরিত্রে ‘মোগলি’ নামীয় এক বালক বা মানব সন্তান রয়েছে। সে জঙ্গলে নেকড়েদের সংস্পর্শে শৈশবকাল অতিবাহিত করছে। ভারতের বনে এ গল্পের পটভূমি তৈরী করা হয়েছে। মধ্য ভারতের মধ্যপ্রদেশের সেওনি এলাকার কথা পুনঃপুনঃ লিপিবদ্ধ আছে।
রুডইয়ার্ড কিপলিং ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জীবনের প্রথম ছয় বছর সেখানে অবস্থান করেন। এরপর ইংল্যান্ডে প্রায় দশ বছর অবস্থান শেষে পুনরায় ভারতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে প্রায় পঁয়ষট্টি বছর সেখানে কাজ করেন। জাঙ্গল বুকের সবগুলো গল্পই ১৮৯৩-৯৪ মৌসুমে সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছিল। মূল প্রকাশনাগুলোয় চিত্র সহযোগে প্রকাশ করা হয়। চিত্রগুলোর বেশ কয়েকটিতে রুডইয়ার্ডের পিতা জন লকউড কিপলিংয়ের স্পর্শ ছিল। ভারমন্টে বসবাসকালে রুডইয়ার্ড কিপলিং বইগুলো লিখেছিলেন।[১]
১৮৯৫ সালের পরবর্তীতে প্রকাশিত দ্য সেকেন্ড জাঙ্গল বুকসহ এ বইয়ের কাহিনীতে মোগলিকে ঘিরে আরও পাঁচটি গল্প যুক্ত করা হয়েছে। এ গল্পগুলো কল্পিত কাহিনী। প্রাণীদেরকে ব্যবহারকে নৃতাত্ত্বিক বিষয়ে নৈতিক শিক্ষা প্রদানই এর মূল লক্ষ্য। কিপলিং এ বিষয়গুলো রচনায় তিনি যা জানতেন বা ভারতীয় জঙ্গলকে ঘিরে যা শুনেছেন বা কল্পনা করেছেন তার প্রায় সবটুকুই এখানে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন।[২] অন্যান্য পাঠক তার এ সাহিত্যকর্মকে ঐ সময়ের রাজনীতি ও সমাজের রূপগত বর্ণনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।[৩]
কিপলিংয়ের নিজস্ব শৈশবকালকে মোগলির জীবনে তুলে ধরা হয়নি যা এ গ্রন্থের প্রধান বৈশিষ্ট্য। আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে - আইন ও স্বাধীনতা। গল্পগুলোয় প্রাণীজগতের আচরণ দিককে তুলে ধরা নয়, বরঞ্চ ডারউইনের টিকে থাকার লড়াইকে উপজীব্য করে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও, প্রাণীর ন্যায় মানব আচরণও এর উল্লেখযোগ্য দিক। তারা জঙ্গলের নিয়ম-কানুনে নেতৃত্বদানকারীকে সম্মান, শ্রদ্ধা প্রদর্শনসহ সমাজে তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে শিখে। তাসত্ত্বেও, গল্পগুলোয় ভিন্ন জগতে অবাধে চলাচলের স্বাধীনতার বিষয়েও চিত্রিত করা হয়েছে। যেমন: মোগলি জঙ্গল ও গ্রামে চলাফেরা করেছে। সমালোচকেরা গল্পগুলোয় স্বাভাবিক বন্যতা ও আইনভঙ্গের বিষয়ও লক্ষ্য করেছেন যা মানবীয় আচরণকে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার দিকে ধাবিত হতে উদ্বুদ্ধ করে।
অদ্যাবধি দ্য জাঙ্গল বুক জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থান করছে। এর অংশবিশেষ চলচ্চিত্রায়ণসহ অন্যান্য প্রচারমাধ্যমে ব্যবহৃত হচ্ছে। সতী সিংসহ অনেক সমালোচক মন্তব্য করেন যে, সাম্রাজ্যবাদী পরিবেশের মধ্যে অবস্থান করেও তিনি গল্প লেখার ক্ষমতায় নিজেকে অনেক ঊর্ধ্বে নিয়ে গেছেন। এ বইটি কিপলিংয়ের বন্ধু রবার্ট ব্যাডেন-পাওয়েলের প্রতিষ্ঠিত স্কাউট আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছে। অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সুরকার পার্সি গ্রেইঞ্জার তার জাঙ্গল বুক সাইকেলে বইয়ের বাক্যাংশ ব্যবহার করেছেন।
বইটির ৫০০-এর অধিক সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে।[৪] এছাড়াও, ১০০-এর অধিক অডিওবুক রয়েছে।[৫] কমপক্ষে ৩৬ ভাষায় এ গ্রন্থের অনুবাদ করা হয়েছে।[৬]