![]() প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ (যুক্তরাজ্য) | |
লেখক | মোহসিন হামিদ |
---|---|
মূল শিরোনাম | The Reluctant Fundamentalist |
ভাষা | ইংরেজি |
ধরন | অধি-কাল্পনিক উপন্যাস |
প্রকাশক | হ্যামিশ হ্যামিল্টন (যুক্তরাজ্য) হারকোর্ট (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (পাকিস্তান) |
প্রকাশনার তারিখ | ১ মার্চ ২০০৭ |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ২২৪ |
আইএসবিএন | ০-২৪১-১৪৩৬৫-৯ |
পূর্ববর্তী বই | মথ স্মোক (২০০০) |
পরবর্তী বই | হাউ টু গেট ফিলথি রিচ ইন রাইজিং এশিয়া (২০১৩) |
দ্য রিলাকট্যান্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট (ইংরেজি: The Reluctant Fundamentalist, অনুবাদ 'অনিচ্ছুক মৌলবাদী') হল পাকিস্তানি লেখক মোহসিন হামিদ রচিত ২০০৭ সালের অধি-কাল্পনিক উপন্যাস।[১] উপন্যাসটি ফ্রেম স্টোরি পদ্ধতি অবলম্বন করে লেখা হয়, যা লাহোরের একটি ক্যাফের এক সন্ধ্যার ঘটনা নিয়ে রচিত। সেখানে চেঞ্জিস নামে একজন দাঁড়িওয়ালা পাকিস্তানি ব্যক্তি একজন উদ্বিগ্ন মার্কিন আগন্তুককে মার্কিন এক নারীর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক এবং তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে আসার গল্প বলে। এই উপন্যাস অবলম্বনে রচিত "ফোকাস অন দ্য ফান্ডামেন্টালস" নামে একটি ছোটগল্প দ্য প্যারিস রিভিউ-এর ২০০৬ সালের শরৎ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাস অবলম্বনে মিরা নায়ারের নির্মিত একই নামের চলচ্চিত্র ২০১২ সালে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।[২]
উপন্যাসটি ২০০৭ সালে বুকার পুরস্কারের ক্ষুদ্রতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়, এবং অ্যানিসফিল্ড-উল্ফ বই পুরস্কার অর্জন করে। দ্য গার্ডিয়ান উপন্যাসটিকে এই দশককে সংজ্ঞায়িত করে এমন বইয়ের একটি হিসেবে নির্বাচন করে। এছাড়া এটি ২০১৯ সালে বিবিসি নিউজ-এর ১০০ "সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী" উপন্যাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।[৩]
গল্পের শুরু লাহোরের রাস্তায়। চেঞ্জিস নামে একজন পাকিস্তানি ব্যক্তি একজন মার্কিন পর্যটককে কোথায় ভাল এক কাপ চা পেতে পারেন তা গাইড করেন। যখন তারা চায়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, চেঞ্জিস তার জীবনের একটি দীর্ঘ গল্প বুনতে শুরু করেন, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার বসবাসের সময় - এর মধ্যে লাহোরের ইতিহাস, ল্যান্ডমার্ক এবং সমাজ সম্পর্কে, এবং তার জন্ম শহর যাকে তিনি ভালোবাসেন ও যার জন্য তিনি গর্বিত। নাম না জানা মার্কিন ভদ্রলোক অস্থিরচিত্ত কিন্তু তিনি শুনতে থাকেন।
চেঞ্জিস মার্কিন লোকটিকে বলেন যে তিনি একজন দুর্দান্ত ছাত্র ছিলেন, যিনি অর্থায়ন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি শেষ করার পর আন্ডারউড স্যামসন নামে একটি পরামর্শদানকারী প্রতিষ্ঠানে বিশ্লেষক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করার পর তিনি প্রিন্সটোনিয়ানদের সাথে গ্রিসে ছুটি কাটান, সেখানে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লেখক এরিকার সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। তিনি দ্রুতই তার প্রেমে পড়েন, কিন্তু তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে পারেনি, কারণ এরিকা এখনও তার শৈশব প্রেমিক ক্রিসের মৃত্যুতে শোকাহত ছিল, যে ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা গিয়েছিল। একদিন ডেট করার পর তারা তার বাসায় আসে এবং সে তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে থেমে যায়, কারণ ক্রিসের সাথে এরিকার মানসিক সংযুক্তি তাকে যৌনোদ্দীপ্ত হতে বাধা দেয়। এই ঘটনার পর তাদের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি হয়, যেখানে কেউই একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে না। কিন্তু শীঘ্রই তারা আরেকটি ডেটে যায়, এরপর তারা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে যখন চেঞ্জিস এরিকাকে তার চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে বলে যে সে ক্রিসের সাথে আছে। যদিও চেঞ্জিস তাদের সম্পর্কের এই উন্নয়নে সন্তুষ্ট হয়, তবে এটি তাদের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। শীঘ্রই এরিকা একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন। চেঞ্জিস লক্ষ্য করেন যে এরিকা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে গেছে এবং তার আগের সত্তা আর নেই। এই সাক্ষাতের পর তিনি একটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্য চিলিতে যান। সেখান থেকে ফিরে এসে তার সাথে দেখা করতে গিয়ে তিনি দেখতে পান যে সে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে গেছে এবং তার জামাকাপড় হাডসন নদীর কাছে পাওয়া গেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে নিখোঁজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, কারণ তার লাশ পাওয়া যায়নি।
দ্য রিলাকট্যান্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট ২০০৭ সালে বুকার পুরস্কারের ক্ষুদ্রতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। হাওয়ার্ড ডেভিস সে সময় লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে এক লেকচারে বইটিকে "অনানুষ্ঠানিক রানার-আপ" বলে উল্লেখ করেন।[৪] বইটি অ্যানিসফিল্ড-উল্ফ বই পুরস্কার[৫] ও সাহিত্যে সাউথ ব্যাংক শো বার্ষিক পুরস্কার-সহ[৬] একাধিক পুরস্কার অর্জন করে। দ্য গার্ডিয়ান উপন্যাসটিকে এই দশককে সংজ্ঞায়িত করে এমন বইয়ের একটি হিসেবে নির্বাচন করে।[৭]
২০১৯ সালের ৫ই নভেম্বর বিবিসি নিউজ উপন্যাসটিকে তাদের লেখক ও সমালোচকদের প্যানেল কর্তৃক নির্বাচিত ১০০ "সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী" উপন্যাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।[৩]
এম. এস. ই. মাদিউ তার "মোহসিন হামিদ এনগেজেস দ্য ওয়ার্ল্ড ইন দ্য রিলাকট্যান্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট" শীর্ষক সমালোচনায় মূলধারার সমালোচনার বাইরে গিয়ে মোহসিন হামিদ যে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা নিয়ে তার উপন্যাস রচনায় ঐতিহাসিক ও শৈল্পিক অনিশ্চিত সম্ভাবনার সম্মুখীন হয়েছেন সেটাকে এই উপন্যাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা হামিদের "ইউরেকা" মুহূর্ত হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।[১]