লেখক | সি. এস. লিউইস |
---|---|
অঙ্কনশিল্পী | পউলিন বেইনিস |
প্রচ্ছদ শিল্পী | পউলিন বেইনিস |
দেশ | যুক্তরাজ্য |
ভাষা | ইংরেজি |
ধারাবাহিক | দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া |
ধরন | শিশু সাহিত্য, কল্প-উপন্যাস |
প্রকাশক | জিওফ্রি ব্লিস |
প্রকাশনার তারিখ | ১৬ই অক্টোবর ১৯৫০ |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রণ, ই-বুক |
ওসিএলসি | ৭২০৭৩৭৬ |
এলসি শ্রেণী | PZ8.L48 Li[১] |
পরবর্তী বই | প্রিন্স ক্যাস্পিয়ান:দ্য রিটার্ন টু নার্নিয়া |
দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব সি. এস. লিউইস রচিত শিশুদের জন্য একটি কল্প-উপন্যাস যেটি জিওফ্রি ব্লিস কর্তৃক ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয়। দ্য ক্রনিকলস্ অব নার্নিয়া ধারার এটিই প্রথম প্রকাশিত বই।[২] অন্য সবগুলোর মত এই বইটিরও অলঙ্করণ করেন পউলিন বেইনিস।[১][৩] উপন্যাসটি কথাবলা মহাকাব্যিক প্রানীদের জগত নার্নিয়াকে কেন্দ্র করে রচিত। যেখানে একশ বছর ধরে তীব্র শীতের মধ্যে হোয়াইট উইচ নামের এক জাদুকরী রাজত্ব করছে।
১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অন্যসব শিশুদের মত চার ভাইবোন – পিটার পেভেনসি, সুজান পেভেনসি, এডমন্ড পেভেনসি ও লুসি পেভেনসি লন্ডন ছেড়ে গ্রাম এলাকার দিকে পালাতে বাধ্য হয় এবং তারা ডিগোরি কাইর্কি নামে এক প্রফেসরের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। প্রফেসরের বাড়িতে ঘুরতে ঘুরতে লুসি একটি জাদুর আলমারির খোঁজ পায় যা নার্নিয়া নামক জাদুর দেশে সংযোগ স্থাপন করে। লুসি আলমারিতে প্রবেশ করে এবং নার্নিয়া গিয়ে পৌঁছায় যেখানে একটি ল্যাম্পপোস্টের নিচে মি. টামনাস নামে এক ফনের সাথে তার প্রথম দেখা হয়। টামনাস লুসিকে তার ঘরে চা খাওয়ার আমন্ত্রন জানায় আর লুসিও রাজি হয়ে যায়। পরে মি. টামনাস স্বীকার করে যে, সে লুসিকে আতিথেয়তা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায়নি বরং লুসিকে হোয়াট উইচের কাছে ধরিয়ে দেওয়াই তার আসল উদ্দ্যেশ্য ছিল। হোয়াইট উইচ নার্নিয়া শাসন করে এবং তার কারণেই নার্নিয়াতে সবসময় শীতকাল বিরাজ করে। আর সে নার্নিয়ার সকল অদিবাসীদের আদেশ দিয়েছে কোন মানুষকে নার্নিয়ায় দেখামাত্রই ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু লুসির সাথে কথা বলার পর মি. টামনাসের উদ্দেশ্য বদলে যায় আর সে লুসিকে পালাতে সাহায্য করে এবং আবার সেই ল্যাম্পপোস্টের নিচে নিয়ে আসে।
লুসি আলমারি থেকে বেরিয়ে আসে এবং লক্ষ্য করে বাস্তব জগতে তার অনুপস্থিতিতে মাত্র কয়েক মূহুর্ত সময় অতিবাহিত হয়েছে। আর সে যখন তার অন্য ভাইবোনদের আলমারি আর নার্নিয়ার কথা জানায় তারা কেউই তার কথা বিশ্বাস করে না।
কিছুদিন পর লুকোচুরি খেলার সময় লুসি আবার ঐ আলমারি দিয়ে নার্নিয়ায় প্রবেশ করে। কিন্তু এবার তার ভাই এডমন্ড তাকে অনুসরন করে। সেখানে এডমন্ডের এক মহিলার সাথে দেখা হয় যে নিজেকে নার্নিয়ার রানী বলে পরিচয় দেয়। যখন মহিলাটি জানতা পারে এডমন্ড একজন মানুষ এবং তার দুই বোন এবং এক ভাই আছে তখন সে এডমন্ডকে তাদের সবাইকে তার প্রাসাদে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে আর এর পরিবর্তে সে প্রতিজ্ঞা করে এডমন্ডকে সে নিজের রাজ্যের উত্তরাধিকরী করবে। লুসি আর এডমন্ড যখন আলমারি থেকে একসাথে বেরিয়ে আসে তখন এডমন্ড বুজতে পারে লুসি যে হোয়াইট উইচের কথা শুনেছে আর তার সাথে দেখা হয়েছে তারা মুলত একজনই আর নার্নিয়াতে যাওয়ার কথা অন্য ভাইবোনদের সামনে সে অস্বিকার করে। লুসির নার্নিয়া ভ্রমণের কথা ছেলেমানুষি মনে করে পিটার আর সুজান তা প্রফেসরকে জানালে আশ্চর্যজনকভাবে সেও লুসির পক্ষ নেয়। কিন্তু শিঘ্রই আলমারিতে লুকাতে গিয়ে চার ভাইবোনের সবাই একসাথে নার্নিয়ায় প্রবেশ করে। লুসি তাদের মি. টামনাসের গুহায় নিয়ে যায় কিন্তু তারা একে এলোমেলো অবস্থায় পায় এবং জেডিসের (হোয়াইট উইচ) একটি বিজ্ঞপ্তি দেখে যাতে লেখা মানুষকে সাহায্য করার জন্য টামনাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মি. বিভার নামে এক কথা বলা জন্তু তাদের দেখতে পায় এবং তাদের বন্ধুত্ব করে। তারা বিভারের সাথে তার আবাসস্থলে যায় এবং সেখানে মিসেস বিভার তাদের একটি ভবিষ্যদ্বাণীর কথা জানায়। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী আদমের দুই পুত্র ও ইভের দুই কন্যা কেইর প্যারাভালের চার সিংহাসনে আরোহণ করবে এবং হোয়াইট উইচের ক্ষমতা তাদের নিকট পরাভূত হবে। আসলান, মহান সিংহ এবং নার্নিয়ার ন্যায়সঙ্গত রাজা অনেকদিন এখানে অনুপস্থিত থাকার পর আবার ফিরে এসেছে। এদিকে এডমন্ড অন্যদের নজর এড়িয়ে হোয়াইট উইচের প্রাসাদে গিয়ে পৌছায়। হোয়াইট উইচ পূর্বে যাদের পাথরে রুপান্তর করেছে তাদের মূর্তিতে প্রাসাদটি ভর্তি ছিল। হোয়াইট উইচ এডমন্ডকে একা দেখে এবং আসলানের আগমনের কথা শুনে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হযে উঠে। অন্যান্য বন্দিদের সাথে এডমন্ডকেও সে কারাগারে অটকে রাখে। এদিকে মি. বিভার যখন বুজতে পারে এডমন্ড তাদের সাথে প্রতারণা করেছে তখন সাথে সাথেই তারা আসলানের সাহায্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে স্টোন টেবিলের দিকে যাত্রা করে। তাদের যাত্রাপথে তারা লক্ষ্য করে নার্নিয়ার ওপর হোয়াইট উইচের জাদুর প্রভাব হ্রাস পাচ্ছে। ফাদার ক্রিস্টমাস (যে শত বছর ধরে নার্নিয়ায় ক্রিস্টমাস দেখেনি) জাদুর উপহার বিভার ও চার ভাইবোনের নিকট আগমন করে। সে পিটারের জন্য একটি তলোয়ার, সুজানের জন্য সাহায্য প্রার্থনার জন্য শিঙ্গা আর তীর ও ধনুক এবং লুসির জন্য চাকু ও নিরাময়ি তরল উপরহার দেয়। বরফ গলে যায় এবং শীতেরও সমাপ্তি ঘটে। আসলান পেভেনসি ভাই বোনদের ও বিভারকে তার স্টোন টেবিলের নিকটবর্তী তার শিবিরে স্বাগত জানায় এবং এডমন্ডকে হোয়াইট উইচের কবল থেকে উদ্ধারের জন্য একটি দলকে আদেশ দেয়। এডমন্ডকে উদ্ধারের পর হোয়াইট উইচ আসলানের সাথে কথা বলতে চায় এবং তাকে জানায় সময়ের শুরু থেকে গভীর জাদুর নিয়মানুসারে এডমন্ডের প্রতারণার কারণে তাকে হত্যা করার অধিকার তার রয়েছে। আসলান একান্তভাবে তার সাথে বৈঠকে বসে এবং একটি সমঝোতায় আসে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে হোয়াইট উইচ তার পূর্বের দাবি থেকে সরে আসে। ঐদিন সন্ধ্যায় আসলান গোপনে স্টোন টেবিলের দিকে যাত্রা করে। লুসি ও সুজান প্রথমে তাকে গোপনে অনুসরণ করলেও পরে সে তাদের সঙ্গে নেয় এবং তাদের বলে এরপর যা ঘটতে যাচ্ছে তাতে কোনভাবেই হস্তক্ষেপ না করে। হোয়াইট উইচের সাথে সমঝোতা অনুযায়ী এডমন্ডের জীবনের বদলে আসলান তার নিজের জীবন উত্সর্গ করে এবং এডমন্ডের পরিবর্তে তাকে হত্যা করা হবে। স্টোন টেবিলে পৌছানোর পর হোয়াইট উইচ আসলানকে বেঁধে ফেলতে ও তার কেশর কেটে ফেলার আদেশ দেয়। এরপর সে আসলানকে হত্যা করে এর এসবকিছু লুসি ও সুজান ঝোপের আড়াল থেকে প্রত্যক্ষ করে। আসলানকে হত্যার পর হোয়াইট উইচ বিজয় নিশ্চিত মনে করে তার সৈন্যদের নিয়ে যুদ্ধে অগ্রসর হয়। সুজান ও লুসি সারারাত আসলানের মৃতদেহের কাছেই থেকে যায়। তারা আসলানকে বাধনমুক্ত করতে চাইলে ইঁদুরেরা দড়ি কেটে তাদের সাহায্য করে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে স্টোন টেবিল ভেঙ্গে যায় আর আসলান পুনরায় জীবিত হয়ে ওঠে। সুজান ও লুসিকে সে বলে সময়ের শুরু থেকে গভীর জাদুর নিয়ম বিষয়ে হোয়াইট উইচ অজ্ঞ ছিল। নিয়ম অনুসারে প্রতারকের স্থলে নিষ্পাপ কারো মৃত্যু হলে স্টোন টেবিল ভেঙ্গে যাবে আর মৃত্যুও তার রাস্তা পরিবর্তন করবে। সুজান ও লুসিকে তার পিঠে নিয়ে আসলান হোয়াইট উইচের প্রাসাদের দিকে যাত্রা করে এবং সকল পাথরের মূর্তিকে পুনরায় জীবিত করে। এদিকে পিটার ও এডমন্ড হোয়াইট উইচের বিরুদ্ধে নার্নিয়ান সৈন্যদের নিয়ে যাত্রা করে।এডমন্ড হোয়াইট উইচের জাদুর কাঠি ভেঙ্গে তাকে আরও নার্নিয়ানকে পাথরে রুপান্তর করা থেকে প্রতিরোধ করে, কিন্তু সে নিজে খুব খারাপভাবে জখম হয়। আসলান ফিরে আসে আগে পাথর হওয়া নার্নিয়ানদের নিয়ে। নার্নিয়ানরা হোয়াইট উইচের সৈন্যদের প্রতিহত করে আর আসলান হোয়াইট উইচকে হত্যা করে। যুদ্ধ ক্ষেত্রে সে যাদের পাথরে পরিণত করেছিল আসলান তাদের ওপর তার শ্বাস ফেলে ফলে তারাও পুনরায় জীবন ফিরে পায়। আর লুসি এডমন্ডকে দিয়ে শুরু করে আহত সৈন্যদের ক্ষত সারানোর জন্য তার জাদুর নিরাময়ি তরল ব্যবহার করে। পেভেনসি ভাইবোনেরা কেইর পারাভালের রাজা রানী হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করে আর আসলান আগের মতই নিরুদ্দেশ হয়। নানিয়ায় এক স্বর্ণযুগের সূচনা হয় এবং নার্নিয়ার অধিবাসীরা তাদের নতুন রাজা রানীর অধিনে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। পনের বছর পর চার শাসক জঙ্গলে এক ইচ্ছা পূরণের হরিণকে তাড়া করে। সেখানে তারা একটি ল্যাম্পপোস্ট আবিষ্কার করে এবং অনুভব করে এটা তারা পূর্বেও কোথাও দেখেছিল। শীঘ্রই তারা হাটতে হাটতে আলমারির মধ্য দিয়ে প্রফেসরের বাড়িতে পূর্বের শিশু অবস্থায় আগের সেই পোশাক পরিহিত অবস্থায় ফিরে আসে। নার্নিয়ায় বহু বছর অতিক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও বাস্তব জগতে সময়ের কোন পরিবর্তনই হয়নি। পেভেনসিরা প্রফেসরকে সব কিছু জানালে সে বলে নার্নিয়ায় এটা কোন মানুষের প্রথম ভ্রমণ না আর শেষও ভ্রমণও নয়।
পেভেনসি ভাইবোন
লন্ডনে বড় হয় আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গ্রামের দিকে পালাতে বাধ্য হয়। তারাই গল্পের চার প্রধান চরিত্র।
গ্রামের আশ্রয়স্থল
পেভেনসিরা যে বাড়িতে আশ্রয় নেয় তার মালিক এক প্রফেসসর। চাকরেরা বাড়িটির দেখাশুনা করে এবং বহু ঐতিহাসিক প্রায়ই বাড়িটি সফরে আসে।
নার্নিয়ানস
নার্নিয়ার জাদুর জগতে কথা বলা জন্তু ও পৌরাণিক জীবের বসবাস।
দ্য লায়ন, দ্য উইচ অ্যান্ড দ্য ওয়াড্রোব উপন্যাস রচনার অনুপ্রেরণা হিসেবে লিউইস "ইট অল বিগান উইথ এ পিকচার" নামে একটি প্রবন্ধের কথা উল্লেখ করেন:[৪]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাত্সীদের লন্ডনে বোমা হামলার কারণে অনেক শিশুই লন্ডন ছেড়ে গ্রাম এলাকার দিকে পালাতে বাধ্য হয়। ১৯৩৯ সালের ২রা সেপ্টেম্বর মার্গারেট, মেরি ও ক্যাথরীন নামে তিন স্কুল পড়ুয়া শিশু[৫][৬] অক্সফোর্ড শহরের কেন্দ্র থেকে তিন মাইল পূর্বে রাইসিংহার্স্ট এর দ্য কিল্ন্স এ লিউইস এর বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করে। লিউইস পরে বলেন তাদের সাথে বসবাসের এই অভিজ্ঞতা তাকে এক নতুন উপলব্ধি দেয় এবং সেপ্টম্বরের শেষের দিকে [৭] তিনি শিশুদের জন্য একটি নতুন গল্প লিখতে শুরু করেন যা অন্য একটি পান্ডুলিপির অংশ হিসেবে টিকে রয়েছে:
লিউইস গল্পটি কতটুকু লেখা সম্পন্ন করেছিলেন তা অজানাই থেকে যায়। রজার ল্যানসিলিন গ্রীন মনে করেন লিউইস হয়তো গল্পটি লেখা সম্পন্ন করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে শিশুদের গল্প সম্পর্কে লেখা এক চিঠিতে লিউইস বলেন: "আমি নিজে একটি চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু কিন্তু বন্ধুদের সার্বভৌম রায়ের কারণে আমি এটি নষ্ট করে ফেলি যা খুবই খারাপ।"[৯]
কাহিনীতে আলমারির মধ্যে দিয়ে নতুন জগতে প্রবেশ করার পরিকল্পনা লিউইসের মাথায় আসে ১৯৪৬ সালে, যখন
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |