ধরন | দৈনিক সংবাদপত্র |
---|---|
ফরম্যাট | ব্রডশিট |
মালিক | দ্য স্টেটসম্যান লিমিটেড |
প্রকাশক | দ্য স্টেটসম্যান লিমিটেড |
সম্পাদক | রাভিন্দ্র কুমার |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮১১ ১৮৭৫ | ,
রাজনৈতিক মতাদর্শ | স্বাধীন[১] |
ভাষা | ইংরেজি |
সদর দপ্তর | ৪ চৌরঙ্গি স্কয়ার, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ ৭০০ ০০১, ভারত |
প্রচলন | ১৮০,০০০ দৈনিক ২৩০,০০০ রবিবার |
সহোদর সংবাদপত্র | দৈনিক স্টেটসম্যান |
ওসিএলসি নম্বর | ১৭৭২৯৬১ |
ওয়েবসাইট | www |
দ্য স্টেটসম্যান (ইংরেজি: The Statesman) ভারতের অন্যতম প্রধান দৈনিক পত্রিকা। পত্রিকাটি ভারতের কলকাতা, নয়াদিল্লি, শিলিগুড়ি ও ভুবনেশ্বর থেকে প্রকাশিত হয়। ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পত্রিকার প্রধান কার্যালয় কলকাতার চৌরঙ্গি-স্থিত স্টেটসম্যান হাউস। নয়াদিল্লির কনাট প্লেসে অবস্থিত স্টেটসম্যান হাউস এটির জাতীয় সম্পাদনা কার্যালয়। বর্তমানে এই পত্রিকা এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্কের সদস্য।
দ্যা স্টেটসম্যান সংবাদপত্রটি ভারতের মুম্বাই এ প্রকাশিত ইন্ডিয়ান স্টেটসম্যান এবং কলকাতায় প্রকাশিত দ্যা ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া ভিত্তিক দুটি সংবাদপত্রের প্রত্যক্ষ বংশোদ্ভোত। ইন্ডিয়ান স্টেটসম্যান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রবার্ট নাইট, যিনি তার পূর্বে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মূল প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৮৭৫ সালের ১৫ই জানুয়ারী দ্যা স্টেটসম্যান এবং দ্যা ফ্রেন্ড অফ ইন্ডিয়া কে একীভূত করেন[২] এবং দ্যা স্টেটসম্যান নামেই সংবাদ প্রকাশ করা শুরু করেন[৩]। ১৯২৭ সাল পর্যন্ত দ্যা স্টেটসম্যান এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো দ্যা ইংলিশম্যান পত্রিকা[৪]। ১৯৬০ সালের পূর্ব পর্যন্ত স্টেটস ম্যান একটি ব্রিটিশ কর্পোরেট সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। ষাট এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মালিকানা স্থানান্তর হলে এন এ পালখিভালাকে চেয়ারম্যান এবং প্রথম সম্পাদক হিসাবে প্রাণ চোপড়া নিযুক্ত হন।
স্টেটসম্যান এর সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন বেশ জনপ্রিয়। এটি একটি স্বাধীনচেতা দাপুটে সংবাদপত্র ছিলো। ১৯১১ সালে কলকাতা থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরিত করার বিরোধিতা করে পত্রিকাটিতে লেখা হয়েছিলো "[t] ব্রিটিশরা সমাহিত হতেই কবরস্থানের শহরে চলে গেছে"। ১৯৭৫ সনে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরী অবস্থা ঘোষনার সিদ্ধ্বান্তে কঠোরভাবে বিরোধিতা করেছিল স্টেটসম্যান। সম্পাদক ইয়ান স্টিফেন্সের অধীনে (১৯৪২-১৯৫১ সাল) ব্রিটিশ উপপনিবেশিক সরকারের ব্যার্থতায় বাংলায় দুর্ভিক্ষের প্রভাবে পত্রিকাটি অত্যন্ত বিরক্তিকর কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছিল[৫] । এই ছবিগুলি সাম্রাজ্যবাদ বিষয়ে বিশ্বজুড়ে মানুষের মতামত পরিবর্তন করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। ভারতে আদিবাসীদের সামাজিক উত্থানকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য, প্রতি বছরই অসামান্য কৃতিত্বের দাবিদার সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করে দ্যা স্টেটসম্যান। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ও দ্যা স্টেটসম্যানের চেয়ারম্যান বিচারপতি সুধী রঞ্জন দাশের মৃত্যুবার্ষিকী, ১লা সেপ্টেম্বরে প্রতিবছর এসব পুরস্কার বিতরণ করা হয়। একসময় পশ্চিমবঙ্গে প্রকাশিত, সর্বাধিক পঠিত ইংরেজি দৈনিক দ্য স্টেটসম্যান এখন দ্যা টেলিগ্রাফ, টাইমস অফ ইন্ডিয়া এবং হিন্দুস্তান টাইমসের কাছে নিজের জায়গা হারাতে বসেছে। তবে গুরুতর সংবাদ প্রতিবেদন, উদ্বেগমূলক বিশ্লেষণাত্মক নিবন্ধ এবং প্রকৃত ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের জন্য ভারতে এটি ব্যাপকভাবে সমাদ্রিত।
স্টেটসম্যান প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবারে "সেকশন ২" নামে একটি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে যা নয়াদিল্লি থেকে প্রকাশিত হয়। চার পৃষ্ঠার ক্রোড়পত্রটি শিল্প, সাহিত্য, নৃত্য, নাটক, ফ্যাশন, জীবনধারা ও বিনোদন নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ তুলে ধরে। ১৯৯৫ সাল থেকে শুরু হওয়া স্কুল শিশুদের গবেষণামূলক নিবন্ধ, কবিতা এবং সংক্ষিপ্ত সংবাদ লেখার আয়োজন শিশুদের সৃজনশীলতার দক্ষতা প্রদর্শন করার সুযোগ করে দেয়। এছাড়াও প্রতি বছর বিভিন্ন আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং ব্যান্ডের শোর আয়োজন করে স্টেটসম্যান।
স্টেটসম্যান এর প্রধান সম্পাদক রভিন্দ্র কুমার। এছাড়াও উশা মহাদেভান দিল্লী এবং কে রাভি ভুবনেশ্বরের স্থায়ী সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন। ২০০৪ সাল থেকে বাংলা ভাষায় কলকাতা এবং শিলিগুড়িতে দৈনিক স্টেটসম্যান প্রচলিত রয়েছে যার সম্পাদক হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন শেখ নাইম।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্টেটসম্যান সম্পাদক রভিন্দ্র কুমার এবং প্রকাশক আনন্দ সিনহা তাদের লেখনীতে মুসলিমদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত হানার কারণে গ্রেপ্তার হন[৬]। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্যা ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকার মুসলিমদের নিয়ে একটি প্রবন্ধের প্রতিলিপি উপস্থাপন করায় ভারতীয় মুসলিমরা উত্তেজিত হয়েছেন [৭]।