ধর্মহীনতা |
---|
একটি ধারাবাহিকের অংশ |
ধর্মের সমালোচনা |
---|
বিষয়ে ধারাবাহিকের একটি অংশ |
ধর্ম অনুযায়ী |
ধর্মীয় ব্যক্তিত্য অনুযায়ী |
ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী |
ধর্মীয় সহিংসতা |
সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ |
ধর্মের সমালোচনা বলতে বোঝানো হয় ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা, ধর্মীয় মতবাদ, ধর্মের যথার্থতা ও ধর্মচর্চার সাথে সংশ্লিষ্ট আচার-অনুষ্ঠান, প্রথা, রীতি-নীতি এবং তৎসংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ও সামাজিক ঈঙ্গিতসমূহের গঠনমূলক সমালোচনা।[১]
ধর্মের সমালোচনার একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সুদূর অতীতে প্রাচীন গ্রিসে, খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে দার্শনিক ‘মেলোসের নাস্তিক’ দিয়াগোরাসের (Diagorus 'the Atheist' of Melos) মতবাদ থেকে শুরু করে, প্রাচীন রোমে, খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে রচিত দার্শনিক লুক্রেশিয়াসের রচনা De Rerum Natura (On the Nature of Things) প্রভৃতি ধর্মের সমালোচনার আদিমতম নিদর্শনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ধর্মের সমালোচনার বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করে কারণ পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষায় ধর্মের বিচিত্র সব সংজ্ঞা ও ধারণা পাওয়া যায় যেগুলো একটি আরেকটির থেকে নানাভাবে আলাদা। ধর্মীয় মতবাদসমূহের মধ্যে একেশ্বরবাদ, বহু-ঈশ্বরবাদ, সর্বেশ্বরবাদ, নিরীশ্বরবাদ প্রভৃতি শাখা-প্রশাখার এবং খ্রিষ্ট ধর্ম, ইহুদি ধর্ম, ইসলাম ধর্ম, তাওইজম, বৌদ্ধ ধর্ম এবং এরূপ অসংখ্য সুনির্দিষ্ট বিচিত্র মতবাদের অস্তিত্ব থাকায়, প্রায়শই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব হয় না, যে ঠিক কোন ধর্মীয় মতবাদকে উদ্দেশ্য করে সমালোচনা করা হচ্ছে।
পৃথিবীর সব স্বতন্ত্র ধর্মই নিজেদের মতবাদের সত্যতা দাবি করে এবং অন্য সব স্বতন্ত্র ধর্মীয় মতবাদসমূহকে নাকচ করে।[২][৩][৪][৫] সমালোচনাকারীরা ধর্মের সমালোচনা করার সময় সাধারণত ধর্মগুলোকে সেকেলে, অনুসারী ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর, সমাজের জন্য ক্ষতিকর, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতাস্বরূপ, অনৈতিক আচরণ ও প্রথার উৎস এবং সামাজিক নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন।
Religion (উচ্চারণ: রিলিজিয়ন, অর্থ: উপসনা ধর্ম) শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি religion থেকে, যেমন, "religious community" (উচ্চারণ: রিলিজিয়াস কমিউনিটি, অর্থ: ধর্মীয় সম্প্রদায়)। আবার এটি এসেছে লাতিন religionem থেকে (nom. religio) যার অর্থ “পবিত্র বিষয়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ঈশ্বরদের প্রতি নিষ্ঠা” ("respect for what is sacred, reverence for the gods"),[৬] এবং “বাধ্যতা, যা মানুষ ও ঈশ্বরদের মধ্যে সেতুবন্ধনস্বরূপ” ("obligation, the bond between man and the gods"),[৭] যেটি আবার লাতিন religiō থেকে পাওয়া।
প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় পৃথিবীতে, আধুনিক ‘religion’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত লাতিন শব্দমূল religio -কে বোঝা হতো ব্যক্তিবিশেষের উপাসনা করার গুণ হিসেবে; কখনই মতবাদ, চর্চা কিংবা জ্ঞানের উৎসকে নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হতো না।[৮] ধর্মের আধুনিক ধারণা এমন এক বিমূর্ততা, যা ধর্মকে কতকগুলো স্বতন্ত্র বিশ্বাস বা মতবাদের সমষ্টি হিসেবে উপস্থাপন করে। ধর্মের অর্থ হিসেবে এটি অতি সাম্প্রতিক একটি উদ্ভাবন, ইংরেজি ভাষায় যার ব্যাপক ব্যবহার সপ্তাদশ শতাব্দী থেকে লক্ষণীয়। এসময় ‘ধর্ম’ বলতে বোঝানো হতে থাকে ‘উপাসনা ধর্মকে’। ইতিহাসবেত্তারা এর কারণ হিসেবে প্রটেস্ট্যান্ট সংস্কারের সময়ে খ্রিষ্ট ধর্মের বিভাজন ও ভ্রমণের যুগে বৈশ্বায়নকে দায়ী করে থাকেন।[৮] এ যুগে, ইউরোপীয়দের সাথে অসংখ্য ভিন্ন সংস্কৃতির ও ভাষার দেশী-বিদেশী জনপদের যোগাযোগ স্থাপন আরও সাধারণ একটি ব্যাপারে পরিণত হয়। আবার এসব জনগোষ্ঠীর মধ্যে অনেকেরই নিজ ভাষায় ধর্মীয় ভাব প্রকাশের জন্য ‘religion’ -এর সমতূল্য ধারণা বা সমার্থক শব্দ ছিল না।[৮] সপ্তাদশ শতকই সেই সময়, যখন ধর্মের ধারণা আধুনিক আকার পেতে শুরু করে। যদিও বাইবেল, কুরআন এবং অন্যান্য প্রাচীন পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহের মূল ভাষায় লিখিত সংস্করণে ধর্মের ধারণার কোন সুস্পষ্ট উল্লেখ ছিল না। এমনকি যে সংস্কৃতিতে এই ধর্মগ্রন্হসমূহ লেখা হয় কিংবা যারা এই গ্রন্হগুলো অনুসরণ করতেন তাদেরও ধর্মের কোন সুস্পষ্ট ধারণা ছিল না।[৯] উদাহরণস্বরূপ, গ্রিক শব্দ threskeia (উচ্চারণ: থ্রেসকিয়া বা থ্রিসকিয়া) -এর কথা বলা যায়, যেটি হিরোডোটাস ও জোসিফাসের মত প্রখ্যাত গ্রিক লেখকেরা ‘উপাসনা’ অর্থে ব্যবহার করতেন। অথচ আজকের দিনে নিউ টেস্টামেন্টে এর অনুবাদ করা হয়েছে ‘ধর্ম’ হিসেবে। মধ্যযুগেও উক্ত শব্দটি ‘উপাসনা’ কিংবা এর সমার্থক ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হতো।[৯] আবার কুরঅানের ক্ষেত্রে, অধিকাংশ সময়ই আরবী শব্দ دين (উচ্চারণ: দ্বীন) -এর আধুনিক ইংরেজি অনুবাদ করা হয় ‘religion’ বা ধর্ম হিসেবে, কিন্তু সপ্তাদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত অনুবাদকেরা এই শব্দটি ব্যবহার করতেন ‘আইন’ বোঝাতে।[৯] এমনকি খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতকেও গ্রিক দার্শনিক জোসিফাস গ্রিক শব্দ ioudaismos (উচ্চারণ: ইউদাইসমোস) -কে ‘সম্প্রদায়’ অর্থে ব্যবহার করতেন, যার সাথে আধুনিককালের এক সেট বিমূর্ত ধারণা ও বিশ্বাসের সমাহার হিসেবে ধর্মের যে সংজ্ঞা প্রণীত হয়েছে তার কোন সম্পর্ক নেই। যদিও বর্তমানকালে অনেকেই ioudaismos -কে ‘ইহুদি ধর্ম’ (Judaism) হিসেবে অনুবাদ করেন।[৯] উনবিংশ শতকেই প্রথম চলিত ভাষায় ‘বৌদ্ধ ধর্ম’ (Buddhism), ‘হিন্দু ধর্ম’ (Hinduism), ‘তাওবাদ’ (Taoism), ‘কনফুসিয়ানিজম’ (Confucianism) প্রভৃতি শব্দের উন্মেষ ঘটে।[৮][১০] জাপানের সুদীর্ঘ ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, জাপানে কখনই কোথাও ‘ধর্মের’ কোন ধারণা ছিল না। যেহেতু জাপানী ভাষায় ‘ধর্ম’ বোঝাতে কোন শব্দ ছিল না, এমনকি এর কাছাকাছি ভাব প্রকাশ করে এমন কোন শব্দও না থাকায়, যখন ১৮৫৩ সালে মার্কিন রণতরীগুলো জাপানের উপকূলে এর জলসীমায় অবস্থান নেয় এবং তৎকালীর জাপান সরকারকে অন্যান্য অনেক বিষয়ের সাথে ধর্মের স্বাধীনতাকেও রাষ্ট্রনীতি হিসেবে স্বীকার করে সন্ধিপত্রে স্বাক্ষরের জন্য চাপ দিতে থাকে, তখন জাপান সরকার বাধ্য হয় এই পশ্চিমা ধারণা গ্রহণ করতে।[১০]
উনিশ শতকের প্রখ্যাত ভাষাতত্ত্ববিদ ম্যাক্স মুলারের মতে, ইংরেজি ভাষায় ব্যবহৃত ‘religion’ শব্দটির শব্দমূল, লাতিন religio (উচ্চারণ: রিলিজিও) শব্দটি মূলত ব্যবহৃত হতো “ঈশ্বর কিংবা ঈশ্বরবর্গের প্রতি নিষ্ঠা, পবিত্র বিষয়সমূহ সম্পর্কে সাবধানী চিন্তা ও ভক্তি (যেটিকে পরবর্তীতে সিসারো ‘অধ্যবসায়’ হিসেবে ব্যাক্ত করেন)” অর্থে।[১১][১২] ম্যাক্স মুলার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বহু সংস্কৃতিকে ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে অনুরূপ ক্ষমতা-কাঠামোর অধিকারী হিসেবে চিন্হিত করেন, যেগুলোর মধ্যে মিশরীয়, পারস্যীয় ও ভারতীয় সংস্কৃতিও অন্তর্ভুক্ত। তার মতে আজ যেগুলোকে আদিম ধর্মমত বলা হয়, তৎকালীন মানুষের কাছে সেগুলো ছিল কেবলই ‘আইন’ মাত্র।[১৩]
অনেক ভাষাতেই এমন শব্দাবলি রয়েছে যেগুলোকে ‘ধর্ম’ হিসেবে অনুবাদ করা যেতে পারে, কিন্তু ভাষাভাষিরা হয়তো ভিন্নভাবে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আবার কিছু ভাষায় ধর্ম বলতে কোন শব্দই নেই। উদাহরণস্বরূপ, সংস্কৃত धर्म (উচ্চারণ: ধার্মা বা dharma) শব্দটিকে কখনও কখনও ‘উপাসনা ধর্ম’ হিসেবে ভাষান্তর করা হলেও এর আরেকটি অর্থ ‘আইন’। চিরায়ত যুগে দক্ষিণ এশিয়ায় ভক্তির মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্ত (penance through piety) এবং ধর্মানুষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক প্রথাগুলোও আইন শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রথমদিককার মধ্যযুগীয় জাপানে ‘সাম্রাজ্যবাদী আইন’ এবং সর্বজনীন বা ‘বুদ্ধের আইনের’ মধ্যে এক ধরনের মেলবন্ধন ছিল, যেগুলো পরবর্তীকালে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতার স্বাধীন উৎসে পরিণত হয়।[১৪][১৫]
হিব্রু ভাষায় ‘ধর্মের’ কোন অবিকল সমার্থক শব্দ নেই, এবং ইহুদি ধর্ম স্পষ্টরূপে ধর্মীয়, জাতীয়তাবাদী, বর্ণীয় কিংবা সাম্প্রদায়িক পরিচয়সমূহের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখায় না।[১৬] এই ধর্মের কেন্দ্রীয় ধারণাসমূহের মধ্যে ‘halakha’ (উচ্চারণ: হালাকা বা হালাখা) অন্যতম, যার অর্থ, ‘পথ’ বা ‘পথে চলা’, যা আবার অনেকসময় ‘আইন’ হিসেবেও অনুবাদ করা হয়। এই আইন দ্বারা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, বিশ্বাস ও দৈনন্দিন জীবনে এর প্রয়োগ নির্দেশিত হয়।[১৭]
খ্রিষ্টপূর্ব ১ম শতাব্দীর বিখ্যাত রোমান কবি টাইটাস লুক্রেশিয়াস কেরাস তার রচনা দে রেরুম নাতুরা -তে বলেন:
(ইংরেজি)
«But 'tis that same religion oftener far / Hath bred the foul impieties of men.[১৮]» |
(বাংলা)
«কিন্তু এই একই ধর্ম প্রায়শই / মানুষের [মনে] নোংরা ধর্মদ্রোহিতার জন্ম দেয়।» |
(লুক্রেতিউস) |
এপিকুরিয় মতাদর্শের একজন দার্শনিক হিসেবে, লুক্রেশিয়াস বিশ্বাস করতেন যে, সমগ্র বিশ্বজগৎ পদার্থ ও শূণ্যস্থানের সমন্বয়ে গঠিত এবং সকল জাগতিক ঘটনাকেই প্রাকৃতিক কারণের ফলাফল হিসেবে অনুধাবন করা সম্ভব। এপিকুরাসের ন্যায় লুক্রেশিয়াসও মনে করতেন যে ভয় ও অজ্ঞতা থেকেই ধর্ম জন্মলাভ করেছে এবং প্রকৃতিজগৎকে কার্যকারণ সম্পর্কের ভিত্তিতে অনুধাবনের মাধ্যমেই মানুষ ধর্মের শেকল থেকে মুক্তি পাবে;[১৯] যদিও, তিনি ঈশ্বরদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন।[২০] তিনি কখনই ধর্ম কিংবা ধর্মসংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ের বিরুদ্ধে ছিলেন না; কিন্তু তৎকালীন সমাজের প্রথাগত ধর্মসমূহকে তিনি অন্ধবিশ্বাস হিসেবে দেখতেন কারণ তার মতে সেগুলো এই শিক্ষা দিতো যে, ঈশ্বরগণও প্রাকৃতিক জগতে হস্তক্ষেপ করে থাকেন।[২১] ষোড়শ শতকের শুরুর দিকে নিক্কোলো মাকিয়াভেল্লি বলেন:
(ইংরেজি)
«We Italians are irreligious and corrupt above others... because the church and her representatives have set us the worst example.» |
(বাংলা)
«আমরা ইতালীয়রাই সবার থেকে বেশি অধার্মিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পাপী... কারণ চার্চ এবং তার প্রতিনিধিত্বকারীরা আমাদের জন্য নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।» |
(নিক্কোলো মাকিয়াভেল্লি[২২]) |
মাকিয়াভেল্লির দৃষ্টিতে ধর্ম ছিল শুধুই একটি হাতিয়ার, যেটি জনমত নিয়ন্ত্রণে ইচ্ছুক শাসকদের খুব কাজে আসে।[২৩]
আঠারো শতকের প্রখ্যাত দার্শনিক ভলতেয়ার ছিলেন একজন শ্বরবাদী এবং একইসাথে ছিলেন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার কঠোর সমালোচক। তিনি ‘স্বর্ণনির্মিত গোবৎস’ উপাসনার দায়ে একদল ইহুদি কর্তৃক আরেকদল ইহুদিদের হত্যা ও অনুরূপ অন্যান্য ঘটনাবলি সম্পর্কে অভিযোগ ব্যক্ত করেন। সেই সাথে তিনি, খ্রিষ্ঠানদের ধর্মীয় মতপার্থক্যের কারণে অন্য খ্রিষ্টানদের হত্যা এবং খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ না করায় মার্কিন আদিবাসিদের হত্যা করার জন্য নিন্দা করেন। তিনি দাবি করেন যে, প্রকৃতপক্ষে নিহতদের সম্পদ লুঠ করার উদ্দেশ্যেই খ্রিষ্টানদের দ্বারা এই সকল হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ভলতেয়ার মুসলিমদের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতারও সমালোচনা করেন।[২৪]
এছাড়াও আঠারো শতকের অন্যতম প্রোথিতযশা দার্শনিক ও প্রাবন্ধিক ডেভিড হিউম ধর্মের সত্যতার সপক্ষে করা উদ্দেশ্যবাদী বা বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনা যুক্তির সমালোচনা করেন। হিউমের মতে, মহাবিশ্বের সুশৃঙ্খলার কারণ হিসেবে প্রাকৃতিক কার্যকারণ সম্পর্কযুক্ত ব্যাখ্যাই অনেক বেশি যৌক্তিক। ধর্মের দার্শনিক ভিত্তির অযৌক্তিকতা তুলে ধরা ছিল হিউমের সাহিত্যকর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।[২৫]
একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিককার সময়ে, ধর্মের তীব্র সমালোচনা হিসেবে নব্য নাস্তিক্যবাদের উত্থান ঘটে।[২৬][২৭] শিক্ষা ও ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি থেকে উঠে আসা চারজন লেখক ধর্মের সমালোচনাকে কেন্দ্র করে শতাধিক বই এবং শতাধিক বিশেষায়িত নিবন্ধ লিখেন। এই চারজন সমালোচক হলেন স্যাম হ্যারিস, ড্যানিয়েল ডেনেট, রিচার্ড ডকিন্স, ক্রিস্টোফার হিচেন্স তাদেরকে একত্রে ফোর হর্সম্যান বলে উল্লেখ করা হয়। তাদের কাজ এবং নিবন্ধগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিতর্কের স্ফুরণ ঘটায় এবং জনপ্রিয় মাধ্যম গুলোতে (অনলাইন ফোরাম, ইউটিউব, টেলিভিশন এবং জনপ্রিয় দর্শন) ব্যাপকভাবে উদ্ধৃত হয়। দার্শনিক স্যাম হ্যারিস তার এন্ড ইন ফেইথে ধর্মের বিষাক্ত বৈশিষ্ট্য যেমন ধর্মের নাম করে নানাবিধ সহিংসতার প্রতি আলোকপাত করেন। দার্শনিক ড্যানিয়েল ড্যানেট ব্রেকিং দ্য স্পেলে, "কেন আমরা অদ্ভুৎ জিনিসে বিশ্বাস করি" শীর্ষক নিবন্ধে বিষয়টি আলোচনা করেন। জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স দ্য গড ডিল্যুশনে ধর্মের প্রায় সববিষয়কে হাসিঠাট্টার মাধ্যমে সমালোচনা করেন। সাংবাদিক ক্রিস্টোফার হিচেন গড ইজ নট গ্রেটে কীভাবে ধর্মগুলো মানুষের মর্যাদাহানি করে এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলোর দুর্নীতি বিষয়ে আলোকপাত করেন।
আজকের সময় ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি বহুদূরবিস্তৃত বিমূর্ত ধারণা হয়ে দাড়িয়েছে যা বিশ্বাস, মতবাদ এবং পবিত্র স্থানকে ভিত্তি করে সম্প্রসারিত হয়। এমনকি যেসব মানুষ ধার্মিক, সেই ধার্মিক মানুষগুলো যেসব ধর্মগ্রন্থকে পবিত্র গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করে, সেই গ্রন্থে তাদের স্থানীয় ভাষা, সংস্কৃতি বা ইতিহাস উল্লেখিত না থাকলেও তারা সেই ধর্মকে মেনে চলে যেমন বিশ্বজুরে থাকা বাইবেল বা কুরআন অনুসারীরা।[৯][২৮] ধর্ম কী এই বিষয়ে গবেষকদের কোনো ঐক্যবদ্ধ মতামত নেই।[৯][২৮][২৯][৩০]
১৭ শতকের পূর্বে ধর্মের প্রতিদিনকার জীবনে ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ধর্মের ব্যাপারে আধুনিক পশ্চিমা মতবাদ ১৭ শতকের পূর্বেই উন্নত হতে থাকে।[৮][৯][২৮][৩০] উদাহরণস্বরূপ, এশিয়াতে ১৯ শতকের পূর্বে কেওই নিজেকে হিন্দু বা অন্য কোনো সুনির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী বলে দাবী করত না।[১০][২৮][২৮]
বৈচিত্র্যময় আধুনিক ধারার বিভিন্ন ধর্মীয় শ্রেণিবিভাগ (যেমনঃ একধর্মী, বহুধর্মে বিশ্বাস, সর্বধর্মে বিশ্বাস, ধর্মহীনতা) এবং বৈচিত্র্যময় প্রাতিষ্ঠানিক সুনির্দিষ্ট ধর্ম (যেমনঃ খ্রিষ্ঠান, ইহুদীবাদ, ইসলাম, বৌদ্ধধর্ম) থাকার দরুণ অনেকসময় এটা বুঝা যায় না, কোন ধর্মের সমালোচনা করা হচ্ছে বা এই সমালোচনার ব্যাপ্তি কতটুকু হলে তা সকল ধর্মের সাধারণ সমালোচনা হিসেবে গণ্য হবে।
একেশ্বরবাদী ধর্মমতসমূহের প্রতি করা কিছু সমালোচনা:
ঈশ্বরবাদী বিশ্বাস প্রসঙ্গে স্টিফেন রবার্টস বলেন, “আমি [তর্কের খাতিরে] দাবি করছি যে আমরা উভয়ই নাস্তিক, আমি শুধু আপনার চেয়ে একজন কম ঈশ্বরে বিশ্বাস করি মাত্র।[৩৮] আপনি যখন এটা বোঝেনই যে কেন আপনি অন্য সব সম্ভাব্য ঈশ্বরদের [অস্তিত্ব] প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে এটাও [নিশ্চয়ই আপনি] বুঝবেন [যে] কেন আমি আপনার ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করি।”[৩৯]
অপসোপজ ও হিচেন্স বিভিন্ন লুপ্ত ও প্রাচীন ধর্মমতকে উল্লেখ করেন যেগুলোর বর্তমানে আর কোন সক্রিয় অনুসারী নেই। তাদের মতে এসব ঘটনাই প্রমাণ করে যে ধর্মগুলোও চিরস্থায়ী নয়।[৪০] লুপ্ত ও প্রাচীন ধর্মমতগুলোর মধ্যে গ্রিক পুরাণ, মিলারিজম, রোমান মিথোলজি, সাব্বাতায়ঈ যেভাই, নর্স মিথোলজি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।[৩৪]:১৬৯–১৭৩
ডেনেট, হ্যারিস ও হিচেন্স দাবি করেছেন যে, ঈশ্বরবাদী ধর্মসমূহ ও তাদের ধর্মীয় পুস্তকসমূহ ঐশ্বরীয়ভাবে অনুপ্রাণীত (divinely inspired) নয়; বরং সামাজিক, জৈবিক ও রাজনৈতিক প্রয়োজনে সেগুলোকে মানুষই তৈরি করেছে।[৪১][৪২] অপরদিকে, ডকিন্স ধর্মের ইতিবাচক উপযোগীতা (যেমনঃ মানসিক প্রশান্তি, সমাজগঠন, নৈতিক আচরণে উৎসাহদান ইত্যাদি) এবং ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে সমতাবিধানে (balance) সচেষ্ট হয়েছেন।[৪৩] এরূপ সমালোচনা ধর্মকে সমাজসৃষ্ট ধারণা, তথাপি আর দশটি মতাদর্শের মতই কেবলমাত্র একটি মানবসৃষ্ট মতবাদ হিসেবে গণ্য করে।[৪৪]
ডেভিড হিউম যুক্তি দিয়ে বলেন, ধর্মগুলো ক্রমবিকশিত হয়েছে বিদ্বেষ আর প্রতিকূল পরিস্থিতির বিপরীতে শান্তির এক পরম উৎস হিসেবে। ধর্ম বা ধর্মীয়বাণী কখনোই যাচাইযোগ্য কিনা তা বিবেচনা করা হয় নি। ধর্ম হচ্ছে সব কিছুর কার্যকারণের একটি সহজ সরল গঠন।[৪৫]
ডেনিয়েল ডেনেট যুক্তি দেখিয়েছেন যে, আধুনিককালে সৃষ্ট হওয়া ধর্ম- যেমন, রায়েলিজম (Raëlism), মর্মনিজম, সাইন্টোলজি, বাহাই ধর্ম প্রভৃতি ব্যতীত বাকি সকল ধর্মই মানব ইতিহাসের এমন এক পর্যায়ে উদ্ভূত হয়েছে যখন জীবনের উৎপত্তি, মানবদেহের কার্যকলাপ এবং নক্ষত্র ও গ্রহগুলোর প্রকৃতি সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান ছিল অতি সীমিত।[৪১] মূলত সান্ত্বনা প্রদান এবং বৃহত্তর শক্তির সাথে সম্পর্কের অনুভূতি তৈরির উদ্দেশ্যেই এসব উপাখ্যান বর্ণনা করা হতো। প্রাচীন সমাজে এসব উপাখ্যান বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন ধর্মে সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ এবং ধূমকেতু বিষয়ে থাকা দৃষ্টিভঙ্গি এসবের অন্তর্ভুক্ত।[৪৬][৪৭] বর্তমানে বস্তুজগৎ সম্পর্কে মানুষের অধিকতর সুস্পষ্ট জ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে, হিচেন্স, ডকিন্স এবং ফরাসি নাস্তিক দার্শনিক মিচেল অনফ্রে দাবি করেন যে, এখন আর অব্যাহতভাবে এসব বিশ্বাস ব্যবস্থা আকড়ে ধরে থাকা মোটেও যৌক্তিক বা উপযোগী নয়।[৩৪][৪৩][৪৮]
(ইংরেজি)
«Religious suffering is, at the same time, the expression of real suffering and a protest against real suffering. Religion is the sigh of the oppressed creature, the heart of a heartless world, and the soul of soulless conditions. It is the opium of the people.[৪৯]» |
(বাংলা)
«ধর্মীয় দুঃখ-দুর্দশা হলো একইসাথে, প্রকৃত দুঃখ-দুর্দশার বহিঃপ্রকাশ এবং [ঐ] প্রকৃত দুঃখ-দুর্দশার বিরুদ্ধে একধরণের প্রতিবাদস্বরূপ। ধর্ম হলো নিপীড়িত জীবের দীর্ঘঃশ্বাস, হৃদয়হীন পৃথিবীর হৃদয়, আত্মাহীন পরিস্থিতির আত্মা। এটা জনগণের আফিম।» |
(কার্ল মার্ক্স) |
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের জনক কার্ল মার্ক্স-এর মতানুসারে, ধর্ম হলো শাসক শ্রেণি কর্তৃক ব্যবহৃত একটি হাতিয়ার, যা দ্বারা ধর্মীয় অনুভূতি অনুভবের মাধ্যমে জনগণ সাময়িকভাবে নিজেদের দুঃখ প্রশমিত করতে পারে। শাসক শ্রেণি জনমনে এই ধর্মীয় বিশ্বাস প্রবেশ করায় যে, তাদের বর্তমান দুঃখ-দুর্দশাই ভবিষ্যতে তাদের ক্রমাণ্বয়ে সুখের পথে পরিচালিত করবে এবং এভাবে শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে। অতএব, যতদিন সাধারণ জনগণ ধর্মে বিশ্বাস করবে, ততদিন তারা নিজেদের দুঃখ-দুর্দশা সমাধানকল্পে প্রকৃত কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবে না। মার্ক্স-এর মতে, যা জন্ম দেয় পুঁজিবাদী অথনৈতিক ব্যবস্থার। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে, মার্ক্স ধর্মকে দেখতেন একধরনের পলায়নবাদী প্রবৃত্তি হিসেবে।[৪৯]
এছাড়াও মার্ক্স খ্রিষ্ট ধর্মের ‘ আদি পাপ’ মতবাদের বৈশিষ্ট্যকে গভীরভাবে সমাজবিরোধী হিসেবে দেখতেন। তিনি যুক্তি দেখান যে, আদি পাপের ধারণা মানুষকে আশ্বস্ত করে যে তার সকল দুঃখ-দুর্দশার কারণ সমাজের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার দুর্বলতা বা তাদের ব্যর্থতা নয় বরং তার সহজাত ও অপরিবর্তনযোগ্য পূর্বোক্ত পাপের কারণেই তার এই দুর্দশা। অথচ মার্ক্স-এর মতে, সমষ্টিগত সামাজিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সামাজিক সংগঠনগুলোতে পরিবর্তন আনা সম্ভব এবং মানুষের দুর্দশাও দুর করা সম্ভব।[৫০]
রিচার্ড ডকিন্স তার ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত বই The Selfish Gene -এ তথ্যের একক বোঝাতে ‘মিম’ নামক শব্দ উদ্ভাবন করেন, যা অনেকটা জিনের মত, অথচ সাংস্কৃতিকভাবে বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়।[৫১] তিনি পরবর্তিতে তার রচিত Viruses of the Mind (বাংলা: মনের ভাইরাস) প্রবন্ধে মানব সংস্কৃতিতে ধর্মীয় ধ্যান-ধারণার বিদ্যমানতার কারণ ব্যাখ্যা করতে এই ধারণাটি ব্যবহার করেন।[৫২] তার মতে ধর্ম একপ্রকার ভাইরাস এবং জিনের মত; যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়াতে থাকে।
ধার্মিক এবং নিধার্মিক উভয়ই ডকিন্সের মেমে তত্ত্বের সমালোচনা করেন। জন বোকার, ‘ঈশ্বর’ ও ‘ধর্মবিশ্বাস’ যে মনের ভাইরাস; ডকিন্সের এই ধারণার সমালোচনা করেন, এবং এই মত প্রকাশ করেন যে, ‘‘ধর্মীয় প্রেরণা নিয়ে ডকিন্স যে বিবরণ দিয়েছেন; তার সাথে... তথ্য-প্রমাণ ও উপাত্তের বিস্তর তফাৎ [রয়েছে]’’[৫৩] এলাইস্টার ম্যাকগার্থ এই যুক্তি দেখানোর মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যে, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় মিমের [ধারণার] কোন স্থান নেই’’,[৫৪]:১২৫ এধরণের [ধর্মীয়] ভাবনার বিস্তরণ [কোন] এলোমেলো উদ্দেশ্যহীন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে না, বরং স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ইচ্ছাকৃত কার্যকলাপের দ্বারা [সংঘটিত] হয়,[৫৪]:১২৬ ধ্যান-ধারণার বিবর্তন ডারউনীয় বিবর্তনের চেয়ে [বরং] অনেকটাই ল্যামার্কীয় [ধরনের],[৫৪]:১২৭ [এ বিষয়ে] কোনই প্রমাণ নেই যে, রোগবিস্তারবিদ্যা সংশ্লিষ্ট (Epidemiological) মডেলগুলো ধর্মীয় ধারণার বিস্তার ব্যাখ্যায় উপযোগী। [৫৪]:১৩৭–১৩৮ এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি জরিপকে উদ্ধৃতি করে বলেন, ইতোমধ্যে এটা দেখা গিয়েছে ধার্মিকরা তুলনামুলকভাবে বেশি সুখী হয়, যা থেকে এটাই অনুমিত হয়, ধর্ম কোনোভাবে ভাইরাসের সমতুল্য নয়।’’ [৫৫]
রিচার্ড ডকিন্স যুক্তি দেখান যে, ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে প্রায়শই বিভ্রমাত্মক আচরণ জড়িত থাকে।[৪৩] আবার স্যাম হ্যারিসের মত অনেকেই, ধর্মকে মানসিক রোগের সাথে তুলনা করেন এবং বলেন যে, “এটি অন্যথায় সুস্থ্য-স্বাভাবিক মানুষকেও পবিত্র কর্মের অজুহাতে, অবাধে পাগলামী করার স্বীকৃতি দেয়।”[৫৬]
According to a retrospective study on Abraham, Moses, Jesus Christ, and the Apostle Paul, they may have had psychotic disorders that contributed inspiration for their revelations. They conclude that people with such disorders have had a monumental influence on civilization.[৫৭] সাম্প্রতিককালে রহস্যময় আধ্যাত্ববাদী ঘটনাগুলোর রহস্যভেদের উদ্দেশ্যে অনেক মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা হয়েছে এবং কিছু গবেষণায় রহস্যময় আধ্যাত্বিক অনুভূতি লাভ করা অনেক ‘অতীন্দ্রিয়বাদীর’ অনুভূতির সাথে শৈশবে শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের স্বীকার হওয়ার যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।[৫৮][৫৯][৬০] আরেক ধারার গবেষণায় গবেষক ক্লিফোর্ড এ. পিকওভার বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করেন, যেগুলো বিভিন্ন ধর্মীয় আধ্যাত্বিক বা অলৌকিক অনুভূতি (যেমন, প্রেতাত্বা ভর করা, দেবতা দর্শন, ঈশ্বর দর্শন, ঐশী নির্দেশ লাভ ইত্যাদি) লাভের সাথে মস্তিষ্কে পরিবর্তিত বৈদ্যুতিক কার্যকলাপের ফলে সৃষ্ট টেম্পোরাল লোব এপিলেপ্সির সম্ভাব্য যোগসূত্রের প্রতি ইঙ্গিত করে।[৬১] কার্ল সেগান, তার সর্বশেষ বই, The Demon-Haunted World: Science as a Candle in the Dark -এ অতীতের বিভিন্ন ধর্মীয় চরিত্রের অলৌকিক অভিজ্ঞতা লাভের সাথে আজকের দিনের UFO দেখতে পাওয়ার অভিজ্ঞতার তুলনা করেন। তার মতে, এই দুই ধরনের ঘটনারই উৎপত্তি হয় একই মানসিক ভারসাম্যহীনতা থেকে। ভি. এস. রামচন্দ্রনের মতে, “এমনটি হতেই পারে যে, অতীতের অনেক মহান ধর্ম প্রচারকেরই টেম্পোরাল লোব এপিলেপ্সি ছিল এবং এটাই হয়তো তাদেরকে স্বপ্নাদেশ পাওয়া, রহস্যময় অনুভূতি লাভ প্রভৃতির উপোযোগী পাত্রে পরিণত করে।”[৬২] অন্যদিকে মাইকেল পার্সিন্জার ‘গড হেলমেট’ ছদ্মনামের একটি যন্ত্রের দ্বারা মৃদু চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করে মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোবকে কৃত্রিমভাবে উত্তেজিত করেন এবং মানব মস্তিষ্কে কৃত্রিমভাবে ধর্মীয়, ভৌতিক ও মরণ-প্রান্তিক (near-death) অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হন।[৬৩] John Bradshaw এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, “কয়েক ধরনের টেম্পোরাল লোব টিউমর বা মৃগীরোগের সাথে চরম ধার্মিকতার সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি প্রার্থনারত ভক্তদের অথবা অতিন্দ্রীয় ধ্যানমগ্ন ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের তোলা ছবির মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট করে কয়েকটি উত্তেজিত এলাকা শনাক্ত করা হয়েছে, রামচন্দ্রন যেগুলোকে বলেন ‘গড-স্পট’। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুমে বিদ্যমান সিলোসাইবিন (Psilocybin) নামক রাসায়নিক যৌগ মস্তিষ্কের সেরোটোনার্জিক সিস্টেমের সংস্পর্শে এলে, একধরনের মহাজাগতিক একাত্মতা, অতিন্দ্রীয় তাৎপর্যময়তা ও ধর্মীয় চরমানন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করে। বিশেষ কিছু শারীরিক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও সেরোরেটানার্জিক সিস্টেমকে সক্রিয় করার মাধ্যমে এ ধরনের অনুভূতি উৎপন্ন করতে সক্ষম।”[৬৪]
Psychological studies into the phenomenon of mysticism link disturbing aspects of certain mystics' experiences to childhood abuse.[৬৫][৬৬][৬৭] Clifford A. Pickover found evidence suggesting that temporal lobe epilepsy may be linked to a variety of so-called spiritual or "other worldly" experiences, such as spiritual possession, originating from altered electrical activity in the brain.[৬৮] Carl Sagan, in his last book The Demon-Haunted World: Science as a Candle in the Dark, presented his case for the miraculous sightings of religious figures and modern sightings of UFOs coming from the same mental disorder. Vilayanur S. Ramachandran suggests "It's possible that many great religious leaders had temporal lobe seizures and this predisposes them to having visions, having mystical experiences".[৬৯] Michael Persinger stimulated the temporal lobes of the brain artificially with a magnetic field using a device nicknamed the "God helmet" and was able to artificially induce religious experiences along with near-death experiences and ghost sightings.[৭০] According to John Bradshaw "Some forms of temporal lobe tumours or epilepsy are associated with extreme religiosity." In his research recent brain imaging of religious subjects praying or meditating show identical activity in the respective human section of the brain which Ramachandran calls God-spots.
Psilocybin from mushrooms affect regions of the brain includingthe serotonergic system, which generating a sense of strong religious meaning, unity and ecstasy. Certain physical rituals may generate similar feelings.[৬৪]
In Michael Shermer's book Why People Believe Strange Things he theorizes on how emerging mankind imposed made-up explanations and bizarre rituals for natural phenomena they didn't and couldn't understand. This is similar to the arguments made by Daniel Dennett in Breaking the Spell[৭১] however Shermer's argument goes further in that the peculiar and at times frightening rituals of religion are but one of many forms of strange customs that survive to this day.[৭২]
দার্শনিক ও সমাজবিজ্ঞানী ওগুস্ত কোঁত অভিমত প্রকাশ করেন যে, অনেক সমাজসৃষ্ট ধারণাই ক্রমবিকাশের পথে তিনটি ধাপ অতিক্রম করে থাকে (একে তিন ধাপ নীতি বা Law of Three Stages বলা হয়)। তার মতে, এক্ষেত্রে ধর্ম তিনটি ধাপের মধ্যে কেবলমাত্র পূর্ববর্তী দুটি ধাপের সাথেই সংগতিপূর্ণ অথবা বলতে গেলে এটি কেবল দুটি ধাপ অতিক্রম করেছে বা এখনও ক্রমবিকাশের আদিম পর্যায়েই রয়ে গেছে। তিনি বিবৃতিতে বলেন, "মানুষের বুদ্ধিমত্তার উপর গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, সমস্ত ক্ষেত্রে, সমস্ত সময়ে এই মৌলিক নীতির উত্থান হয়। যা সবসময়ে শর্তাধীন এবং যার শক্ত প্রমাণ থাকবে। এসবকিছুই ইতিহাসে পুনরাবৃত্ত হতে থাকে। আমাদের পরিচিত জ্ঞানের সকল শাখা যেমনঃ ধর্মতাত্ত্বিক বা কাল্পনিক; আধ্যাত্ববাদী বা বিমূর্ত; বৈজ্ঞানিক বা দৃষ্টবাদী ভাবনাগুলো সফলভাবেই এই তিনটি ধাপকে অতিক্রম করে।[৭৩]
কেইথ ওয়ার্ড তার ইজ রিলিজিয়ন ডেঞ্জারাস, গ্রন্থে উল্লেখ করেন, সব মিথ্যা মতামতই বিভ্রম নয় এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস করা ভিন্ন বিষয় এবং বিখ্যাত মানুষের অনেকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে। তাছাড়াও যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তাদের অনেকে খুবই সাধারণ মানুষ এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস কোনো অযৌক্তিক বিষয় নয়।[৭৪] Hyperreligiosity or even "intensely professed atheism" can emerge from emotional disturbances involving temporal lobe epilepsy.[৭৫]
Ayn Rand, Nathaniel Branden প্রমুখ বিশ্বাসীদের আত্ম-বিসর্জনের মত বিপজ্জনক প্রথার প্রতি আনুগত্যের সমালোচনা করেছেন।[৭৬] এর সাথে তারা মানব আচরণের উপর সীমাবদ্ধতা আরোপেরও (যেমন, মদ্যপান থেকে বিরত থাকা, যৌনতা বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি) সমালোচনা করেন এবং দাবি করেন যে, এসবের কারণে মানুষ ভয় ও অপরাধবোধে ভোগে; ফলে মানসিক আঘাতের স্বীকার হয়।[৩৪]:২০৫–২১৭
১৯৯৮ সালে করা একটি বিশদ গবেষণায়, ধর্মভিত্তিক অপচিকিৎসা বা চিকিৎসাজনিত অবহেলার কারণে ১৪০ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা বেরিয়ে আসে। তম্মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অতিমাত্রায় ধর্মভীরু পিতামাতাদের সন্তানদের আরোগ্য লাভের জন্য প্রার্থনার উপর নির্ভর করা এবং চিকিৎসা সেবা থেকে শিশুদের বঞ্চিত রাখার প্রমাণ মেলে।[৭৭]
১৩ বছর সময়ের মাঝে (১৯৮০-১৯৯৩), জেরুজালেমে অবস্থিত ফার সাউল মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (Kfar Shaul Mental Health Centre) যে সংখ্যক রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছিল তাদের উপর করা একটি জরিপের প্রেক্ষিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় যে, এদের মধ্যে ১২০০ পর্যটক তীব্র জেরুজালেম কেন্দ্রীক মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে তাদেরকে ঐ হাসপাতালে পাঠানো হয়।[৭৮] এদের মধ্যে, ৪৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বছরে গড়ে, ১০০ জন পর্যটকের চিকিৎসা করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৪০ জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবছর জেরুজালেমে প্রায় বিশ লক্ষ পর্যটক বেড়াতে আসেন। তবে ক্যালিয়ান ও উইৎজতুম (Kalian and Witztum) উল্লেখ করেন যে, [রোগীদের সংখ্যাকে] ঐ শহর ভ্রমনে আসা মোট পর্যটকের সংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ হিসেবে বিবেচনা করলে, এই পরিমান রোগীর সংখ্যা অন্য যে কোন শহরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হয় না।[৭৯][৮০] এছাড়াও, এসব দাবির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে কারণ, জেরুজালেম সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আগে থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।[৭৯][৮১]
ক্রিস্টোফার হিচেন্স বলেন যে, বিভিন্ন ধর্মমত স্বমেহন ও সমপ্রেমিতার মত, প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে পারস্পারিক সম্মতিক্রমে সংঘটিত, বিশেষ কিছু যৌনাচারকে ‘প্রকৃতিবিরুদ্ধ’ হওয়ার অজুহাতে বিরোধিতা করে। তদুপরি, কিছু ধর্ম এসব আচরণকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য দাবি জানায়, পক্ষান্তরে কেউ কেউ এধরনের দাবিকে দেখে এক ধরনের বৈষম্য হিসেবে।[৩৪]:২০৫–২১৭
পৃথিবীর কিছু অংশে এখনও পারিবারিক সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ড (Honor killing) সংঘটিত হয়ে থাকে, যেখানে একজন ব্যক্তি তার পরিবারের প্রতি ‘অসম্মান’ বা ‘লজ্জা’ বয়ে আনার দায়ে নিজ পরিবারেরই অন্য এক বা একাধিক সদস্যের হাতে খুন হন।[৮২] যদিও সচরাচর ইসলাম ধর্মকেই এধরনের অপকর্মকে সমর্থনের জন্য দোষারোপ করা হয়ে থাকে, তবুও, আগা খান বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী অধিকার বিষয়ের অধ্যাপক তাহিরা সাঈদ খান উল্লেখ করেন যে, কুরআনে এমন কোনো [বাণী ] নেই যা সম্মান রক্ষার্থে হত্যাকাণ্ডকে অনুমোদন দেয়।[৮৩] পক্ষান্তরে খান বরং নারীদের প্রতি বিভিন্ন শ্রেণি, সম্প্রদায় ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর নারীকে নিজেদের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা ও নারীদের কোন অধিকার থাকার বিষয়কে অস্বীকার করার পশ্চাৎপদ মনোভাবকেই এধরনের হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেন।[৮৩] খান আরও যুক্তি দেখান যে, এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির ফলেই নারীরা সহিংসতার স্বীকার হন এবং তাদেরকে ‘এক প্রকার ভোগ্যপণ্যে রূপান্তরিত করা হয় যা বিনিময় ও ক্রয়-বিক্রয় করা সম্ভব’।[৮৪]
পাথর নিক্ষেপ (Stoning) হলো এক ধরনের সর্বোচ্চ শাস্তি যেখানে এক দল মানুষ অন্য কোন ব্যক্তির দিকে মৃত্যুু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। সেপ্টেম্বর ২০১০ পর্যন্ত, সৌদি আরব, সুদান, ইয়েমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নাইজেরিয়ার কয়েকটি অঞ্চলসহ পৃথিবীর বেশকিছু দেশের রাষ্ট্রীয় আইনে পাথর নিক্ষেপকে যিনা আল-মুহসিনার ([অন্যের সাথে] বিবাহবহির্ভূত অবৈধ যৌন সম্পর্ক) শাস্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছে।[৮৫][৮৬] যদিও আফগানিস্তান ও সোমালিয়ার দন্ডবিধিতে পাথর নিক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত নয়, তবুও উভয় দেশেই বিগত সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে একাধিক পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।[৮৭][৮৮]
২০০০ সালের পূর্ব পর্যন্ত, ইরানে পাথর নিক্ষেপ ছিল একটি বৈধ সর্বোচ্চ শাস্তি। ২০০২ সালে, ইরানের বিচার বিভাগ দাপ্তরিকভাবে পাথর নিক্ষেপ আইনের উপর স্থগিতাদেশ আরোপ করে।[৮৯] ২০০৫ সালে, বিচার বিভাগের মুখপাত্র জামাল কারিমিরাদ বলেন যে, “[সাম্প্রতিককালে ইরানের] ইসলামী প্রজাতন্ত্রে, আমরা এধরণের শাস্তি কার্যকর হওয়ার ঘটনা দেখছি না।” তিনি আরও বলেন যে, “যদি নিম্ন আদালতে এধরণের শাস্তির আদেশ দেওয়া হয়, তাহলে তা উচ্চ আদালতে গিয়ে [প্রায়শই] খারিজ হয়ে যায় এবং [সাধারণত] এমন রায় কার্যকর করা হয়না।”[৯০] ২০০৮ সালে, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে আইন পুস্তক থেকে এই আইনটি বাদ দেয়ার অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টের কাছে আইনটি দাখিল করে।[৯১] ২০১৩ সালে, ইরানের পার্লামেন্ট একটি দাপ্তরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে ফৌজদারি দন্ডবিধি থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে পাথর নিক্ষেপকে বাদ দেওয়া হয়। একই সাথে, তারা পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোকে এই বিষয়ে ‘হৈচৈপূর্ণ প্রপাগান্ডা’ প্রচারের জন্য দোষারোপ করে।[৯২]
হিচেন্স উল্লেখ করেন যে, বিভিন্ন ধর্মে রক্ত বিসর্জনকে অনুমোদন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দেবতাদের তুষ্ট করার জন্য নির্দোষ লোকদের আঘাত বা হত্যা করা হয়।[৩৪]:২০৫-২১৭
হিচেন্স উল্লেখ করেন যে, বিভিন্ন ধর্ম পুরুষদের খৎনা ও নারীদের জননাঙ্গ কর্তণকে অনুমোদন দেয়, যেগুলো তার দৃষ্টিতে জননাঙ্গ বিকৃতকরণের শামিল এবং একইসাথে অনৈতিক, অস্বাস্থ্যকর ও অপ্রয়োজনীয়।[৩৪]:২২৩–২২৬
হিচেন্স ও ডকিন্স বলেন যে, ধর্মগুলো তিনভাবে সমাজের ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করে:[৩৪][৪৩]
* মুসলমান সম্প্রদায়ের পবিত্র কুরআন শরীফ এ উল্লেখ আছে : 2,85 ثُمَّ أَنْتُمْ هَٰؤُلَاءِ تَقْتُلُونَ أَنْفُسَكُمْ وَتُخْرِجُونَ فَرِيقًا مِنْكُمْ مِنْ دِيَارِهِمْ تَظَاهَرُونَ عَلَيْهِمْ بِالْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَإِنْ يَأْتُوكُمْ أُسَارَىٰ تُفَادُوهُمْ وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيْكُمْ إِخْرَاجُهُمْ ۚ أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিস্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছ। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিস্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। After this it is you, the same people, who slay among yourselves, and banish a party of you from their homes; assist (Their enemies) against them, in guilt and rancour; and if they come to you as captives, ye ransom them, though it was not lawful for you to banish them. Then is it only a part of the Book that ye believe in, and do you reject the rest? but what is the reward for those among you who behave like this but disgrace in this life?- and on the Day of Judgment they shall be consigned to the most grievous penalty. For Allah is not unmindful of what you do.
মতবিরোধ তত্ত্বের (Conflict thesis) প্রবক্তা জন উইলিয়াম ড্রেপার ও অ্যান্ড্রু ডিকসন, যুক্তি দেখিয়েছেন যে, যখন কোন বিশেষ ধর্ম জীবনের উদ্দেশ্য, নৈতিকতা, জীবনের উৎপত্তি ও বিজ্ঞানের মত জাগতিক মৌলিক বিষয়গুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর দিতে শুরু করে, তখন সেটি একদিকে যেমন উক্ত ধারণাগুলোর অধিকতর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণকে নিরুৎসাহিত করে তেমনি আবার অন্যদিকে কৌতুহলকে অবদমন করে ও স্বীয় বিশ্বাসীদের বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করে। যার ফলশ্রূতিতে, সামাজিক, নৈতিক ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ব্যাহত হয়। উদাহরণ হিসেবে তারা, গ্যালিলিওর প্রতি হওয়া অবিচার ও জিওর্দানো ব্রুনোর মৃত্যুদন্ডের ঘটনা উল্লেখ করেন।
সমগ্র উনবিংশ শতক জুড়েই মতবিরোধ তত্ত্ব বিকাশ লাভ করে। এই মডেল অনুসারে, বিজ্ঞান ও ধর্মের মাঝে যেকোন ধরনের মিথষ্ক্রিয়া একসময় অনিবার্যভাবেই প্রকাশ্য শত্রুতার দিকে ধাবিত হবে, যেখানে ধর্মকেই সাধারণত নতুন বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে দেখা যাবে।[৯৩] উনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীব্যাপী ঐতিহাসিক মতবিরোধ মডেলটিই ছিল বিজ্ঞানের ইতিহাসের অধ্যাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিগমন। কিন্তু বর্তমানকালের পন্ডিতরা প্রায় সম্পূর্ণরূপেই এই মডেলের আদি রূপকে পরিত্যাগ করেছেন।[৯৪][৯৫][৯৬][৯৭][৯৮]
এতদসত্ত্বেও, জনসাধারণের মাঝে মতবিরোধ তত্ত্ব এখনও অত্যন্ত জনপ্রিয়,[৯৯] এবং সাম্প্রতিককালে The God Delusion এর মত বইয়ের সফলতার কারণে আরও বেশি প্রচারণা পেয়েছে।
John Hedley Brooke এবং Ronald Numbers এর মতো বিজ্ঞানের ইতিহাসবেত্তারা ‘ধর্ম বনাম বিজ্ঞানের’ ধারণাকে একধরনের অতিসরলীকরণ মনে করেন, এবং বিষয়টিকে বরং একটু সূক্ষ দৃষ্টিতে দেখতেই বেশি পছন্দ করেন।[৯৯][১০০] এই ইতিহাসবেত্তারা, উদাহরণ হিসেবে গ্যালিলিওর ঘটনা,[১০১] স্কোপস বিচার (Scopes Trial)[১০২] প্রভৃতি ঘটনার উদ্ধৃতি দেন এবং দাবি করেন যে, এগুলো শুধুই বিজ্ঞান আর ধর্মের মধ্যে নিছক বিরোধিতা ছিল না; ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিষয়ও এসব ঘটনার ক্রমবিকাশের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে মতবিরোধের বিষয়গুলোর মধ্যে উদাহরণ হিসেবে সৃষ্টি-বিবর্তন বিতর্ক (Creation-Evolution Controversy),[১০৩] জন্ম নিয়ন্ত্রণ (Birth control) পদ্ধতি ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক,[১০৪] ভ্রূণীয় স্টেম কোষ (Embryonic Stem Cell) গবেষণার বিরোধিতা,[১০৫] অথবা টিকাদান (Vaccination), অসাড়করণ (Anesthesia) ও রক্তদান প্রভৃতি বিষয়ে ধর্মের বিরোধিতার কথা উল্লেখ করা হয়ে থাকে।[৩২][১০৬]
ধর্ম আর বিজ্ঞানের মধ্যে যে এক প্রকার আনুমানিক সংঘর্ষ আছে তার বিরুদ্ধেও পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়। যেমন C. S. Lewis, একজন খ্রিষ্টান পরামর্শ দেন সকল ধর্মই বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত, এজন্য একে বিজ্ঞান দ্বারা সত্যি বা মিথ্যা প্রমাণ করা যায় না।তারপরেও কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস আছে,যার সাথে বিজ্ঞানের কোনো কিছুরই মিল নেই, যেমন: নব্য সৃজনবাদিতা.[১০৭]
যারা ধর্মের সমালোচনা করে তারা মতবিরোধ তত্ত্বের সাথে সহমত। উদাহরণস্বরুপ স্টিভেন জে গুল্ড C. S. Lewis এর সহমত প্রকাশ করেন এবং বলেন ধর্ম ও বিজ্ঞান হচ্ছে দুটি পৃথক স্বতন্ত্র বলয় (Non-overlapping magisteria (NOMA))।[১০৮] বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স বলেন ধর্মানুসারীরা স্বতন্ত্র বলয়ের দৃষ্টিভঙ্গীকে বিশ্বাস করেন না।[১০৯]
যাইহোক আমেরিকার জনগণের মাঝে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যদিও বিজ্ঞানের মুলনীতির সাথে দ্বন্দ আছে বা বিজ্ঞানীরা ধার্মিকদের কাছে তাদের তত্বের বিরুদ্ধে পাল্টা যুক্তি হাজির করে তবুও ধর্মীয় দলগুলো বিজ্ঞান বা বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অনুসন্ধানের এই পদ্ধতির সাথে তাদের ধর্মীয় মতবাদের কোনো দ্বন্দ্ব দেখেন না।[১১০][১১১] এমনকি একজন কট্টরপন্থী ধার্মিকও বিজ্ঞানের প্রতি গভীর আস্থা রাখেন।[১১২] ১৯৮১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত দফায় দফায় জরিপ হওয়ার পর দেখা যায়, একটা দেশ যদি গভীরভাবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণের প্রতি আসক্ত থাকে তারপরেও সে দেশের বিজ্ঞানের প্রতি একটা শক্ত বিশ্বাস থাকে। পক্ষান্তরে কোনো দেশ যদি সেকুলার হয় তাহলে সে দেশ অনেকবেশি সন্দেহপ্রবণ হয় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির খারাপ প্রভাবের ব্যাপারে।[১১৩] যদিও যুক্তরাষ্ট্র উচ্চমাত্রার ধর্মীয় দেশ তবুও অন্যান্য শিল্প বাণিজ্যে উন্নয়নশীল দেশ যেমন ইউরোপ,রাশিয়া এবং জাপানের তুলনায় আমেরিকার জনগণ বিজ্ঞানের প্রতি বেশি অনুগ্রহ প্রকাশ করে।[১১২] একটা গবেষণা যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ছাত্রদের ওপর হয়েছিল। প্রশ্ন ছিল ধর্ম এবং বিজ্ঞানের সম্পর্ক নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী কেমন। ধর্ম-বিজ্ঞান একে অপরের বিরোধী,সহযোগী নাকি উভয়েই স্বাধীন; এমনটাই জানতে চাওয়া হয়েছিল। অধিকাংশ ছাত্র যারা সামাজিক বা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেনি, তারা ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মধ্যে বিরোধ দেখেন না।[১১৪]
Elton John বলেছেন যে, প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম সমপ্রেমীদের প্রতি ঘৃণা উস্কে দেয়।[১১৫] তবে, হিন্দু ধর্মের মত কিছু ব্যতিক্রম ধর্মমত রয়েছে, যেগুলো সমপ্রেমীদের ঘৃণার চোঁখে দেখে না।[১১৬]
যুক্তরাষ্ট্রে, খ্রিষ্টীয় আইন সমাজ (Christian Legal Society) ও মৈত্রী প্রতিরক্ষা তহবিলের (Alliance Defense Fund) মত রক্ষণশীল খ্রিষ্টীয় অধিকার আন্দোলন দলগুলো, সেইসব নীতিমালা বাতিলের লক্ষ্যে একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করেছে, যেগুলো সমপ্রেমীদের বৈষম্য ও ঘৃণাপূর্ণ বক্তৃতা থেকে রক্ষা করে। এই রক্ষণশীল দলগুলো যুক্তি দেখায় যে, সমপ্রেমীদের রক্ষা করে এমন নীতিমালা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে উল্লিখিত মুক্ত চর্চা ধারা (Free Exercise Clause of the First Amendment) লঙ্ঘন করে এবং তাদের মুক্তভাবে ধর্মচর্চার অধিকার হরণ করে।[১১৭]
ইতিহাসে বিভিন্ন সময় বর্ণবাদ প্রচারের লক্ষে আত্নপক্ষ সমর্থনে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে। খ্রিষ্টীয় পরিচিতি আন্দোলন (Christian Identity Movement) বর্ণবাদের সাথে যুক্ত ছিল।[১১৮]
নারীদের দুর্ব্যবহার ও সহিংসতার প্রভাবাধীন রাখা, নারীদের ধষর্ণের অভিযোগ দায়ের করা থেকে বিরত রাখা এবং নারীদের প্রতি বৈষম্যে অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইসলামী (শরিয়া) আইনের সমালোচনা করেছে।[১১৯] হিচেন্স ও জাতিসংঘ আরও বলেছে যে, নারী জননাঙ্গ কর্তণের মত একটি অপ্রয়োজনীয় ও অস্বাস্থ্যকর বিষয়ের যথার্থতা প্রমাণে ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করা হয়; যখন এর উদ্দেশ্য কেবলই, নারীদের যৌন তৃপ্তি লাভ থেকে বঞ্চিত রাখার মাধ্যমে যিনাকে নিরুৎসাহিত করা, স্বামীদের কাছে তাদের কুমারীত্ব নিশ্চিত করা, কিংবা কুমারীত্বের আপাত-উপস্থিতি সৃষ্টি করা।[৩৪]:২২৩-২২৬[১২০] মারিয়াম নামাজি যুক্তি দেখান যে, নারীরা ফৌজদারি (যেমন, ঠিকভাবে পর্দা না করার জন্য শাস্তি পাওয়া) ও দেওয়ানি উভয় বিষয়ে শরিয়া আইনের কবলে বলির শিকার হয়, এবং তাদের ক্ষেত্রে বিচারসংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যার ফলে পুরুষেরা আদালতের ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে থাকে কিংবা বাড়তি সুবিধা লাভ করে।[১২১]
Phyllis Chesler এর মতে ইসলাম মহিলাদের বিরুদ্ধে জোর জবরদস্তি করে, বিশেষ করে অনার কিলিং করে। অনার কিলিং ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত নয়, এই যুক্তিকে তিনি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন সকল ধর্মের মৌলবাদীরাই নারীদের উপর জোরজবরদস্তি করে,তাদেরকে নানা বাধানিষেধের গণ্ডিতে আবদ্ধ করে রাখে।কিন্তু ইসলামে এই নিয়মগুলো অন্য ধর্ম থেকে শুধু কঠোরই না, তাদের নিয়মগুলো কেও ভাঙলে তারা অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সাথে নিয়মনঙ্গকারীর বিচার করে।[১২২]
কশের ঐতিহাসিকভাবে নন জিউসদের দ্বারা সমালোচিত। তাদের ভাষায় এটা অমানবিক এবং অস্বাস্থ্যকর।[১২৩]
১৮৯৩ সালে এডভোকেট কশের হত্যার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করেন।[১২৪] ১৯২০ সালে কশের হত্যার পোলিশ সমালোচক দাবি করেন এই ধরনের নিয়ম ধর্মশাস্ত্রে কোথাও নেই।[১২৩] এর বিরোধিতায় জিউস সম্প্রদায় জেনেসিস IX:3 দেখিয়ে বলেন "এই আইন দ্বারা আমরা আবদ্ধ" এবং কশের এর বিষয় ধর্মগ্রন্থে লেখা আছে।[১২৫]
ধর্মীয় জবাইয়ের আরেকটা একটা উদাহরণ হল Islamic ritual slaughter, যাও বিতর্কিত হয়েছে। "লগ্যান শির" নামক একজন পেটার লেখক বলেছেন ইসলামিক আইন অনুসারে প্রাণীকে উৎসর্গ করা হয়,কিন্তু এই উৎসর্গ করার পূর্বে তাদেরকে অজ্ঞান করা হয় না।[১২৬] মুসলিম নর-নারী শুধুমাত্র সেইসব মাংশই খেতে পারেন, যাদেরকে শরীয়াহ আইন অনুসারে জবাই করা হয়,এবং তারা বলেন ইসলামিক আইন অনুসারে এই ধর্মীয় হত্যার নিয়মটি এমনভাবে তৈরী করা হয়েছে যাতে প্রাণীর ব্যাথা এবং কষ্ট কম হয়।[১২৭]
Farm Animal Welfare Council (FAWC)(জীবের সুরক্ষা সভা) এর মতানুসারে অনুসারে, হালাল জবাই এবং কশের নিয়মগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত,কারণ যখন জন্তুকে হত্যার আগে অজ্ঞান করা হয় না, তখন প্রাণীটি ২ মিনিট পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয় ব্যাথা অনুভব করে। মুসলিম এবং জিউস এর বিরোধিতা করে। তারা বলেন গলার কাছে চিকন করে কাটার কারণে প্রাণী দ্রুতই অজ্ঞান হয়ে যায়।[১২৮]
অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা জবাই কালে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে। অতঃপর কেউ সীমালঙ্ঘন কারী না হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়লে তবে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
হিচেন্স উল্লেখ করেন কিছু নেতা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। উদাহরণস্বরুপ ভারতীয় আধ্যাত্মিক গুরু ভগবান শ্রী রজনীশ যিনি ৯০টা রোলস রয়েস গাড়ির মালিক ছিলেন, ধর্মীয় গুরু ডেভিড কুরেশ, জোসেফ স্মিথ যার ছিল ২৭ জন পত্নী এবং ব্রাইয়াম ইয়ং যিনি প্রায় ৫৭ জন নারীকে বিবাহ করেন।[৩৪]:১৫৫–১৬৯
আধিপত্যবাদ শব্দটি দিয়ে প্রায়শই মূলত খ্রিষ্টান মৌলবাদীদের ভিতরে একটি রাজনৈতিক আন্দোলনকে বোঝানো হয়। সমালোচকরা এই আধিপত্যবাদকে দেখেন অন্যায়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে খ্রিষ্টান ধর্মকে চাপিয়ে দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে। ’৮০ এর দশকের শেষের দিকে, Francis A. Schaeffer ও C. Everett Koop এর প্রকাশিত Whatever Happened to the Human Race? শীর্ষক বই, চলচ্চিত্র এবং ধারাবাহিক বক্তৃতার দ্বারা অনুপ্রাণীত হয়ে এই আন্দোলনটির উত্থান ঘটে।[১২৯] Jerry Falwell, Tim LaHaye, John W. Whitehead প্রমুখ রক্ষণশীল রাজনীতিবিদের দ্বারা Schaeffer এর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল, এবং যদিও তারা আধিপত্যবাদ থেকে ভিন্নতর ধর্মতাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক ধারণার প্রতিনিধিত্ব করতেন, তবুও আধিপত্যবাদীরা বিশ্বাস করেন যে, ‘পাপ-পংকিলতায় ভরা ধর্মনিরপেক্ষ সমাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া’ তাদের ধর্মীয় দায়িত্ব। এ উদ্দেশ্য সাধনে তারা, হয় সরকারী দপ্তরের দায়িত্বে মৌলবাদী কর্মকর্তাদের বসাবেন, নয়ত ধর্মনিরপেক্ষ পরিমন্ডলে খ্রিষ্ট ধর্মীয় আইন প্রবর্তন করবেন।[১০৩][১৩০][১৩১]
The Court has repeatedly stated that members of a religious community must tolerate the denial by others of their religious beliefs.
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
In some belief systems, religious leaders and believers maintain the right to both emphasise the benefits of their own religion and criticise other religions; that is, they make their own claims and deny the truth claims of others.
...people of every religion, as well as of no religion, have a reason for wanting it to be possible to face other people with challenges to their faith, namely that this is the only way those people can be brought to see the truth.
Due to the nature of religious belief, one person’s faith often implies that another’s is wrong and perhaps even offensive, constituting blasphemy. For example, the major world religions often have very different formulations and beliefs concerning God, Muhammad, Jesus, Buddha and the Hindu deities, as well as about various ethical and social matters
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
This (superstition) or "false religion", not "religion," is the meaning of "religio". The Epicureans were opposed, not to religion (cf. 6.68–79), but to traditional religion which taught that the gods govern the world. That Lucretius regarded "religio" as synonymous with "superstitio" is implied by "super....instans" in [line] 65।
|কর্ম=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|website=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|কর্ম=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
...allows otherwise normal human beings to reap the fruites of madness and consider them holy.
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
Studies that claim to show no difference in emotional makeup between temporal lobe and other epileptic patients (Guerrant et. al., 1962; Stevens, 1966) have been reinterpreted (Blumer, 1975) to indicate that there is, in fact, a difference: those with temporal lobe epilepsy are more likely to have more serious forms of emotional disturbance. This typical personality of temporal lobe epileptic patient has been described in roughly similar terms over many years (Blumer & Benson, 1975; Geschwind, 1975, 1977; Blumer, 1999; Devinsky & Schachter, 2009). These patients are said to have a deepening of emotions; they ascribe great significance to commonplace events. This can be manifested as a tendency to take a cosmic view; hyperreligiosity (or intensely professed atheism) is said to be common.
|তারিখ=
(সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
The conflict thesis, at least in its simple form, is now widely perceived as a wholly inadequate intellectual framework within which to construct a sensible and realistic historiography of Western science
In the late Victorian period it was common to write about the ‘warfare between science and religion’ and to presume that the two bodies of culture must always have been in conflict. However, it is a very long time since these attitudes have been held by historians of science
In its traditional forms, the conflict thesis has been largely discredited.
while [John] Brooke's view [of a complexity thesis rather than an historical conflict thesis] has gained widespread acceptance among professional historians of science, the traditional view remains strong elsewhere, not least in the popular mind
The conflict thesis, at least in its simple form, is perceived by some historians as a wholly inadequate intellectual framework within which to construct a sensible and realistic historiography of Western science.
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
The United States is perhaps the most religious out of the advanced industrial democracies." ; "In fact, large majorities of the traditionally religious American nevertheless hold very positive views of science and scientists. Even people who accept a strict creationist view, regarding the origins of life are mostly favorable towards science." ; "According to the National Science Foundation, public attitudes about science are more favorable in the United States than in Europe, Russia, and Japan, despite great differences across these cultures in level of religiosity (National Science Foundation, 2008).
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য); |অবদান=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য); |ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|প্রকাশক=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)