নওসারি জেলা | |
---|---|
জেলা | |
গুজরাতে নওসারি জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | গুজরাত |
সদর | নওসারি |
আয়তন | |
• মোট | ২,২১১ বর্গকিমি (৮৫৪ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | গুজরাতে ৩১তম |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৩,২৯,৬৭২ |
• ক্রম | গুজরাতে ২২তম এবং ভারতে ৩৬৬তম |
• জনঘনত্ব | ৬০২/বর্গকিমি (১,৫৬০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• অফিসিয়াল | গুজরাতি, হিন্দি, ইংলিশ |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
পিন কোড | ৩৯৬ ৪৪৫ |
যানবাহন নিবন্ধন | GJ-21 |
জনসংখ্যা | ৮৪.৭৮% (২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী) |
লোকসভা কেন্দ্র | নওসারি ভালসাড় |
বিধানসভাকেন্দ্র | নওসারি বিধানসভা কেন্দ্র জালালপুর বিধানসভা কেন্দ্র গাংদেবী বিধানসভা কেন্দ্র ভানসাড়া বিধানসভা কেন্দ্র |
ওয়েবসাইট | gujaratindia |
নওসারি হল ভারতের গুজরাত রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা, যার সদর দপ্তর নওসারি শহরে অবস্থিত। জেলাটি আয়তন ২,২১১ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত লুক্সেমবুর্গ দেশ এবং আমেরিকার ডেলাওয়্যার রাজ্যের মতো সমান আয়তন এই জেলাটির এবং এর জনসংখ্যা ১,৩২৯,৬৭২ জন এস্তোনিয়া দেশ এবং আমেরিকার হাওয়াই রাজ্যের মতো সমান জনসংখ্যা।[১] ১৯৯৭ সালে ভালসাড় জেলাটি ভালসাড় ও নওসারি জেলায় বিভক্ত হওয়ার পরে জেলাটি গঠিত হয়েছিল।[২]
এই জেলার জনসংখ্যার ৬৯.২৩% গ্রামীণ এবং জনসংখ্যার ৪৮.১% তফসিলি উপজাতি রয়েছে।[১]
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে নওসারি জেলার জনসংখ্যা ১,৩২৯,৬৭২ জন তার মধ্যে ৬৭৮,১৬৫ জন (৫১%) পুরুষ এবং ৬৫১,৫০৭ জন (৪৯%) মহিলা। এই জেলাটির স্থান ভারতে ৩৬৬তম (মোট ৬৪০ জেলার মধ্যে)।[৩] নওসারি জেলার জনসংখ্যার ৪৯% সাধারণ জাতি, ৩% তফসিলি জাতি এবং ৪৮% তফসিলি উপজাতি। শিশু (৬ বছরের বয়সের কম) নওসারি জেলার জনসংখ্যা ৯.৭৩% সর্বনিম্ন গুজরাতে, এদের মধ্যে ৫২% বালক এবং ৪৮% বালিকা মোট গ্রামীণ জনসংখ্যার ৯.৬২% এবং মোট শহুরে জনসংখ্যার ৯.৯৯% শিশু। এই জেলায় প্রায় ২৯৫,১৩১টি পরিবার রয়েছে এবং প্রতিটি পরিবারে গড়ে ৫ জন ব্যক্তি থাকেন। জালালপুর সবচেয়ে কম জনবহুল অঞ্চল প্রায় ২২৮০৬৫ জন, গুজরাতের ৮৬তম জনবহুল অঞ্চল এবং নওসারি সর্বাধিক বেশি জনবহুল অঞ্চল জনসংখ্যা হচ্ছে ৩১১,২8৮ জন, গুজরাতের ৩৯তম সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চল এবং চিখলি, গাংদেবী এবং ভানসাড়া সর্বাধিক বেশি জনবহুল অঞ্চল জনসংখ্যা হচ্ছে প্রায় ৩০৯,৮৭৭ জন, ২৪৯,২৬৪ জন এবং ২৩১,২২৮ জন, গুজরাতে ৪০তম, ৬৬তম এবং ৭৯তম জনবহুল অঞ্চল। এই জেলাটির জনসংখ্যার ঘনত্ব ৬০২ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,৫৬০/বর্গ মাইল) রয়েছে।[৩]
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে এই জেলার জনসংখ্যার ৮৯.৪৬% গুজরাতি, ০.৯১% ভিলি, ৫.৬২% হিন্দি এবং ২.৬৯% মারাঠি ভাষার লোক রয়েছে, গুজরাতি তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।[৪]
নওসারি জেলায় বেশ কয়েকটি বড় পর্যটক কেন্দ্র রয়েছে। ভানসদা অঞ্চলের উনাই এ বসন্তকালে শরীর চিকিত্সার জন্য বিখ্যাত। ভালসাদের তিথল সৈকতসহ দক্ষিণ গুজরাতে ওমভরাট এবং ডাণ্ডি সৈকতের জন্য নওসারি বিখ্যাত। ডাণ্ডি মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে ডাণ্ডি অভিযানের জন্য বিখ্যাত।
এই জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে হল নওসারি জেলার, নওসারি শহরের সায়াজী বৈভব পাবলিক লাইব্রেরি, গুজরাতের নওসারিকে বলা হয় বক্কিশ বা গুজরাতের শিক্ষা শহর এবং বই পড়ার সংস্কৃতি। এছাড়াও অন্যান্য বিখ্যাত লাইব্রেরি যেমন মেহরাজীরানা লাইব্রেরি এবং এনএইউ কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এবং নীলা স্পোর লাইব্রেরি রয়েছে। অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র হল অমলসাদের অন্ধেশ্বর মন্দির, কাচোলির গঙ্গেশ্বর মন্দির, গাদতের নিকটে কামেশ্বর মহাদেব, মাজিগামের নিকটে মল্লিকার্জুন মহাদব, আনভালের নিকটে শুকলেশ্বর মহাদব, বারুমলের নিকট বারুমল মহাদেব, মহুয়ার নিকটে বিঘ্নেশ্বর মহাদেব, বারদোলি নিকট কেদারেশ্বর মহাদেব, শ্রী জালারাম মন্দির, শ্রী গায়ত্রী মন্দির, শ্রী দ্বারকাধিশ মন্দির, স্বামীনারায়ণ মন্দির, গঙ্গা মাতা মন্দির এবং নওসারি শহরে আশাপুরি মন্দির হিন্দুদের ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র এবং এছাড়া কয়েকটি মন্দির এবং মুসলমানদের ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলি হল মসজিদ-ই-নূর এবং ভট্টাই মসজিদ এবং পারসিদের অগ্নি মন্দির এবং জৈনের জন্য চিন্তামণি মন্দির। নওসারি ভানসাড আজমলগড়ের জন্যও বিখ্যাত। এবং নওসারি শহরে লুনসিকুই এই অঞ্চলের জন্য বিখ্যাত।
এই জেলার অন্যান্য বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলি হল ভানসদার নিকটবর্তী ভানসাড জাতীয় উদ্যান এখানে বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় চিতাবাঘ, হায়ানা, পাইথন এবং ভারতীয় লঙ্গুর দেখা যায়। এছাড়া ডাং জেলার ওয়াঘাইয়ের কাছে গিরিধোধ জলপ্রপাত এবং বোটানিকাল গার্ডেনের জন্য বিখ্যাত।[৫][৬] বন্যপ্রাণী অভিজ্ঞতা জন্য ডাং জেলার পূর্ণ অভয়ারণ্য, এই পার্কটি ডাং অরণ্যের একটি অংশ। [৭] অন্যান্য বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হল ডাং জেলার সাপুতারা হিল স্টেশন গুজরাতের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র এবং গুজরাতের সবচেয়ে জনপ্রিয় হিল স্টেশন।
গুজরাত সরকার ও ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (এএআই) নওসারি জেলার উভারতের নিকট নওসারি এবং সুরাটক শহরকে সংযোগ করার জন্য আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে। গুজরাতে বিমানের অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে গুজরাত সিভিল এভিয়েশন বোর্ড (জিইউজেসিএবি) গঠিত হয়েছে। বোর্ডের দায়িত্বে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
দেশীয় বিমানবন্দরগুলি ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত (এএআই)
গুজরাত ভারতীয় রেলওয়ের পশ্চিম রেলওয়ে জোনের আওতাধীন। গুজরাতের সবচেয়ে ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন হল নওসারি রেলওয়ে স্টেশন। এটি মুম্বাই-দিল্লি পশ্চিম রেলওয়ে মেইনলাইনের মধ্যে অবস্থিত। এছাড়া নিকটতম গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন হল সুরাট রেলওয়ে স্টেশন, ভ্রুচ রেলওয়ে স্টেশন, বরোদা রেলওয়ে স্টেশন এবং ভলসাদ রেলওয়ে স্টেশন। ভারতীয় রেলওয়ে দিল্লি-মুম্বাই প্রস্তাবিত মালবাহী রেল লাইনটি এই জেলার মধ্য দিয়ে যাবে। ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেড প্রস্তাবিত মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাই-স্পিড রেল করিডোরটি নওসারি জেলা দিয়ে যাবে এবং বিলিমোরাতে একটি রেলওয়ে স্টেশন হবে।
ভারতের গুজরাত রাজ্যে ১৬০০ কিমি দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল রয়েছে। গুজরাত মেরিটাইম বোর্ড চিহ্নিত করেছে ওমভরাট বীচের কাছে ভান্সি-বোর্সিতে গভীর জলে নঙ্গর করা, সরাসরি বন্দর বিকাশের জন্য সবুজ সংকেত পেয়েছে। ওই জায়গা থেকে দেশের অভ্যন্তরে পেট্রোলিয়াম এবং তরল রাসায়নিক কার্গো পরিচালনা করার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবিত জায়গা থেকে নওসারি ব্রডগেজ রেলওয়ে লাইনটি ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নওসারি জেলার নিকটতম অন্যান্য বৃহত্তম বন্দরটি হল কান্ডলা বন্দর যা পশ্চিম ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বন্দর। গুজরাতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলি হল নভলখি বন্দর, পিপাভাভ বন্দর, বেদী বন্দর, পোরবন্দর , ভেরাভল বন্দর এবং ব্যক্তিগত মালিকানাধীন মুন্ড্রা বন্দর। নওসারির কাছে দহেজ থেকে রো-রো ফেরি পরিষেবা পাওয়া যায়। আধুনিক ফিশিং হারবার (জলালপুর) ধলোইতে ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে ধলোই বন্দর বিকাশ লাভ করেছে।
গুজরাত রাজ্য সড়ক পরিবহন সংস্থা (জিএসআরটিসি) হল গুজরাত রাজ্যের এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সাথে বাস পরিষেবা সরবরাহ করা। এটি একটি জন পরিবহন সংস্থা, গুজরাত এবং ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে বাস পরিষেবা সরবরাহ করা হয়। এগুলি ছাড়াও জিএসআরটিসির দ্বারা সরবরাহিত বেশ কয়েকটি পরিষেবা রয়েছে।