নড়িয়া উপজেলা

নড়িয়া
উপজেলা
মানচিত্রে নড়িয়া উপজেলা
মানচিত্রে নড়িয়া উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৩°১৮′ উত্তর ৯০°২৪′ পূর্ব / ২৩.৩০০° উত্তর ৯০.৪০০° পূর্ব / 23.300; 90.400 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলাশরীয়তপুর জেলা
প্রতিষ্ঠা১৯৩০
আয়তন
 • উপজেলা২০৪ বর্গকিমি (৭৯ বর্গমাইল)
 • মহানগর৯.৪৯ বর্গকিমি (৩.৬৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[]
 • উপজেলা২,৩১,৬৪৪
 • জনঘনত্ব১,১০০/বর্গকিমি (২,৯০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৫১.৮%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৮০২১–৮০২৩ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৮৬ ৬৫
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

নড়িয়া বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

অবস্থান ও আয়তন

[সম্পাদনা]

এ উপজেলার মোট আয়তন ২০৩.৫৮ বর্গ কিলোমিটার। নড়িয়া উপজেলার উত্তরে জাজিরা উপজেলা, মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলাটংগিবাড়ী উপজেলা, দক্ষিণে শরীয়তপুর সদর উপজেলাভেদরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে ভেদরগঞ্জ উপজেলামুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে জাজিরা উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা

[সম্পাদনা]

নড়িয়া উপজেলা ১টি পৌরসভা, ৯টি ওয়ার্ড, ৩৪টি মহল্লা, ১৪৮ মৌজা, ১৯০টি গ্রাম ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত।

পৌরসভা:

ইউনিয়ন সমূহ:

  1. মোত্তারেরচর ইউনিয়ন
  2. রাজনগর ইউনিয়ন, নড়িয়া
  3. নশাসন ইউনিয়ন
  4. ভােজেশ্বর ইউনিয়ন
  5. জপসা ইউনিয়ন
  6. ফতেজংপুর ইউনিয়ন
  7. বিঝারি ইউনিয়ন
  8. ভূমখাড়া ইউনিয়ন
  9. ডিংগামানিক ইউনিয়ন
  10. কেদারপুর ইউনিয়ন, নড়িয়া
  11. চরআত্রা ইউনিয়ন
  12. নওপাড়া ইউনিয়ন, নড়িয়া
  13. ঘড়িষার ইউনিয়ন
  14. চামটা ইউনিয়ন

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

নড়িয়া উপজেলার নামকরণের ঐতিহাসিক ভিত্তি পাওয়া যায় নাই। তবে কথিত আছে যে, অত্র এলাকার সবচেয়ে বড় মৌজা নড়িয়া কে ১৯৩০ সালে নড়িয়া থানায় রুপান্তর করা হয় এবং ১৯৮৩ সালে ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে নড়িয়া উপজেলা গঠিত হয়।

প্রাচীণকালে এ অঞ্চল তথা বৃহত্তর মাদারিপুর মহকুমার নাম ছিল ইদিলপুর যা কোটালিপাড়া অথবা চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে বিক্রমপুরের অধীনে নাম ছিল কেদারপুর। বারোভূঁইয়ার বিপ্লবী চাঁদ রায় ও কেদার রায় (মৃ: ১৬০৩), দক্ষিণ বিক্রমপুরের আড়া ফুলবাড়িয়ায়(বর্তমান নদীতে বিলীন নড়িয়া উপজেলার অংশ) জন্মগ্রহণ করেন। কেদার রায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রায়পুর নামের গ্রামটি। তাদের রায়বংশ অনুসারেই নাম হয়েছিল রায়পুর যা কয়েক শতাব্দী ধরে ছিল। সেই গ্রামের নাম এখন পুটিজুরি। আজ আর চাঁদ রায়, কেদার রায়দের কোন চিহ্নমাত্র নেই সেখানে। শুধু পাশের গ্রামে তাদের খনন করা দুটি বিশাল দীঘি রয়ে গেছে। এখনো দিগম্বরী দেবীর পূজা হয় সেখানে। তাই এই দিঘীগুলোর বর্তমান নাম দিগম্বরীর দীঘি। শুধু এই দীঘি দুটিই পদ্মার এপারে বারোভূঁইয়া কেদার রায়কে মনে রেখেছে। পদ্মায় ভেসে গেছে রায়পুরের ইতিহাস। কেদার রায়ের খনন করা দিগম্বরীর দিঘির একটু দূরেই এখনও কিছু পোড়া ইট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটা বাড়ি। সেখানে এখন অন্য লোকের বসতি। স্থানীয় লোকেরা বাড়িটাকে বলে ‘ভিয়া বাড়ি’। আসলে ‘ভুঁইয়া বাড়ি’ মানুষের মুখে মুখে অপভ্রংশ হতে হতে ‘ভিয়া বাড়ি’ হয়ে গেছে।

কেদার রায় কেদারপুরে বাসস্থান তৈরী করতে চেয়েছিলেন। কিছু কাজ সমাপানান্তে তারমৃত্যু হওয়াতে উহ পরিত্যক্ত হয়। বাড়ির চতুষ্পার্শ্বে যে পরিখা খনন করতেছিলেন তার ভগ্নাবশেষ এখনও বিদ্যমান। ইহাকে কেদার রায়ের বাড়ির বেড় (পরিখা) বলে।[]

ফতেজঙ্গপুরে মান সিংহ র নেতৃত্বাধীন মোঘল বাহিনী ও রাজা কেদার রায়ের প্রতিরোধকারী বাহিনীর মধ্যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়। প্রাচীন নাম শ্রীনগর। মুঘল সেনাপতি মানসিংহ যখন বিক্রমপুর আক্রমণ করেন তখন তার সহযোগী যোদ্ধাগণ এখানকার রাজা কেদার রায় কর্তৃক পরাস্ত হয়ে শ্রীনগরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। মানসিংহ তাদেরকে উদ্ধারের জন্য তার সেনাবাহিণী প্রেরণ করেন। ফলে প্রচন্ড যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। তিনি মোগলদের জয়ের চিহ্ন স্বরুপ মানসিংহ সেখানে ফতেজঙ্গপুর দুর্গ নির্মাণ করেন এবং শ্রীনগরের নাম পরিবর্তন করে ফতেজঙ্গপুর রাখেন। এখানে নাককাটা বাসুদেবের প্রস্থর মূর্তি আছে। তথাপি কেদার রায়ের মৃত্যুর পর সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে বাংলার গভর্ণর ইসলাম খার (১৬০৮-১৬১৩) সময়েই মূলতঃ এ দেশে মুগল রাজত্বের ভিত্তি হয়। তখন হতেই মাদারিপুর অঞ্চলসহ বাংলার এ এলাকা মুগলদের পতন পর্যন্তই তাদের দখলে ছিল। ইসলাম খানের পর একুশজন গভর্নর ১৬১৩ হতে ১৭৫৭ পর্যন্ত এ অঞ্চল শাসন করেন। ১৭৫৭ সালের সেই পলাশির মর্মান্তিক পরিণতির পূর্ব পর্যন্ত নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলার স্বাধীন নওয়াব হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন।

জনসংখ্যা

[সম্পাদনা]

জনসংখ্যা: ২,৩১৬৪৪ জন(প্রায়) পুরুষ: ১,০৯৯৬৭ জন(প্রায়) মহিলা: ১,২১৬৭৭ জন(প্রায়) লোক সংখ্যার ঘনত্ব: ৯৩৯ (প্রতি বঃ কি.মি.)।[]

শিক্ষা

[সম্পাদনা]
  • সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৮৮টি
  • বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৬১টি
  • কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ১২টি
  • উচ্চ বিদ্যালয়: ৫টি
  • দাখিল মাদ্রাসা: ০৪টি
  • আলিম মাদ্রাসা:০১টি
  • ফাজিল মাদ্রাসা: ০১টি
  • কামিল মাদ্রাসা: ০০টি
  • কলেজ(সহপাঠ): ০৫টি

শিক্ষার হার: ৫৬.৪৩%

উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

[সম্পাদনা]

অর্থনীতি

[সম্পাদনা]

নড়িয়া উপজেলা মূলত কৃষি এবং বৈদেশিক রেমিটেন্সের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও বর্তমানে কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ উপজেলার ভোজেশ্বর বাজার ও ঘড়িষার বাজার প্রাচীন বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখান থেকে ধান, গম, পাটসহ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী একসময় কলিকাতা ও ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নদী পথে বাণিজ্যিকভাবে আনা নেয়া হতো। এছাড়া সুরেশ্বর ঘাট ও কার্তিকপুর লঞ্চঘাট থেকে কলিকাতা ও ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লঞ্চ ও স্টীমার চলাচল করত। বতমানে ভোজেশ্বর হাট-বাজার, ঘড়িষার হাট-বাজার, নড়িয়া বাজার ও মূলফত গঞ্জ বাজার প্রধান প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এছাড়া ওয়াপদা ঘাট, চন্ডীপুর ঘাট, সুরেশ্বরঘাট, নড়িয়া, ভোজেশ্বরঘাট দিয়ে নদী পথে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এখন সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব

[সম্পাদনা]

দর্শনীয় স্থানসমূহ

[সম্পাদনা]
  • শিবলিঙ্গ- শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নে উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ কষ্ঠিপাথরের শিবলিঙ্গটি পাওয়া গেছে
  • কার্তিকপুর জমিদার বাড়ি
  • পুর্ব কাঠহুগলী গায়েবী মসজিদ ( পুর্ব কাঠহুগলী পাকা মসজিদ।
  • রাম ঠাকুরের মন্দির (ডিঙ্গামানিক)।
  • পন্ডিতসার সামপুরীর মাজার।
  • সুরেশ্বর দরবার শরীফ।
  • তেলীপাড়া জয় মিয়া সাহেবের দরগা।
  • মোহাম্মদ ফকিরের মাজার।
  • পাগলা মৌলভীর মাজার।

নদ নদী

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে নড়িয়া"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "অবহেলায় নিশ্চিহ্ন জনপদ"সমকাল (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৭-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২৮ 
  3. "নড়িয়া উপজেলা" |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-২৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]