নবতিয়া النبطية | |
---|---|
শহর | |
স্থানাঙ্ক: ৩৩°২১′৫০″ উত্তর ৩৫°২৯′১৫″ পূর্ব / ৩৩.৩৬৩৮৯° উত্তর ৩৫.৪৮৭৫০° পূর্ব | |
গ্রিড অবস্থান | ১২৫/১৬০ এল |
দেশ | লেবানন |
মোহাফজা | নবতিয়া মোহাফজা |
জেলা | নবতিয়া জেলা |
আয়তন | |
• শহর | ৮ বর্গকিমি (৩ বর্গমাইল) |
• মহানগর | ২১ বর্গকিমি (৮ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৪১৮ মিটার (১,৩৭১ ফুট) |
জনসংখ্যা | |
• শহর | ৪০,০০০ |
• মহানগর | ৮৫,০০০ |
সময় অঞ্চল | ইইটি (ইউটিসি+২) |
• গ্রীষ্মকালীন (দিসস) | ইইএসটি (ইউটিসি+৩) |
ডায়ালিং কোড | ৯৬১ |
নবতিয়া (আরবি: النبطية, Nabaṭīya) হল লেবাননের দক্ষিণে অবস্থিত নবতিয়া মোহাফজার প্রধান শহর। ১৯৩০-এর পর থেকে লেবাননে কোনো আদমশুমারি করা না হলেও ধারণা করা হয় এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ১৫,০০০ থেকে ১২০,০০০ এর মধ্যেই হবে। ওয়ার্ল্ড গ্যাজেটার নামক একটি জার্মান জনগংখ্যাসম্পর্কিত ওয়েবসাইট (বর্তমানে বন্ধ) এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ১০০,৫৪১ বলে দাবি করে। ফলে এই অঞ্চল টায়ার, সৈদা, ত্রিপোলি এবং বৈরুতের পর লেবাননের পঞ্চম বৃহত্তম শহর।[১] তবে ২০০৭ বা ২০০৮ সালের একটি হালনাগাদকৃত হিসাবে এবং পরবর্তীতে ২০১৩ সালের অনুমিত জনসংখ্যা রিপোর্টে এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ৩৬,৫৯৩ বলে ধারণা করা হয়, যা শহরটিকে ১১তম বৃহত্তম শহর করে তোলে। এর সামনে রয়েছে টায়ার, বিনত জেবেইল, আলায়াহ, কাফর 'অ্যাস, জাহ্লে, সৈদা, বালবেক, জৌনিয়ে, ত্রিপোলি এবং বৈরুত।[২] এটি জাবেল আমেল অঞ্চলের প্রধান শহর এবং এটি মহাফাজাত বা প্রশাসনিক বিভাগের মুখ্যকেন্দ্র। অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক উভয় ক্ষেত্রেই নবতিয়া গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতি সোমবারেই এখানে বাজার বসে যেখানে আশেপাশের গ্রাম থেকে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতারা ভিড় করে সৌক আল তানেন নামক স্থানে, তাদের জিনিসপত্র বিনিময়ের জন্য। এখানে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা, হাসপাতাল, রেস্তোঁরা এবং পর্যটকদের জন্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে। প্রতি বছর এখানে কারবালার যুদ্ধের স্মৃতিকে এবং সেইসাথে শহিদ ইমাম হোসেইনকে স্মরণ করা হয়।
নবতিয়া বিভিন্ন পণ্ডিত ব্যক্তির জন্মস্থান। ভাষাবিদ এবং আরব জাতীয়তাবাদীও আহমদ রেজা, ঐতিহাসিক মোহম্মদ জাবের সফা, বিজ্ঞানী হাসন কামেল আল-শাবাহ (আহমদ রেজার ভাতিজা) এবং ধর্মতত্ত্ববিদ শেখ আহমদ আরেফ আল-জেইন প্রমুখ ব্যক্তিত্ব এখানেই জন্মগ্রহণ করেন।
১৫৯৬ সালের রাজস্বের রেকর্ড অনুযায়ী এর নামকরণ করা হয়েছিল নবতিয়া তহতা। এর অবস্থান ছিল সাফাদের একটি জেলা লিওয়ার অন্তর্ভুক্ত সাগিফের অটোমান নাহিয়ায় (উপজেলা)। তখন এখানে ১৫১ জন গৃহস্থ এবং ২৮ জন অবিবাহিত ব্যক্তি বসবাস করতেন, যাদের সবাই মুসলিম ছিলেন। গ্রামের লকজন ছাগল ও ভেড়ার জন্য কর পরিশোধ করতেন। এছাড়া অন্যান্য করের মধ্যে ছিল "আকস্মিক কর", জলপাই তেল বা আঙুরের রসের জন্য কর, বাজার কর এবং একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা, যা মিলিয়ে ৯,০৩০ আকসে দিতে হত।[৩][৪]
১৮৭৫ সালে ভিক্টর গুয়েরিন নবতিয়া তহতা ("নিম্ন নবতিয়া") অঞ্চলে প্রায় ১৫০০ মিটুয়ালি অধিবাসীকে খুঁজে পান। এছাড়াও প্রায় ৩০০ খ্রিস্টধর্মাবলম্বী বসবাস করতেন, যার অধিকাংশই গ্রিক অর্থোডক্স ছিলেন। এছাড়াও কিছু ম্যারানিতেও তখন ছিলেন।[৫]
দক্ষিণের বেকা উপত্যকা থেকে দামাস্কাসের দিকে তাকালে বেলফোর্ট বা শকিফ কেল্লা দেখা যায়। এটি আরব ভ্রমণকারীদের কাছে শাকিফ আর্নুন নামে পরিচিত, সিরিক ভাষায় যার অর্থ উঁচু পাথর। প্রাসাদটিতে পৌছানো আপাত অসাধ্য মনে হলেও আর্নাউন গ্রাম থেকে সেখানে যেতে হয়, যা নবতিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রাসাদটি কে নির্মাণ করেন বা এর বয়স কত তা সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বিংশ শতকে ধর্মযুদ্ধাকারীরা শকিফ কেল্লা মেরামত করে পুনর্গঠন করেন এবং লেবাননের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ হয়ে উঠে।
নবতিয়ায় দুটি ঐতিহাসিক মসজিদ রয়েছে। প্রথমটি শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত ষোল শতকে নির্মিত এবং অপরটি নবতিয়া ফওকায় অবস্থিত মামলুক আমলের "নবীর মসজিদ" নামে পরিচিত মসজিদ।
মিশন লাইক ফ্র্যাঞ্চাইজ লাইসে ফ্রাঙ্কো-লেবানিজ হাবৌজ-নবতিয়া শহর থেকে উত্তরে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জাতীয় এভানজেলিক্যাল স্কুল (পূর্বে নবতিয়ার আমেরিকান স্কুল ফর গার্লস হিসেবে পরিচিত ছিল), দ্য ক্রিশ্চিয়ান কলেজ নটর ডেম দেস সোয়েউরস অ্যান্টনিস এই শহরের অন্যতম পুরাতন বিদ্যালয়।[৬]
নবতিয়ার অধিকাংশ অধিবাসীই শিয়া মুসলিম, এছাড়া কিছু গ্রিক ক্যাথলিকও সেখানে বাস করে। নবতিয়া সরকারে নবতিয়া জেলায় তিনজন প্রতিনিধি রয়েছে, যার সবাই শিয়া মুসলিম, লেবানন কংগ্রেসের ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী।