নাইজেলা লসন | |
---|---|
জন্ম | নাইজেলা লুসি লসন ৬ জানুয়ারি ১৯৬০ ওয়ান্ডসওয়ার্থ, লন্ডন, ইংল্যান্ড |
মাতৃশিক্ষায়তন | লেডি মার্গারেট হল, অক্সফোর্ড |
পেশা | খাদ্য বিষয়ক লেখক, সাংবাদিক এবং উপস্থাপক |
কর্মজীবন | ১৯৮৩–বর্তমান |
নিয়োগকারী | বিবিসি (cবর্তমান) চ্যানেল ৪, আইটিভি (সাবেক) গুড ফুড চ্যানেল ফুড নেটওয়ার্ক (যুক্তরাজ্য ভার্সন;) |
পরিচিতির কারণ | টেলিভিশন উপস্থাপনা, রন্ধনকার্য,লেখালেখি |
শৈলী | ডেজার্ট, প্যাস্ট্রি, মিডল ইস্টার্ণ কুজিন, ইংলিশ কুজিন , মেডিটেরানিয়ান কুজিন |
উচ্চতা | ৫ ফু (১.৫২৪০০০০ মি)* |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সন্তান | ২ |
পিতা-মাতা |
|
ওয়েবসাইট | nigella |
নাইজেলা লুসি লসন (জন্ম: জানুয়ারী ১৯৬০) [২] একজন ইংরেজ খাদ্য বিষয়ক লেখক এবং টেলিভিশনের রন্ধন বিষয়ক অনুষ্ঠানের হোস্ট। তিনি প্রাক্তন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী নাইজেল লসন এবং ভেনেসা লসনের কন্যা।
নাইজেলা লসন লন্ডনের গডলফিন এবং ল্যাটিমার স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পরে [৩] তিনি ১৯৮৬ সালে দ্য সানডে টাইমসের উপ-সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে বই পর্যালোচক এবং রেস্তোঁরা সমালোচক হিসাবে কাজ শুরু করেন। তারপরে তিনি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসাবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন। ১৯৯৮ সালে তার প্রথম রান্নার বই " হাউ টু ইট " প্রকাশিত হয় এবং বইটির ৩০০,০০০ কপি বিক্রি হয়েছিল, বইটি তখন বেস্ট সেলার হয়ে ওঠে। তিনি তার দ্বিতীয় বইটি ২০০০ সালে প্রকাশ করেন, হাউ টু বি আ ডমেস্টিক গডেস , যা তাকে 'ব্রিটিশ বুক এওয়ার্ড ফর অথর অব দা ইয়ার' পুরস্কার পাইয়ে দেয় ।
১৯৯৯ সালে তিনি চ্যানেল ৪ এ নিজস্ব রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন । নাইজেলা বাইটস নামক রন্ধন বিষয়ক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার জন্য তিনি গিল্ড অফ ফুড রাইটার্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন ;২০০৫ সালে আইটিভিতে 'ডে টাইম চ্যাট শো' নামক অনুষ্ঠানটির জন্য নাইজেলা নেতিবাচক সমালোচনার মুখোমুখি হন এবং অনুষ্ঠানটি কম রেটিংয়ের কারণে পরে বাতিল করা হয়। তিনি ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ফুড নেটওয়ার্ক টেলিভিশন চ্যানেলে নাইজেলা ফিস্ট নামক রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন। যুক্তরাজ্যের বিবিসি টু টেলিভিশন চ্যানেলে ৩ ভাগে বিবিসি টু সিরিজ, নাইজেলা'র ক্রিসমাস কিচেন, নাইজেলা এক্সপ্রেস রন্ধন বিষয়ক অনুষ্ঠানগুলোর উপস্থাপনা করে ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেন । আজ অবধি তার রান্না বিষয়ক বই বিশ্বব্যাপী ৩ মিলিয়নেরও বেশি বিক্রি হয়েছে।
নাইজেলা লসন লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থে জন্মগ্রহণ করেন,[৪] তিনি নাইজেল লসন এবং ভেনেসা লসনের কন্যা। [৫] তিনি একজন ইহুদি ধর্মাবলম্বী ; তার বাবা-মা উভয়ই ইহুদি পরিবার থেকে এসেছে । [৬][৭][৮] নাইজেলা নামটি মূলত তার নানী রেখেছিল। [৯]
নাইজেলা লসনের পিতামাতার মধ্যে ১৯৮০ সালে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে , তার বয়স ছিল তখন ২০ বছর ।
লসনের মা ৪৮ বছর বয়সে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে লিভারের ক্যান্সারে মারা যান। [৫][১০] তার রক্ত সম্পর্কীয় ভাইবোন হলেন- ভাই ডমিনিক, (সানডে টেলিগ্রাফের প্রাক্তন সম্পাদক), বোন হোরাশিয়া এবং বোন টমাসিনা, যিনি তার বয়স তিরিশের ঘরের প্রথম দিকে স্তন ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন;[১১][১২][১৩] এক সৎ ভাই টম, বর্তমানে ইস্টবার্ন কলেজের প্রধান শিক্ষক এবং এক সৎবোন এমিলি রয়েছেন; টম এবং এমিলি তার বাবার ঔরসজাত দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান।
লসন তার শৈশবকালের কিছু অংশ ওয়েলশের হায়ার কিনারটন গ্রামে কাটান। তাকে ৯ থেকে ১৮ বছর বয়সের মধ্যে নয় বার স্কুল পরিবর্তন করতে হয়েছিল এবং এই কারণে তিনি তার স্কুল বছরগুলিকে কঠিন হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। [১১] তিনি বেশ কয়েকটি উন্মুক্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন, এর মধ্যে ইবস্টক প্লেস স্কুল, কুইনস গেট স্কুল , গডলফিন এবং ল্যাটিমার স্কুল অন্যতম । তিনি লন্ডনে অনেক ডিপার্টমেন্টআল স্টোরে কাজ করেছিলেন,[১৪] এবং লেডি মার্গারেট হলের শিক্ষার্থী হিসাবে মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক ভাষার উপর ডিগ্রি নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় [১৪] থেকে স্নাতক হন। [১৫] তিনি কিছু সময়ের জন্য ইতালির ফ্লোরেন্সে ও থেকেছেন। [১০]
নাইজেলা মূলত প্রথমে প্রকাশনার কাজে যুক্ত হোন। 'দ্যা স্পেকটেটর' নামক ম্যাগাজিনে এর সম্পাদক চার্লস মুর কর্তৃক লেখালেখির আমন্ত্রন পেয়ে তেইশ বছর বয়সে তিনি সাংবাদিকতায় তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ম্যাগাজিনটিতে তার মূল কাজ ছিল মূলত গ্রন্থ পর্যালোচনা করা। তিনি ২৬ বছর বয়সে ১৯৮৬ সালে দা সানডে টাইমস পত্রিকায় সাহিত্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক নিযুক্ত হন।
সানডে টাইমসে দায়িত্ব পালনের পরে, তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি ভুল পথে এগোচ্ছেন, তাই ফ্রিল্যান্স লেখক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন । [১৬] যুক্তরাজ্যে তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফ , দ্য অবজার্ভার এবং দ্য টাইমস লিটারারি সাপ্লিমেনটে লিখতেন এবং ভোগের জন্য একটি খাদ্য বিষয়ক কলাম লিখতেন [১৭] এবং টাইমস ম্যাগাজিনের জন্য একটি মেকআপ কলাম লিখতেন। [১৬] এর পাশাপাশি তিনি কাজ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গুরমেট এবং বন অ্যাপিটিট এ [১৮] ১৯৯৫ সালে টক রেডিওতে দু'সপ্তাহ কাজ করার পরে, লসনকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। [৫]
শৈশব থেকেই লসনের রান্নার উপর একটি প্রতিষ্ঠিত ধারণা ছিল। তার মা রান্না করাটা উপভোগ করতেন। [১৬] ।
২০০০ সালে তার লেখা বই 'হাউ টু বি আ ডমেস্টিক গডেস' প্রকাশিত হয় । যেটি প্রকাশের প্রথম চার মাসেই ১৮০,০০০ কপি বিক্রি হয়।
তিনি বিবিসি, চ্যানেল ফোরসহ বিভিন্ন টেলিভিশনে রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
'নাইজেলার ক্রিসমাস কিচেন' শিরোনামে একটি রন্ধন বিষয়ক তিন পর্বের শো'র জন্য বিবিসি টু- এর সাথে তার একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যে অনুষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল এবং সাপ্তাহিকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। [১৯] নাইজেলার ক্রিসমাস কিচেন ২০০৭ সালে লসনকে দ্বিতীয় বিশ্ব খাদ্য মিডিয়া পুরস্কার এনে দেয়। [২০]
নাইজেলার ক্রিসমাস কিচেনের সাফল্যের ফলে নাইজেলা এক্সপ্রেস শিরোনামে ১৩-পর্বের রান্না সিরিজ চালু করা হয়েছিল। [২১] শোটি বিবিসি টু'র প্রতি সপ্তাহের শীর্ষ রেট প্রাপ্ত শো'তে পরিণত হয়েছিল। [২২]
নাইজেলা এক্সপ্রেস নামে তার একটি বই ও ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭ সালের নভেম্বরে এবং অস্ট্রেলিয়ায় ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। [২৩] টেলিভিশন সিরিজের একই নাম ব্যবহার করে বইটি যুক্তরাজ্যের আরেকটি বেস্টসেলার হয়ে উঠেছে[২৪] । জানা গেছে যে যুক্তরাজ্যে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বইটির ৪,৯০,০০০ এর বেশি অনুলিপি বিক্রি হয়েছিল। [২৫] এবং বইটি অ্যামাজন যুক্তরাজ্যের সেরা বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এক সময়ের জন্য প্রথম স্থান উঠে এসেছিল [২৫] এবং যে কোনও বিভাগে ক্রিসমাসের বেস্টসেলার বইয়ের সামগ্রিক তালিকায় নবম স্থানে ছিল। [২৬]
তার ক্রিসমাস বইটি ২০০৮ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত হয় এবং একই বছরের ডিসেম্বরে টেলিভিশন শো 'নাইজেলার ক্রিসমাস' প্রচারিত হয়েছিল।
২০১৫ সালের শরতে লসন বিবিসি ২-এর জন্য সিম্পলি নাইজেলা শুরু করেন। [২৭]
তিনি ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্যের মুখপাত্র ছিলেন।
১৯৮৬ সালে লসনের সাথে সাংবাদিক জন ডায়মন্ডের সাথে দেখা সাক্ষাত হয় , যখন তারা দুজনই সানডে টাইমসের হয়ে লিখতেন । [১১] ১৯৯২ সালে তারা ভেনিসে বিয়ে করেন। লসন-ডায়মন্ড দম্পতির কসীমা নামে এক কন্যা এবং ব্রুনো নামে এক ছেলে আছে। [২৮] ডায়মন্ডের ১৯৯৭ সালে গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং ৪৭ বছর বয়সে , মার্চ ২০০১ সালে মারা যান । [২৯]
২০০৩ এর সেপ্টেম্বরে লসন আর্ট কালেক্টর চার্লস সাচীকে বিয়ে করেন। [৩০]
২০১৩ এর জুনে লন্ডনের একটি সামুদ্রিক রেস্তোরাঁর বাইরে তর্ক চলাকালীন এক পর্যায়ে স্যাচি নাইজেলা লসনের গলা চেপে ধরে আর সেই ছবিগুলো দ্য সানডে পিপল এ প্রকাশিত হয়েছিল। [৩১]
এই ঘটনার সাত সপ্তাহ পরে, ৩১ জুলাই ২০১৩-এ, এই জুটি তাদের দশ বছরের বিবাহ বন্ধনের বিচ্ছেদ ঘটায়।
বছর | খেতাব | ভূমিকা | পর্বগুলি |
---|---|---|---|
১৯৯৯-২০০১ | নাইজেলা বাইটস | নিমন্ত্রণকর্তা | ১৬ পর্ব (সিরিজ ১-২; এক ক্রিসমাস স্পেশাল) |
২০০২ | চিরকাল গ্রীষ্ম | নিমন্ত্রণকর্তা | ৮ পর্ব |
২০০৫ | নাইজেলা | নিমন্ত্রণকর্তা | ২০ পর্ব |
২০০৬ | নাইজেলা ফেস্ট | নিমন্ত্রণকর্তা | ১৩ পর্ব |
২০০৬, ২০০৮ | নাইজের্লার ক্রিসমাস কিচেন | নিমন্ত্রণকর্তা | ৬ পর্ব (সিরিজ ১-২) |
২০০৭ | নাইজেলা এক্সপ্রেস | নিমন্ত্রণকর্তা | ১৩ পর্ব |
২০০৯ | শীর্ষ শেফ | অতিথি বিচারক | পর্ব: " স্ট্রিপ এরাউন্ড দা ওয়ার্ল্ড" ( সিজন ৬ ) [৩২] |
২০১০ | সুপার শেফ ব্যাটেল : এন আয়রন শেফ আমেরিকান ইভেন্ট | অতিথি বিচারক | টেলিভিশন স্পেশাল |
২০১০ | নাইজেলা কিচেন | নিমন্ত্রণকর্তা | ১৩ পর্ব |
২০১১ , ২০১৬, ২০১৮, ২০১৯ | মাস্টারচেফ অস্ট্রেলিয়া | অতিথি বিচারক মো | ১৬ পর্ব |
২০১২ | নাইজেলিসিমা | নিমন্ত্রণকর্তা | ৭ পর্ব |
২০১৩-১৪ | দা টেস্ট | বিচারক | ২৩ পর্ব (সিরিজ ১-৩) |
২০১৪ | দা টেস্ট (ইউকে) | বিচারক | ১০ পর্ব (সিরিজ ১) |
২০১৪ | মডার্ণ ফ্যামিলি | স্বভূমিকায় | পর্ব: " থ্রি টার্কিজ " [৩৩] |
২০১৫ | ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা ২০১৫ | স্বভূমিকায় | ফাইনাল |
২০১৫ | সিম্পলি নাইজেলা | নিমন্ত্রণকর্তা | ৬টি পর্ব এবং একটি ক্রিসমাস স্পেশাল |
২০১৭ | নাইজেলা: এট মাই টেবিল | নিমন্ত্রণকর্তা | ৬ টি পর্ব এবং একটি ক্রিসমাস স্পেশাল[৩৪] |