নাসাপ্রদাহ | |
---|---|
বিভিন্ন সাধারণ উদ্ভিদজাত পরাগেরেণু অতিপ্রতিক্রিয়ামূলক নাসাপ্রদাহ ("হে" জ্বর) সৃষ্টি করতে পারে। | |
উচ্চারণ |
|
বিশেষত্ব | সংক্রামক রোগ, অতিপ্রতিক্রিয়া এবং অনাক্রম্যবিজ্ঞান |
নাসাপ্রদাহ (ইংরেজি Rhinitis বা coryza[৩]) বলতে মানব নাকের ভিতরের শ্লেষ্মাঝিল্লির জ্বালাপোড়া ও প্রদাহকে বোঝায়। সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে বদ্ধ নাক, নাসাস্রাব (নাক দিয়ে পানি পড়া), হাঁচি ও পশ্চাৎ-নাসাস্রাব (নাকের পিছন দিয়ে গলায় শ্লেষ্মা পড়া)।[৪]
ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, উত্তেজক পদার্থ ও অতিপ্রতিক্রিয়া বা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারক পদার্থের কারণে (সাধারণত বায়ুবাহিত অতিপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারক বা অ্যালার্জেন যেমন পরাগরেণু বা পশুর লোমের খুশকি[৫]) নাসাপ্রদাহ হতে পারে।[৬] অতিপ্রতিক্রিয়াজনিত নাসাপ্রদাহের কারণে আরও কিছু উপসর্গ দেখা যেতে পারে, যেমন হাঁচি, নাক চুলকানি, কাশি, মাথাব্যথা,[৭] ক্লান্তি, অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ এবং বোধশক্তি হ্রাস।[৮][৯] উপরন্তু, অতিপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারকগুলি (অ্যালার্জেনগুলি) চোখ আক্রমণ করতে পারে ফলে চোখে চুলকানি হতে পারে, চোখ লাল হয়ে যেতে পারে, চোখ থেকে জল বা পানি পড়তে পারে এবং চোখের চারপাশ ফুলে যেতে পারে।[৭] নাসাপ্রদাহের কারণে অনাক্রম্যতন্ত্রের প্রতিক্রিয়ার ফলে বিপুল পরিমাণে শ্লেষ্মা উৎপাদিত হয়, যার ফলে নাক দিয়ে পানি পড়ে, নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং পশ্চাৎনাসাস্রাব হতে পারে। অতিপ্রতিক্রিয়াজনিত নাসাপ্রদাহের ক্ষেত্রে নাকের মাস্ট কোষগুলির বি-দানাবদ্ধকরণের ফলে প্রদাহ হয়। যখন মাস্ট কোষগুলি বি-দানাবদ্ধ হয়, তখন তারা হিস্টামিন ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে।[১০] ফলে যে প্রদাহমূলক প্রক্রিয়াটি শুরু হয়, যাতে নাকের বাইরেও অন্যান্য উপসর্গ দেখা যায়, যেমন ক্লান্তিবোধ ও অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ।[১১] সংক্রামক নাসাপ্রদাহের ক্ষেত্রে কদাচিৎ পরবর্তীতে ভাইরাসঘটিত বা ব্যাকটেরিয়াঘটিত ফুসফুস প্রদাহ (নিউমোনিয়া) হতে পারে। শ্বাসপথ থেকে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে বিতাড়ন করতে রোগী প্রায়ই হাঁচি দেয়।
নাসাপ্রদাহ খুবই সাধারণ একটি রোগ। অতিপ্রতিক্রিয়াজনিত (অ্যালার্জিজনিত) নাসাপ্রদাহ বিশ্বের কিছু কিছু দেশে অন্য দেশের তুলনায় বেশি পরিলক্ষিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ১০-৩০% প্রাপ্তবয়স্ক অ্যালার্জিজনিত নাসাপ্রদাহে আক্রান্ত হয়।[১২] এদের মধ্যে আবার ৫০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যেই অ্যালার্জিজনিত নয়, এমন সাধারণ নাসাপ্রদাহও হয়ে থাকে, এবং সেক্ষেত্রে এই রোগাবস্থাটিকে মিশ্র নাসাপ্রদাহ নামে ডাকা হয়।[১৩]